টাকা নেয়ার পর টিকা আটকানোর অধিকার সেরামের নেই

সরকারকে শক্ত স্টেপ নিতে হবে : পাপন

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, করোনাভাইরাসের দেড় কোটি ডোজ টিকার জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটকে টাকা দেয়া হয়েছে। টাকা নেয়ার পর টিকা আটকানোর কোন অধিকার সেরামের নাই। গতকাল কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুত করা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আনার দায়িত্বে ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। সেরাম ইনস্টিটিউটে সোল এজেন্ট হিসেবে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আসার কথা ছিল। তবে ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসার পর সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভারতের দেয়া রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশে আর কোন ভ্যাকসিন আসে নাই। কবে আসবে সেটা নিয়েও নিশ্চিতভাবে কোন কিছু বলতে পারছে না কেউ।

এমন অবস্থায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন বলেন, আমাদের (বেক্সিমকো) এখানে কিছু করার নেই। সব কাজ ভাগ করা। সরকারের দায়িত্ব আগে টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন বুক করা। সরকার সেটা করেছে। বেক্সিমকোর দায়িত্ব ছিল সেটা দেশে এনে ড্রিস্টিবিউট করা। সেটা করেছে। এখানে সব দায়িত্ব আমাদের। সেরামের কোন বিষয় নিয়ে আমাদের ইস্যু নেই। ওরা যদি না দেয় সরকার আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। এখন সরকারকে ভ্যাকসিন পাঠানোর কথা জোরালোভাবে বলতে হবে ভারতের কাছে।

তিনি বলেন, ‘সেরাম যদি ভ্যাকসিন না দেয় তবে সরকার আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। এটিও জরুরি না আবার। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা বলে আসছি, বিশ্বাস করি যে ভারত বাংলাদেশের বন্ধু। সময় এসেছে সেটা ওদের দেখাতে হবে। এত মিষ্টি মিষ্টি কথা শোনার দরকার নেই। দয়া চাচ্ছি না। আমার ন্যায্য পাওনা ভ্যাসকিন সেটা চাচ্ছি।

ভ্যাকসিন কবে আসবে সে বিষয়ে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এটি বলা খুবই কঠিন। যেটি বলা হচ্ছে, ওরা আমাদের ৫০ লাখ পুরো রেডি করে রেখে দিয়েছে। কোন সমস্যা নেই। ওরা ওদের মিনিস্ট্রি অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্সের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছে। গত মাসে ৫০ লাখ পাঠানোর কথা ছিল। ওরা দিয়েছে ২০ লাখ। এ মাসে এখনও দেয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সেকেন্ড ডোজের শর্টেজ হয়ে যাবে সামনে। এজন্য আমাদের এটা ইমিডিয়েট পেতে হবে। যেহেতু সেরাম ইনিস্টিটিউট, ওদের সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছে তাদের সরকার আটকে রেখেছে, ছাড়পত্র পাচ্ছে না...কাজেই আমি মনে করি আমাদের সরকারের চুপ করে থাকার কোন কারণ নেই। সরকারকে ইমিডিয়েটলি বলা উচিত, এই ভ্যাকসিন আমি অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনেছি। আমাদের দিতেই হবে। এটি জোরালোভাবে বলতে হবে। আনঅফিশিয়ালি, ফোনে একটু কথা বলা- এভাবে না। আমার মতে, শক্ত স্টেপ নিতে হবে।’

পাপন বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড মার্কেটে চারটি ভ্যাকসিন আছে যেগুলো অ্যাপ্রুভড। ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আর কোনটা অ্যাপ্রুভালের আগে আনা সম্ভব না।’

নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমরা বেক্সিমকো সরকারকে ভ্যাকসিন এনে দিতে সহায়তা করেছি। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি দেখছি তাতে ভ্যাকসিন বানানো ছাড়া কোন উপায় নেই। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না যাদের ফ্যাসিলিটিজ আছে তারা কেন এ ব্যাপারটা নিয়ে এগিয়ে আসছে না। একটা জিনিস বলতে পারি, এ বছর আমরা লোকাল প্রোডাকশন ছাড়া কোন পথ নেই এবং এমন কোন ওষুধ নেই যেটা বাংলাদেশ বানাতে পারে না। এখন পর্যন্ত বেক্সিমকোর পরিকল্পনা নেই। কারণ অন্যান্য ফ্যাসিলিটিজ তো আছেই। তাদের বানানো উচিত।’

