রাশিয়ার স্পুৎনিক টিকার অনুমোদন, আগামী মাসেই ৪০ লাখের আশা

রাশিয়ার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা ‘স্পুৎনিক ভি’ বাংলাদেশে আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগামী মাসেই এই টিকার ৪০ লাখ ডোজ আসার সম্ভাবনা আছে বলে অনুমোদনের পর জানানো হয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারতে টিকার স্বল্পতায় তারা এখন টিকা দিতে পারছে না। ফলে রাশিয়া থেকে টিকা আনার চেষ্টা চলছে, তবে দুই সপ্তাহের আগে দেশে টিকা আনা সম্ভব না বলে জানান মন্ত্রী।

দেশে টিকা সংকটে গত ২৪ এপ্রিল ‘স্পুৎনিক’ টিকা ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল।

মাহবুবুর রহমান জানান, ‘স্পুৎনিক-ভি’ ছাড়াও চীনের সিনোফার্মের (চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ) টিকা অনুমোদনের বিষয়েও তারা কাজ করছেন। ‘যে ভ্যাকসিন দেশের জন্য প্রয়োজন, বিভিন্ন উৎস থেকে সেটি পাওয়ার চেষ্টা করছি,’ বলেন তিনি।

‘স্পুৎনিক-ভি’ টিকার অনুমোদনের পর বাংলাদেশে অনুমোদন পাওয়া টিকার সংখ্যা দাঁড়ালো দুটি। এর আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল। দেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্যবিদ, টিকা বিশেষজ্ঞ, ওষুধবিজ্ঞানী ও রোগতত্ত্ববিদদের একটি কমিটির এই অনুমোদন দেয়।

দেশে ভারত থেকে টিকা আসার অনিশ্চয়তায় গতকাল থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রথম ডোজ দেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার জন্য মজুদ এখন সরকারের হাতে নেই। গত সোমবার পর্যন্ত ৮২ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন দিলে বা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড-এই সাত দেশে ব্যবহারের অনুমোদন থাকলে সেসব ওষুধ, টিকা বা চিকিৎসাসামগ্রী বাংলাদেশে অনুমোদন দেয়া হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ধরে নেয়া হয় বৈজ্ঞানিকভাবে কার্যকর ও নিরাপদ বলেই এসব ওষুধ ও টিকা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বা ওই দেশগুলো অনুমোদন দেয়। কিন্তু রাশিয়ার টিকাটি ওসব দেশ বা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন এখনও পায়নি। সে কারণে টিকাটির বিশেষ অনুমোদন দরকার ছিল।

দেশের জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ল্যানসেট-এ প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে দেখা গেছে, রাশিয়ার টিকার কার্যকারিতা ৯১ শতাংশের কিছু বেশি। আর মাঠ গবেষণায় এর কার্যকারিতা পাওয়া গেছে ৯৬ শতাংশের বেশি। টিকাটি ৫০টির বেশি দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ইতোমধ্যে বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ এই টিকা নিয়েছেন।

বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১ , ১৫ বৈশাখ ১৪২৮ ১৫ রমজান ১৪৪২

রাশিয়ার স্পুৎনিক টিকার অনুমোদন, আগামী মাসেই ৪০ লাখের আশা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

রাশিয়ার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা ‘স্পুৎনিক ভি’ বাংলাদেশে আমদানি ও জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আগামী মাসেই এই টিকার ৪০ লাখ ডোজ আসার সম্ভাবনা আছে বলে অনুমোদনের পর জানানো হয়েছে।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন গতকাল সাংবাদিকদের বলেছেন, ভারতে টিকার স্বল্পতায় তারা এখন টিকা দিতে পারছে না। ফলে রাশিয়া থেকে টিকা আনার চেষ্টা চলছে, তবে দুই সপ্তাহের আগে দেশে টিকা আনা সম্ভব না বলে জানান মন্ত্রী।

দেশে টিকা সংকটে গত ২৪ এপ্রিল ‘স্পুৎনিক’ টিকা ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল।

মাহবুবুর রহমান জানান, ‘স্পুৎনিক-ভি’ ছাড়াও চীনের সিনোফার্মের (চায়না ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল গ্রুপ) টিকা অনুমোদনের বিষয়েও তারা কাজ করছেন। ‘যে ভ্যাকসিন দেশের জন্য প্রয়োজন, বিভিন্ন উৎস থেকে সেটি পাওয়ার চেষ্টা করছি,’ বলেন তিনি।

‘স্পুৎনিক-ভি’ টিকার অনুমোদনের পর বাংলাদেশে অনুমোদন পাওয়া টিকার সংখ্যা দাঁড়ালো দুটি। এর আগে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছিল। দেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্যবিদ, টিকা বিশেষজ্ঞ, ওষুধবিজ্ঞানী ও রোগতত্ত্ববিদদের একটি কমিটির এই অনুমোদন দেয়।

দেশে ভারত থেকে টিকা আসার অনিশ্চয়তায় গতকাল থেকে প্রথম ডোজের টিকা দেয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রথম ডোজ দেয়ার পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ১৩ লাখ মানুষকে টিকা দেয়ার জন্য মজুদ এখন সরকারের হাতে নেই। গত সোমবার পর্যন্ত ৮২ লাখ ৭৭ হাজারের বেশি ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন দিলে বা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড-এই সাত দেশে ব্যবহারের অনুমোদন থাকলে সেসব ওষুধ, টিকা বা চিকিৎসাসামগ্রী বাংলাদেশে অনুমোদন দেয়া হয়। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, ধরে নেয়া হয় বৈজ্ঞানিকভাবে কার্যকর ও নিরাপদ বলেই এসব ওষুধ ও টিকা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা বা ওই দেশগুলো অনুমোদন দেয়। কিন্তু রাশিয়ার টিকাটি ওসব দেশ বা বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন এখনও পায়নি। সে কারণে টিকাটির বিশেষ অনুমোদন দরকার ছিল।

দেশের জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, ল্যানসেট-এ প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধে দেখা গেছে, রাশিয়ার টিকার কার্যকারিতা ৯১ শতাংশের কিছু বেশি। আর মাঠ গবেষণায় এর কার্যকারিতা পাওয়া গেছে ৯৬ শতাংশের বেশি। টিকাটি ৫০টির বেশি দেশে ব্যবহার করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, ইতোমধ্যে বিশ্বের কয়েক কোটি মানুষ এই টিকা নিয়েছেন।