টেন্ডারের নামে সরকারি গাছ কেটে সাবাড় কোটি টাকা হরিলুট

টেন্ডারের নামে কয়েক হাজার সরকারি গাছ কেটে কোটি টাকার হরিলুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল দুপুরে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের গাছ প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে সাবাড় করছেন নামধারী ঠিকাদারের লোকজন। যেখানে গাছগুলোতে নেই কোন টেন্ডারকৃত সিল। কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করেই সুভংকরের ফাঁকি দিয়েই উজাড় হচ্ছে গাছগুলোর কেটে ফেলার কার্যক্রম। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে টেন্ডারের শর্ত এড়িয়ে কাটা হচ্ছে সড়কের পাশে থাকা বড় বড় মূল্যবান দামি সরকারি গাছগুলো ফলে কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

মহাসড়কের দুই পাশে বড় বড় বিভিন্ন প্রকার মেহেগনি, রেনট্রি, খৈয়া বাবলা গাছসহ হাজার হাজার গাছের খ- পড়ে আছে। গত কয়েকদিন ধরেই সড়কের দুই পাশের সরকারি সিলবিহীন হাজারো গাছ প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে ট্রাকে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন জনৈক নামধারী ঠিকাদার বরিশাল ভোলার সুমন ও তার লোকজন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভাঙ্গা থেকে বরিশাল ভুরঘাটা পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে ২৮৩টি গাছের টেন্ডার ৭/৮টি ভাগে মাত্র ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় দেয়া হয়েছে। যারমধ্যে ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৬৯টি গাছে মাত্র ১ লাখ টাকায় টেন্ডার দেয়া হয়েছে। এতে দেখা যায়, ১৬৯টি গাছের পরিবর্তে ঠিকাদারের লোকজন সিলবিহীন হাজারো মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে ১টি গাছের মূল্য রয়েছে কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকা। সেখানে প্রতিদিনই কেটে সাবাড় করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকার মূল্যের সরকারি গাছ। এতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।

গাছ কাটার সময়ে শ্রমিক মনির মিয়া জানান, আমরা গাছ ভর্তি প্রতি ট্রাকের জন্য ৫ হাজার টাকায় ঠিকাদার সুমনের কাছ থেকে কন্ট্রাক নিয়েছি। আমরা প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫টি ট্রাক গাছ ভরে যশোর ও কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছি। এই পর্যন্ত আমরা গাছ ও ডালপালাসহ ২ হাজারের বেশি গাছ কেটেছি।

এ বিষয়ে ঠিকাদার সুমন জানান, আমি কিছুই জানি না। আপনারা ঠিকাদার আবদুল খালেক মিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। পরে এ বিষয় জানতে আবদুল খালেক মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদের এসও আনিচ জানান, আমি গাছ কাটার বিষয় তেমন কিছু জানি না। গাছকাটা ও রোপণ করা এটা আলাদা দপ্তরের কাজ। এ বিষয় আপনি আবদুল আজিজ সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদের ১১ জেলার অ্যাগ্রিকালচারাল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ জানান, আমরা ৭/৮ জন কর্মকর্তারা মিলে মোট ১৮৩টি গাছের টেন্ডার দিয়েছি। এই টেন্ডরের মধ্যে শুধুমাত্র সড়কের পাশে থাকা মরা গাছ বা ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ রয়েছে। টেন্ডারটি ঢাকা মিরপুরের পাইকপাড়া অফিস থেকে দেয়া হয়েছে। তবে কত টাকার টেন্ডার হয়েছে আমার মনে নাই। টেন্ডারের শর্তের বাইরে গাছ কাটা হলে সে বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।

রবিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২১ , ১২ বৈশাখ ১৪২৮ ১২ রমজান ১৪৪২

