প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধের দাবি

শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গার্মেন্টস মালিকদের প্রতি ১০ মের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস প্রদানের নির্দেশনার নিন্দা এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের এক মাসের মূল মজুরির সমান ঈদ বোনাসসহ এপ্রিল মাসের মজুরি পরিশোধের দাবি জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট। গতকাল গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানান।

নেতারা বলেন, ‘আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সুযোগসন্ধানী মালিকদের জন্য ১০ মে শবে কদর তার আগে ৭ ও ৮ মে শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনের কারণ দেখিয়ে নির্দেশনা লঙ্ঘন করার এবং বরাবরের মতো শেষ মুহূর্তের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করার পথ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এ ধরনের আচরণের পুনরাবৃত্তি শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে।’

মে মাসের প্রথম সপ্তাহ অর্থাৎ ৬ মে’র মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের কমপক্ষে ১ মাসের মজুরির সমান ঈদ বোনাস এবং এপ্রিল মাসের মজুরি পরিশোধের দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘অভাবের সুযোগ নিয়ে সস্তায় শ্রমিকদের শ্রম লুণ্ঠনের ব্যবস্থা করা স্থিতিশীল শিল্প সম্পর্ক গড়ে তোলার মনোভাব নয়।’

নেতারা আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন চলমান। এই লকডাউনের মধ্যেও পোশাক শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতি ও রপ্তানির প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদনের চাকা সচল রেখেছে। কিন্তু সরকার শ্রমিকদের এই ত্যাগের কোন স্বীকৃতি দেয়নি। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও ঝুঁকি ভাতা দেয়ার উদ্যোগ নেয়নি। পরিবহনের ব্যবস্থা না করে কারখানা চালু রেখে, স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয় আয়োজন ছাড়া কাজ করানোর মধ্যে দিয়ে শ্রমিকদের দুর্ভোগে ফেলার জন্য দায়ি মালিকদের বিরুদ্ধে সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি।’

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘করোনা দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে সময়মতো মজুরি পরিশোধ না করা, মজুরি কর্তন, ছাঁটাই, কারখানা বন্ধ বা স্থানান্তর করে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত ইত্যাদি বহুভাবে শ্রমিকদের ওপর নিপীড়নের ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করেছে, তাদের শোষণ-দায়িত্বহীনতার মাত্রা বাড়াতে উৎসাহিত করেছে। করোনা দুর্যোগের মধ্যে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁঁকি বিবেচনায় না নিয়ে সরকার কর্মঘণ্টাসংক্রান্ত শ্রম আইনের ধারাসমূহ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে নগ্নভাবে মালিকদের পক্ষ নিয়েছে। ২০ রোজার মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার অধিকাংশ শ্রমিক সংগঠনের দাবিকে উপেক্ষা করে ১০ মে’র মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধের নির্দেশনা এক পাক্ষিকভাবে মালিকদের স্বার্থরক্ষায় সরকারের অবস্থানের ধারাবাহিকতা।’

শনিবার, ০১ মে ২০২১ , ১৯ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমজান ১৪৪২

প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধের দাবি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গার্মেন্টস মালিকদের প্রতি ১০ মের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-বোনাস প্রদানের নির্দেশনার নিন্দা এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের এক মাসের মূল মজুরির সমান ঈদ বোনাসসহ এপ্রিল মাসের মজুরি পরিশোধের দাবি জানিয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট। গতকাল গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আহসান হাবিব বুলবুল এবং সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ এক যৌথ বিবৃতিতে এই দাবি জানান।

নেতারা বলেন, ‘আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সুযোগসন্ধানী মালিকদের জন্য ১০ মে শবে কদর তার আগে ৭ ও ৮ মে শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনের কারণ দেখিয়ে নির্দেশনা লঙ্ঘন করার এবং বরাবরের মতো শেষ মুহূর্তের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে শ্রমিকদের ন্যায্য প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করার পথ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এ ধরনের আচরণের পুনরাবৃত্তি শ্রমিকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভের জন্ম দিচ্ছে।’

মে মাসের প্রথম সপ্তাহ অর্থাৎ ৬ মে’র মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের কমপক্ষে ১ মাসের মজুরির সমান ঈদ বোনাস এবং এপ্রিল মাসের মজুরি পরিশোধের দাবি জানিয়ে নেতারা বলেন, ‘অভাবের সুযোগ নিয়ে সস্তায় শ্রমিকদের শ্রম লুণ্ঠনের ব্যবস্থা করা স্থিতিশীল শিল্প সম্পর্ক গড়ে তোলার মনোভাব নয়।’

নেতারা আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বাত্মক লকডাউন চলমান। এই লকডাউনের মধ্যেও পোশাক শ্রমিকরা দেশের অর্থনীতি ও রপ্তানির প্রয়োজনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উৎপাদনের চাকা সচল রেখেছে। কিন্তু সরকার শ্রমিকদের এই ত্যাগের কোন স্বীকৃতি দেয়নি। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও ঝুঁকি ভাতা দেয়ার উদ্যোগ নেয়নি। পরিবহনের ব্যবস্থা না করে কারখানা চালু রেখে, স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রয়োজনীয় আয়োজন ছাড়া কাজ করানোর মধ্যে দিয়ে শ্রমিকদের দুর্ভোগে ফেলার জন্য দায়ি মালিকদের বিরুদ্ধে সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি।’

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, ‘করোনা দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে সময়মতো মজুরি পরিশোধ না করা, মজুরি কর্তন, ছাঁটাই, কারখানা বন্ধ বা স্থানান্তর করে ক্ষতিপূরণ না দিয়ে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত ইত্যাদি বহুভাবে শ্রমিকদের ওপর নিপীড়নের ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করেছে, তাদের শোষণ-দায়িত্বহীনতার মাত্রা বাড়াতে উৎসাহিত করেছে। করোনা দুর্যোগের মধ্যে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যঝুঁঁকি বিবেচনায় না নিয়ে সরকার কর্মঘণ্টাসংক্রান্ত শ্রম আইনের ধারাসমূহ ৬ মাসের জন্য স্থগিত করে নগ্নভাবে মালিকদের পক্ষ নিয়েছে। ২০ রোজার মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার অধিকাংশ শ্রমিক সংগঠনের দাবিকে উপেক্ষা করে ১০ মে’র মধ্যে বেতন-বোনাস পরিশোধের নির্দেশনা এক পাক্ষিকভাবে মালিকদের স্বার্থরক্ষায় সরকারের অবস্থানের ধারাবাহিকতা।’