প্রকৃতি ধ্বংস করে কোন উন্নয়নই টেকসই হবে না

ঢাকা শহর তিনগুণ শব্দদূষণে আক্রান্ত

বন, জলবায়ু ও পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদের ভা-ারকে ধ্বংস করে কোন উন্নয়নই টেকসই হবে না। আমরা বুঝতে পেরেছি প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকা যায় না। করোনা মহামারী আমাদের তা শিখিয়েছে।

ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এবং পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত ‘রোড টু গ্লাসগো : আমাদের পৃথিবীর পুনরুদ্ধার ও জলবায়ু সুরক্ষা’ শিরোনামের ভার্চুয়াল সংলাপে ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে যা বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বিশ্ব গড়তে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই উদ্যোগী হতে হবে।

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ অনুবিভাগ) মো. মনিরুজ্জামান, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, জেন্ডার ও মানবাধিকার কর্মী শীপা হাফিজা, ক্লাইমেট ফিন্যান্স অ্যান্ড ক্লাইমেট ইন্ডিউসড মাইগ্রেশন প্রকাশ, ব্রিটিশ কাউন্সিলের আইবিপি ম্যানেজার আবুল বাশার, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা প্রমুখ।

অপর এক অনুষ্ঠানে বন, জলবায়ু ও পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ঢাকা শহর সহনীয় মাত্রার চেয়ে তিনগুণ তীব্রতার শব্দদূষণে আক্রান্ত। এর ফলে প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘নয়টি সিটি করপোরেশন এলাকায় ঘোষিত নীরব এলাকা শব্দমুক্ত রাখার জন্য প্রয়োজনে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন প্রবর্তন এবং কঠোরভাবে বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’ আয়োজিত ভার্চুয়াল কর্মশালায় ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘সচিবালয়ের চারপাশে নীরব এলাকা বাস্তবায়ন করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।’ তিনি বলেন, সব সিটি করপোরেশনে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনিক এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সব নীরব এলাকা শব্দমুক্ত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, সিটি করপোরেশন, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করবে।’

শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিনিয়ত অসচেতনতাবশত, অকারণেই ঘরে এবং ঘরের বাইরে শব্দদূষণ করা হচ্ছে। আবাসিক এলাকায় যানবাহনে অযাচিত হর্নের ব্যবহার, নির্মাণ কাজে সৃষ্ট শব্দ, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মাইক-সাউন্ড বক্সের মাধ্যমে সৃষ্ট শব্দ দ্বারা প্রতিনিয়ত শব্দদূষণ হচ্ছে, যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে।’

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে- ১ দশমিক ১ বিলিয়ন মানুষ (১২-৩৫ বছর বয়সী) অত্যধিক শব্দযুক্ত বিনোদনমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।’

মানসম্মত জীবনযাপনের লক্ষ্যে শব্দদূষণের বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও সচেতন করার আহ্বান জানান তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত মহাপরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর প্রাণ গোপাল দত্ত প্রমুখ।

বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১ , ১৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৬ রমজান ১৪৪২

প্রকৃতি ধ্বংস করে কোন উন্নয়নই টেকসই হবে না

ঢাকা শহর তিনগুণ শব্দদূষণে আক্রান্ত

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বন, জলবায়ু ও পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদের ভা-ারকে ধ্বংস করে কোন উন্নয়নই টেকসই হবে না। আমরা বুঝতে পেরেছি প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে টিকে থাকা যায় না। করোনা মহামারী আমাদের তা শিখিয়েছে।

ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস এবং পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থা কর্তৃক আয়োজিত ‘রোড টু গ্লাসগো : আমাদের পৃথিবীর পুনরুদ্ধার ও জলবায়ু সুরক্ষা’ শিরোনামের ভার্চুয়াল সংলাপে ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের পরিবেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে যা বিশ্ব দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বিশ্ব গড়তে বিশ্ব সম্প্রদায়কে এখনই উদ্যোগী হতে হবে।

পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন নেদারল্যান্ডসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ অনুবিভাগ) মো. মনিরুজ্জামান, অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ’র কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, জেন্ডার ও মানবাধিকার কর্মী শীপা হাফিজা, ক্লাইমেট ফিন্যান্স অ্যান্ড ক্লাইমেট ইন্ডিউসড মাইগ্রেশন প্রকাশ, ব্রিটিশ কাউন্সিলের আইবিপি ম্যানেজার আবুল বাশার, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা প্রমুখ।

অপর এক অনুষ্ঠানে বন, জলবায়ু ও পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, ঢাকা শহর সহনীয় মাত্রার চেয়ে তিনগুণ তীব্রতার শব্দদূষণে আক্রান্ত। এর ফলে প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘নয়টি সিটি করপোরেশন এলাকায় ঘোষিত নীরব এলাকা শব্দমুক্ত রাখার জন্য প্রয়োজনে বিদ্যমান আইন পরিবর্তন করে নতুন আইন প্রবর্তন এবং কঠোরভাবে বিদ্যমান আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’

আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে পরিবেশ অধিদপ্তরের ‘শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প’ আয়োজিত ভার্চুয়াল কর্মশালায় ঢাকার সরকারি বাসভবন থেকে যুক্ত হয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘সচিবালয়ের চারপাশে নীরব এলাকা বাস্তবায়ন করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।’ তিনি বলেন, সব সিটি করপোরেশনে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও প্রশাসনিক এলাকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সব নীরব এলাকা শব্দমুক্ত করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পুলিশ, সিটি করপোরেশন, বিআরটিএসহ বিভিন্ন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করবে।’

শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিনিয়ত অসচেতনতাবশত, অকারণেই ঘরে এবং ঘরের বাইরে শব্দদূষণ করা হচ্ছে। আবাসিক এলাকায় যানবাহনে অযাচিত হর্নের ব্যবহার, নির্মাণ কাজে সৃষ্ট শব্দ, বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মাইক-সাউন্ড বক্সের মাধ্যমে সৃষ্ট শব্দ দ্বারা প্রতিনিয়ত শব্দদূষণ হচ্ছে, যা মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করছে।’

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে- ১ দশমিক ১ বিলিয়ন মানুষ (১২-৩৫ বছর বয়সী) অত্যধিক শব্দযুক্ত বিনোদনমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন।’

মানসম্মত জীবনযাপনের লক্ষ্যে শব্দদূষণের বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি অন্যকেও সচেতন করার আহ্বান জানান তিনি।

পরিবেশ অধিদপ্তরের রুটিন দায়িত্বে নিয়োজিত মহাপরিচালক মো. মনিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার, সচিব জিয়াউল হাসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর প্রাণ গোপাল দত্ত প্রমুখ।