পর্যন্ত বাড়ল, গণপরিবহন বন্ধই থাকবে

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী ৫ মে পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। এ সময়ে আগের মতোই বিধিনিষেধগুলো বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গণপরিবহন ও অফিস বন্ধ থাকবে। তবে দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় আগে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, তার মেয়াদ ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হলো।

পাশাপাশি সরকারের সাম্প্রতিক কয়েকটি সিদ্ধান্তের কথাও চলমান বিধিনিষেধের তালিকায় যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় ধাপে ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন নামে পরিচিতি পায়। এক সপ্তাহ মেয়াদ বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সেসব বিধিনিষেধ চলার কথা ছিল, এখন তা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হলো। এই বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস ও গণপরিবহন আগের মতই বন্ধ থাকবে। তবে উৎপাদনমুখী শিল্প কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ চালাতে পারবে।

শুরুতে লকডাউনে শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও ‘জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে’ গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলার অনুমতি দেয়া হয়। এবার তা বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হলো। লকডাউনের মধ্যে ব্যাংকে লেনদেন করা যাচ্ছে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। সতর্কতার অংশ হিসেবে সীমিত জনবল দিয়ে বিভিন্ন শাখা চালু রেখেছে ব্যাংকগুলো। আদেশে যা কিছু নতুন

১. স্থল, নৌ বা বিমানে করে ভারত থেকে বাংলাদেশে যাত্রী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে পণ্য পরিবহন এর আওতামুক্ত থাকবে। ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ বাংলাদেশিরা ভারতে বাংলাদেশ মিশনের অনুমতি বা অনাপত্তিপত্র নিয়ে বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

২. দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে খোলা রাখা যাবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনসহ বাজার বা সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

৩. আসন্ন ঈদের নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

৪. মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে যাদের টিকা নেয়ার সনদ এবং কোভিডমুক্ত সনদ থাকবে, তারা নিজেদের বাড়িতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। সেক্ষেত্রে তাদের বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট থানায় অবহিত করতে হবে।

৫. মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে যাদের কেবল কোভিডমুক্ত সনদ থাকবে, তাদের সরকার নির্ধারিত ব্যবস্থায় কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে চিকিৎসকরা তাদের পরীক্ষা করে সম্মতি দিলে তারা নিজেদের বাড়ি ফিরে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের বাকি সময় শেষ করবেন। সেক্ষেত্রে তাদের এলাকার থানায় অবহিত করতে হবে।

৬. অন্যান্য দেশ থেকে আসা যাত্রীরা সরকার নির্ধারিত হোটেলে নিজ খরচে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।

বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১ , ১৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৬ রমজান ১৪৪২

বিধিনিষেধ ৫ মে

পর্যন্ত বাড়ল, গণপরিবহন বন্ধই থাকবে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলমান বিধিনিষেধ আরও এক সপ্তাহ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। আগামী ৫ মে পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ কার্যকর থাকবে। এ সময়ে আগের মতোই বিধিনিষেধগুলো বলবৎ থাকবে। অর্থাৎ গণপরিবহন ও অফিস বন্ধ থাকবে। তবে দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।

গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় আগে যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল, তার মেয়াদ ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ানো হলো।

পাশাপাশি সরকারের সাম্প্রতিক কয়েকটি সিদ্ধান্তের কথাও চলমান বিধিনিষেধের তালিকায় যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রোধে কঠোর বিধিনিষেধের দ্বিতীয় ধাপে ১৪ এপ্রিল থেকে দেশে জরুরি কাজ ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা ‘সর্বাত্মক’ লকডাউন নামে পরিচিতি পায়। এক সপ্তাহ মেয়াদ বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সেসব বিধিনিষেধ চলার কথা ছিল, এখন তা আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হলো। এই বিধিনিষেধের মধ্যে জরুরি সেবা দেয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস ও গণপরিবহন আগের মতই বন্ধ থাকবে। তবে উৎপাদনমুখী শিল্প কারখানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ চালাতে পারবে।

শুরুতে লকডাউনে শপিংমলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা থাকলেও ‘জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে’ গত ২৫ এপ্রিল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান ও শপিংমল খোলার অনুমতি দেয়া হয়। এবার তা বাড়িয়ে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি দেয়া হলো। লকডাউনের মধ্যে ব্যাংকে লেনদেন করা যাচ্ছে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত। সতর্কতার অংশ হিসেবে সীমিত জনবল দিয়ে বিভিন্ন শাখা চালু রেখেছে ব্যাংকগুলো। আদেশে যা কিছু নতুন

১. স্থল, নৌ বা বিমানে করে ভারত থেকে বাংলাদেশে যাত্রী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে পণ্য পরিবহন এর আওতামুক্ত থাকবে। ভিসার মেয়াদ উত্তীর্ণ বাংলাদেশিরা ভারতে বাংলাদেশ মিশনের অনুমতি বা অনাপত্তিপত্র নিয়ে বিশেষ বিবেচনায় বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে তাদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন সংক্রান্ত নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

২. দোকানপাট ও শপিংমল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে খোলা রাখা যাবে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনসহ বাজার বা সংস্থার ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। নির্দেশনা না মানলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

৩. আসন্ন ঈদের নামাজের বিষয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে।

৪. মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে যাদের টিকা নেয়ার সনদ এবং কোভিডমুক্ত সনদ থাকবে, তারা নিজেদের বাড়িতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। সেক্ষেত্রে তাদের বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট থানায় অবহিত করতে হবে।

৫. মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও চীন থেকে আসা যাত্রীদের মধ্যে যাদের কেবল কোভিডমুক্ত সনদ থাকবে, তাদের সরকার নির্ধারিত ব্যবস্থায় কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। ৩ থেকে ৫ দিনের মধ্যে চিকিৎসকরা তাদের পরীক্ষা করে সম্মতি দিলে তারা নিজেদের বাড়ি ফিরে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের বাকি সময় শেষ করবেন। সেক্ষেত্রে তাদের এলাকার থানায় অবহিত করতে হবে।

৬. অন্যান্য দেশ থেকে আসা যাত্রীরা সরকার নির্ধারিত হোটেলে নিজ খরচে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকবেন।