বিধিনিষেধ আরেকদফা বাড়তে পারে

‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি রাখতে হবে’

আরেক দফা বিধিনিষেধ বা ‘লকডাউন’ বাড়তে পারে। ভারতে সংক্রমণ বিপর্যয়ে রূপ নেয়ায় ও দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদের আগে চলমান বিধিনিষেধ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। তবে এবার বিধিনিষেধে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ এক সপ্তাহ বাড়িয়ে আগামী ৫ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ‘প্রত্যাশিত’ মাত্রায় না কমায় বিধিনিষেধ ফের বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল কয়েকটি গণমাধ্যমকে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ও দেশের কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় মানুষের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেশে করোনায় মৃত্যু এবং সংক্রমণ কমাতে হবে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিই রাখতে হবে।

করোনা মোকাবিলায় সামনের দিনগুলোতে (৫ মে’র পর) আরও বিধিনিষেধ আসতে পারে কিনা জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আমরা যথেষ্ট ঝুঁকির মধ্যে আছি। আগামী দিনগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিধিনিষেধগুলো মানব এবং আগামীতে কী অবস্থা তা পর্যবেক্ষণে থাকবে। আমাদের মনে রাখতে হবে জীবন আগে, জীবন বাঁচানোর জন্য প্রন্তুত থাকতে হবে।’ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৫ তারিখের পর বিধিনিষেধের কী হবে সেটা এখনও চিন্তা-ভাবনার পর্যায়ে রয়েছে। আমরা ৫ তারিখের আগেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’

আগামী ৫ মে পর্যন্ত বিদ্যমান ‘লকডাউন’ (অবরুদ্ধ) মেয়াদ রয়েছে। এরপর ঈদের আগে ৬ মে (বৃহস্পতিবার), ৯ মে (রোববার) এবং ১১ মে (মঙ্গলবার)- এই তিন কর্মদিবস রয়েছে। ৭ ও ৮ মে সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১০ মে শবে কদরের সরকারি ছুটি পড়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদ হতে পারে ১৩ বা ১৪ মে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঈদের আগে সরকারি কর্মদিবস মাত্র তিনটি। এ কারণে বিধিনিষেধ চলমান রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গত ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নাগরিকদের চলাফেরায় বিধিনিষেধ দেয়া হয় কিন্তু সংক্রমণ পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি। এ কারণে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হয়, ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত শুরু হয় এক সপ্তাহের ‘কঠোর’ বিধিনিষেধ। এটি বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়।

সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়ে গত ২৭ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাজনিত রোগ সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় কয়েকটি শর্ত সংযুক্ত করে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপের সময় বাড়ানো হলো।

‘লকডাউন’র কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সারাদেশের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাও বিড়ম্বনায় রয়েছেন। শপিংমল ও দোকানপাট খোলা রাখায় তাদের পক্ষে গণপরিবহন চালুর দাবি উঠছে। তবে এবার ‘লকডাউন’র মেয়াদ বাড়ানো হলেও গণপরিবহন সীমিত আকারে চালু রাখা হতে পারে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল ২০২১ , ১৮ বৈশাখ ১৪২৮ ১৮ রমজান ১৪৪২

ভারতের বিপর্যয় বিবেচনায়

বিধিনিষেধ আরেকদফা বাড়তে পারে

‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি রাখতে হবে’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আরেক দফা বিধিনিষেধ বা ‘লকডাউন’ বাড়তে পারে। ভারতে সংক্রমণ বিপর্যয়ে রূপ নেয়ায় ও দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদের আগে চলমান বিধিনিষেধ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। তবে এবার বিধিনিষেধে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু করার চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ এক সপ্তাহ বাড়িয়ে আগামী ৫ মে পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কিন্তু করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ‘প্রত্যাশিত’ মাত্রায় না কমায় বিধিনিষেধ ফের বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল কয়েকটি গণমাধ্যমকে বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশ ও দেশের কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনায় মানুষের চলাচলের ওপর নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। দেশে করোনায় মৃত্যু এবং সংক্রমণ কমাতে হবে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিই রাখতে হবে।

করোনা মোকাবিলায় সামনের দিনগুলোতে (৫ মে’র পর) আরও বিধিনিষেধ আসতে পারে কিনা জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আমরা যথেষ্ট ঝুঁকির মধ্যে আছি। আগামী দিনগুলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিধিনিষেধগুলো মানব এবং আগামীতে কী অবস্থা তা পর্যবেক্ষণে থাকবে। আমাদের মনে রাখতে হবে জীবন আগে, জীবন বাঁচানোর জন্য প্রন্তুত থাকতে হবে।’ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৫ তারিখের পর বিধিনিষেধের কী হবে সেটা এখনও চিন্তা-ভাবনার পর্যায়ে রয়েছে। আমরা ৫ তারিখের আগেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেব।’

আগামী ৫ মে পর্যন্ত বিদ্যমান ‘লকডাউন’ (অবরুদ্ধ) মেয়াদ রয়েছে। এরপর ঈদের আগে ৬ মে (বৃহস্পতিবার), ৯ মে (রোববার) এবং ১১ মে (মঙ্গলবার)- এই তিন কর্মদিবস রয়েছে। ৭ ও ৮ মে সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১০ মে শবে কদরের সরকারি ছুটি পড়েছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ঈদ হতে পারে ১৩ বা ১৪ মে।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঈদের আগে সরকারি কর্মদিবস মাত্র তিনটি। এ কারণে বিধিনিষেধ চলমান রাখার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।

করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় গত ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নাগরিকদের চলাফেরায় বিধিনিষেধ দেয়া হয় কিন্তু সংক্রমণ পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হয়নি। এ কারণে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়ানো হয়, ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত শুরু হয় এক সপ্তাহের ‘কঠোর’ বিধিনিষেধ। এটি বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়।

সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়িয়ে গত ২৭ এপ্রিল প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, করোনাজনিত রোগ সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের সব বিধিনিষেধ ও কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় কয়েকটি শর্ত সংযুক্ত করে ২৮ এপ্রিল মধ্যরাত থেকে ৫ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বিধিনিষেধ আরোপের সময় বাড়ানো হলো।

‘লকডাউন’র কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সারাদেশের পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাও বিড়ম্বনায় রয়েছেন। শপিংমল ও দোকানপাট খোলা রাখায় তাদের পক্ষে গণপরিবহন চালুর দাবি উঠছে। তবে এবার ‘লকডাউন’র মেয়াদ বাড়ানো হলেও গণপরিবহন সীমিত আকারে চালু রাখা হতে পারে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং জনপ্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।