খাপড়া ওয়ার্ড শহীদ দিবস

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন

২৪ এপ্রিল খাপড়া ওয়ার্ড শহীদ দিবস। ১৯৫০ সালে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাকিস্তানি শাসকদের গুলিতে শহীদ হন সাত ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী। এটা ছিল উপমহাদেশের প্রথম জেল হত্যা। গুলিতে আহত হয়েছিল প্রায় ৩৫ জন। এই ৩৫ জনের মধ্যে অনেকেই ব্রিটিশ আমল থেকে জেলে বন্দী ছিলেন। ব্রিটিশ শাসকরা ১৯৪৭ সালের পুর্বে ব্রিটিশ তাড়ানো সংগ্রামে যুক্ত থাকায় এদের গ্রেপ্তার করেছিল। ১৯৪৭ সালে দেশ দু ভাগে ভাগ হয়ে স্বাধীন হয়। কিন্তু এই ব্রিটিশ তাড়ানো সংগ্রামীদের মুক্তি দেয়া হয়নি।

সাত শহীদরা হলেন, আনোয়ার হোসেন, বিজন সেন, কম্পারাম সিং, সুধীন ধর, হানিফ শেখ, দেলোয়ার হোসেন, সুখেন ভট্টাচার্য। এই সাত শহীদ সরাসরি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

আনোয়ার হোসেনের জন্ম খুলনায়, ১৯৩০ সালের ১৪ এপ্রিল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ছাত্র অবস্থায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে জড়িত হন। তেভাগাসহ নানা আন্দোলনের সঙ্গে এই বিপ্লবী অংশ নেন। ব্রিটিশ তাড়ানোকে লক্ষ্য ছিল তার মূল ব্রত। ব্রিটিশ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তিনি ব্রিটিশদের গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য তিনি প্রায় সময়ই আত্মগোপনে থাকতেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হওয়ার পর তিনি প্রকাশ্যে আসেন এবং কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। ১৯৪৯ সালে তাকে পাকিস্তানি শাসকরা গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়। তিনি পাক শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অনশনরত অবস্থায় কারারক্ষী গুলিতে শহীদ হন।

বিজন সেনের জন্ম ১৯০৫ সালে নাটোর জেলায়। তিনি ব্রিটিশদের তাড়ানোর জন্য সশ্রস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। এই সশ্রস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার অভিযোগে ব্রিটিশ শাসকরা তাকে ডাকাত হিসেবে অভিযুক্ত করে। সেই সময় পুটিয়ামেলে একটি ডাকাতি হয়। ব্রিটিশরা পুটিয়ামেল ডাকাতির সঙ্গে বিজন সেনকে অভিযুুক্ত করে। এই ডাকাতির সঙ্গে বিজন সেনকে অভিযুক্ত করে সাজা দেয় ব্রিটিশরা। ব্রিটিশ শাসন আমলে তিনি আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দী জিবন কাটান। দেশ ভাগের পর তিনি মুক্তি পেয়ে চলে আসে। তারপর পাক পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এবং রাজশাহী জেলে পাঠায়। পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অনশনরত অবস্থায় ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল কারাক্ষীদের গুলিতে তিনি শহীদ হন।

কম্পারাম সিং ঠাকুরগাঁও জেলার বালিযাডাঙ্গী উপজেলার উত্তর পারিয়া গ্রামে ১৮৮৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রিটিশ তাড়ানো আন্দোলনের একজন অন্যতম বিপ্লবী নেতা। সেই সময়ের কমিউনিস্ট আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। কম্পারাম সিং ১৯৪০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে লাহিড়ীহাটে জমিদারদের স্বেচ্ছাচারী তোলাবাজির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। এই আন্দোলন করার দায়ে ব্রিটিশদের দোসর জমিদারার তার বিরুদ্ধে মামলা করে। ব্রিটিশ শাসকরা তাকে আটক করে জেলে পাঠায় তিনি ব্রিটিশ আমলে জেল খাটেন। তিনি ছিলেন সমগ্র উত্তর বঙ্গের বর্গাচাষী অন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা। ব্রিটিশরা তার ওপর হুলিয়া জারী করেছিল। তাই তাকে দেশ ভাগের পূর্বে দুই বছর আত্মগোপনে থাকতে হয়। দেশ ভাগের পর তিনি প্রকাশ্যে আসেন। আর তখনই ল ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানি শাসকরা তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠায়। প্রথমে রংপুরে পরে তাকে রাজশাহী জেলে স্থানান্তর করা হয়। তিনি ১৯৫০ সালে অন্য বন্দীদের সঙ্গে অনশনরত অবস্থায় কারাক্ষীদের গুলিতে শহীদ হন।

সুধীন ধর তিনি ১৯১৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা। ব্রিটিশ তাড়ানোর জন্য পূর্ব বঙ্গের সংগঠিত বহু আন্দোলনের সংগঠকের ভূমিকা পালন সুধীন ধর পালন করেন। ব্রিটিশ পুলিশের ভয়ে তাকে দীর্ঘ সময় আত্মগোপনে কাটাতে হয়েছে। তিনি মোহিনী মিলের শ্রমিক নেতা ছিলেন। দেশ ভাগের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। খাপড়া ওয়ার্ডে পাকিস্তানি শাসকের কারারক্ষীদের হাতে অনশনরত অবস্থায় তিনিও শহীদ হন।

হানিফ শেখের জন্ম ১৯২৪ সালে। তিনি কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন ব্রিটিশ শাসনামলে। সেই সময় ব্রিটিশ তাড়ানো লড়াই সংগ্রামে তার অবদান অপরিসীম। তিনি মোহিনী মিলের শ্রমিক নেতা ছিলেন। দেশ ভাগের পর তাকে পাকিস্তানি শাসকরা গ্রেপ্তার করে। তিনি অন্য শহীদের মতো পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে বন্দীবস্থায় অনশন করছিলেন আর তখনই পাকিস্তানি কারারক্ষীদের গুলিতে তিনি শহীদ হন।

দেলোযার হোসেন ১৯২৬ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন রেল শ্রমিক হিসেবে। ব্রিটিশদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দেলোযার হোসেন রেল শ্রমিকদের সংগঠিত করেন। কমরেড দেলোয়ার হোসেন রেলের শ্রমিক আন্দোলনের একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন। দেশ ভাগের পর তাকে পাকিস্তানি সরকার গ্রেপ্তার করে রাজশাহী জেলে পাঠায়। তিনিও অন্য শহীদদের সঙ্গে খাপড়া ওয়ার্ডে শহীদ হন।

সুখেন ভট্টাচার্য় ১৯২৮ সালে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের একজন নেতা। কমিউনিস্ট ধারায় ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। তাকে পাকিস্তান সরকার গ্রেপ্তার করে রাজশাহী

জেলে পাঠায়। অন্য বন্দীদের সঙ্গে তিনি পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে অনশন করছিলেন। আর খাপড়া ওয়ার্ডে শহীদ হন। সাত শহীদের সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা দেখা যায় সাতজনই ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী।

সাত শহীদের সঙ্গে আরও প্রায় ৩৫ জনের অধিক রাজবন্দী আহত হয়েছিল। এরা সবাই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই মর্মামান্তিক হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে, ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর পূর্ব বাংলায় যে শাসনযন্ত্রটি চেপে বসেছিল তা ছিল ব্রিটিশদের প্রেতাত্মা। পূর্ব বাংলার প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হয়নি কথিত দেশ ভাগের মাধ্যমে। তাই প্রকৃত স্বাধীনতার লক্ষ্যে এদেশের মানুষ সংগঠিত হতে থাকে।

[লেখক : ব্যবসায়ী]

শনিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২১ , ১১ বৈশাখ ১৪২৮ ১১ রমজান ১৪৪২

