মাঝে মাঝে কার কাছে যাব?

প্রবালকুমার বসু

‘আজ আর কেউ নেই/মাঝে মাঝে কার কাছে যাব?’ শঙ্খ ঘোষের মৃত্যু সংবাদ পাবার পর এই পংক্তিটিই প্রথম মনে এল। কবি শঙ্খ ঘোষের এমন অজস্র পংক্তি বিন্যাস রয়ে গিয়েছে যা আমাদের প্রতিদিনের চরম বিপর্যয়ের মুখেও ঘুরে দাঁড়ানোর পরিসর জোগায়। কখনো আবার দাঁড় করায় নিজেকেই নিজের মুখোমুখি। ওঁর পরিচয় যদি শুধু কবি বা অধ্যাপকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত তাহলে হয়ত অন্য কোনো কবিতার কথাই মনে হতো, কিন্তু তাঁর পরিচয়ের ব্যাপ্তি যে আরো বিস্তৃত যা শুধু চেনাজানা পরিমণ্ডলের ভিতরেই নয়, স্বল্পচেনা এমনকি অচেনা পরিমণ্ডলের কাছেও পৌঁছে যেত তাঁর স্নিগ্ধতার আবেশ। খুব কাছ থেকে তাঁকে জানার সুবাদে দেখেছি অচেনা কেউও কোনো আর্তি নিয়ে এলে সাধ্যমতো চেষ্টা করতেন তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর, সমস্যার সমাধান করে দেবার। কত যে তরুণ কবির পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা করে দিতেন, যার মধ্যে থাকত একাধারে প্রশ্রয় আর স্নেহ। তার সমসময়কালে এমনটি আর কাউকে দেখিনি।

আমাদের কবিতা লেখা শুরুর সময়, যৌবন বয়সে জীবনানন্দ, সুভাষ মুখোপাধ্যায় পার হয়ে যখন পঞ্চাশের কবিতায় নিবিষ্ট হচ্ছি, পারিবারিক সূত্রে এঁদের সান্নিধ্যও পাচ্ছি, ব্যক্তি শঙ্খ ঘোষ যেন তখন একটু দূরে দাঁড়িয়েই, অধরা। পঞ্চাশের কবি, আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে কৃত্তিবাসী কবি হিসেবে যারা বাংলা সাহিত্যে পরিচিত, যাদের বর্ণময় জীবনযাপন একটা মিথ, সেই তাদের বন্ধু হয়েও তিনি কখনো কৃত্তিবাসী হয়ে ওঠেননি, সচেতন একটা দূরত্ব বরাবরই বজায় রেখেছেন। অথচ কৃত্তিবাস-এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশ হচ্ছে তাঁর কবিতা দিয়ে, তাঁর প্রথম বই প্রকাশ হচ্ছে কৃত্তিবাস থেকেই। এই অবস্থান নিয়ে একটা মজার গল্প আছে। শঙ্খ ঘোষের একটা বইয়ের উৎসর্গে লেখা ছিল— বন্ধুকে, যে আর বন্ধু নেই। বইটা প্রকাশের পর কোনো একটা অনুষ্ঠানে ওঁর সঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের দেখা হলে সুনীলদা হেসে বলেন- আমাকে উৎসর্গ করা বইটি দেখেছি। একটুও অপ্রতিভ না হয়ে শঙ্খ ঘোষ সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেন- আপনাকে উৎসর্গ করতে হলে লিখতাম- দূরে দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধুকে। এই ঘটনা অনেকটাই বুঝিয়ে দেয় সমসাময়িকদের প্রেক্ষিতে তাঁর অবস্থান, যার বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্র। পঞ্চাশের বেশিরভাগ কবি যখন কবিতায় নিয়ে আসছেন স্বীকারোক্তিমূলক কবিতা বা আত্ম উন্মোচনের ভাষ্য, শঙ্খ ঘোষ তখন অনুচ্চারিত কণ্ঠে তুলে আনছেন সমাজ অসঙ্গতির প্রতিচ্ছবি, তাঁর লেখায় দীপ্যমান হচ্ছে প্রতিবাদ। যে প্রতিবাদ তাঁর একার থাকছে না, হয়ে উঠছে পাঠকেরও। তার প্রেমও সমসাময়িকদের মতো উচ্চকিত নয়, যেন নির্জন দুপুরে নদী পাড়ের সুবৃহৎ বৃক্ষের ছায়ায় একাকী বয়ে চলা শান্ত নদীর মতন স্নিগ্ধ অথচ জিজ্ঞাসাচিহ্নময়।

