কোন তদারকি ছিল না
করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর লকডাউনের মধ্যেই গতকাল থেকে খুলে দেয়া হয়েছে দোকানপাট ও শপিংমল। তবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্ত দেয়া হলেও তা মানতে দেখা যায়নি দোকানপাট ও শপিংমল খোলার প্রথম দিন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পযর্ন্ত রাজধানীর শপিংমলগুলোতে গিয়ে এ চিত্র দেখো গেছে। এদিকে রাজধানীতে দোকানপাট ও শপিংমল রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। আগে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা বলা হয়েছিল।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শপিংমল খোলার পাশাপাশি ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ পোশাকের দোকানও চালু হয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় গুটিকয়েক বিপণিবিতান এখনও বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। বিক্রেতারা বলছেন, মার্কেটের নিয়ম শিথিল হলেও গণপরিবহন বন্ধ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ রাস্তাঘাটে বের হচ্ছে না। ফলে বিপণি বিতান খুললেও ক্রেতা সেভাবে আসছে না।
দোকান ও শপিংমল খোলার অনুমতি দেয়া হলেও বাইরে বের হতে আগের মতোই মুভমেন্ট পাস লাগবে বলে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে গতকাল ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা কাউকেই মুভমেন্ট পাসের জন্য আটকাতে দেখা যায়নি।
সকালে রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, এলিফেন্ট রোড, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া এলাকার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা সমাগম কম হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি খুব একটা মানা হয়নি। তবে বেশিরভাগ ক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা গেছে। একাধিক ক্রেতা এই প্রতিনিধিকে বলেন, এখন মার্কেট খুললেও অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন। এজন্য অনেকেই মাস্ক পরে মার্কেটে এসেছেন। তবে তার মতে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যে নিয়ম মেনে চলার কথা ক্রেতাদের তা হচ্ছে না। তিনি বলেন, মার্কেটে স্যানিটাইজার রাখা হলেও তা খুব একটা ব্যবহার করতে দেখছি না। মার্কেটের কোন কর্মী স্যানিটাইজার ব্যবহারে ক্রেতাদের বাধ্য করতেও দেখা যাচ্ছে না।
সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পরিবারসহ কেনাকাটা করতে এসেছিলেন শাহাবুদ্দিন নামের একজন। তিনি জানালেন, সরকার লকডাউন তুলে দিলেই সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। সে কারণে ভিড় বাড়ার আগেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু কেনাকাটা সেরে নিতে এসেছেন। তবে তিনি ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তার মতে এক সঙ্গে যদি ১০/১৫ জন ক্রেতা ছোট দোকানে ঢুকে কেনাকাটা করতে থাকেন তবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হলো কিভাবে?
গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের বিধি-নিষেধ শিথিল করে গতকাল থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকেও সরকারের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল। এখন বলা হচ্ছে, রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত ছিল তা পরিবর্তন হয়ে গতকাল থেকেই রাত ৯টা পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। লকডাউনের মেয়াদ ২৮ এপ্রিলের পর আর বাড়ছে না বলে ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন।
ঢাকা নিউ মাকের্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ড. দেওয়ান আমিনুর ইসলাম শাহিন সংবাদকে বলেন, যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকান ও শপিংমল চালু করে প্রয়োজনে আমরা সেই দোকান বন্ধ করে দেব। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি কিংবা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা মার্কেট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর নির্দেশের কথা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন সংবাদকে বলেন, দেশে ৯০ ভাগ মানুষ এখন মাস্ক পরছেন, পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এত সংখ্যক মানুষ মাস্ক পরেন না। আর মাস্ক পরে দোকানে প্রবেশ করা ক্রেতার সংখ্যা শতভাগ। দোকানিরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে দোকানিরা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।
এদিকে দোকানপাট ও শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে সতর্ক করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকান খুললে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ডিএনসিসির মোবাইল কোর্ট। গতকাল হাতিরঝিলে মহানগর আর্মি ক্যাম্পে হাতিরঝিল সংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে করণীয় এক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, খোলা থাকা দোকানে আমাদের মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করবে। অভিযানে যদি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দেখতে পান দোকনাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
লকডাউন চলছে, দোকানপাট মার্কেট খুলেছে। প্রথম দিনই দোকানে দোকানে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ভিড়। গতকাল নিউমার্কেটের দোকান চিত্র -সংবাদ
আরও খবরসোমবার, ২৬ এপ্রিল ২০২১ , ১৩ বৈশাখ ১৪২৮ ১৩ রমজান ১৪৪২
কোন তদারকি ছিল না
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
