এবারের শ্রীলঙ্কা সফরে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা টাইগার বোলাররা নিজেদের করে নিয়েছে। ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের পিচে পেসার তাসকিন আহমেদের তিন উইকেট শিকারের পাশাপাশি দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজ একটি করে লঙ্কান উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন। কিন্তু ৩৮২ রানের মাথায় সিরিজের স্বাগতিক দলের ষষ্ঠ ব্যাটারকে সাজঘরে পাঠিয়েও দিনশেষে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই বাংলাদেশ দল। নিরোশান ডিকওয়েলা ও রমেশ মেন্ডিসের সপ্তম উইকেটে অপরাজিত ৮৭ রানের সুবাদে আলোর স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার সময়ে প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার রান ছয় উইকেটে ৪৬৯। প্রথম দিনে ২৮ রানে স্লিপে করুনারতেœর ক্যাচ ছেড়ে দেয়া নাজমুল হোসেন শান্ত গতকাল দ্বিতীয় স্লিপে মেন্ডিসের ক্যাচ না ছাড়লে পরিস্থিতি ভিন্নরকম হতে পারত।
চা বিরতির পর দুই দফা খেলা বন্ধ থাকে। প্রথমবার গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে ২০ মিনিট বন্ধ থাকার পর বিকেল সোয়া চারটার দিকে আলোর স্বল্পতায় বন্ধ হয় খেলা। বিকেল ৫.০৪টায় দিনের বাকি সময়ের খেলা বন্ধ ঘোষণা করার সময়ে ৬৪ বলে সাত বাউন্ডারিতে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন ডিকওয়েলা, তার সঙ্গী মেন্ডিসের রান তখন ২২।
রিপোর্টের শুরুতেই বলা হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ ছাড়ার কথা। হ্যাঁ, জুটিটা ভাঙার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন শান্ত। মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির পর দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন মেন্ডিস। প্রথম দিনে ২৮ রানে জীবন পেয়ে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক করুনারতেœ করেছিলেন ১১৮ রান। মেন্ডিস কতদূর যাবেন, তা বলে দেবে সময়। দুইবারই হতভাগ্য বোলারটির নাম তাসকিন আহমেদ।
তারপরও প্রথম দিনে ধীরগতিতে শুরু করা শ্রীলঙ্কানদের দ্বিতীয় দিনে দ্রুতলয়ে রান তোলার কৌশলটা ব্যর্থ করে দিয়েছে বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট, যার নেতৃত্বে ছিলেন তাসকিন আহমেদ।
সকালের সেশনেই তাসকিনের দূর্দান্ত দুটো স্পেলে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ দল। প্রথম দিনের ১৩১ রানের সঙ্গে আর মাত্র ৯ রান যোগ করেই তাসকিনের শিকারে পরিণত হন লাহিরু থিরিমানে, ধরা পড়েন উইকেটকিপার লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে। শ্রীলঙ্কান দলের স্কোর তখন ৩১৩ রান।
এরপর আর ৬ রান যোগ হতেই আবারও আঘাত করেন তাসকিন। কট বিহাইন্ড হন অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (৫)।
নিউজিল্যান্ড সফরে নিজেকে ফিরে পাওয়া তাসকিন আহমেদ সকালের সেশনে যোগ্য সহায়তা পেয়েছেন দুই পেস বোলার শরিফুল ইসলাম ও আবু জায়েদ রাহীর কাছ থেকে। সকালের সেশনে শ্রীলঙ্কার মোট সংগ্রহ ৪৩ রানের মধ্যে এই তিনজনের ২৬ ওভারে আসে মাত্র ১৮ রান।
মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে তাইজুলের স্পিনে ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ফিরলে আট ওভারের মধ্যে মাত্র ১৫ রানে তিন ব্যাটারকে সাজঘরে পায় শ্রীলঙ্কা।
পঞ্চম উইকেটে ওশাদা ফার্নান্দোও পাথুম নিশাঙ্কা ৫৪ রান যোগ করে মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির পর পাঁচ বলের ব্যবধানে সাজঘরের পথ ধরেন। এই জুটিটাও ভাঙেন তাসকিন। ব্যক্তিগত ১০ রানে জীবন পাওয়া নিশাঙ্কা (৩০) বোল্ড হন।
আট বাউন্ডারিতে ৮১ রান করা ওশাদা ফার্নান্দোকে ফেরানোর কৃতিত্ব অনেকটাই উইকেটকিপার লিটন কুমার দাসের। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে ফার্নান্দো যে ল্যাপ সুইপ করতে যাচ্ছেন, তা আগেভাগেই টের পেয়ে ক্যাচটা ধরার জন্য যুৎসই পজিশনে সময়মতোই সরে যেতে পেরেছিলেন লিটন।
দিনের বাকি সময়টা বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন নিরোশান ডিকওয়েলা। তিনি পাল্টা আক্রমণে সুইপ, কাট ও ড্রাইভের সমন্বয়ে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলেন। তার সঙ্গী মেন্ডিস কিছুটা রক্ষণাত্মক খেললেও অভিষিক্ত বোলার শরিফুলকে বোলারস ব্যাক ড্রাইভে সীমানা ছাড়া করেছেন একবার।
