মোহাম্মদম হোসাইন
(কবি শঙ্খ ঘোষ এর মৃত্যুতে শ্রদ্ধাঞ্জলি)
মানুষ নামে ডাকে আমাকে
কিন্তু, আমি জানি না কেন মানুষ আমি
অথবা এ নামের মানেই বা কী
অনেকে অনেক কথাই বলে, কিন্তু, আমার কাছে
কোনোটাই মনোপুত হয়নি, হয় না কোনোদিন...!
আমি যে সমাজে বাস করি সেখানেও মানুষেরাই
থাকে, হরেক রকম মানুষ
মানুষদের নাম থাকে, ধর্ম থাকে, এমনকি ভাষাও থাকে,
রাষ্ট্র সেসব লিপিবদ্ধ করে রাখে
(অন্যান্য প্রাণিদেরও কি নামধাম থাকে বা ধর্মাধর্ম?)
মানুষেরা খায় দায় ঘুমায়, সঙ্গম করে যেমন করে অন্যান্য প্রাণিরাও
বলা হয় মানুষও প্রাণি
অথচ, সব প্রাণি মানুষ নয়
সব মাটিই মাটি, সব নদীই নদী কিংবা সব সাগর সাগর
কিন্তু সব মানুষই কি মানুষ?
জানতে পারিনি।
সকল গ্রন্থই মানুষকে মানুষ বলে স্বীকার করে, শ্রেষ্ঠ বলে
অথচ, সকল মানুষ সকল মানুষকেই স্বীকার করে না...!
মানুষের ভেতরেই অন্য মানুষ লুকানো থাকে
কদর্যকোমলকমলসাদাকালোআকাশি, আরও কত কী!
অনেক রকম আলো চারপাশে
অনেক রকম অন্ধকার
আকাশও অনেক রকম, হাওয়াও
কখনো কখনো সেইসব হাওয়া এসে আলো এসে
নিভিয়ে দেয় যাবতীয় তন্ত্রমন্ত্র, গূঢ়তর ছায়া
তখন অন্ধকার, আর অন্ধকার থাকে না
তখন কোনো কোনো মানুষ দীর্ঘতর ছায়া হয়ে যায়,
খোলাপ্রান্তর হয়ে যায়... হয়ে যায় প্রকাশমান সুনসান সুন্দর!
সবমানুষ কবিতা ভালবাসে না
সবমানুষ সংগ্রাম ভালবাসে না
যে মানুষেরা কবিতা ভালবাসে
তারা জীবনের জন্যে বাঁচে, সুন্দরের জন্যে বাঁচে
আর যে মানুষেরা ছায়া ভালবাসে ছায়াগ্রাম ভালবাসে
সে মানুষেরা সত্যকাম সৎ- সারাক্ষণ সান্ধ্যবাতির মতো জ্বলে
তার কাছে, তাদের কাছে নদী এসে থামে
তাদের কাছে ফসলের মাঠ ছুটে যায়, বৃষ্টির মিহিদানা ফোঁটা ফোঁটা
ঝরে, যেন কবিতারা কাশফুল, অক্ষরগুলো স্বপ্নময় ডালিমদানা...!
মানুষ আর ধর্ম- একদা আলাদা আলাদা ছিল
এখন ধর্ম বা মানুষ পৃথক করা যায় না
চারপাশে এত ক্ষুধা এত ক্ষুধা
আর এত নাই নাই... ভালো লাগে না
কখনো কখনো মনে হয়, পৃথিবীতে কেবল
রিরংসা আছে, আর আছে তিনভাগ জল
প্রতিদিন কাউকে না কাউকে নিয়ে যাচ্ছে যম
নিহিত শূন্যতা নিয়ে বাবরের প্রার্থনা হাতেই
আজ নিয়ে গেল আমাদের শেষ আশ্রয়
মানুষ কি আছে
কী থাকে মানুষের
কিংবা কঙ্কালের?
বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১ , ১৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৬ রমজান ১৪৪২
মোহাম্মদম হোসাইন
(কবি শঙ্খ ঘোষ এর মৃত্যুতে শ্রদ্ধাঞ্জলি)
মানুষ নামে ডাকে আমাকে
কিন্তু, আমি জানি না কেন মানুষ আমি
অথবা এ নামের মানেই বা কী
অনেকে অনেক কথাই বলে, কিন্তু, আমার কাছে
কোনোটাই মনোপুত হয়নি, হয় না কোনোদিন...!
আমি যে সমাজে বাস করি সেখানেও মানুষেরাই
থাকে, হরেক রকম মানুষ
মানুষদের নাম থাকে, ধর্ম থাকে, এমনকি ভাষাও থাকে,
রাষ্ট্র সেসব লিপিবদ্ধ করে রাখে
(অন্যান্য প্রাণিদেরও কি নামধাম থাকে বা ধর্মাধর্ম?)
মানুষেরা খায় দায় ঘুমায়, সঙ্গম করে যেমন করে অন্যান্য প্রাণিরাও
বলা হয় মানুষও প্রাণি
অথচ, সব প্রাণি মানুষ নয়
সব মাটিই মাটি, সব নদীই নদী কিংবা সব সাগর সাগর
কিন্তু সব মানুষই কি মানুষ?
জানতে পারিনি।
সকল গ্রন্থই মানুষকে মানুষ বলে স্বীকার করে, শ্রেষ্ঠ বলে
অথচ, সকল মানুষ সকল মানুষকেই স্বীকার করে না...!
মানুষের ভেতরেই অন্য মানুষ লুকানো থাকে
কদর্যকোমলকমলসাদাকালোআকাশি, আরও কত কী!
অনেক রকম আলো চারপাশে
অনেক রকম অন্ধকার
আকাশও অনেক রকম, হাওয়াও
কখনো কখনো সেইসব হাওয়া এসে আলো এসে
নিভিয়ে দেয় যাবতীয় তন্ত্রমন্ত্র, গূঢ়তর ছায়া
তখন অন্ধকার, আর অন্ধকার থাকে না
তখন কোনো কোনো মানুষ দীর্ঘতর ছায়া হয়ে যায়,
খোলাপ্রান্তর হয়ে যায়... হয়ে যায় প্রকাশমান সুনসান সুন্দর!
সবমানুষ কবিতা ভালবাসে না
সবমানুষ সংগ্রাম ভালবাসে না
যে মানুষেরা কবিতা ভালবাসে
তারা জীবনের জন্যে বাঁচে, সুন্দরের জন্যে বাঁচে
আর যে মানুষেরা ছায়া ভালবাসে ছায়াগ্রাম ভালবাসে
সে মানুষেরা সত্যকাম সৎ- সারাক্ষণ সান্ধ্যবাতির মতো জ্বলে
তার কাছে, তাদের কাছে নদী এসে থামে
তাদের কাছে ফসলের মাঠ ছুটে যায়, বৃষ্টির মিহিদানা ফোঁটা ফোঁটা
ঝরে, যেন কবিতারা কাশফুল, অক্ষরগুলো স্বপ্নময় ডালিমদানা...!
মানুষ আর ধর্ম- একদা আলাদা আলাদা ছিল
এখন ধর্ম বা মানুষ পৃথক করা যায় না
চারপাশে এত ক্ষুধা এত ক্ষুধা
আর এত নাই নাই... ভালো লাগে না
কখনো কখনো মনে হয়, পৃথিবীতে কেবল
রিরংসা আছে, আর আছে তিনভাগ জল
প্রতিদিন কাউকে না কাউকে নিয়ে যাচ্ছে যম
নিহিত শূন্যতা নিয়ে বাবরের প্রার্থনা হাতেই
আজ নিয়ে গেল আমাদের শেষ আশ্রয়
মানুষ কি আছে
কী থাকে মানুষের
কিংবা কঙ্কালের?