তিন কারণে দাম বেশি তরমুজের

চলতি বছরের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে তরমুজের। খুচরায় একটা ছোট আকৃতির তরমুজ কিনতেও গুনতে হচ্ছে ২০০ টাকা। আর একটা বড় আকৃতির তরমুজের জন্য ব্যয় করতে হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। কিন্তু কেন এত দাম বাড়ছে তরমুজের। এ নিয়ে ফড়িয়া, পাইকার ও আড়তদাররা জানায়, তিন কারণে দাম বেড়েছে তরমুজের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি বছর তরমুজের শুরু থেকেই ভালো দাম পেতে থাকেন চাষিরা। এখন অনেকটা শেষের দিকে তরমুজের সিজন। শুরুতে যে দাম পাওয়া গেছে এখন তার দ্বিগুণ দাম পাওয়া যাচ্ছে। পাইকারি বাজারে সবচেয়ে ছোট আকৃতির তরমুজরে দামও মিলছে ১০০ টাকার ওপরে আর খুচরায় সেটা ২০০ টাকার নিচে মিলছে না। তারা বলছেন, ‘তিন কারণে তরমুজের দাম বাড়ছে।’

তার মধ্যে অন্যতম চাঁদা দাবি। তরমুজ নদীপথে ঘাট পার হলেই বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বা আনসার সদস্যরা নিচ্ছেন এ চাঁদা। সেখানে ট্রলার বা গাড়িপ্রতি সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা দিতে হচ্ছে তাদের। একই অবস্থা তৈরি হয়েছে বুড়িগঙ্গা নদীতেও। নদীপথে এখানে তরমুজের ট্রলার ভিড়লেই প্রতি পিস তরমুজ খালাস করতে লেবারদের দিতে হয় ৫ টাকা ৭০ পয়সা। একটা তরমুজ ছোট কিংবা বড় যেকোন সাইজের হলেই ঘাট থেকে মাত্র ১০ গজের দূরত্বের আড়তে পৌঁছে দিতে হলে প্রতি এক পিস তরমুজে গুনতে হবে এ টাকা।

তারা দ্বিতীয় কারণ পরিবহন ভাড়াকে বলছেন। লকডাউনের অজুহাতে পরিবহন ভাড়া এখন বেড়েছে অনেক। এর আগে বরগুনা থেকে একটি গাড়িতে তরমুজ আনতে ১৮ থেকে ২০ হাজারের মধ্যে পাওয়া গেলেও এখন গুনতে হয় ২৭ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এ কারণে তরমুজ আনতে বড় খরচ চলে যায় গাড়ি ভাড়ার মধ্যে। আবার রাজধানীর বাদামতলী থেকে খুচরা বাজারে আনতে গেলেও বেশি ভাড়া, পথে স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর নামে চাঁদা, বাজারের চাঁদা ও পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাঝে মধ্যে টাকা দিতে হয়, এমনটাও বলছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। সিজন শেষে মালের সংকট দেখায় দাম বেড়ে যায় বলে জানান তারা। সিজন শুরুতেই একটি তরমুজ ১৫০ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন তা ৩০০ টাকা হয়েছে। এটা হয়েছে মালের স্বল্পতার কারণে বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া তারা বললেন, হাসিল খরচ, তৃতীয় লিঙ্গের একটা চাঁদা, কেউ আহত না হয়েও হাসপাতালে ভর্তির নামে বাদামতলীতে এক শ্রেণীর মানুষ টাকা ওঠাতে আসে।

হাবিব নামে খুলনা থেকে আসা এক ব্যবসায়ী বলছেন, একটি তরমুজ কৃষকের কাছ থেকে কিনে রাজধানীতে আনতে ২৫ টাকা খরচ পড়ে। এটা বিভিন্ন ধরনের টাকা পরিশোধ করেই এ খরচটা পড়ে। এবারের সিজনে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম চলছে তরমুজের যা গত ১০ বছরের মধ্যেও এতো দাম হয়নি। এটা শুধু রাজধানীতেই নয় প্রান্তিক চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। যদিও রাজধানীর বাজার ও প্রান্তিক চাষির মধ্যে বিস্তর ফারাক।

শনিবার, ০১ মে ২০২১ , ১৯ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমজান ১৪৪২