শনিবার, ০১ মে ২০২১ , ১৯ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমজান ১৪৪২
বিশেষ প্রতিনিধি
এবারের শ্রীলঙ্কা সফরে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনটা টাইগার বোলাররা নিজেদের করে নিয়েছে। ব্যাটারদের স্বর্গরাজ্য ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের পিচে পেসার তাসকিন আহমেদের তিন উইকেট শিকারের পাশাপাশি দুই স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও মেহেদি হাসান মিরাজ একটি করে লঙ্কান উইকেটের পতন ঘটিয়েছেন। কিন্তু ৩৮২ রানের মাথায় সিরিজের স্বাগতিক দলের ষষ্ঠ ব্যাটারকে সাজঘরে পাঠিয়েও দিনশেষে খুব একটা সুবিধাজনক অবস্থায় নেই বাংলাদেশ দল। নিরোশান ডিকওয়েলা ও রমেশ মেন্ডিসের সপ্তম উইকেটে অপরাজিত ৮৭ রানের সুবাদে আলোর স্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার সময়ে প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কার রান ছয় উইকেটে ৪৬৯। প্রথম দিনে ২৮ রানে স্লিপে করুনারতেœর ক্যাচ ছেড়ে দেয়া নাজমুল হোসেন শান্ত গতকাল দ্বিতীয় স্লিপে মেন্ডিসের ক্যাচ না ছাড়লে পরিস্থিতি ভিন্নরকম হতে পারত।
চা বিরতির পর দুই দফা খেলা বন্ধ থাকে। প্রথমবার গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে ২০ মিনিট বন্ধ থাকার পর বিকেল সোয়া চারটার দিকে আলোর স্বল্পতায় বন্ধ হয় খেলা। বিকেল ৫.০৪টায় দিনের বাকি সময়ের খেলা বন্ধ ঘোষণা করার সময়ে ৬৪ বলে সাত বাউন্ডারিতে ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন ডিকওয়েলা, তার সঙ্গী মেন্ডিসের রান তখন ২২।
রিপোর্টের শুরুতেই বলা হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ ছাড়ার কথা। হ্যাঁ, জুটিটা ভাঙার সহজ সুযোগ হাতছাড়া করেছেন শান্ত। মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির পর দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়েছিলেন মেন্ডিস। প্রথম দিনে ২৮ রানে জীবন পেয়ে শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক করুনারতেœ করেছিলেন ১১৮ রান। মেন্ডিস কতদূর যাবেন, তা বলে দেবে সময়। দুইবারই হতভাগ্য বোলারটির নাম তাসকিন আহমেদ।
তারপরও প্রথম দিনে ধীরগতিতে শুরু করা শ্রীলঙ্কানদের দ্বিতীয় দিনে দ্রুতলয়ে রান তোলার কৌশলটা ব্যর্থ করে দিয়েছে বাংলাদেশের বোলিং ইউনিট, যার নেতৃত্বে ছিলেন তাসকিন আহমেদ।
সকালের সেশনেই তাসকিনের দূর্দান্ত দুটো স্পেলে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ দল। প্রথম দিনের ১৩১ রানের সঙ্গে আর মাত্র ৯ রান যোগ করেই তাসকিনের শিকারে পরিণত হন লাহিরু থিরিমানে, ধরা পড়েন উইকেটকিপার লিটন কুমার দাসের গ্লাভসে। শ্রীলঙ্কান দলের স্কোর তখন ৩১৩ রান।
এরপর আর ৬ রান যোগ হতেই আবারও আঘাত করেন তাসকিন। কট বিহাইন্ড হন অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (৫)।
নিউজিল্যান্ড সফরে নিজেকে ফিরে পাওয়া তাসকিন আহমেদ সকালের সেশনে যোগ্য সহায়তা পেয়েছেন দুই পেস বোলার শরিফুল ইসলাম ও আবু জায়েদ রাহীর কাছ থেকে। সকালের সেশনে শ্রীলঙ্কার মোট সংগ্রহ ৪৩ রানের মধ্যে এই তিনজনের ২৬ ওভারে আসে মাত্র ১৮ রান।
মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে তাইজুলের স্পিনে ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ফিরলে আট ওভারের মধ্যে মাত্র ১৫ রানে তিন ব্যাটারকে সাজঘরে পায় শ্রীলঙ্কা।
পঞ্চম উইকেটে ওশাদা ফার্নান্দোও পাথুম নিশাঙ্কা ৫৪ রান যোগ করে মধ্যাহ্নভোজনের বিরতির পর পাঁচ বলের ব্যবধানে সাজঘরের পথ ধরেন। এই জুটিটাও ভাঙেন তাসকিন। ব্যক্তিগত ১০ রানে জীবন পাওয়া নিশাঙ্কা (৩০) বোল্ড হন।
আট বাউন্ডারিতে ৮১ রান করা ওশাদা ফার্নান্দোকে ফেরানোর কৃতিত্ব অনেকটাই উইকেটকিপার লিটন কুমার দাসের। মেহেদি হাসান মিরাজের বলে ফার্নান্দো যে ল্যাপ সুইপ করতে যাচ্ছেন, তা আগেভাগেই টের পেয়ে ক্যাচটা ধরার জন্য যুৎসই পজিশনে সময়মতোই সরে যেতে পেরেছিলেন লিটন।
দিনের বাকি সময়টা বাংলাদেশের বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন নিরোশান ডিকওয়েলা। তিনি পাল্টা আক্রমণে সুইপ, কাট ও ড্রাইভের সমন্বয়ে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলেন। তার সঙ্গী মেন্ডিস কিছুটা রক্ষণাত্মক খেললেও অভিষিক্ত বোলার শরিফুলকে বোলারস ব্যাক ড্রাইভে সীমানা ছাড়া করেছেন একবার।