আর দুই মাসের মধ্যে দেখবেন প্রচুর ভ্যাকসিন চলে আসবে বলে মন্তব্য করেন নাজমুল হাসান পাপন।

তিনি বলেন, ‘আমি ক্লিয়ার করছি, এই ক্রাইসিস জুন পর্যন্ত থাকবে। জুনের পর কোন ক্রাইসিস থাকবে না। আমাদের দেড় কোটি ডোজের টাকা দিয়ে দিয়েছি। যেটা আমাদের মে’র মধ্যে পাওয়ার কথা। আমরা ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছি। আমাদের ৮০ লাখ বাকি। এ ৮০ লাখ পাওয়ার পর যদি মনে করি ওদের থেকে আর নেব না, তখন অন্য অপশনে যাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেটা সরকার পে করেছে, জনগণের টাকা। এটা আটকানোর অধিকার নেই। যত ক্রাইসিস থাকুক না কেন। ভারত সরকারও তাদের অগ্রিম টাকা দেয়নি। আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে ওদের বুক করেছি। গত বছরের অক্টোবরে বুক করেছি।’

আরও খবর
রাশিয়ার ‘স্পুটনিক’ চীনের ‘সিনোভ্যাক ও সিনোফার্ম’ টিকা ব্যবহারের উদ্যোগ বাংলাদেশের
আজ খুলছে দোকানপাট মুভমেন্ট পাস নেয়ার অনুরোধ
বরিশালে ডায়রিয়া মহামারী রূপ নিচ্ছে
ক্যান্ডির ব্যাটিং পিচে টাইগার বোলারদের হতাশার দিন
করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন সাড়ে ২১ লাখ মানুষ
সংক্রমণ হার নিচে নামলেও মৃত্যু এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে
সিন্ডিকেট, বিত্তবৈভব, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য : হেফাজত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ, পুলিশের ভাষ্য
হেফাজতকে জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধের দাবি ৫৫১ আলেমের
‘আল্লাহ আমাকে নিয়ে যান তবু আমার ছেলে ও বউয়ের প্রাণভিক্ষা দেন’
বেঁচে যাওয়ারা ভয়-আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারছে না

রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১ , ১২ বৈশাখ ১৪২৮ ১২ রমজান ১৪৪২

টাকা নেয়ার পর টিকা আটকানোর অধিকার সেরামের নেই

সরকারকে শক্ত স্টেপ নিতে হবে : পাপন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, করোনাভাইরাসের দেড় কোটি ডোজ টিকার জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটকে টাকা দেয়া হয়েছে। টাকা নেয়ার পর টিকা আটকানোর কোন অধিকার সেরামের নাই। গতকাল কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনার দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার পর সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।

উল্লেখ্য, নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুত করা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন বাংলাদেশে আনার দায়িত্বে ছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। সেরাম ইনস্টিটিউটে সোল এজেন্ট হিসেবে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন আসার কথা ছিল। তবে ৭০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন আসার পর সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভারতের দেয়া রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশে আর কোন ভ্যাকসিন আসে নাই। কবে আসবে সেটা নিয়েও নিশ্চিতভাবে কোন কিছু বলতে পারছে না কেউ।

এমন অবস্থায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন বলেন, আমাদের (বেক্সিমকো) এখানে কিছু করার নেই। সব কাজ ভাগ করা। সরকারের দায়িত্ব আগে টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন বুক করা। সরকার সেটা করেছে। বেক্সিমকোর দায়িত্ব ছিল সেটা দেশে এনে ড্রিস্টিবিউট করা। সেটা করেছে। এখানে সব দায়িত্ব আমাদের। সেরামের কোন বিষয় নিয়ে আমাদের ইস্যু নেই। ওরা যদি না দেয় সরকার আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। এখন সরকারকে ভ্যাকসিন পাঠানোর কথা জোরালোভাবে বলতে হবে ভারতের কাছে।

তিনি বলেন, ‘সেরাম যদি ভ্যাকসিন না দেয় তবে সরকার আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে। এটিও জরুরি না আবার। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা বলে আসছি, বিশ্বাস করি যে ভারত বাংলাদেশের বন্ধু। সময় এসেছে সেটা ওদের দেখাতে হবে। এত মিষ্টি মিষ্টি কথা শোনার দরকার নেই। দয়া চাচ্ছি না। আমার ন্যায্য পাওনা ভ্যাসকিন সেটা চাচ্ছি।

ভ্যাকসিন কবে আসবে সে বিষয়ে নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘এটি বলা খুবই কঠিন। যেটি বলা হচ্ছে, ওরা আমাদের ৫০ লাখ পুরো রেডি করে রেখে দিয়েছে। কোন সমস্যা নেই। ওরা ওদের মিনিস্ট্রি অব এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্সের অনুমতির জন্য অপেক্ষা করছে। গত মাসে ৫০ লাখ পাঠানোর কথা ছিল। ওরা দিয়েছে ২০ লাখ। এ মাসে এখনও দেয়নি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সেকেন্ড ডোজের শর্টেজ হয়ে যাবে সামনে। এজন্য আমাদের এটা ইমিডিয়েট পেতে হবে। যেহেতু সেরাম ইনিস্টিটিউট, ওদের সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর আমাদের লিখিতভাবে জানিয়েছে তাদের সরকার আটকে রেখেছে, ছাড়পত্র পাচ্ছে না...কাজেই আমি মনে করি আমাদের সরকারের চুপ করে থাকার কোন কারণ নেই। সরকারকে ইমিডিয়েটলি বলা উচিত, এই ভ্যাকসিন আমি অগ্রিম টাকা দিয়ে কিনেছি। আমাদের দিতেই হবে। এটি জোরালোভাবে বলতে হবে। আনঅফিশিয়ালি, ফোনে একটু কথা বলা- এভাবে না। আমার মতে, শক্ত স্টেপ নিতে হবে।’

পাপন বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড মার্কেটে চারটি ভ্যাকসিন আছে যেগুলো অ্যাপ্রুভড। ফাইজার, জনসন অ্যান্ড জনসন, মডার্না ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা। আর কোনটা অ্যাপ্রুভালের আগে আনা সম্ভব না।’

নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ‘আমরা বেক্সিমকো সরকারকে ভ্যাকসিন এনে দিতে সহায়তা করেছি। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি দেখছি তাতে ভ্যাকসিন বানানো ছাড়া কোন উপায় নেই। কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না যাদের ফ্যাসিলিটিজ আছে তারা কেন এ ব্যাপারটা নিয়ে এগিয়ে আসছে না। একটা জিনিস বলতে পারি, এ বছর আমরা লোকাল প্রোডাকশন ছাড়া কোন পথ নেই এবং এমন কোন ওষুধ নেই যেটা বাংলাদেশ বানাতে পারে না। এখন পর্যন্ত বেক্সিমকোর পরিকল্পনা নেই। কারণ অন্যান্য ফ্যাসিলিটিজ তো আছেই। তাদের বানানো উচিত।’

আর দুই মাসের মধ্যে দেখবেন প্রচুর ভ্যাকসিন চলে আসবে বলে মন্তব্য করেন নাজমুল হাসান পাপন।

তিনি বলেন, ‘আমি ক্লিয়ার করছি, এই ক্রাইসিস জুন পর্যন্ত থাকবে। জুনের পর কোন ক্রাইসিস থাকবে না। আমাদের দেড় কোটি ডোজের টাকা দিয়ে দিয়েছি। যেটা আমাদের মে’র মধ্যে পাওয়ার কথা। আমরা ৭০ লাখ ডোজ পেয়েছি। আমাদের ৮০ লাখ বাকি। এ ৮০ লাখ পাওয়ার পর যদি মনে করি ওদের থেকে আর নেব না, তখন অন্য অপশনে যাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেটা সরকার পে করেছে, জনগণের টাকা। এটা আটকানোর অধিকার নেই। যত ক্রাইসিস থাকুক না কেন। ভারত সরকারও তাদের অগ্রিম টাকা দেয়নি। আমরা অগ্রিম টাকা দিয়ে ওদের বুক করেছি। গত বছরের অক্টোবরে বুক করেছি।’