ক্যান্ডির ব্যাটিং পিচে টাইগার বোলারদের হতাশার দিন

স্কোর : বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ৫৪১/৭ ডি. শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ৫১২/৩

শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম তিনটা দিনই কিছু না কিছু সাফল্য ধরা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। কিন্তু পাল্লেকেলে টেস্টের চতুর্থ দিনটা কেটেছে একেবারেই হতাশায়। ঠিক হতাশা না বলে সাফল্যহীন বলা ভালো। গতকাল ম্যাচের চতুর্থ দিনে টাইগার বোলিং ডিপার্টমেন্ট কোন উইকেটের দেখা পায়নি। পবেই বা কিভাবে। ক্যান্ডি’র পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের পিচ যে, ব্যাটিং স্বর্গ। বোলারদের এই বধ্যভূমিটাকে কাজে লাগিয়েই তো বাংলাদেশ দল পেয়েছে জোড়া সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস। টাইগার ব্যাটিং ডিপার্টমেন্টের প্রথম ইনিংসে সাফল্যের বিপরীতে তৃতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে তিন উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কান দলের অধিনায়ক শনিবার ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত আছেন, তার সঙ্গী ধনঞ্জয়া ডি সিলভা সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত আছেন ১৫৪ রানে। বাংলাদেশ দলের ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণার পর চতুর্থ দিনের শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ তিন উইকেটে ৫১২ রান।

বাংলাদেশ দলের বোলারদের উইকেটবিহীন এই দিনটায় আলোর স্বল্পতায় খেলা হয়নি শেষ ২২ ওভার। এতে কিছুটা বাড়তি বিশ্রাম পেয়েছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ঠিক যেমন ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে আলোর স্বল্পতায় ২৫ ওভার বাকি থাকতেই আলোর স্বল্পতায় খেলার ইতি টানলে বাড়তি বিশ্রাম পেয়েছিলেন লঙ্কান বোলাররা।

যাহোক, আলোর স্বল্পতায় দিনের শেষ ২২টি ওভার বাদ না গেলে কি হতো, তা বলা মুস্কিল। তবে দ্বিমুথ করুণারতেœ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা যেভাবে ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে আছেন, তাতে শ্রীলঙ্কা হয়তো ২৯ রান করে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে তোলা ৫৪১ রান ছুঁয়ে ফেলত। সেইসঙ্গে পুরো দিনে একটা উইকেটের পতন ঘটাতে না পারা বাংলাদেশি বোলাররা চেয়ে চেয়ে দেখতেন স্বাগতিকদের লিড নেয়ার দৃশ্য।

ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৩ উইকেটে ২২৯ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিনে ৮৫ রানে অপরাজিত থাকা লঙ্কা দলপতি দ্বিমুথ করুনারতেœ শনিবার দিনের ত্রয়োদশ ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের একাদশ ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পথে খেলেন ২৪৭টি বল। সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর নিজের ইনিংসটি বড় করার পথে মনোযোগী ছিলেন করুনারতেœ।

তৃতীয় দিনে ২৬ রানে অপরাজিত থাকা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাও অধিনায়কের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে খেলেছেন সাবলীলভাবে। হাফ-সেঞ্চুরির পর টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নিতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি ধনাঞ্জয়াকে। শতরান পূর্ণ করতে ১৫৩টি বল মোকাবিলা করেন ধনঞ্জয়া।

দিনের প্রথম সেশনে করুনারতেœ ও দ্বিতীয় সেশনে ধনঞ্জয়া সেঞ্চুরি পূর্ণ করে টাইগার বোলারদের ওপর বেশ চড়াও হন। তৃতীয় সেশনেই ৭১ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ডাবল- সেঞ্চুরিটা পেয়ে যান লঙ্কা দলপতি করুনারতেœ। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ১৪১তম ওভারের শেষ বলে পেসার তাসকিন আহমেদকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ডাবল-সেঞ্চুরি পূর্ণ করার বলটা ছিল করুণারতেœর এই ইনিংসে মোকাবিলা করা ৩৮৭ তম বল।

করুনারতেœর ডাবল ও ধনঞ্জয়ার দেড়শ রানে ভর করে ৫০০ রানে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা। ৪১৯ বলে ২৫টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২৩৪ রানে অপরাজিত করুনারতেœ। ২৭৮ বলে ২০টি বাউন্ডারির মারে ১৫৪ রানে অপরাজিত ধনঞ্জয়া। চতুর্থ উইকেটে এই দুইজনের ৩২২ রানের জুটিটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোন উইকেটে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ রানের জুটি।