খাপড়া ওয়ার্ড শহীদ দিবস

শাহ মো. জিয়াউদ্দিন

২৪ এপ্রিল খাপড়া ওয়ার্ড শহীদ দিবস। ১৯৫০ সালে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাকিস্তানি শাসকদের গুলিতে শহীদ হন সাত ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী। এটা ছিল উপমহাদেশের প্রথম জেল হত্যা। গুলিতে আহত হয়েছিল প্রায় ৩৫ জন। এই ৩৫ জনের মধ্যে অনেকেই ব্রিটিশ আমল থেকে জেলে বন্দী ছিলেন। ব্রিটিশ শাসকরা ১৯৪৭ সালের পুর্বে ব্রিটিশ তাড়ানো সংগ্রামে যুক্ত থাকায় এদের গ্রেপ্তার করেছিল। ১৯৪৭ সালে দেশ দু ভাগে ভাগ হয়ে স্বাধীন হয়। কিন্তু এই ব্রিটিশ তাড়ানো সংগ্রামীদের মুক্তি দেয়া হয়নি।

সাত শহীদরা হলেন, আনোয়ার হোসেন, বিজন সেন, কম্পারাম সিং, সুধীন ধর, হানিফ শেখ, দেলোয়ার হোসেন, সুখেন ভট্টাচার্য। এই সাত শহীদ সরাসরি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।

আনোয়ার হোসেনের জন্ম খুলনায়, ১৯৩০ সালের ১৪ এপ্রিল। মাত্র ১৬ বছর বয়সে ছাত্র অবস্থায় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে জড়িত হন। তেভাগাসহ নানা আন্দোলনের সঙ্গে এই বিপ্লবী অংশ নেন। ব্রিটিশ তাড়ানোকে লক্ষ্য ছিল তার মূল ব্রত। ব্রিটিশ পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তিনি ব্রিটিশদের গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য তিনি প্রায় সময়ই আত্মগোপনে থাকতেন। ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগ হওয়ার পর তিনি প্রকাশ্যে আসেন এবং কমিউনিস্ট পার্টির রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেন। ১৯৪৯ সালে তাকে পাকিস্তানি শাসকরা গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠায়। তিনি পাক শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অনশনরত অবস্থায় কারারক্ষী গুলিতে শহীদ হন।

বিজন সেনের জন্ম ১৯০৫ সালে নাটোর জেলায়। তিনি ব্রিটিশদের তাড়ানোর জন্য সশ্রস্ত্র বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। এই সশ্রস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলার অভিযোগে ব্রিটিশ শাসকরা তাকে ডাকাত হিসেবে অভিযুক্ত করে। সেই সময় পুটিয়ামেলে একটি ডাকাতি হয়। ব্রিটিশরা পুটিয়ামেল ডাকাতির সঙ্গে বিজন সেনকে অভিযুুক্ত করে। এই ডাকাতির সঙ্গে বিজন সেনকে অভিযুক্ত করে সাজা দেয় ব্রিটিশরা। ব্রিটিশ শাসন আমলে তিনি আন্দামানের সেলুলার জেলে বন্দী জিবন কাটান। দেশ ভাগের পর তিনি মুক্তি পেয়ে চলে আসে। তারপর পাক পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এবং রাজশাহী জেলে পাঠায়। পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে অনশনরত অবস্থায় ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল কারাক্ষীদের গুলিতে তিনি শহীদ হন।

কম্পারাম সিং ঠাকুরগাঁও জেলার বালিযাডাঙ্গী উপজেলার উত্তর পারিয়া গ্রামে ১৮৮৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ব্রিটিশ তাড়ানো আন্দোলনের একজন অন্যতম বিপ্লবী নেতা। সেই সময়ের কমিউনিস্ট আন্দোলনে নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। কম্পারাম সিং ১৯৪০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে লাহিড়ীহাটে জমিদারদের স্বেচ্ছাচারী তোলাবাজির বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। এই আন্দোলন করার দায়ে ব্রিটিশদের দোসর জমিদারার তার বিরুদ্ধে মামলা করে। ব্রিটিশ শাসকরা তাকে আটক করে জেলে পাঠায় তিনি ব্রিটিশ আমলে জেল খাটেন। তিনি ছিলেন সমগ্র উত্তর বঙ্গের বর্গাচাষী অন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা। ব্রিটিশরা তার ওপর হুলিয়া জারী করেছিল। তাই তাকে দেশ ভাগের পূর্বে দুই বছর আত্মগোপনে থাকতে হয়। দেশ ভাগের পর তিনি প্রকাশ্যে আসেন। আর তখনই ল ১৯৪৯ সালে পাকিস্তানি শাসকরা তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠায়। প্রথমে রংপুরে পরে তাকে রাজশাহী জেলে স্থানান্তর করা হয়। তিনি ১৯৫০ সালে অন্য বন্দীদের সঙ্গে অনশনরত অবস্থায় কারাক্ষীদের গুলিতে শহীদ হন।