‘কৃত্তিবাস’ পঞ্চাশ বছর উৎসবে নানান বিষয় পরামর্শ ও আলোচনা করতে অনেক সময় সুনীলদা আমাকে ওঁর কাছে পাঠাতেন। সেই সময় থেকে খুব কাছাকাছি আসার সুযোগ পাই। একই সময় কলকাতায় কবি শিল্পী ও সংস্কৃতি প্রেমীদের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ‘কলকাতা ইন্টারন্যশানাল সেন্টার ফর আর্টস লিটারেচর এ্যান্ড কালচার’-এর কাজের জন্যও ওঁর সকাশে আমার যাতায়াত শুরু হয়। প্রথমে সহসভাপতি থাকলেও পরে উনি ওই সংস্থার সভাপতি হন, যা শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন। আমি সরাসরি ওঁর বা সাহিত্যের ছাত্র না হবার দরুন আমাদের মধ্যে অসহজতার আবরণটা খুব তাড়াতাড়ি সরে যায় আর আমি আবিষ্কার করতে থাকি তাঁর ‘এ আমির আবরণ’-এর আড়ালে এক ভিন্ন শঙ্খ ঘোষকে, যিনি আড্ডা দিতে ভালোবাসতেন কিন্তু কখনো সোচ্চার নন, যিনি রসিকতা প্রিয় অথচ সেই রসিকতা এক নিবিড় গ্রন্থিতে বাঁধা। যাঁর সৌজন্য প্রদর্শন আজকের দিনে রূপকথার মতো শোনায়। একবার এক সেলসম্যান তার কোম্পানির জিনিস বিক্রি করতে শঙ্খ ঘোষের বাড়িতে হাজির হলে সে নিজেকে আবিষ্কার করে এক আড্ডার ভিতরে। সেটা ছিল কোনো এক রবিবার। উপস্থিত বাকি সকলের সঙ্গে চা মিষ্টান্ন আহারের পর সে আর তার আসার কারণ ব্যক্ত করতে না পেরে বিদায় নিতে চাইলে শঙ্খ ঘোষ তাকেও দরোজা অবধি পৌঁছে দিতে যান, তখন সে শঙ্খ ঘোষকে প্রণাম করে কোম্পানির ক্যাটালগ ওঁর হাতে দিয়ে দ্রুত অন্তর্হিত হয়। হয়ত কোনো কবিতার কাগজ হবে এই ভেবে উনি পরে যখন সেটা দেখেন পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হয়।

খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র আর মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে তাঁর অক্লান্ত প্রয়াস। রাষ্ট্রের শক্তিকে কখনো ভয় পেতেন না। যে কোনো জনবিরোধী নীতি বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সবসময় ছিলেন সরব। সরাসরি বলতে পারতেন কোনো অনুষ্ঠানে কোনো বিশেষ দলের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকলে তিনি সেখানে যাবেন না। একবার এক প্রধান মিডিয়া হাউসে (সংবাদপত্র) কর্মী বিক্ষোভ ও ধর্মঘট হলে যখন নিজেদের স্বার্থে সবাই কর্তৃপক্ষের হয়ে সওয়াল করতে ব্যস্ত, কবি, সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনিই একমাত্র ধর্মঘটী শ্রমিকদের সমর্থন করেছিলেন। এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত যা তিনি সারা জীবনেই বারবার রেখেছেন। এক অবক্ষয়গ্রস্ত জাতির অন্যতম শেষ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো প্রতিভূ, অনেক অনেক বছর বাদে যাঁকে দৃষ্টান্ত হিসেবে আমাদের স্মরণ করতেই হবে।

আমার সঙ্গে ওঁর শেষ দেখা ২৩শে ফব্রুয়ারি। আমার সঙ্গে ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, এম.পি। গৌরি লঙ্কেশের মৃত্যুর পর লেখা তাঁর একটা কবিতা, যেটা সেসময় উনি একটা প্রতিবাদসভায় পাঠিয়েছিলেন বিকাশবাবুকে পড়ার অনুরোধ করে, সেটা আবার সামনাসামনি শুনতে চাইলেন। বিকাশবাবুর পাঠের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছিল সেদিনের আড্ডা। অসুস্থ শরীর নিয়ে দরোজা অবধি এসেছিলেন বিদায় জানাতে। দাঁড়িয়ে রইলেন যতক্ষণ না সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাই। তখনও জানতাম না যে আর আশা হবে না।

বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১ , ১৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৬ রমজান ১৪৪২

মাঝে মাঝে কার কাছে যাব?