চতুর্থ দিনের শেষদিকে অনেকটাই ওয়ানডে স্টাইলে রান তুলছিল লঙ্কানরা। শেষ ১০ ওভারে তারা তুলেছে ৫৫ রান।

ব্যাটিং স্বর্গে বাংলাদেশি বোলাররা শনিবার যেভাবে নাকানি চুবানিতে তার হিসাবও দিয়ে রাখা হলো। দুই বোলার মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম যথাক্রমে ৫২ ও ৩৯ ওভার বল করে রান দিয়েছেন ১২৩ ও ১৩৬টি। রান দেয়ার ‘সেঞ্চুরি’ করেছেন তারা। আর তাসকিন আহমেদ ৯১ ও এবাদত হোসেন ৮২ রান দিয়ে ‘সেঞ্চুরি’র কাছাকাছি।

তবে, একটা বিষয় আপাতত, অনুমান করা যাচ্ছে যে, নাটকীয় কিছু না ঘটলে ড্র’র পথে পাল্লেকেলের প্রথম টেস্ট।

আরও খবর
রাশিয়ার ‘স্পুটনিক’ চীনের ‘সিনোভ্যাক ও সিনোফার্ম’ টিকা ব্যবহারের উদ্যোগ বাংলাদেশের
টাকা নেয়ার পর টিকা আটকানোর অধিকার সেরামের নেই
আজ খুলছে দোকানপাট মুভমেন্ট পাস নেয়ার অনুরোধ
বরিশালে ডায়রিয়া মহামারী রূপ নিচ্ছে
করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন সাড়ে ২১ লাখ মানুষ
সংক্রমণ হার নিচে নামলেও মৃত্যু এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে
সিন্ডিকেট, বিত্তবৈভব, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য : হেফাজত নেতাদের জিজ্ঞাসাবাদ, পুলিশের ভাষ্য
হেফাজতকে জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধের দাবি ৫৫১ আলেমের
‘আল্লাহ আমাকে নিয়ে যান তবু আমার ছেলে ও বউয়ের প্রাণভিক্ষা দেন’
বেঁচে যাওয়ারা ভয়-আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারছে না

রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১ , ১২ বৈশাখ ১৪২৮ ১২ রমজান ১৪৪২

ক্যান্ডির ব্যাটিং পিচে টাইগার বোলারদের হতাশার দিন

স্কোর : বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ৫৪১/৭ ডি. শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস ৫১২/৩

বিশেষ প্রতিনিধি

শ্রীলঙ্কা সফরে দুই টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম তিনটা দিনই কিছু না কিছু সাফল্য ধরা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। কিন্তু পাল্লেকেলে টেস্টের চতুর্থ দিনটা কেটেছে একেবারেই হতাশায়। ঠিক হতাশা না বলে সাফল্যহীন বলা ভালো। গতকাল ম্যাচের চতুর্থ দিনে টাইগার বোলিং ডিপার্টমেন্ট কোন উইকেটের দেখা পায়নি। পবেই বা কিভাবে। ক্যান্ডি’র পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের পিচ যে, ব্যাটিং স্বর্গ। বোলারদের এই বধ্যভূমিটাকে কাজে লাগিয়েই তো বাংলাদেশ দল পেয়েছে জোড়া সেঞ্চুরি ও তিনটি হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস। টাইগার ব্যাটিং ডিপার্টমেন্টের প্রথম ইনিংসে সাফল্যের বিপরীতে তৃতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে তিন উইকেট হারানো শ্রীলঙ্কান দলের অধিনায়ক শনিবার ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত আছেন, তার সঙ্গী ধনঞ্জয়া ডি সিলভা সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অপরাজিত আছেন ১৫৪ রানে। বাংলাদেশ দলের ৭ উইকেটে ৫৪১ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণার পর চতুর্থ দিনের শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ তিন উইকেটে ৫১২ রান।

বাংলাদেশ দলের বোলারদের উইকেটবিহীন এই দিনটায় আলোর স্বল্পতায় খেলা হয়নি শেষ ২২ ওভার। এতে কিছুটা বাড়তি বিশ্রাম পেয়েছেন বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। ঠিক যেমন ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে আলোর স্বল্পতায় ২৫ ওভার বাকি থাকতেই আলোর স্বল্পতায় খেলার ইতি টানলে বাড়তি বিশ্রাম পেয়েছিলেন লঙ্কান বোলাররা।

যাহোক, আলোর স্বল্পতায় দিনের শেষ ২২টি ওভার বাদ না গেলে কি হতো, তা বলা মুস্কিল। তবে দ্বিমুথ করুণারতেœ ও ধনঞ্জয়া ডি সিলভা যেভাবে ক্রিজ আঁকড়ে পড়ে আছেন, তাতে শ্রীলঙ্কা হয়তো ২৯ রান করে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে তোলা ৫৪১ রান ছুঁয়ে ফেলত। সেইসঙ্গে পুরো দিনে একটা উইকেটের পতন ঘটাতে না পারা বাংলাদেশি বোলাররা চেয়ে চেয়ে দেখতেন স্বাগতিকদের লিড নেয়ার দৃশ্য।

ক্যান্ডির পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ৩ উইকেটে ২২৯ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। তৃতীয় দিনে ৮৫ রানে অপরাজিত থাকা লঙ্কা দলপতি দ্বিমুথ করুনারতেœ শনিবার দিনের ত্রয়োদশ ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের একাদশ ও বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পথে খেলেন ২৪৭টি বল। সেঞ্চুরি তুলে নেয়ার পর নিজের ইনিংসটি বড় করার পথে মনোযোগী ছিলেন করুনারতেœ।

তৃতীয় দিনে ২৬ রানে অপরাজিত থাকা ধনঞ্জয়া ডি সিলভাও অধিনায়কের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে খেলেছেন সাবলীলভাবে। হাফ-সেঞ্চুরির পর টেস্ট ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরি তুলে নিতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি ধনাঞ্জয়াকে। শতরান পূর্ণ করতে ১৫৩টি বল মোকাবিলা করেন ধনঞ্জয়া।

দিনের প্রথম সেশনে করুনারতেœ ও দ্বিতীয় সেশনে ধনঞ্জয়া সেঞ্চুরি পূর্ণ করে টাইগার বোলারদের ওপর বেশ চড়াও হন। তৃতীয় সেশনেই ৭১ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ডাবল- সেঞ্চুরিটা পেয়ে যান লঙ্কা দলপতি করুনারতেœ। শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ১৪১তম ওভারের শেষ বলে পেসার তাসকিন আহমেদকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ডাবল-সেঞ্চুরি পূর্ণ করার বলটা ছিল করুণারতেœর এই ইনিংসে মোকাবিলা করা ৩৮৭ তম বল।

করুনারতেœর ডাবল ও ধনঞ্জয়ার দেড়শ রানে ভর করে ৫০০ রানে পৌঁছে যায় শ্রীলঙ্কা। ৪১৯ বলে ২৫টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২৩৪ রানে অপরাজিত করুনারতেœ। ২৭৮ বলে ২০টি বাউন্ডারির মারে ১৫৪ রানে অপরাজিত ধনঞ্জয়া। চতুর্থ উইকেটে এই দুইজনের ৩২২ রানের জুটিটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যেকোন উইকেটে শ্রীলঙ্কার সর্বোচ্চ রানের জুটি।

চতুর্থ দিনের শেষদিকে অনেকটাই ওয়ানডে স্টাইলে রান তুলছিল লঙ্কানরা। শেষ ১০ ওভারে তারা তুলেছে ৫৫ রান।

ব্যাটিং স্বর্গে বাংলাদেশি বোলাররা শনিবার যেভাবে নাকানি চুবানিতে তার হিসাবও দিয়ে রাখা হলো। দুই বোলার মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাইজুল ইসলাম যথাক্রমে ৫২ ও ৩৯ ওভার বল করে রান দিয়েছেন ১২৩ ও ১৩৬টি। রান দেয়ার ‘সেঞ্চুরি’ করেছেন তারা। আর তাসকিন আহমেদ ৯১ ও এবাদত হোসেন ৮২ রান দিয়ে ‘সেঞ্চুরি’র কাছাকাছি।

তবে, একটা বিষয় আপাতত, অনুমান করা যাচ্ছে যে, নাটকীয় কিছু না ঘটলে ড্র’র পথে পাল্লেকেলের প্রথম টেস্ট।