টিকা সংকট, প্রথম ডোজ আপাতত বন্ধ

আগামী মাসের প্রথম দিকে ২১ লাখ ডোজ পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে : স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

ভ্যাকসিন (টিকা) সংকট সহসাই কাটছে না। চলমান টিকা কর্মসূচি অব্যাহত রাখাই এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগামী মাসের প্রথমদিকে ২১ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার আশা করলেও টিকা সংকটের কারণে প্রথম ডোজ আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টিকার মজুদ কমে আসা এবং ভারত থেকে টিকা পেতে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, বারবার আশ^াস দেয়া হলেও ভারত থেকে টিকা মিলছে না। এই অনিশ্চয়তা মাথায় রেখেই আপাতত প্রথম ডোজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাছাড়া ভারত এখন নিজেরাই টিকার সংকটে পড়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তারা টিকা ও টিকার কাঁচামাল চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছে। এই অবস্থায় দেশটির পক্ষে সহসাই টিকা রপ্তানি করা খুব কঠিন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, মে মাসে সেরামের ২০ লাখ ডোজ করোনা টিকা আসার কথা জানিয়েছে বেক্সিমকো। বেক্সিমকো গত ২৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ তথ্য জানান বলে দাবি করেন মহাপরিচালক।

যদিও ২৪ এপ্রিল বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা পাওয়ার অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছেন। তিনি চুক্তি অনুযায়ী করোনার টিকা পেতে সরকারকে জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেছেন।

সেরাম টিকা না দিলে দ্বিতীয় ডোজের সংকট হবে-জানিয়ে নাজমুল হাসান বলেন, ‘এ বিষয়টি সরকারকে জোরালোভাবে বলা উচিত। কারণ দেড় কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের জন্য সরকার তাদের অগ্রিম টাকা দিয়েছে।’ সেরাম এ পর্যন্ত দুটি চালানে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে বাংলাদেশকে।

এর আগে ১ এপ্রিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার চালান দেশে আসবে। ওইদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে টিকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা আমাকে এমনটিই জানিয়েছে। আর পরবর্তী চালানে ২০ লাখের মতো ডোজ আসতে পারে।’

প্রথম ডোজের টিকা বন্ধ আজ থেকে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএইচ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গতকাল প্রথম ডোজের টিকা বন্ধের কথা জানানো হয়। এই চিঠি দেশের সব জেলার সিভিল সার্জন, সিটি করপোরেশনগুলোর প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং সব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘আগামী ২৬ এপ্রিল ২০২১ হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের প্রথম ডোজ টিকা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে আপনার আওতাধীন সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রসমূহে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করা হলো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশক্রমে পত্রটি প্রেরণ করা হলো।’

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা দিয়ে দেশে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে সবাইকে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান শুরু করে সরকার। আর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয় গত ৮ এপ্রিল। প্রথম ডোজ বন্ধ হলেও দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া চলবে জানিয়ে ডা. শামসুল হক বলেন, প্রথম ডোজ টিকাদান আবার কবে চালু হবে তা নির্ভর করছে টিকার প্রাপ্যতার ওপর।

টিকার মজুদ ফুরিয়েছে

সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা এবং ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাঠানো টিকা মিলিয়ে এ পর্যন্ত এক কোটি তিন লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে গতকাল পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন ২৩ লাখ ২৬ হাজার ৮৬৬ জন। এ পর্যন্ত মোট প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৮ হাজার ৪০০ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় মিলে টিকা দেয়া হয়েছে ৮১ লাখ ৪৫ হাজার ২৬৬ ডোজ। বিতরণ করা টিকা বাদ দিলে হাতে মজুদ আছে মাত্র ২১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৩৪ ডোজ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক পরিচালক গতকাল সংবাদকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত যে মজুদ আছে তা দিয়ে আরও দুই সপ্তাহ কর্মসূচি অব্যাহত রাখা যাবে। এর মধ্যে টিকার যোগান না হলে কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে।

প্রথম ডোজ গ্রহণকারী সবাই দ্বিতীয় ডোজ পাবে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শামসুল হক জানান, এটা সময় এলে বলা যাবে। অনেকে এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে গেছেন, তাদের দেরিতে টিকা নিতে হবে। আবার অনেকেই নানা কারণে দেরিতে টিকা নেয়। এ কারণে এটা এখনই বলা যাবে না।

