হেফাজত মাঠে থাকলেও নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীরা গা-ঢাকা দিয়েছেন

হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। শীর্ষ পর্যায়ে কিছু নেতা মাঠে থাকলেও নিষ্ক্রিয় আর মাঠপর্যায়ের মাঝারি নেতারা অনেকেই চুপচাপ রয়েছেন। কমিটি ভেঙে দেয়ার পর হেফাজতের সাংগঠনিক কার্যক্রমে পুরো নিষ্ক্রিয়তা বিরাজ করছে। বিভিন্ন মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযান চালানোর কারণে অনেকে হেফাজত নেতার মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে হেফাজত কোন দিকে এগোচ্ছে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। কারও কারও মতে, হেফাজতে ইসলাম নতুনভাবে সংগঠিত হবে। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন নেতৃত্ব থাকবে না হেফাজতে। অরাজনৈতিক সংগঠন করতে বিতর্কহীন নেতৃত্বে হেফাজতকে ঢেলে সাজানো হবে।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, নানা ধরনের বিতর্ক ও গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে হেফাজতের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্ব চলমান পরিস্থিতিতে মনে করছেন, হেফাজতের নেতৃত্বে এমন কোন ব্যক্তি থাকা উচিত নয় যারা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই হেফাজতে ঢেলে সাজাতেই তারা বিশেষ মহলের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটি ভেে ঙ দিয়েছেন। নয়া কমিটিতে কাদের হাতে নেতৃত্ব দেয়া যায় তা নিয়ে কাজ করছেন হেফাজত নেতারা।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, হেফাজতের যেসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে তদন্ত চলবে। ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে সর্বশেষ গত ২৬ ও ২৭ মার্চ ঘটনার সঙ্গে যে বা যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে তাদের ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। কোন আপোষও করা না হবে হেফাজতের সঙ্গে।

আমাদের হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলার চাপে পড়ে থেমে গেছে হেফাজতের সাংগঠনিক কার্যক্রম। নতুন করে কর্মসূচি দেয়া দূরে থাক নিজেদের নেতাকর্মীদের মামলা ও গ্রেপ্তারের হাত থেকে বাঁচাতে উপায় খুঁজে ফিরছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেও সমঝোতা না হওয়ায় শীর্ষ নেতারাসহ নানাজনের পরামর্শে কমিটি ভেঙে দিয়েও লাভ হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই অবস্থায় গ্রেপ্তার এড়াতে দিশেহারা হয়ে আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন হেফাজতের নেতাকর্মীরা। হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য বা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য প্রায় সবাই আত্মগোপনে বা মোবাইল বন্ধ রেখে গণমাধ্যমসহ সব ধরনের যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন। এমনকি হেফাজতে আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীও গণমাধ্যমে কোন সাক্ষাৎকার দিতে রাজি নন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে দশটি মামলা। যার মধ্যে উপজেলা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে দুইটি মামলা এবং উপজেলা ডাকবাংলো ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে একটি মামলা। এছাড়া থানা ভবনে ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা হয়েছে বাকি সাতটি মামলা। এসব মামলায় হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ১৪৯ জনকে সুনির্দিষ্ট আসামি ও ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে।

মামলার ভারে নুয়ে পড়া হেফাজত কী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানতে ফোন করা হয়েছে হেফাজতের একাধিক শীর্ষ নেতাকে। বেশিরভাগ নেতাই মোবাইল বন্ধ করে অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনের রয়েছেন বলে জানা গেছে। হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোন বক্তব্য দেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। হেফাজতের আমিরই কেবল বক্তব্য দিতে পারেন। কোন বক্তব্য দিয়ে নতুন করে বিপদে পড়তে চাই না।’ তিনি জানালেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বর্তমান কমিটির সদস্যরাই হেফাজতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

