লকডাউনে মানবেতর জীবনে শ্রমজীবীরা ওদের পাশে নেই কেউ

সৈয়দপুর

প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

সৈয়দপুরে গতবছর করোনাকালে লকডাউনের সময় বিভিন্ন সংগঠন স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী ও দিনমজুর মানুষের সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে তিন বেলা খাবার জোটাতে হিমশিম খাওয়া নিঃস্ব মানুষের পাশে নেই জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, সমাজসেবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চলমান কঠোর লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবীদের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে দিনমজুররা কাজের খোঁজে বাইরে যেতে পারছে না। আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকায় আয় নেই পরিবহন শ্রমিকদের। পণ্য বিক্রি করতে না পারায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা স্থবির হয়ে গেছে। অথচ লকডাউনে এসব খেটে খাওয়া মানুষকে তিন বেলা খাওয়া জোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আয়-রোজগার না থাকায় ‘লকডাউন’ তাদের জীবনকে সঙ্কটে ফেলেছে। এবারের টানা লকডাউনে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা। এ পেশায় নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক। এদের বেশি ভাগের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ কেউ পেশা বদল করে রিক্সা, ভ্যান ও কৃষি কাজে যুক্ত হয়ে টিকে থাকার লড়াই করছেন। এ নিয়ে বাসটার্মিনালে কথা হয় বাস শ্রমিক মো. লিটনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আয় নেই-ধার দেনা করে দিন পার করছি। আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। সামনে ঈদ কী করব জানি না। গতবছর সরকারিভাবে দু’বার চাল ও ২৫০০ টাকা সহযোগিতা পেয়েছিলাম। কিন্তু এবারে কঠোর লকডাউনে কিছুই পেলাম না। বাস টার্মিনালে কথা হয় মালামাল উঠানামার কাজে যুক্ত লেবার মো. মোক্তার’র সঙ্গে। তিনি বলেন, ৩০-৩৫ বছর ধরে লেবারের কাজ করে আসছি। এ রকম খারাপ অবস্থা জীবনে আসেনি। সংসারে ৫ জনের মধ্যে আমিই একমাত্র উপার্জনকারী। গতবছর করোনাকালে এলাকার মেম্বার নাম লিখে নিয়ে চাল-ডাল-লবণ-তেল-সাবান দিয়েছেন। কিন্তু এবার এই দুর্দিনে কেউ পাশে নাই। লকডাউনের ১০ দিন গত হলেও কেউই সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। এদিকে অর্ধেক টাকায় দিনমজুরি নিয়ে কাজ করছে হোটেল শ্রমিক মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন লকডাউনে বেশিরভাগ হোটেল বন্ধ। তার ওপর রমজান মাস মালিকের বেচাবিক্রি তেমন নাই। তাই পরিবার বাঁচাতে অর্ধেক টাকায় দিনমজুরি করছি। আগে যেখানে ৪০০-৫০০ টাকা পেতাম, বর্তমানে সেখানে ১৫০-২০০ টাকা পাচ্ছি। এ ব্যাপারে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জয়নুল আবেদীনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সৈয়দপুর শহরে প্রায় ২ হাজার নারী-পুরুষ হোটেল শ্রমিকের কাজ করে। যার মধ্যে অল্প কিছু শ্রমিক কাজ করছে অর্ধেক মজুরিতে। অনেক হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছু শ্রমিক কর্মহীন হয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। কেউ কেউ রিক্সা, ভ্যান ও দিনমজুরি পেশায় গিয়ে কোন রকমে চলছে। বর্তমানে আমাদের দূরাবস্থার শেষ নেই। গতবছর উপজেলা প্রশাসন থেকে কিছু ত্রাণ সহযোগিতা করা হয়েছিল। এবারে কিছুই পারছি না। বিভিন্ন জায়গায় ধর্না দিচ্ছি কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না। একইভাবে চলমান লকডাউনে নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ না থাকায় তারাও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কাজ বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়ছে নির্মাণ শ্রমিকরা। শহরের মুন্সীপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি রাজু বলেন, বছরের এই সময়ে আমরা কাজের চাপে খুবই ব্যস্ত থাকি। কিন্তু এই লকডাউনে কোন কাজ নেই। প্রতিদিন সকালে চৌধুরী টাওয়ারের সড়ক মোড়ে আমার মত ৩০ থেকে ৪০ জন কাজের সন্ধানে বসে থাকি। কিন্তু সবার কপালে কাজ জোটে না। অনেকেই নিরাশ হয়ে ঘরে ফিরে যেতে হয়। এমন দুর্দিন চলছে খেটে খাওয়া সব শ্রমজীবীদের। রিক্সাভ্যানের ক্ষুদ্র গেঞ্জি দোকানী মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের দোকানদারী বন্ধ। আয় না থাকায় দেনা করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত বছর করোনাকালে ত্রাণ সহায়তাকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পাশে আছি’র সাধারণ সম্পাদক মো. সালেকুজ্জামান সবুজ বলেন, গতবছর করোনার শুরুতে সবার হাতে টাকা পয়সা ছিল। সবাই সহযোগিতা হাত বাড়িয়েছে। এবার ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা ভালো না। লকডাউনে যে ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও সামাল দিতে পারেনি বিত্তবান ব্যবসায়ীরা। তাই এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারছে না কেউ। আমরা চাইলেও কিছু করতে পারছি না। কারণ এসব সংগঠনে অর্থ দান করতেন বিত্তবানরা। এবার করোনার থাবায় তারাও সামর্থ হারিয়েছে।

