পটিয়ায় নেতা-কর্তা যোগসাজশে নলকূপ বণ্টনে অনিয়ম এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নে আ’লীগ নেতা ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সহায়তায় নলকূপ বণ্টনে অনিয়ম, বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নলকূপ বণ্টনে স্বজন প্রীতি অনিয়মের প্রতিবাদে গত ১৮ এপ্রিল বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানির কষ্টে জর্জরিত ভুক্তভোগী লোকজন বিক্ষোভ করেছে। এছাড়াও আ’লীগ নেতা ইউনুছের বিরুদ্ধে পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উত্তম কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও অভিযোগও করা হয়েছে। জানা যায়, উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানির কষ্ট লাঘবে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি কর্তৃক চলতি অর্থবছরে ২৭টি নলকূপ বরাদ্দ দেয়া হয়। এ ইউনিয়নের উন্নয়ন সমন্বয়কারী পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.ক.ম. সামশুজ্জামান চৌধুরী ছনহরা ইউনিয়নে নলকূপ বণ্টনের জন্য ছনহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুছকে দায়িত্ব দেন। এ সুযোগে আ’লীগ নেতা ইউনুছ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তার পছন্দমতো লোকদের মধ্যে ৮টি ওয়ার্ডে ২-১টি করে নলকূপ বণ্টন করেন। কিন্তু এর মধ্যে ইউনুছের ৩নং ওয়ার্ডে নলকূপ দিয়েছে ৭টি।এ নলকূপগুলোর মধ্যে ইউনুছের বাড়িতে রয়েছে ৪টি। ২শ থেকে ৩শ ফুট দূরত্বের মধ্যে ৪টি নলকূপ দেয়া হয়। এরমধ্যে আ’লীগ নেতা ইউনুছের চাচা মোজাফফ্রকে ১টি, চাচাতো ভাই মোস্তাককে ১টি, তার প্রতিবেশী ওমর আরমানকে ব্যক্তিগতভাবে ১টি নলকূপ দিয়েছেন। এ স্থানে পূর্বের ২টি নলকূপ থাকা স্বত্বেও আরও ৪টি নলকূপ দেয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অন্যদিকে এ ওয়ার্ডের সাহেব মিয়ার বাড়ি এলাকায় ৫০ পরিবারের লোকজনের মধ্যে নলকূপ না থাকলেও এ বাড়িতে নলকূপ দেয়া হয়নি। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উত্তম কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় টিউবওয়েল বণ্টনে অনিয়ম দুর্নীতি ও দলীয় কিছু নেতা কর্মীদের ব্যবহার করে টিউবওয়েল প্রতি টাকা নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নলকূপে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে ছরহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওসমান আলমদার বলেন, টিউবওয়েলগুলো যাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে তাদের নিয়ে ইউনুছ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উত্তম বাবু অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেরা নিজেদের লোকজনকে দেয়ায় এলাকার মানুষ বিক্ষোভ করেছে এবং হুইপ মহোদয়কে এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অভিযোগ আকারে জানিয়েছে এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে ছনহরা ইউনিয়ন আ’লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুছের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এলাকায় নলকূপ বসাতে অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রশীদ দৌলতী বলেন, আমার এলাকায় নলকূপ বসানো হচ্ছে অথচ আমি জানি না, অথচ আমরা নলকূপের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানরা রেজুলেশন করে আমাদের ১৩টি নলকূপ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু নলকূপগুলো কোথায় দেয়া হয়েছে আমি জানি না, এ নিয়ে এলাকায় দলীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, এলাকাবাসী হুইপ মহোদয়ের মাধ্যমে দ্রুত বিষয়টি সমাধান চান। এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উত্তম কুমার মজুমদার বলেন, আমাকে হুইপ মহোদয় যেভাবে তালিকা দিয়েছে সেভাবে নলকূপগুলো বরাদ্দ দিয়েছি। তবে ছরহরায় অনিয়মের অভিযোগ উঠায় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান।

মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১ , ১৪ বৈশাখ ১৪২৮ ১৪ রমজান ১৪৪২

পটিয়ায় নেতা-কর্তা যোগসাজশে নলকূপ বণ্টনে অনিয়ম এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