হেফাজতের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি এতদিন বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে এলেও গত কয়েকদিন ধরে তিনি নিজের মোবাইল বন্ধ রেখেছেন। এমনকি তিনি তার কর্মস্থল মেখল হামিউসসুন্নাহ মাদ্রাসা বা নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন না বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

হেফাজতের সাবেক কেন্দ্রীয় সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিসকে ফোন করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি রমজান উপলক্ষে মসজিদে এতেকাফে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

একইভাবে হেফাজতের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাওলানা সালাউদ্দীন নানুপুরী, সাবেক কমিটির নায়েবে আমির মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজনকে ফোন করে বক্তব্য নিতে চাইলেও তাদের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে হেফাজতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে হেফাজতে আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তা সম্ভব হয়নি। মাদ্রাসায় গিয়ে হেফাজতে আমিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে হুজুর ব্যস্ত বা বিশ্রাম নিচ্ছেন এমন জবাব পাওয়া গেছে। হেফাজতে আমিরের প্রেস সচিব ইনামুল হাসান ফারুকীকে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে লিখিত প্রশ্ন দেয়া হলেও তিনি এ মুহূর্তে হুজুর কোন বক্তব্য দেবেন না বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলা সম্পর্কে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন জানান, সব মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও তদন্ত সাপেক্ষে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করছে। অনেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলাও দায়ের করা হয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় অভিযুক্ত ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আমাদের সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না হেফাজত নেতারা। চলমান পরিস্থিতির কারণে গ্রেপ্তারসহ নানাভাবে হয়রানির ভয়ে শীর্ষ পর্যায় থেকে মাঠপর্যায়ের কোন নেতাই কথা বলতে চাইছেন না। গতকাল সকালে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদীর সিদ্ধিরগঞ্জের বাসায় গিয়েও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সংবাদের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি বাসায় গেলে কথা হয় সদস্য সচিবের ছেলে মোর্শেদ নূরের সঙ্গে। তিনি জানান, তার বাবা বাসায় কথা বলবেন না। এ সময় মাঠপর্যায়ে কয়েক নেতার সঙ্গে দেখা হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চলমান পরিস্থিতির কারণে গ্রেপ্তারসহ নানা হয়রানির ভয়ে কেউ কথা বলতে রাজি নয়। কোন কথায় বিপদে পড়তে হয়। এজন্য কথা না বলাই ভালো। তারা আরও জানান, রমজান মাস ইবাদতের মাস। কথা না বলে ইবাদতে মনোযোগ দেয়াই উত্তম। এ সময় এ প্রতিনিধি সদস্য সচিবের বড় ছেলে রাশেদ বিন নূরের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করেও কথা বলতে পারেননি। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার তার সঙ্গে এ প্রতিনিধি যোগাযোগ করলে রাশেদ বিন নূর প্রতিনিধিকে বুধবার বেলা ১১টায় তাদের বাসায় যেতে বলেন।

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলার চাপে পড়ে থেমে গেছে হেফাজতের সাংগঠনিক কার্যক্রম। নতুন করে কর্মসূচি দেয়া দূরে থাক নিজেদের নেতাকর্মীদের মামলা ও গ্রেপ্তারের হাত থেকে বাঁচাতে উপায় খুঁজে ফিরছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেও সমঝোতা না হওয়ায় শীর্ষ নেতারাসহ নানাজনের পরামর্শে কমিটি ভেঙে দিয়েও লাভ হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই অবস্থায় গ্রেপ্তার এড়াতে দিশেহারা হয়ে আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন হেফাজত নেতাকর্মীরা। হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য বা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য প্রায় সবাই আত্মগোপনে বা মোবাইল বন্ধ রেখে গণমাধ্যমসহ সব ধরনের যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন। এমনকি হেফাজত আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীও গণমাধ্যমে কোন সাক্ষাৎকার দিতে রাজি নন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে দশটি মামলা। যার মধ্যে উপজেলা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে দুইটি মামলা এবং উপজেলা ডাকবাংলো ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে একটি মামলা। এছাড়া থানা ভবনে ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা হয়েছে বাকি সাতটি মামলা। এসব মামলায় হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ১৪৯ জনকে সুনির্দিষ্ট আসামি ও ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে।