দশমিনা

প্রতিনিধি, দশমিনা (পটুয়াখালী)

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারনে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার হতদরিদ্র, দরিদ্র, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, মটরসাইকেল চালক ও দিনমজুরসহ শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে, ২০১১সালের জরিপে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে জনসংখ্যা ১লক্ষ ২৩হাজার ৩শ’ ৮৮জন। যার পুরুষ ৬০হাজার ২শ’ ৪১ ও নারী ৬৩হাজার ১শ’ ৪৭জন। এ মধ্যে প্রতান্ত এলাকায় ১লক্ষ ৪হাজার ১শ’ ৩৬জন এবং শহরে ১৯হাজার ২শ’ ৫২জনের বসবাস। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান ব্যুরো কতৃক দারিদ্র মানচিত্রে এ উপজেলায় দারিদ্রের হার শতকরায় ৫২দশমিক ৮ভাগ। সেই হিসাবে হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে ৬৫হাজার ১শ’ ৪৯জন। তারা দিনে আনে দিনে খায়। কাজ না জুটলে তাদের খাবার জুটে না। লকডাউনের কারণে এ সকল মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। দ্রুত এ সকল শ্রমজীবী অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ প্রশাসন কঠোরভাবেই লকডাউন পালনে কাজ করছে। সড়কে চলতে দিচ্ছে না তেমন যানবাহন। তারপর প্রশাসনের নজর এগিয়ে পরিবার পরিজনের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেয়ার জন্য মাহিন্দ্রা, অটো ও রিকশা চলাচল করছে। কিন্তু সড়কে কোনো বড় ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। উপজেলা পরিষদ সড়কের সামনে চায়ের দোকানী মনির গাজী জানান, করোনায় বন্ধ রয়েছে দোকান। বন্ধ রয়েছে উপার্জনের পথ। মহামারির প্রকোপ ঠেকাতে চলছে কঠোর লকডাউন। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস রমজান। আরেক দোকানী সবুজ হোসেন জানান, দোকান বন্ধ থাকার কারণে তার সংসার খেয়ে না চলছে। অটোচালক ফারুক হোসেন ও মোসারেফ বলেন, পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে রাস্তায় চুরি চুরি করে ১শ’ দেড় শ’ টাকা হইলে বাসায় চলে আসি। গাড়ি চার্জের টাকা কই পামু আর কি খামু। লকডাউনে খুব বিপদে আছি। বয়স হয়েছে তেমন চলতে পারিনা। আয় না করলে পরিবার পরিজন নিয়ে খাওন কই পামু?’।

মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১ , ১৪ বৈশাখ ১৪২৮ ১৪ রমজান ১৪৪২

লকডাউনে মানবেতর জীবনে শ্রমজীবীরা ওদের পাশে নেই কেউ

সৈয়দপুর

প্রতিনিধি, সৈয়দপুর (নীলফামারী)

