মহামারীতে গার্মেন্ট কর্মীদের বেতন কমেছে ৩৫ ভাগ

জড়িয়ে পড়েছেন দেনায়

করোনা মহামারীতে ২০২০ সালে দেশের তৈরি পোশাক কর্মীদের বেতন ৩৫ শতাংশ কমেছে। আয় কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কর্মীরা দেনায় জড়িয়ে পড়েছেন। সেই সঙ্গে চাকরি হারিয়েছেন বহু কর্মী। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ৭২ শতাংশ কর্মীকে কোন পাওনা ছাড়াই বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক ক্রেতাই (৯৮ শতাংশ) চাকরিচ্যুত এসব কর্মীদের আংশিক পাওনা মেটাতে অবদান রাখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

‘দি উইকেস্ট লিংক ইন গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন : হাউ দি প্যানডেমিক ইজ এফেক্টিং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স’ শীর্ষক গবেষণাটি চালিয়েছে ইউএনডিপি ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির চৌধুরী সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ এবং ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড বিজনেস।

ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি গতকাল ভার্চুয়ালি এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে করোনাকালীন গার্মেন্ট কর্মী বিশেষ করে নারী কর্মীদের বিভিন্ন ঝুঁকির চিত্র উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, চাহিদা কমে যাওয়া, বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়া, শিপমেন্ট বাতিল, সময়মতো পণ্যের মূল্য না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মীদের ঝুঁকিও বেড়েছে। গবেষণায় উঠে এসেছে অনেক ব্যবসা হয় বন্ধ হয়ে গেছে অথবা সংকুচিত হয়েছে। ফলাফল হিসাবে অনেক নারী কর্মীর চাকরি চলে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকের উপার্জন কমে গেছে। বাধ্য হয়ে কর্মীরা দেনায় জড়িয়ে পড়েছেন।

গবেষণার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রেতা, বাংলাদেশি পোশাক কারখানার মালিক, আন্তর্জাতিক সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের গার্মেন্ট কর্মীদের বিশদ সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। সুইডিশ সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত এই গবেষণায় পুরনো অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে গার্মেন্ট কর্মীদের ঝুঁকি হ্রাসের জন্য আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে গবেষণায়। এতে আন্তর্জাতিক ক্রেতা, বাংলাদেশি সরবরাহকারীর পাশাপাশি বাংলাদেশের গার্মেন্ট কর্মীরাও উপকৃত হবেন বলে গবেষকদের অভিমত।

শুক্রবার, ৩০ এপ্রিল ২০২১ , ১৮ বৈশাখ ১৪২৮ ১৮ রমজান ১৪৪২

ইউএনডিপির গবেষণা

মহামারীতে গার্মেন্ট কর্মীদের বেতন কমেছে ৩৫ ভাগ

জড়িয়ে পড়েছেন দেনায়

সংবাদ ডেস্ক

করোনা মহামারীতে ২০২০ সালে দেশের তৈরি পোশাক কর্মীদের বেতন ৩৫ শতাংশ কমেছে। আয় কমে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে কর্মীরা দেনায় জড়িয়ে পড়েছেন। সেই সঙ্গে চাকরি হারিয়েছেন বহু কর্মী। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় পরিচালিত এক গবেষণায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা চাকরি হারিয়েছেন তাদের মধ্যে ৭২ শতাংশ কর্মীকে কোন পাওনা ছাড়াই বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। অধিকাংশ আন্তর্জাতিক ক্রেতাই (৯৮ শতাংশ) চাকরিচ্যুত এসব কর্মীদের আংশিক পাওনা মেটাতে অবদান রাখতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

‘দি উইকেস্ট লিংক ইন গ্লোবাল সাপ্লাই চেইন : হাউ দি প্যানডেমিক ইজ এফেক্টিং বাংলাদেশ গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স’ শীর্ষক গবেষণাটি চালিয়েছে ইউএনডিপি ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির চৌধুরী সেন্টার ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ এবং ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড বিজনেস।

ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জি গতকাল ভার্চুয়ালি এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। প্রতিবেদনে করোনাকালীন গার্মেন্ট কর্মী বিশেষ করে নারী কর্মীদের বিভিন্ন ঝুঁকির চিত্র উঠে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, চাহিদা কমে যাওয়া, বাজার বন্ধ হয়ে যাওয়া, শিপমেন্ট বাতিল, সময়মতো পণ্যের মূল্য না পাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশের গার্মেন্ট খাত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্মীদের ঝুঁকিও বেড়েছে। গবেষণায় উঠে এসেছে অনেক ব্যবসা হয় বন্ধ হয়ে গেছে অথবা সংকুচিত হয়েছে। ফলাফল হিসাবে অনেক নারী কর্মীর চাকরি চলে যাওয়ার পাশাপাশি অনেকের উপার্জন কমে গেছে। বাধ্য হয়ে কর্মীরা দেনায় জড়িয়ে পড়েছেন।

গবেষণার অংশ হিসেবে ২০২০ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রেতা, বাংলাদেশি পোশাক কারখানার মালিক, আন্তর্জাতিক সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশের গার্মেন্ট কর্মীদের বিশদ সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। সুইডিশ সরকারের অর্থায়নে পরিচালিত এই গবেষণায় পুরনো অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন গবেষকরা। করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে গার্মেন্ট কর্মীদের ঝুঁকি হ্রাসের জন্য আইনের সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিতের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়েছে গবেষণায়। এতে আন্তর্জাতিক ক্রেতা, বাংলাদেশি সরবরাহকারীর পাশাপাশি বাংলাদেশের গার্মেন্ট কর্মীরাও উপকৃত হবেন বলে গবেষকদের অভিমত।