প্রবালকুমার বসু

image

শঙ্খ ঘোষ / জন্ম : ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৩২; মৃত্যু : ২১ এপ্রিল ২০২১

‘আজ আর কেউ নেই/মাঝে মাঝে কার কাছে যাব?’ শঙ্খ ঘোষের মৃত্যু সংবাদ পাবার পর এই পংক্তিটিই প্রথম মনে এল। কবি শঙ্খ ঘোষের এমন অজস্র পংক্তি বিন্যাস রয়ে গিয়েছে যা আমাদের প্রতিদিনের চরম বিপর্যয়ের মুখেও ঘুরে দাঁড়ানোর পরিসর জোগায়। কখনো আবার দাঁড় করায় নিজেকেই নিজের মুখোমুখি। ওঁর পরিচয় যদি শুধু কবি বা অধ্যাপকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত তাহলে হয়ত অন্য কোনো কবিতার কথাই মনে হতো, কিন্তু তাঁর পরিচয়ের ব্যাপ্তি যে আরো বিস্তৃত যা শুধু চেনাজানা পরিমণ্ডলের ভিতরেই নয়, স্বল্পচেনা এমনকি অচেনা পরিমণ্ডলের কাছেও পৌঁছে যেত তাঁর স্নিগ্ধতার আবেশ। খুব কাছ থেকে তাঁকে জানার সুবাদে দেখেছি অচেনা কেউও কোনো আর্তি নিয়ে এলে সাধ্যমতো চেষ্টা করতেন তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর, সমস্যার সমাধান করে দেবার। কত যে তরুণ কবির পাণ্ডুলিপি সম্পাদনা করে দিতেন, যার মধ্যে থাকত একাধারে প্রশ্রয় আর স্নেহ। তার সমসময়কালে এমনটি আর কাউকে দেখিনি।

আমাদের কবিতা লেখা শুরুর সময়, যৌবন বয়সে জীবনানন্দ, সুভাষ মুখোপাধ্যায় পার হয়ে যখন পঞ্চাশের কবিতায় নিবিষ্ট হচ্ছি, পারিবারিক সূত্রে এঁদের সান্নিধ্যও পাচ্ছি, ব্যক্তি শঙ্খ ঘোষ যেন তখন একটু দূরে দাঁড়িয়েই, অধরা। পঞ্চাশের কবি, আরো সঠিকভাবে বলতে গেলে কৃত্তিবাসী কবি হিসেবে যারা বাংলা সাহিত্যে পরিচিত, যাদের বর্ণময় জীবনযাপন একটা মিথ, সেই তাদের বন্ধু হয়েও তিনি কখনো কৃত্তিবাসী হয়ে ওঠেননি, সচেতন একটা দূরত্ব বরাবরই বজায় রেখেছেন। অথচ কৃত্তিবাস-এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশ হচ্ছে তাঁর কবিতা দিয়ে, তাঁর প্রথম বই প্রকাশ হচ্ছে কৃত্তিবাস থেকেই। এই অবস্থান নিয়ে একটা মজার গল্প আছে। শঙ্খ ঘোষের একটা বইয়ের উৎসর্গে লেখা ছিল— বন্ধুকে, যে আর বন্ধু নেই। বইটা প্রকাশের পর কোনো একটা অনুষ্ঠানে ওঁর সঙ্গে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের দেখা হলে সুনীলদা হেসে বলেন- আমাকে উৎসর্গ করা বইটি দেখেছি। একটুও অপ্রতিভ না হয়ে শঙ্খ ঘোষ সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দেন- আপনাকে উৎসর্গ করতে হলে লিখতাম- দূরে দাঁড়িয়ে থাকা বন্ধুকে। এই ঘটনা অনেকটাই বুঝিয়ে দেয় সমসাময়িকদের প্রেক্ষিতে তাঁর অবস্থান, যার বৈশিষ্ট্য স্বতন্ত্র। পঞ্চাশের বেশিরভাগ কবি যখন কবিতায় নিয়ে আসছেন স্বীকারোক্তিমূলক কবিতা বা আত্ম উন্মোচনের ভাষ্য, শঙ্খ ঘোষ তখন অনুচ্চারিত কণ্ঠে তুলে আনছেন সমাজ অসঙ্গতির প্রতিচ্ছবি, তাঁর লেখায় দীপ্যমান হচ্ছে প্রতিবাদ। যে প্রতিবাদ তাঁর একার থাকছে না, হয়ে উঠছে পাঠকেরও। তার প্রেমও সমসাময়িকদের মতো উচ্চকিত নয়, যেন নির্জন দুপুরে নদী পাড়ের সুবৃহৎ বৃক্ষের ছায়ায় একাকী বয়ে চলা শান্ত নদীর মতন স্নিগ্ধ অথচ জিজ্ঞাসাচিহ্নময়।

‘কৃত্তিবাস’ পঞ্চাশ বছর উৎসবে নানান বিষয় পরামর্শ ও আলোচনা করতে অনেক সময় সুনীলদা আমাকে ওঁর কাছে পাঠাতেন। সেই সময় থেকে খুব কাছাকাছি আসার সুযোগ পাই। একই সময় কলকাতায় কবি শিল্পী ও সংস্কৃতি প্রেমীদের উদ্যোগে গড়ে ওঠা ‘কলকাতা ইন্টারন্যশানাল সেন্টার ফর আর্টস লিটারেচর এ্যান্ড কালচার’-এর কাজের জন্যও ওঁর সকাশে আমার যাতায়াত শুরু হয়। প্রথমে সহসভাপতি থাকলেও পরে উনি ওই সংস্থার সভাপতি হন, যা শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন। আমি সরাসরি ওঁর বা সাহিত্যের ছাত্র না হবার দরুন আমাদের মধ্যে অসহজতার আবরণটা খুব তাড়াতাড়ি সরে যায় আর আমি আবিষ্কার করতে থাকি তাঁর ‘এ আমির আবরণ’-এর আড়ালে এক ভিন্ন শঙ্খ ঘোষকে, যিনি আড্ডা দিতে ভালোবাসতেন কিন্তু কখনো সোচ্চার নন, যিনি রসিকতা প্রিয় অথচ সেই রসিকতা এক নিবিড় গ্রন্থিতে বাঁধা। যাঁর সৌজন্য প্রদর্শন আজকের দিনে রূপকথার মতো শোনায়। একবার এক সেলসম্যান তার কোম্পানির জিনিস বিক্রি করতে শঙ্খ ঘোষের বাড়িতে হাজির হলে সে নিজেকে আবিষ্কার করে এক আড্ডার ভিতরে। সেটা ছিল কোনো এক রবিবার। উপস্থিত বাকি সকলের সঙ্গে চা মিষ্টান্ন আহারের পর সে আর তার আসার কারণ ব্যক্ত করতে না পেরে বিদায় নিতে চাইলে শঙ্খ ঘোষ তাকেও দরোজা অবধি পৌঁছে দিতে যান, তখন সে শঙ্খ ঘোষকে প্রণাম করে কোম্পানির ক্যাটালগ ওঁর হাতে দিয়ে দ্রুত অন্তর্হিত হয়। হয়ত কোনো কবিতার কাগজ হবে এই ভেবে উনি পরে যখন সেটা দেখেন পুরো বিষয়টা পরিষ্কার হয়।

খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র আর মানবাধিকার রক্ষার বিষয়ে তাঁর অক্লান্ত প্রয়াস। রাষ্ট্রের শক্তিকে কখনো ভয় পেতেন না। যে কোনো জনবিরোধী নীতি বা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সবসময় ছিলেন সরব। সরাসরি বলতে পারতেন কোনো অনুষ্ঠানে কোনো বিশেষ দলের প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থাকলে তিনি সেখানে যাবেন না। একবার এক প্রধান মিডিয়া হাউসে (সংবাদপত্র) কর্মী বিক্ষোভ ও ধর্মঘট হলে যখন নিজেদের স্বার্থে সবাই কর্তৃপক্ষের হয়ে সওয়াল করতে ব্যস্ত, কবি, সাহিত্যিকদের মধ্যে তিনিই একমাত্র ধর্মঘটী শ্রমিকদের সমর্থন করেছিলেন। এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত যা তিনি সারা জীবনেই বারবার রেখেছেন। এক অবক্ষয়গ্রস্ত জাতির অন্যতম শেষ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো প্রতিভূ, অনেক অনেক বছর বাদে যাঁকে দৃষ্টান্ত হিসেবে আমাদের স্মরণ করতেই হবে।

আমার সঙ্গে ওঁর শেষ দেখা ২৩শে ফব্রুয়ারি। আমার সঙ্গে ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, এম.পি। গৌরি লঙ্কেশের মৃত্যুর পর লেখা তাঁর একটা কবিতা, যেটা সেসময় উনি একটা প্রতিবাদসভায় পাঠিয়েছিলেন বিকাশবাবুকে পড়ার অনুরোধ করে, সেটা আবার সামনাসামনি শুনতে চাইলেন। বিকাশবাবুর পাঠের মধ্যে দিয়ে শেষ হয়েছিল সেদিনের আড্ডা। অসুস্থ শরীর নিয়ে দরোজা অবধি এসেছিলেন বিদায় জানাতে। দাঁড়িয়ে রইলেন যতক্ষণ না সিঁড়ি দিয়ে নেমে যাই। তখনও জানতাম না যে আর আশা হবে না।