সৈয়দপুরে গতবছর করোনাকালে লকডাউনের সময় বিভিন্ন সংগঠন স্বল্প আয়ের শ্রমজীবী ও দিনমজুর মানুষের সহায়তায় হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রভাবে তিন বেলা খাবার জোটাতে হিমশিম খাওয়া নিঃস্ব মানুষের পাশে নেই জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, সমাজসেবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। চলমান কঠোর লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমজীবীদের আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে দিনমজুররা কাজের খোঁজে বাইরে যেতে পারছে না। আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ থাকায় আয় নেই পরিবহন শ্রমিকদের। পণ্য বিক্রি করতে না পারায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ব্যবসা স্থবির হয়ে গেছে। অথচ লকডাউনে এসব খেটে খাওয়া মানুষকে তিন বেলা খাওয়া জোটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। আয়-রোজগার না থাকায় ‘লকডাউন’ তাদের জীবনকে সঙ্কটে ফেলেছে। এবারের টানা লকডাউনে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে সড়ক পরিবহন শ্রমিকরা। এ পেশায় নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ২ হাজার শ্রমিক। এদের বেশি ভাগের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। কেউ কেউ পেশা বদল করে রিক্সা, ভ্যান ও কৃষি কাজে যুক্ত হয়ে টিকে থাকার লড়াই করছেন। এ নিয়ে বাসটার্মিনালে কথা হয় বাস শ্রমিক মো. লিটনের সঙ্গে। তিনি বলেন, আয় নেই-ধার দেনা করে দিন পার করছি। আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। সামনে ঈদ কী করব জানি না। গতবছর সরকারিভাবে দু’বার চাল ও ২৫০০ টাকা সহযোগিতা পেয়েছিলাম। কিন্তু এবারে কঠোর লকডাউনে কিছুই পেলাম না। বাস টার্মিনালে কথা হয় মালামাল উঠানামার কাজে যুক্ত লেবার মো. মোক্তার’র সঙ্গে। তিনি বলেন, ৩০-৩৫ বছর ধরে লেবারের কাজ করে আসছি। এ রকম খারাপ অবস্থা জীবনে আসেনি। সংসারে ৫ জনের মধ্যে আমিই একমাত্র উপার্জনকারী। গতবছর করোনাকালে এলাকার মেম্বার নাম লিখে নিয়ে চাল-ডাল-লবণ-তেল-সাবান দিয়েছেন। কিন্তু এবার এই দুর্দিনে কেউ পাশে নাই। লকডাউনের ১০ দিন গত হলেও কেউই সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। এদিকে অর্ধেক টাকায় দিনমজুরি নিয়ে কাজ করছে হোটেল শ্রমিক মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন লকডাউনে বেশিরভাগ হোটেল বন্ধ। তার ওপর রমজান মাস মালিকের বেচাবিক্রি তেমন নাই। তাই পরিবার বাঁচাতে অর্ধেক টাকায় দিনমজুরি করছি। আগে যেখানে ৪০০-৫০০ টাকা পেতাম, বর্তমানে সেখানে ১৫০-২০০ টাকা পাচ্ছি। এ ব্যাপারে হোটেল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. জয়নুল আবেদীনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সৈয়দপুর শহরে প্রায় ২ হাজার নারী-পুরুষ হোটেল শ্রমিকের কাজ করে। যার মধ্যে অল্প কিছু শ্রমিক কাজ করছে অর্ধেক মজুরিতে। অনেক হোটেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কিছু শ্রমিক কর্মহীন হয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছে। কেউ কেউ রিক্সা, ভ্যান ও দিনমজুরি পেশায় গিয়ে কোন রকমে চলছে। বর্তমানে আমাদের দূরাবস্থার শেষ নেই। গতবছর উপজেলা প্রশাসন থেকে কিছু ত্রাণ সহযোগিতা করা হয়েছিল। এবারে কিছুই পারছি না। বিভিন্ন জায়গায় ধর্না দিচ্ছি কিন্তু কোন লাভ হচ্ছে না। একইভাবে চলমান লকডাউনে নির্মাণ শ্রমিকদের কাজ না থাকায় তারাও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কাজ বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়ছে নির্মাণ শ্রমিকরা। শহরের মুন্সীপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রি রাজু বলেন, বছরের এই সময়ে আমরা কাজের চাপে খুবই ব্যস্ত থাকি। কিন্তু এই লকডাউনে কোন কাজ নেই। প্রতিদিন সকালে চৌধুরী টাওয়ারের সড়ক মোড়ে আমার মত ৩০ থেকে ৪০ জন কাজের সন্ধানে বসে থাকি। কিন্তু সবার কপালে কাজ জোটে না। অনেকেই নিরাশ হয়ে ঘরে ফিরে যেতে হয়। এমন দুর্দিন চলছে খেটে খাওয়া সব শ্রমজীবীদের। রিক্সাভ্যানের ক্ষুদ্র গেঞ্জি দোকানী মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের দোকানদারী বন্ধ। আয় না থাকায় দেনা করে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। গত বছর করোনাকালে ত্রাণ সহায়তাকারী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পাশে আছি’র সাধারণ সম্পাদক মো. সালেকুজ্জামান সবুজ বলেন, গতবছর করোনার শুরুতে সবার হাতে টাকা পয়সা ছিল। সবাই সহযোগিতা হাত বাড়িয়েছে। এবার ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা ভালো না। লকডাউনে যে ক্ষতি হয়েছে, তা এখনও সামাল দিতে পারেনি বিত্তবান ব্যবসায়ীরা। তাই এবার করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারছে না কেউ। আমরা চাইলেও কিছু করতে পারছি না। কারণ এসব সংগঠনে অর্থ দান করতেন বিত্তবানরা। এবার করোনার থাবায় তারাও সামর্থ হারিয়েছে।