লকডাউন চলছে, দোকানপাট মার্কেট খুলেছে। প্রথম দিনই দোকানে দোকানে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ভিড়। গতকাল নিউমার্কেটের দোকান চিত্র -সংবাদ
করোনা নিয়ন্ত্রণে কঠোর লকডাউনের মধ্যেই গতকাল থেকে খুলে দেয়া হয়েছে দোকানপাট ও শপিংমল। তবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার শর্ত দেয়া হলেও তা মানতে দেখা যায়নি দোকানপাট ও শপিংমল খোলার প্রথম দিন। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পযর্ন্ত রাজধানীর শপিংমলগুলোতে গিয়ে এ চিত্র দেখো গেছে। এদিকে রাজধানীতে দোকানপাট ও শপিংমল রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। আগে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার কথা বলা হয়েছিল।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, শপিংমল খোলার পাশাপাশি ফুটপাতে ভ্রাম্যমাণ পোশাকের দোকানও চালু হয়ে গেছে। তবে কিছু কিছু এলাকায় গুটিকয়েক বিপণিবিতান এখনও বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। বিক্রেতারা বলছেন, মার্কেটের নিয়ম শিথিল হলেও গণপরিবহন বন্ধ। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ রাস্তাঘাটে বের হচ্ছে না। ফলে বিপণি বিতান খুললেও ক্রেতা সেভাবে আসছে না।
দোকান ও শপিংমল খোলার অনুমতি দেয়া হলেও বাইরে বের হতে আগের মতোই মুভমেন্ট পাস লাগবে বলে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে গতকাল ক্রেতা কিংবা বিক্রেতা কাউকেই মুভমেন্ট পাসের জন্য আটকাতে দেখা যায়নি।
সকালে রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, এলিফেন্ট রোড, নিউ মার্কেট, গাউছিয়া এলাকার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে ক্রেতা সমাগম কম হওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি খুব একটা মানা হয়নি। তবে বেশিরভাগ ক্রেতার মুখে মাস্ক দেখা গেছে। একাধিক ক্রেতা এই প্রতিনিধিকে বলেন, এখন মার্কেট খুললেও অনেকেই ব্যক্তিগতভাবে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন। এজন্য অনেকেই মাস্ক পরে মার্কেটে এসেছেন। তবে তার মতে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার যে নিয়ম মেনে চলার কথা ক্রেতাদের তা হচ্ছে না। তিনি বলেন, মার্কেটে স্যানিটাইজার রাখা হলেও তা খুব একটা ব্যবহার করতে দেখছি না। মার্কেটের কোন কর্মী স্যানিটাইজার ব্যবহারে ক্রেতাদের বাধ্য করতেও দেখা যাচ্ছে না।
সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় পরিবারসহ কেনাকাটা করতে এসেছিলেন শাহাবুদ্দিন নামের একজন। তিনি জানালেন, সরকার লকডাউন তুলে দিলেই সপরিবারে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। সে কারণে ভিড় বাড়ার আগেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু কেনাকাটা সেরে নিতে এসেছেন। তবে তিনি ক্রেতাদের স্বাস্থ্যবিধি মানা নিয়ে সন্তুষ্ট নন। তার মতে এক সঙ্গে যদি ১০/১৫ জন ক্রেতা ছোট দোকানে ঢুকে কেনাকাটা করতে থাকেন তবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হলো কিভাবে?
গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের বিধি-নিষেধ শিথিল করে গতকাল থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে বলে জানিয়েছিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকেও সরকারের এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছিল। এখন বলা হচ্ছে, রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলা রাখা যাবে। ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত যে সিদ্ধান্ত ছিল তা পরিবর্তন হয়ে গতকাল থেকেই রাত ৯টা পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। লকডাউনের মেয়াদ ২৮ এপ্রিলের পর আর বাড়ছে না বলে ইতোমধ্যে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন।
ঢাকা নিউ মাকের্ট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ড. দেওয়ান আমিনুর ইসলাম শাহিন সংবাদকে বলেন, যদি কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকান ও শপিংমল চালু করে প্রয়োজনে আমরা সেই দোকান বন্ধ করে দেব। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি কিংবা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা মার্কেট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। তিনি এ ব্যাপারে সরকারের কঠোর নির্দেশের কথা সবাইকে স্মরণ করিয়ে দেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন সংবাদকে বলেন, দেশে ৯০ ভাগ মানুষ এখন মাস্ক পরছেন, পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এত সংখ্যক মানুষ মাস্ক পরেন না। আর মাস্ক পরে দোকানে প্রবেশ করা ক্রেতার সংখ্যা শতভাগ। দোকানিরা এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে দোকানিরা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন।
এদিকে দোকানপাট ও শপিংমলে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়ে সতর্ক করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকান খুললে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ডিএনসিসির মোবাইল কোর্ট। গতকাল হাতিরঝিলে মহানগর আর্মি ক্যাম্পে হাতিরঝিল সংলগ্ন এলাকার জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানে করণীয় এক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, খোলা থাকা দোকানে আমাদের মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করবে। অভিযানে যদি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা দেখতে পান দোকনাগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।