নজরুল ইসলাম, পটিয়া (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নে আ’লীগ নেতা ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর সহায়তায় নলকূপ বণ্টনে অনিয়ম, বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। নলকূপ বণ্টনে স্বজন প্রীতি অনিয়মের প্রতিবাদে গত ১৮ এপ্রিল বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী। উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানির কষ্টে জর্জরিত ভুক্তভোগী লোকজন বিক্ষোভ করেছে। এছাড়াও আ’লীগ নেতা ইউনুছের বিরুদ্ধে পটিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উত্তম কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়েও অভিযোগও করা হয়েছে। জানা যায়, উপজেলার ছনহরা ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিশুদ্ধ পানির কষ্ট লাঘবে জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপি কর্তৃক চলতি অর্থবছরে ২৭টি নলকূপ বরাদ্দ দেয়া হয়। এ ইউনিয়নের উন্নয়ন সমন্বয়কারী পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.ক.ম. সামশুজ্জামান চৌধুরী ছনহরা ইউনিয়নে নলকূপ বণ্টনের জন্য ছনহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুছকে দায়িত্ব দেন। এ সুযোগে আ’লীগ নেতা ইউনুছ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তার পছন্দমতো লোকদের মধ্যে ৮টি ওয়ার্ডে ২-১টি করে নলকূপ বণ্টন করেন। কিন্তু এর মধ্যে ইউনুছের ৩নং ওয়ার্ডে নলকূপ দিয়েছে ৭টি।এ নলকূপগুলোর মধ্যে ইউনুছের বাড়িতে রয়েছে ৪টি। ২শ থেকে ৩শ ফুট দূরত্বের মধ্যে ৪টি নলকূপ দেয়া হয়। এরমধ্যে আ’লীগ নেতা ইউনুছের চাচা মোজাফফ্রকে ১টি, চাচাতো ভাই মোস্তাককে ১টি, তার প্রতিবেশী ওমর আরমানকে ব্যক্তিগতভাবে ১টি নলকূপ দিয়েছেন। এ স্থানে পূর্বের ২টি নলকূপ থাকা স্বত্বেও আরও ৪টি নলকূপ দেয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। অন্যদিকে এ ওয়ার্ডের সাহেব মিয়ার বাড়ি এলাকায় ৫০ পরিবারের লোকজনের মধ্যে নলকূপ না থাকলেও এ বাড়িতে নলকূপ দেয়া হয়নি। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উত্তম কুমার মজুমদারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায় টিউবওয়েল বণ্টনে অনিয়ম দুর্নীতি ও দলীয় কিছু নেতা কর্মীদের ব্যবহার করে টিউবওয়েল প্রতি টাকা নেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নলকূপে অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে ছরহরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ওসমান আলমদার বলেন, টিউবওয়েলগুলো যাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে তাদের নিয়ে ইউনুছ ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উত্তম বাবু অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেরা নিজেদের লোকজনকে দেয়ায় এলাকার মানুষ বিক্ষোভ করেছে এবং হুইপ মহোদয়কে এবং উপজেলা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অভিযোগ আকারে জানিয়েছে এলাকাবাসী। এ ব্যাপারে ছনহরা ইউনিয়ন আ’লীগের আহ্বায়ক মোহাম্মদ ইউনুছের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এলাকায় নলকূপ বসাতে অনিয়মের বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আব্দুর রশীদ দৌলতী বলেন, আমার এলাকায় নলকূপ বসানো হচ্ছে অথচ আমি জানি না, অথচ আমরা নলকূপের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যানরা রেজুলেশন করে আমাদের ১৩টি নলকূপ দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু নলকূপগুলো কোথায় দেয়া হয়েছে আমি জানি না, এ নিয়ে এলাকায় দলীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে, এলাকাবাসী হুইপ মহোদয়ের মাধ্যমে দ্রুত বিষয়টি সমাধান চান। এ বিষয়ে পটিয়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী উত্তম কুমার মজুমদার বলেন, আমাকে হুইপ মহোদয় যেভাবে তালিকা দিয়েছে সেভাবে নলকূপগুলো বরাদ্দ দিয়েছি। তবে ছরহরায় অনিয়মের অভিযোগ উঠায় বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে বলে তিনি জানান।