দশমিনা

প্রতিনিধি, দশমিনা (পটুয়াখালী)

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামাল দিতে সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারনে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার হতদরিদ্র, দরিদ্র, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, মটরসাইকেল চালক ও দিনমজুরসহ শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে তারা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে, ২০১১সালের জরিপে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে জনসংখ্যা ১লক্ষ ২৩হাজার ৩শ’ ৮৮জন। যার পুরুষ ৬০হাজার ২শ’ ৪১ ও নারী ৬৩হাজার ১শ’ ৪৭জন। এ মধ্যে প্রতান্ত এলাকায় ১লক্ষ ৪হাজার ১শ’ ৩৬জন এবং শহরে ১৯হাজার ২শ’ ৫২জনের বসবাস। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যান ব্যুরো কতৃক দারিদ্র মানচিত্রে এ উপজেলায় দারিদ্রের হার শতকরায় ৫২দশমিক ৮ভাগ। সেই হিসাবে হতদরিদ্র মানুষ রয়েছে ৬৫হাজার ১শ’ ৪৯জন। তারা দিনে আনে দিনে খায়। কাজ না জুটলে তাদের খাবার জুটে না। লকডাউনের কারণে এ সকল মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। দ্রুত এ সকল শ্রমজীবী অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ প্রশাসন কঠোরভাবেই লকডাউন পালনে কাজ করছে। সড়কে চলতে দিচ্ছে না তেমন যানবাহন। তারপর প্রশাসনের নজর এগিয়ে পরিবার পরিজনের মুখে দু’মুঠো ভাত তুলে দেয়ার জন্য মাহিন্দ্রা, অটো ও রিকশা চলাচল করছে। কিন্তু সড়কে কোনো বড় ধরনের যানবাহন চলাচল করছে না। উপজেলা পরিষদ সড়কের সামনে চায়ের দোকানী মনির গাজী জানান, করোনায় বন্ধ রয়েছে দোকান। বন্ধ রয়েছে উপার্জনের পথ। মহামারির প্রকোপ ঠেকাতে চলছে কঠোর লকডাউন। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পবিত্র সিয়াম সাধনার মাস রমজান। আরেক দোকানী সবুজ হোসেন জানান, দোকান বন্ধ থাকার কারণে তার সংসার খেয়ে না চলছে। অটোচালক ফারুক হোসেন ও মোসারেফ বলেন, পুলিশকে ফাঁকি দিয়ে রাস্তায় চুরি চুরি করে ১শ’ দেড় শ’ টাকা হইলে বাসায় চলে আসি। গাড়ি চার্জের টাকা কই পামু আর কি খামু। লকডাউনে খুব বিপদে আছি। বয়স হয়েছে তেমন চলতে পারিনা। আয় না করলে পরিবার পরিজন নিয়ে খাওন কই পামু?’।