মামলার ভারে নুয়ে পড়া হেফাজত কী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানতে ফোন করা হয়েছে হেফাজতের একাধিক শীর্ষ নেতাকে। বেশিরভাগ নেতাই মোবাইল বন্ধ করে অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির বললেন, ‘এই মুর্হূতে কোন বক্তব্য দেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। হেফাজতের আমিরই কেবল বক্তব্য দিতে পারেন। কোন বক্তব্য দিয়ে নতুন করে বিপদে পড়তে চাই না।’ তিনি জানালেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বর্তমান কমিটির সদস্যরাই হেফাজতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

হেফাজতের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি এতদিন বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে এলেও গত কয়েকদিন ধরে তিনি নিজের মোবাইল বন্ধ রেখেছেন। এমনকি তিনি তার কর্মস্থল মেখল হামিউসসুন্নাহ মাদ্রাসা বা নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন না বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

হেফাজতের সাবেক কেন্দ্রীয় সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিসকে ফোন করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি রমজান উপলক্ষে মসজিদে এতেকাফে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল ২০২১ , ১৬ বৈশাখ ১৪২৮ ১৬ রমজান ১৪৪২

হেফাজত মাঠে থাকলেও নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীরা গা-ঢাকা দিয়েছেন

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা গা-ঢাকা দিয়েছেন। শীর্ষ পর্যায়ে কিছু নেতা মাঠে থাকলেও নিষ্ক্রিয় আর মাঠপর্যায়ের মাঝারি নেতারা অনেকেই চুপচাপ রয়েছেন। কমিটি ভেঙে দেয়ার পর হেফাজতের সাংগঠনিক কার্যক্রমে পুরো নিষ্ক্রিয়তা বিরাজ করছে। বিভিন্ন মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার অভিযান চালানোর কারণে অনেকে হেফাজত নেতার মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে হেফাজত কোন দিকে এগোচ্ছে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে। কারও কারও মতে, হেফাজতে ইসলাম নতুনভাবে সংগঠিত হবে। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন নেতৃত্ব থাকবে না হেফাজতে। অরাজনৈতিক সংগঠন করতে বিতর্কহীন নেতৃত্বে হেফাজতকে ঢেলে সাজানো হবে।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, নানা ধরনের বিতর্ক ও গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে হেফাজতের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃত্ব চলমান পরিস্থিতিতে মনে করছেন, হেফাজতের নেতৃত্বে এমন কোন ব্যক্তি থাকা উচিত নয় যারা রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাই হেফাজতে ঢেলে সাজাতেই তারা বিশেষ মহলের সঙ্গে পরামর্শ করে কমিটি ভেে ঙ দিয়েছেন। নয়া কমিটিতে কাদের হাতে নেতৃত্ব দেয়া যায় তা নিয়ে কাজ করছেন হেফাজত নেতারা।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, হেফাজতের যেসব নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে তদন্ত চলবে। ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে সর্বশেষ গত ২৬ ও ২৭ মার্চ ঘটনার সঙ্গে যে বা যাদের জড়িত থাকার প্রমাণ মিলবে তাদের ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। কোন আপোষও করা না হবে হেফাজতের সঙ্গে।