বিকল্প উপায়ে টিকা পেতে তোড়জোড়

‘ফাইজার বায়োএনটেক’র এক লাখ ডোজ টিকা আগামী মাসে বাংলাদেশে আসবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।

টিকা পেতে ‘কোভ্যাক্স’র সঙ্গে অনেক আগে থেকেই চুক্তি ছিল জানিয়ে ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ‘তারা আমাদের মোট যে টিকা দেবে তার ১০ ভাগ ফ্রি আসার কথা। প্রথম দফায় সেখান থেকে ফাইজার বায়োএনটেকের এক লাখ টিকা চলে আসবে বলে তারা জানিয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমাদের জানানো হবে, অন্যান্য জায়গা থেকে কত সংখ্যক কোন টিকা আনা হবে।’

দেশে এখন অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তাদের বাধার কারণে আমাদের টিকা দিতে পারছে না। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, যাদের মাধ্যমে টিকা আনার কথা, তাদের বলেছে, অন্তত ২০ লাখ টিকা যেন অতি দ্রুত তাদের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হয়। কারণ, এটি সেরাম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সরকার এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ছিল।’

এছাড়া টিকার জন্য নানাভাবে সরকার চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চীন থেকে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি এদেশে প্রস্তুত করার জন্য সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। চীন সরকার ছয় লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে প্রদান করবে বলে জানিয়েছে।’

সোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১ , ১৩ বৈশাখ ১৪২৮ ১৩ রমজান ১৪৪২

টিকা সংকট, প্রথম ডোজ আপাতত বন্ধ

আগামী মাসের প্রথম দিকে ২১ লাখ ডোজ পাওয়ার আশা করা যাচ্ছে : স্বাস্থ্য কর্মকর্তা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ভ্যাকসিন (টিকা) সংকট সহসাই কাটছে না। চলমান টিকা কর্মসূচি অব্যাহত রাখাই এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগামী মাসের প্রথমদিকে ২১ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার আশা করলেও টিকা সংকটের কারণে প্রথম ডোজ আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টিকার মজুদ কমে আসা এবং ভারত থেকে টিকা পেতে অনিশ্চয়তা তৈরি হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংবাদকে বলেন, বারবার আশ^াস দেয়া হলেও ভারত থেকে টিকা মিলছে না। এই অনিশ্চয়তা মাথায় রেখেই আপাতত প্রথম ডোজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাছাড়া ভারত এখন নিজেরাই টিকার সংকটে পড়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দেশটি ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। তারা টিকা ও টিকার কাঁচামাল চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চেয়েছে। এই অবস্থায় দেশটির পক্ষে সহসাই টিকা রপ্তানি করা খুব কঠিন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, মে মাসে সেরামের ২০ লাখ ডোজ করোনা টিকা আসার কথা জানিয়েছে বেক্সিমকো। বেক্সিমকো গত ২৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে এ তথ্য জানান বলে দাবি করেন মহাপরিচালক।

যদিও ২৪ এপ্রিল বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল হাসান পাপন ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা পাওয়ার অনিশ্চয়তার কথা জানিয়েছেন। তিনি চুক্তি অনুযায়ী করোনার টিকা পেতে সরকারকে জোরালো পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেছেন।

সেরাম টিকা না দিলে দ্বিতীয় ডোজের সংকট হবে-জানিয়ে নাজমুল হাসান বলেন, ‘এ বিষয়টি সরকারকে জোরালোভাবে বলা উচিত। কারণ দেড় কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের জন্য সরকার তাদের অগ্রিম টাকা দিয়েছে।’ সেরাম এ পর্যন্ত দুটি চালানে মাত্র ৭০ লাখ ডোজ টিকা দিয়েছে বাংলাদেশকে।

এর আগে ১ এপ্রিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক কয়েকটি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকার চালান দেশে আসবে। ওইদিন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে টিকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মা আমাকে এমনটিই জানিয়েছে। আর পরবর্তী চালানে ২০ লাখের মতো ডোজ আসতে পারে।’

প্রথম ডোজের টিকা বন্ধ আজ থেকে

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসিঅ্যান্ডএইচ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. শামসুল হক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে গতকাল প্রথম ডোজের টিকা বন্ধের কথা জানানো হয়। এই চিঠি দেশের সব জেলার সিভিল সার্জন, সিটি করপোরেশনগুলোর প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং সব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, ‘আগামী ২৬ এপ্রিল ২০২১ হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রমের প্রথম ডোজ টিকা প্রদান সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। এ বিষয়ে আপনার আওতাধীন সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রসমূহে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ করা হলো। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশক্রমে পত্রটি প্রেরণ করা হলো।’

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা দিয়ে দেশে টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই টিকার দুটি ডোজ নিতে হবে সবাইকে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশে গণটিকাদান শুরু করে সরকার। আর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয় গত ৮ এপ্রিল। প্রথম ডোজ বন্ধ হলেও দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া চলবে জানিয়ে ডা. শামসুল হক বলেন, প্রথম ডোজ টিকাদান আবার কবে চালু হবে তা নির্ভর করছে টিকার প্রাপ্যতার ওপর।

টিকার মজুদ ফুরিয়েছে

সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে সরকারের কেনা এবং ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পাঠানো টিকা মিলিয়ে এ পর্যন্ত এক কোটি তিন লাখ ডোজ টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে গতকাল পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছেন ২৩ লাখ ২৬ হাজার ৮৬৬ জন। এ পর্যন্ত মোট প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৮ হাজার ৪০০ জন। প্রথম ও দ্বিতীয় মিলে টিকা দেয়া হয়েছে ৮১ লাখ ৪৫ হাজার ২৬৬ ডোজ। বিতরণ করা টিকা বাদ দিলে হাতে মজুদ আছে মাত্র ২১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৩৪ ডোজ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক পরিচালক গতকাল সংবাদকে জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত যে মজুদ আছে তা দিয়ে আরও দুই সপ্তাহ কর্মসূচি অব্যাহত রাখা যাবে। এর মধ্যে টিকার যোগান না হলে কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হবে।

প্রথম ডোজ গ্রহণকারী সবাই দ্বিতীয় ডোজ পাবে কিনা, এ প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. শামসুল হক জানান, এটা সময় এলে বলা যাবে। অনেকে এর মধ্যে অসুস্থ হয়ে গেছেন, তাদের দেরিতে টিকা নিতে হবে। আবার অনেকেই নানা কারণে দেরিতে টিকা নেয়। এ কারণে এটা এখনই বলা যাবে না।

বিকল্প উপায়ে টিকা পেতে তোড়জোড়

‘ফাইজার বায়োএনটেক’র এক লাখ ডোজ টিকা আগামী মাসে বাংলাদেশে আসবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়োজিত এক সংবাদ বুলেটিনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।

টিকা পেতে ‘কোভ্যাক্স’র সঙ্গে অনেক আগে থেকেই চুক্তি ছিল জানিয়ে ডা. রোবেদ আমিন বলেন, ‘তারা আমাদের মোট যে টিকা দেবে তার ১০ ভাগ ফ্রি আসার কথা। প্রথম দফায় সেখান থেকে ফাইজার বায়োএনটেকের এক লাখ টিকা চলে আসবে বলে তারা জানিয়েছে। পরবর্তী সময়ে আমাদের জানানো হবে, অন্যান্য জায়গা থেকে কত সংখ্যক কোন টিকা আনা হবে।’

দেশে এখন অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তাদের বাধার কারণে আমাদের টিকা দিতে পারছে না। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, যাদের মাধ্যমে টিকা আনার কথা, তাদের বলেছে, অন্তত ২০ লাখ টিকা যেন অতি দ্রুত তাদের মাধ্যমে ব্যবস্থা করা হয়। কারণ, এটি সেরাম ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ সরকার এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি ছিল।’

এছাড়া টিকার জন্য নানাভাবে সরকার চেষ্টা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘চীন থেকে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি এদেশে প্রস্তুত করার জন্য সরকার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। চীন সরকার ছয় লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে প্রদান করবে বলে জানিয়েছে।’