শব্দদূষণ প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই

কঠোর নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে বেড়েই চলেছে শব্দদূষণ। আইন প্রণয়ন করা হলেও এর সঠিক বাস্তবায়ন কোথাও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে মানুষের শ্রুতি শব্দের স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে ‘৪০-৫০’ ডেসিবল। বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের এক জরিপে জানা যায়, দেশের রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে শব্দের মানমাত্রা ‘১৩০’ ডেসিবল ছাড়িয়ে গেছে।

এমন পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরেকটি জরিপ দেখলে তা খুব সহজেই সকলের অনুমেয়। জরিপে বলা আছে, ৬০ ডেসিবল শব্দ একজন মানুষকে অস্থায়ীভাবে বধির করতে পারে তবে ১০০ ডেসিবল হলে তা সম্পূর্ণভাবে বধিরতার সৃষ্টি করতে পারে। এতেই বোঝা যায় বাংলাদেশ যে শব্দ-সন্ত্রাসের কতটা ভোগ্য হয়ে আছে। সারা বিশ্বের ১৫ শতাংশ মানুষ শ্রুতিক্ষীণতার কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। এভাবে ক্রমশ বেড়ে চলছে বধিরতার সংখ্যা।

যানবাহনের অতিরিক্ত হর্ণের পর ধারাবাহিকভাবে শব্দ দূষণের অন্তরায় হিসেবে রয়েছে, বিভিন্ন নির্মাণ কাজের শব্দ, ইট-পাথর ও বিল্ডিং ভাঙার শব্দ, প্রচারণার মাইকিং, কলকারখানার উচ্চ শব্দ, রেলগাড়ি চলাচল, ওয়ার্কশপের দোকানে হাতুড়ি পেটার শব্দ, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে স্পিকার বাজানো, জেনারেটরের শব্দ, অডিও দোকানগুলোতে সারাক্ষণ গান বাজানো ইত্যাদি।

ভয়াবহ শব্দ-সন্ত্রাস থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমে প্রচারণার কাজ চালাতে হবে। মোটরযান মালিক ও ড্রাইভারদের উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী হর্ন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার জন্য উদ্বুদ্ধ করে নিরব এলাকায় যেমন: স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল জায়গাগুলোতে হর্ন বাজাতে নিষেধ করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার, পল্লী ও নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ওপর ন্যাস্ত আইনসিদ্ধ দায়িত্ব ও কর্তব্য সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন এবং কঠোর বাস্তবায়নের মাত্রা ত্বরান্বিত করতে হবে। অযাচিতভাবে লাউড স্পিকার বাজানো থেকে যুব সমাজকে বিরত রাখার আহ্বান করতে হবে। এসব প্রত্যেকে যখন নিজ উদ্যোগে মানবে এবং অপরজনকে উৎসাহিত করবে তখন আমাদের সোনার দেশ হয়ে ওঠবে শব্দ-সন্ত্রাসহীন একটি নীরব শান্ত রাষ্ট্র।

রিদুয়ান ইসলাম

বুধবার, ২৮ এপ্রিল ২০২১ , ১৫ বৈশাখ ১৪২৮ ১৫ রমজান ১৪৪২

শব্দদূষণ প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই

image

কঠোর নিয়ন্ত্রণহীনতার কারণে বেড়েই চলেছে শব্দদূষণ। আইন প্রণয়ন করা হলেও এর সঠিক বাস্তবায়ন কোথাও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে মানুষের শ্রুতি শব্দের স্বাভাবিক মাত্রা হচ্ছে ‘৪০-৫০’ ডেসিবল। বাংলাদেশের পরিবেশ অধিদপ্তরের এক জরিপে জানা যায়, দেশের রাজধানীসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে শব্দের মানমাত্রা ‘১৩০’ ডেসিবল ছাড়িয়ে গেছে।

এমন পরিস্থিতি যে কতটা ভয়াবহ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আরেকটি জরিপ দেখলে তা খুব সহজেই সকলের অনুমেয়। জরিপে বলা আছে, ৬০ ডেসিবল শব্দ একজন মানুষকে অস্থায়ীভাবে বধির করতে পারে তবে ১০০ ডেসিবল হলে তা সম্পূর্ণভাবে বধিরতার সৃষ্টি করতে পারে। এতেই বোঝা যায় বাংলাদেশ যে শব্দ-সন্ত্রাসের কতটা ভোগ্য হয়ে আছে। সারা বিশ্বের ১৫ শতাংশ মানুষ শ্রুতিক্ষীণতার কোনো না কোনো সমস্যায় ভুগছেন। এভাবে ক্রমশ বেড়ে চলছে বধিরতার সংখ্যা।

যানবাহনের অতিরিক্ত হর্ণের পর ধারাবাহিকভাবে শব্দ দূষণের অন্তরায় হিসেবে রয়েছে, বিভিন্ন নির্মাণ কাজের শব্দ, ইট-পাথর ও বিল্ডিং ভাঙার শব্দ, প্রচারণার মাইকিং, কলকারখানার উচ্চ শব্দ, রেলগাড়ি চলাচল, ওয়ার্কশপের দোকানে হাতুড়ি পেটার শব্দ, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উচ্চ শব্দে স্পিকার বাজানো, জেনারেটরের শব্দ, অডিও দোকানগুলোতে সারাক্ষণ গান বাজানো ইত্যাদি।

ভয়াবহ শব্দ-সন্ত্রাস থেকে রক্ষা পেতে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমে প্রচারণার কাজ চালাতে হবে। মোটরযান মালিক ও ড্রাইভারদের উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী হর্ন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকার জন্য উদ্বুদ্ধ করে নিরব এলাকায় যেমন: স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল জায়গাগুলোতে হর্ন বাজাতে নিষেধ করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার, পল্লী ও নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ওপর ন্যাস্ত আইনসিদ্ধ দায়িত্ব ও কর্তব্য সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালন এবং কঠোর বাস্তবায়নের মাত্রা ত্বরান্বিত করতে হবে। অযাচিতভাবে লাউড স্পিকার বাজানো থেকে যুব সমাজকে বিরত রাখার আহ্বান করতে হবে। এসব প্রত্যেকে যখন নিজ উদ্যোগে মানবে এবং অপরজনকে উৎসাহিত করবে তখন আমাদের সোনার দেশ হয়ে ওঠবে শব্দ-সন্ত্রাসহীন একটি নীরব শান্ত রাষ্ট্র।

রিদুয়ান ইসলাম