সুধীন ধর তিনি ১৯১৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা। ব্রিটিশ তাড়ানোর জন্য পূর্ব বঙ্গের সংগঠিত বহু আন্দোলনের সংগঠকের ভূমিকা পালন সুধীন ধর পালন করেন। ব্রিটিশ পুলিশের ভয়ে তাকে দীর্ঘ সময় আত্মগোপনে কাটাতে হয়েছে। তিনি মোহিনী মিলের শ্রমিক নেতা ছিলেন। দেশ ভাগের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। খাপড়া ওয়ার্ডে পাকিস্তানি শাসকের কারারক্ষীদের হাতে অনশনরত অবস্থায় তিনিও শহীদ হন।

হানিফ শেখের জন্ম ১৯২৪ সালে। তিনি কমিউনিস্ট আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন ব্রিটিশ শাসনামলে। সেই সময় ব্রিটিশ তাড়ানো লড়াই সংগ্রামে তার অবদান অপরিসীম। তিনি মোহিনী মিলের শ্রমিক নেতা ছিলেন। দেশ ভাগের পর তাকে পাকিস্তানি শাসকরা গ্রেপ্তার করে। তিনি অন্য শহীদের মতো পাকিস্তানি শাসকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে বন্দীবস্থায় অনশন করছিলেন আর তখনই পাকিস্তানি কারারক্ষীদের গুলিতে তিনি শহীদ হন।

দেলোযার হোসেন ১৯২৬ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কর্মজীবন শুরু করেন রেল শ্রমিক হিসেবে। ব্রিটিশদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে দেলোযার হোসেন রেল শ্রমিকদের সংগঠিত করেন। কমরেড দেলোয়ার হোসেন রেলের শ্রমিক আন্দোলনের একজন সক্রিয় নেতা ছিলেন। দেশ ভাগের পর তাকে পাকিস্তানি সরকার গ্রেপ্তার করে রাজশাহী জেলে পাঠায়। তিনিও অন্য শহীদদের সঙ্গে খাপড়া ওয়ার্ডে শহীদ হন।

সুখেন ভট্টাচার্য় ১৯২৮ সালে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনের একজন নেতা। কমিউনিস্ট ধারায় ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছিলেন। তাকে পাকিস্তান সরকার গ্রেপ্তার করে রাজশাহী

জেলে পাঠায়। অন্য বন্দীদের সঙ্গে তিনি পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে অনশন করছিলেন। আর খাপড়া ওয়ার্ডে শহীদ হন। সাত শহীদের সংক্ষিপ্ত রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা দেখা যায় সাতজনই ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী।

সাত শহীদের সঙ্গে আরও প্রায় ৩৫ জনের অধিক রাজবন্দী আহত হয়েছিল। এরা সবাই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এই মর্মামান্তিক হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে, ১৯৪৭ সালের দেশ ভাগের পর পূর্ব বাংলায় যে শাসনযন্ত্রটি চেপে বসেছিল তা ছিল ব্রিটিশদের প্রেতাত্মা। পূর্ব বাংলার প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন হয়নি কথিত দেশ ভাগের মাধ্যমে। তাই প্রকৃত স্বাধীনতার লক্ষ্যে এদেশের মানুষ সংগঠিত হতে থাকে।

[লেখক : ব্যবসায়ী]