আমাদের হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলার চাপে পড়ে থেমে গেছে হেফাজতের সাংগঠনিক কার্যক্রম। নতুন করে কর্মসূচি দেয়া দূরে থাক নিজেদের নেতাকর্মীদের মামলা ও গ্রেপ্তারের হাত থেকে বাঁচাতে উপায় খুঁজে ফিরছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেও সমঝোতা না হওয়ায় শীর্ষ নেতারাসহ নানাজনের পরামর্শে কমিটি ভেঙে দিয়েও লাভ হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই অবস্থায় গ্রেপ্তার এড়াতে দিশেহারা হয়ে আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন হেফাজতের নেতাকর্মীরা। হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য বা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য প্রায় সবাই আত্মগোপনে বা মোবাইল বন্ধ রেখে গণমাধ্যমসহ সব ধরনের যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন। এমনকি হেফাজতে আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীও গণমাধ্যমে কোন সাক্ষাৎকার দিতে রাজি নন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে দশটি মামলা। যার মধ্যে উপজেলা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে দুইটি মামলা এবং উপজেলা ডাকবাংলো ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে একটি মামলা। এছাড়া থানা ভবনে ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা হয়েছে বাকি সাতটি মামলা। এসব মামলায় হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ১৪৯ জনকে সুনির্দিষ্ট আসামি ও ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে।

মামলার ভারে নুয়ে পড়া হেফাজত কী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানতে ফোন করা হয়েছে হেফাজতের একাধিক শীর্ষ নেতাকে। বেশিরভাগ নেতাই মোবাইল বন্ধ করে অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনের রয়েছেন বলে জানা গেছে। হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির বলেন, ‘এই মুহূর্তে কোন বক্তব্য দেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। হেফাজতের আমিরই কেবল বক্তব্য দিতে পারেন। কোন বক্তব্য দিয়ে নতুন করে বিপদে পড়তে চাই না।’ তিনি জানালেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বর্তমান কমিটির সদস্যরাই হেফাজতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

হেফাজতের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি এতদিন বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে এলেও গত কয়েকদিন ধরে তিনি নিজের মোবাইল বন্ধ রেখেছেন। এমনকি তিনি তার কর্মস্থল মেখল হামিউসসুন্নাহ মাদ্রাসা বা নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন না বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

হেফাজতের সাবেক কেন্দ্রীয় সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিসকে ফোন করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি রমজান উপলক্ষে মসজিদে এতেকাফে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।

একইভাবে হেফাজতের বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাওলানা সালাউদ্দীন নানুপুরী, সাবেক কমিটির নায়েবে আমির মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজনকে ফোন করে বক্তব্য নিতে চাইলেও তাদের নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে হেফাজতের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে হেফাজতে আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তা সম্ভব হয়নি। মাদ্রাসায় গিয়ে হেফাজতে আমিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে হুজুর ব্যস্ত বা বিশ্রাম নিচ্ছেন এমন জবাব পাওয়া গেছে। হেফাজতে আমিরের প্রেস সচিব ইনামুল হাসান ফারুকীকে মেসেঞ্জারের মাধ্যমে লিখিত প্রশ্ন দেয়া হলেও তিনি এ মুহূর্তে হুজুর কোন বক্তব্য দেবেন না বলে প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলা সম্পর্কে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহাদাত হোসেন জানান, সব মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও তদন্ত সাপেক্ষে সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করছে। অনেকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলাও দায়ের করা হয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় অভিযুক্ত ও জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

আমাদের সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, কথা বলতে রাজি হচ্ছেন না হেফাজত নেতারা। চলমান পরিস্থিতির কারণে গ্রেপ্তারসহ নানাভাবে হয়রানির ভয়ে শীর্ষ পর্যায় থেকে মাঠপর্যায়ের কোন নেতাই কথা বলতে চাইছেন না। গতকাল সকালে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদীর সিদ্ধিরগঞ্জের বাসায় গিয়েও তার সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সংবাদের সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি বাসায় গেলে কথা হয় সদস্য সচিবের ছেলে মোর্শেদ নূরের সঙ্গে। তিনি জানান, তার বাবা বাসায় কথা বলবেন না। এ সময় মাঠপর্যায়ে কয়েক নেতার সঙ্গে দেখা হলে তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চলমান পরিস্থিতির কারণে গ্রেপ্তারসহ নানা হয়রানির ভয়ে কেউ কথা বলতে রাজি নয়। কোন কথায় বিপদে পড়তে হয়। এজন্য কথা না বলাই ভালো। তারা আরও জানান, রমজান মাস ইবাদতের মাস। কথা না বলে ইবাদতে মনোযোগ দেয়াই উত্তম। এ সময় এ প্রতিনিধি সদস্য সচিবের বড় ছেলে রাশেদ বিন নূরের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করেও কথা বলতে পারেননি। উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার তার সঙ্গে এ প্রতিনিধি যোগাযোগ করলে রাশেদ বিন নূর প্রতিনিধিকে বুধবার বেলা ১১টায় তাদের বাসায় যেতে বলেন।

হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, দেশব্যাপী সহিংসতার ঘটনায় দায়ের করা মামলার চাপে পড়ে থেমে গেছে হেফাজতের সাংগঠনিক কার্যক্রম। নতুন করে কর্মসূচি দেয়া দূরে থাক নিজেদের নেতাকর্মীদের মামলা ও গ্রেপ্তারের হাত থেকে বাঁচাতে উপায় খুঁজে ফিরছেন সংগঠনটির শীর্ষ নেতারা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেও সমঝোতা না হওয়ায় শীর্ষ নেতারাসহ নানাজনের পরামর্শে কমিটি ভেঙে দিয়েও লাভ হয়নি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই অবস্থায় গ্রেপ্তার এড়াতে দিশেহারা হয়ে আতঙ্কে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন হেফাজত নেতাকর্মীরা। হেফাজতের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য বা আহ্বায়ক কমিটির সদস্য প্রায় সবাই আত্মগোপনে বা মোবাইল বন্ধ রেখে গণমাধ্যমসহ সব ধরনের যোগাযোগ এড়িয়ে চলছেন। এমনকি হেফাজত আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীও গণমাধ্যমে কোন সাক্ষাৎকার দিতে রাজি নন বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত ২৬ মার্চ হাটহাজারীতে সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে দশটি মামলা। যার মধ্যে উপজেলা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে দুইটি মামলা এবং উপজেলা ডাকবাংলো ভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা হয়েছে একটি মামলা। এছাড়া থানা ভবনে ভাঙচুর, পুলিশের ওপর হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা হয়েছে বাকি সাতটি মামলা। এসব মামলায় হেফাজতের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীসহ ১৪৯ জনকে সুনির্দিষ্ট আসামি ও ২৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি দেখানো হয়েছে।

মামলার ভারে নুয়ে পড়া হেফাজত কী পদক্ষেপ নিচ্ছে জানতে ফোন করা হয়েছে হেফাজতের একাধিক শীর্ষ নেতাকে। বেশিরভাগ নেতাই মোবাইল বন্ধ করে অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানা গেছে। হেফাজতের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা নাছির উদ্দীন মুনির বললেন, ‘এই মুর্হূতে কোন বক্তব্য দেয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। হেফাজতের আমিরই কেবল বক্তব্য দিতে পারেন। কোন বক্তব্য দিয়ে নতুন করে বিপদে পড়তে চাই না।’ তিনি জানালেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কমিটি বিলুপ্ত করা হয়েছে। বর্তমান কমিটির সদস্যরাই হেফাজতের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’

হেফাজতের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়েজি এতদিন বিভিন্ন ইস্যুতে বক্তব্য দিয়ে এলেও গত কয়েকদিন ধরে তিনি নিজের মোবাইল বন্ধ রেখেছেন। এমনকি তিনি তার কর্মস্থল মেখল হামিউসসুন্নাহ মাদ্রাসা বা নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন না বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

হেফাজতের সাবেক কেন্দ্রীয় সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা মীর ইদ্রিসকে ফোন করা হলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তিনি রমজান উপলক্ষে মসজিদে এতেকাফে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছে।