‘সর্বোচ্চ তাপমাত্রা’ স্বাভাবিকের চেয়ে ৭.৭ ডিগ্রি বেশি

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। করোনার সঙ্গে লড়াই, রোজার ক্লান্তির সঙ্গে প্রচণ্ড গরমে দুঃসহ অবস্থায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। দেশে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ চলবে অন্তত আরও দুই দিন বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে ঢাকা, সিলেট, রংপুর, খুলনা, বরিশাল বিভাগ, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, রাজশাহী, পাবনা অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে দেশের কিছু অংশে তা কমতে পারে।

জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিন দিন আবহাওয়া, পরিবেশ-প্রতিবেশ বিরূপ হয়ে উঠছে। তাপমাত্রাও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। দিনের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ যে তাপমাত্রা থাকার কথা, তা ছাড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিদিনই। চলতি এপ্রিল মাসে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।

এপ্রিলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে সর্বনিম্ন ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি থেকে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত রেকর্ড হওয়া তাপমাত্রা বিশ্লেষণে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। অনাবৃষ্টির কারণে এবার তাপমাত্রা বাড়ছে।

সূত্র মতে, দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টায় সবসময় তাপমাত্রা এক রকম থাকে না। সূর্য ডোবার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। ভোররাতে সূর্য ওঠার আগ মুহূর্তে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। সূর্যোদয়ের পর থেকে আবার তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। দুপুর ৩টার দিকে এসে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। সাধারণত বিগত ৩০ বছরে যে পরিমাণ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে, তাকে দিনের ‘স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা’ বলা হয়।

আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘দেশে এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়েও কম হয়েছে।’

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমানের মতামতও একই। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে এপ্রিলে তাপমাত্রা তীব্র হচ্ছে।’

গরম বাড়া-কমার পেছনের কারণ

আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিকের মতে, যে এলাকায় এসি ও এয়ারকুলার বেশি ব্যবহার করা হয়, তার বাইরে তাপমাত্রা একটু বেশি থাকে, যা গরম অনুভব বাড়িয়ে দেয়। আর ঢাকার বাইরে প্রচুর ইটভাটা। সেগুলো থেকেও দূষিত কণা নিঃসরিত হয়। সেগুলো থেকেও তাপমাত্রা বাড়ে। সূর্যের কিরণ বেশিক্ষণ হলেও গরম অনুভব বেড়ে যায়। মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে বেশি সূর্যের কিরণ আসে।

সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গেলেও গরম বাড়ে। পার্থক্য ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসলে গরম অনুভব বেশি হয়। এই সবকিছুর সম্মিলিত প্রভাবে গরম অনুভব বাড়তে পারে।

বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১ , ১৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৬ রমজান ১৪৪২

‘সর্বোচ্চ তাপমাত্রা’ স্বাভাবিকের চেয়ে ৭.৭ ডিগ্রি বেশি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা তীব্র দাবদাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। করোনার সঙ্গে লড়াই, রোজার ক্লান্তির সঙ্গে প্রচণ্ড গরমে দুঃসহ অবস্থায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। দেশে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহ চলবে অন্তত আরও দুই দিন বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

আবহাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে ঢাকা, সিলেট, রংপুর, খুলনা, বরিশাল বিভাগ, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, রাজশাহী, পাবনা অঞ্চলে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে দেশের কিছু অংশে তা কমতে পারে।

জানা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দিন দিন আবহাওয়া, পরিবেশ-প্রতিবেশ বিরূপ হয়ে উঠছে। তাপমাত্রাও অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। দিনের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ যে তাপমাত্রা থাকার কথা, তা ছাড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিদিনই। চলতি এপ্রিল মাসে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়েছে।

এপ্রিলে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে সর্বনিম্ন ৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি থেকে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়েছে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত রেকর্ড হওয়া তাপমাত্রা বিশ্লেষণে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। অনাবৃষ্টির কারণে এবার তাপমাত্রা বাড়ছে।

সূত্র মতে, দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টায় সবসময় তাপমাত্রা এক রকম থাকে না। সূর্য ডোবার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। ভোররাতে সূর্য ওঠার আগ মুহূর্তে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। সূর্যোদয়ের পর থেকে আবার তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। দুপুর ৩টার দিকে এসে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম। সাধারণত বিগত ৩০ বছরে যে পরিমাণ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে, তাকে দিনের ‘স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা’ বলা হয়।

আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক বলেন, ‘দেশে এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। মার্চ ও এপ্রিল মাসেও বৃষ্টি স্বাভাবিকের চেয়েও কম হয়েছে।’

আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমানের মতামতও একই। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে এপ্রিলে তাপমাত্রা তীব্র হচ্ছে।’

গরম বাড়া-কমার পেছনের কারণ

আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিকের মতে, যে এলাকায় এসি ও এয়ারকুলার বেশি ব্যবহার করা হয়, তার বাইরে তাপমাত্রা একটু বেশি থাকে, যা গরম অনুভব বাড়িয়ে দেয়। আর ঢাকার বাইরে প্রচুর ইটভাটা। সেগুলো থেকেও দূষিত কণা নিঃসরিত হয়। সেগুলো থেকেও তাপমাত্রা বাড়ে। সূর্যের কিরণ বেশিক্ষণ হলেও গরম অনুভব বেড়ে যায়। মেঘমুক্ত আকাশ থাকলে বেশি সূর্যের কিরণ আসে।

সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কমে গেলেও গরম বাড়ে। পার্থক্য ১০ ডিগ্রির নিচে নেমে আসলে গরম অনুভব বেশি হয়। এই সবকিছুর সম্মিলিত প্রভাবে গরম অনুভব বাড়তে পারে।