আর কত প্রাণ গেলে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন স্থানান্তর হবে

একটি নিরাপদ শহর কে না চায়? যেখানে থাকবে না কোন আকস্মিক মৃত্যু, থাকবে না কোন স্বজন হারানোর গগনবিদারী চিৎকার। কিন্তু আমরা ব্যর্থ পারিনি এমন একটা পরিবেশ দিতে। বলছিলাম পুরান ঢাকার সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। আরমানিটোলা খেলার মাঠসংলগ্ন হাজি ম্যানশন ছয়তলা ভবনে কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লেগে নারীসহ চারজনের প্রাণহানি এবং ২০ জনের মতো দগ্ধ হয়েছে, যা সত্যিই বেদনাদায়ক। এ যেন ঘুরেফিরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুরিহাট্টা ট্রাজেডিতে প্রাণ গেল তরতাজা ৬৭ জনের। এর আগে ২০১০ সালের জুন মাসে নিমতলীর অগ্নিকা-ে কেড়ে নিয়েছিল ১২০ জনের। প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস এই শহরে। আর এর মধ্যে পুরান ঢাকা হলো খিঞ্জি এলাকা যেখানে পর্যাপ্ত জায়গা নেই, যে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গাড়ি নিয়ে যাবেন। ভাগ্য ভালো ওই দুর্ঘটনা ভোরে সংঘটিত হয়েছিল, দিনের বেলায় হলে উদ্ধার অভিযানে বেগ পেতে হতো। ওই হাজি মেনশনের নিচ তলায় ছিল প্রায় কেমিক্যালের ১৮টি দোকান। যেখান হতে এই দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়। এমনিভাবে ঢাকার অধিকাংশ আবাসিক ভবনের নিচতলায় কেমিক্যালের গোডাউন।

ঢাকার নিমতলীর ট্র্যাজেডির পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিপদজনক কেমিক্যাল কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু তার বাস্তবায়ন কতটুকু হয়েছে? পুরান ঢাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে কেমিক্যালের কারখানা। পরিবেশবাদী সংগঠন বাপার ২০১৭ সালের গবেষণা মতে, পুরান ঢাকায় রয়েছে ২৫ হাজার রাসায়নিক গুদাম, এগুলোর মধ্যে বাসা বাড়িতেই সংযুক্ত ১৫ হাজার। মাত্র আড়াই হাজারের মতো ট্রেন্ড লাইসেন্স দিয়েছেসিটি করপোরেশন। বাকি সব গুদাম অবৈধ। যখনই কোন ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটে তখন খুব বুলি আওড়ালে ও পরবর্তীতে ভুলে যায়। মানুষের জীবনযাপন হোক নিরাপদ এবং শঙ্কামুক্ত। এবং এই সব ভয়াবহ রাসায়নিক পদার্থ অতিদ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হোক। আর কারো মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ শুনতে চাই না।

আবদিম মুনিব

বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১ , ১৫ বৈশাখ ১৪২৮ ১৫ রমজান ১৪৪২

আর কত প্রাণ গেলে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গোডাউন স্থানান্তর হবে

image

একটি নিরাপদ শহর কে না চায়? যেখানে থাকবে না কোন আকস্মিক মৃত্যু, থাকবে না কোন স্বজন হারানোর গগনবিদারী চিৎকার। কিন্তু আমরা ব্যর্থ পারিনি এমন একটা পরিবেশ দিতে। বলছিলাম পুরান ঢাকার সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে। আরমানিটোলা খেলার মাঠসংলগ্ন হাজি ম্যানশন ছয়তলা ভবনে কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লেগে নারীসহ চারজনের প্রাণহানি এবং ২০ জনের মতো দগ্ধ হয়েছে, যা সত্যিই বেদনাদায়ক। এ যেন ঘুরেফিরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চুরিহাট্টা ট্রাজেডিতে প্রাণ গেল তরতাজা ৬৭ জনের। এর আগে ২০১০ সালের জুন মাসে নিমতলীর অগ্নিকা-ে কেড়ে নিয়েছিল ১২০ জনের। প্রায় দুই কোটি মানুষের বসবাস এই শহরে। আর এর মধ্যে পুরান ঢাকা হলো খিঞ্জি এলাকা যেখানে পর্যাপ্ত জায়গা নেই, যে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গাড়ি নিয়ে যাবেন। ভাগ্য ভালো ওই দুর্ঘটনা ভোরে সংঘটিত হয়েছিল, দিনের বেলায় হলে উদ্ধার অভিযানে বেগ পেতে হতো। ওই হাজি মেনশনের নিচ তলায় ছিল প্রায় কেমিক্যালের ১৮টি দোকান। যেখান হতে এই দুর্ঘটনার সূত্রপাত হয়। এমনিভাবে ঢাকার অধিকাংশ আবাসিক ভবনের নিচতলায় কেমিক্যালের গোডাউন।

ঢাকার নিমতলীর ট্র্যাজেডির পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিপদজনক কেমিক্যাল কারখানা অন্যত্র সরিয়ে নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু তার বাস্তবায়ন কতটুকু হয়েছে? পুরান ঢাকায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে কেমিক্যালের কারখানা। পরিবেশবাদী সংগঠন বাপার ২০১৭ সালের গবেষণা মতে, পুরান ঢাকায় রয়েছে ২৫ হাজার রাসায়নিক গুদাম, এগুলোর মধ্যে বাসা বাড়িতেই সংযুক্ত ১৫ হাজার। মাত্র আড়াই হাজারের মতো ট্রেন্ড লাইসেন্স দিয়েছেসিটি করপোরেশন। বাকি সব গুদাম অবৈধ। যখনই কোন ভয়ানক দুর্ঘটনা ঘটে তখন খুব বুলি আওড়ালে ও পরবর্তীতে ভুলে যায়। মানুষের জীবনযাপন হোক নিরাপদ এবং শঙ্কামুক্ত। এবং এই সব ভয়াবহ রাসায়নিক পদার্থ অতিদ্রুত অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হোক। আর কারো মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ শুনতে চাই না।

আবদিম মুনিব