তিন কারণে দাম বেশি তরমুজের

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

image

চলতি বছরের সর্বোচ্চ দাম উঠেছে তরমুজের। খুচরায় একটা ছোট আকৃতির তরমুজ কিনতেও গুনতে হচ্ছে ২০০ টাকা। আর একটা বড় আকৃতির তরমুজের জন্য ব্যয় করতে হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। কিন্তু কেন এত দাম বাড়ছে তরমুজের। এ নিয়ে ফড়িয়া, পাইকার ও আড়তদাররা জানায়, তিন কারণে দাম বেড়েছে তরমুজের।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি বছর তরমুজের শুরু থেকেই ভালো দাম পেতে থাকেন চাষিরা। এখন অনেকটা শেষের দিকে তরমুজের সিজন। শুরুতে যে দাম পাওয়া গেছে এখন তার দ্বিগুণ দাম পাওয়া যাচ্ছে। পাইকারি বাজারে সবচেয়ে ছোট আকৃতির তরমুজরে দামও মিলছে ১০০ টাকার ওপরে আর খুচরায় সেটা ২০০ টাকার নিচে মিলছে না। তারা বলছেন, ‘তিন কারণে তরমুজের দাম বাড়ছে।’

তার মধ্যে অন্যতম চাঁদা দাবি। তরমুজ নদীপথে ঘাট পার হলেই বিভিন্ন স্থানে পুলিশ বা আনসার সদস্যরা নিচ্ছেন এ চাঁদা। সেখানে ট্রলার বা গাড়িপ্রতি সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা দিতে হচ্ছে তাদের। একই অবস্থা তৈরি হয়েছে বুড়িগঙ্গা নদীতেও। নদীপথে এখানে তরমুজের ট্রলার ভিড়লেই প্রতি পিস তরমুজ খালাস করতে লেবারদের দিতে হয় ৫ টাকা ৭০ পয়সা। একটা তরমুজ ছোট কিংবা বড় যেকোন সাইজের হলেই ঘাট থেকে মাত্র ১০ গজের দূরত্বের আড়তে পৌঁছে দিতে হলে প্রতি এক পিস তরমুজে গুনতে হবে এ টাকা।

তারা দ্বিতীয় কারণ পরিবহন ভাড়াকে বলছেন। লকডাউনের অজুহাতে পরিবহন ভাড়া এখন বেড়েছে অনেক। এর আগে বরগুনা থেকে একটি গাড়িতে তরমুজ আনতে ১৮ থেকে ২০ হাজারের মধ্যে পাওয়া গেলেও এখন গুনতে হয় ২৭ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এ কারণে তরমুজ আনতে বড় খরচ চলে যায় গাড়ি ভাড়ার মধ্যে। আবার রাজধানীর বাদামতলী থেকে খুচরা বাজারে আনতে গেলেও বেশি ভাড়া, পথে স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর নামে চাঁদা, বাজারের চাঁদা ও পথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মাঝে মধ্যে টাকা দিতে হয়, এমনটাও বলছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। সিজন শেষে মালের সংকট দেখায় দাম বেড়ে যায় বলে জানান তারা। সিজন শুরুতেই একটি তরমুজ ১৫০ টাকায় পাওয়া গেলেও এখন তা ৩০০ টাকা হয়েছে। এটা হয়েছে মালের স্বল্পতার কারণে বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া তারা বললেন, হাসিল খরচ, তৃতীয় লিঙ্গের একটা চাঁদা, কেউ আহত না হয়েও হাসপাতালে ভর্তির নামে বাদামতলীতে এক শ্রেণীর মানুষ টাকা ওঠাতে আসে।

হাবিব নামে খুলনা থেকে আসা এক ব্যবসায়ী বলছেন, একটি তরমুজ কৃষকের কাছ থেকে কিনে রাজধানীতে আনতে ২৫ টাকা খরচ পড়ে। এটা বিভিন্ন ধরনের টাকা পরিশোধ করেই এ খরচটা পড়ে। এবারের সিজনে ইতিহাসের সর্বোচ্চ দাম চলছে তরমুজের যা গত ১০ বছরের মধ্যেও এতো দাম হয়নি। এটা শুধু রাজধানীতেই নয় প্রান্তিক চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছেন। যদিও রাজধানীর বাজার ও প্রান্তিক চাষির মধ্যে বিস্তর ফারাক।