টেন্ডারের নামে সরকারি গাছ কেটে সাবাড় কোটি টাকা হরিলুট

কেএম রুবেল, ফরিদপুর

টেন্ডারের নামে কয়েক হাজার সরকারি গাছ কেটে কোটি টাকার হরিলুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল দুপুরে ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত সড়কের দু’পাশের গাছ প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে সাবাড় করছেন নামধারী ঠিকাদারের লোকজন। যেখানে গাছগুলোতে নেই কোন টেন্ডারকৃত সিল। কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করেই সুভংকরের ফাঁকি দিয়েই উজাড় হচ্ছে গাছগুলোর কেটে ফেলার কার্যক্রম। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে টেন্ডারের শর্ত এড়িয়ে কাটা হচ্ছে সড়কের পাশে থাকা বড় বড় মূল্যবান দামি সরকারি গাছগুলো ফলে কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

মহাসড়কের দুই পাশে বড় বড় বিভিন্ন প্রকার মেহেগনি, রেনট্রি, খৈয়া বাবলা গাছসহ হাজার হাজার গাছের খ- পড়ে আছে। গত কয়েকদিন ধরেই সড়কের দুই পাশের সরকারি সিলবিহীন হাজারো গাছ প্রকাশ্য দিবালোকে কেটে ট্রাকে ভরে নিয়ে যাচ্ছেন জনৈক নামধারী ঠিকাদার বরিশাল ভোলার সুমন ও তার লোকজন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ভাঙ্গা থেকে বরিশাল ভুরঘাটা পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে ২৮৩টি গাছের টেন্ডার ৭/৮টি ভাগে মাত্র ২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় দেয়া হয়েছে। যারমধ্যে ভাঙ্গা থেকে টেকেরহাট পর্যন্ত ১৬৯টি গাছে মাত্র ১ লাখ টাকায় টেন্ডার দেয়া হয়েছে। এতে দেখা যায়, ১৬৯টি গাছের পরিবর্তে ঠিকাদারের লোকজন সিলবিহীন হাজারো মূল্যবান গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে ১টি গাছের মূল্য রয়েছে কমপক্ষে লক্ষাধিক টাকা। সেখানে প্রতিদিনই কেটে সাবাড় করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকার মূল্যের সরকারি গাছ। এতে সরকার কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হচ্ছে।

গাছ কাটার সময়ে শ্রমিক মনির মিয়া জানান, আমরা গাছ ভর্তি প্রতি ট্রাকের জন্য ৫ হাজার টাকায় ঠিকাদার সুমনের কাছ থেকে কন্ট্রাক নিয়েছি। আমরা প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫টি ট্রাক গাছ ভরে যশোর ও কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন জায়গায় পাঠাচ্ছি। এই পর্যন্ত আমরা গাছ ও ডালপালাসহ ২ হাজারের বেশি গাছ কেটেছি।

এ বিষয়ে ঠিকাদার সুমন জানান, আমি কিছুই জানি না। আপনারা ঠিকাদার আবদুল খালেক মিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। পরে এ বিষয় জানতে আবদুল খালেক মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

ভাঙ্গা সড়ক ও জনপদের এসও আনিচ জানান, আমি গাছ কাটার বিষয় তেমন কিছু জানি না। গাছকাটা ও রোপণ করা এটা আলাদা দপ্তরের কাজ। এ বিষয় আপনি আবদুল আজিজ সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদের ১১ জেলার অ্যাগ্রিকালচারাল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ জানান, আমরা ৭/৮ জন কর্মকর্তারা মিলে মোট ১৮৩টি গাছের টেন্ডার দিয়েছি। এই টেন্ডরের মধ্যে শুধুমাত্র সড়কের পাশে থাকা মরা গাছ বা ঝড়ে পড়ে যাওয়া গাছ রয়েছে। টেন্ডারটি ঢাকা মিরপুরের পাইকপাড়া অফিস থেকে দেয়া হয়েছে। তবে কত টাকার টেন্ডার হয়েছে আমার মনে নাই। টেন্ডারের শর্তের বাইরে গাছ কাটা হলে সে বিষয় খতিয়ে দেখা হবে।