মহান মে দিবস : কৃষক-শ্রমিকদের অবদান

বশিরুল ইসলাম

আজ সেই সয মেহনতি মানুষের প্রতীক মহান মে দিবস আমাদের সামনে উপস্থিত। যদিও এ দিবসটি আমাদের দেশের কৃষকদের জীবনে আর পাঁচ-দশটা দিবসের মতো। তবুও এ দিবস উপলক্ষে কৃষকদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতাÑ তাদের সাফল্যের কারণে খাদ্য ঘাটতি থেকে আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। এমনকি চলমান করোনা দুর্যোগেও কৃষক তার দায়িত্ব পালন করেছে বলেই আজ খাদ্য সংকট থেকে দেশ বেঁচে গেছে। শুধু কি সংকট উত্তোলন? এরই মধ্যে গত মৌসুমেই ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ হয়েছে বাংলাদেশ, যা বাংলাদেশের জন্য বিশাল এক অর্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় জন্য মাইলফলক। তাছাড়া পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের স্থান দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, চাষকৃত মৎস্য উৎপাদনে দ্বিতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম আর আলু উৎপাদনে অষ্টম।

করোনাকালীন এই দুর্যোগ কঠিন মুহূর্তে আবারও প্রমাণিত হলো এদেশের ভরসা জায়গা নাম কৃষি। করোনা ভয়ে সবাই যখন গৃহবন্দী ঠিক সেই সময়ও মাঠে আছেন বাংলার কৃষকরা। শুধু কি করোনা সংকট? বাংলাদেশে দুর্যোগপূর্ণ দেশ। প্রতি বছরই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হয় বন্যা নয় সাইক্লোন কিংবা অতিবৃষ্টি, খরা, লবণাক্ততার কারণে কোনো না কোনো অঞ্চলে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এবার তো অনাবৃষ্টি আর হিট শকের কারণে ধানের ফুল পুড়ে গেল। জলবায়ু পরিবর্তনের এমন বিপর্যস্ত পরিবেশ সামলে কৃষি বার বার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর কৃষক পেছনে না তাকিয়ে নতুন উদ্যমে ফসল ফলিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে ১৭ কোটি মানুষের জীবন। বাঁচিয়ে রেখেছে দেশের অর্থনীতি।

চলতি বছর দেশের হাওর এলাকায় এরই মধ্যে ৮৫ শতাংশ জমির বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত সারাদেশে বোরো ধান কাটায় অগ্রগতি প্রায় ৪০ শতাংশ। পাকা ধানের গন্ধে মাঠে এখন কৃষকের দম ফেলার ফুসরত নেই। ধান কাটা চলছে উৎসব আর আবহে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশে কঠোর বিধিনিষেধ চললেও ফসলের মাঠে তেমন কোনো শ্রমিক সংকটও নেই। হিট শকে ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলনে তেমন বড় কোনো প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে ভালো ফলন পাওয়ায় কৃষক খুশি। এবার ধানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে।

বেশ কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৯৭০-৭১ সালে দেশে মোট খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল এক কোটি ১০ লাখ টন। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার কোটি ৫৩ লাখ টন। যদিও এ সময়ের ব্যবধানে প্রতি বছর দেশে মানুষ বাড়ছে ২০ লাখ, কৃষিজমি কমেছে আট লাখ হেক্টর করে। তারপরও খাদ্যের উৎপাদন বাড়ায় জনপ্রতি খাদ্যের সরবরাহ কমেনি, বরং বেড়েছে। ১৯৭২ সালে যেখানে একজন মানুষ প্রতিদিন খাদ্য পেতেন (খাদ্যশস্যের প্রাপ্যতা) ৪৫৬ গ্রাম, তা ২০২০ সালে বেড়ে হয়েছে ৬৮৭ গ্রাম।

তথ্য বলছে, স্বাধীনতাপূর্বকালের তুলনায় চালের উৎপাদন বেড়েছে চারগুণ, গম দ্বিগুণ, সবজি পাঁচগুণ এবং ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুণ। ধানে বিশ্বে গড় উৎপাদনশীলতা প্রায় তিন টন, আর বাংলাদেশে তা ৪ দশমিক ১৫ টন। তা ছাড়া, ২০২০ সালে গম উৎপাদন হয়েছে ১২ লাখ ৫০ হাজার টন, ভুট্টা ৫৪ লাখ টন। তা ছাড়া এক কোটি নয় লাখ টন আলু উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায়। সাড়ে ১০ লাখ টন আম উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্বে নবম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এদিকে প্রধান খাদ্যশস্যের বাইরে দেশে সবজি উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। দেশে সবজির উৎপাদন যেমন বেড়েছে, ভোগও তেমনি বেড়েছে। দেশে মাথাপিছু সবজির ভোগ বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। পাশাপাশি সবজি রপ্তানি করেও মিলছে বৈদেশিক মুদ্রা।

বাংলার কৃষকরা এখানেই থেমে যায়নি। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল চাষের দিক থেকেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বের জন্য উদাহরণ। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বের জন্য উদাহরণ হিসেবে প্রচার করছে। এ সাফল্য সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এক সময় বলা হতো ‘দুধে ভাতে বাঙালি’ কিংবা ‘মাছে ভাতে বাঙালি’। সেই সেøাগানও এখন বদলে গেছে। কৃষি এখন শুধু দুধে ভাতে বা মাছে ভাতে সীমিত নয়, পুষ্টিতেও এদেশ বিশ্বদরবারে প্রশংসিত হচ্ছে। আসলে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের যত অর্জন আছে, তার মধ্যে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি সবচেয়ে উল্লেখ করার মতো। এটা বিশ্বের যে কোন উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণও বটে। তবে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হলেও, খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনের বিভিন্ন পর্যায়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নানাবিধ ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশিয়ে থাকে, যার ফলে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য প্রাপ্তি অনেক ক্ষেত্রেই দুর্লভ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের এ সাফল্যের ধারাবহিকতা ধরে রাখতে হলে এখন থেকে আরও সতর্ক হতে হবে। আত্মতুষ্টিতে না ভুগে ভবিষ্যতের সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার কথা মাথায় নিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ কৃষিপণ্যের পরিবহন ও বাজারজাতকরণ প্রতিটি স্তরে নজরদারি বাড়াতে হবে। এছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময় কৃষি এবং কৃষকই প্রধান ভরসা। করোনা সংকটের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব খাদ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছে। বাংলাদেশ যদি সেই সংকট থেকে দূরে থাকতে পারে, তবে সেটা হবে আমাদের বিরাট সাফল্য।

আমাদের সবার উচিত এইসব মেহনতি মানুষকে ভালোবাসা এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। মহান মে দিবসে এসব শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

[লেখক : উপপরিচালক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়]

mbashirpro1986@gmail.com

শনিবার, ০১ মে ২০২১ , ১৯ বৈশাখ ১৪২৮ ১৯ রমজান ১৪৪২

মহান মে দিবস : কৃষক-শ্রমিকদের অবদান

বশিরুল ইসলাম

image

আজ সেই সয মেহনতি মানুষের প্রতীক মহান মে দিবস আমাদের সামনে উপস্থিত। যদিও এ দিবসটি আমাদের দেশের কৃষকদের জীবনে আর পাঁচ-দশটা দিবসের মতো। তবুও এ দিবস উপলক্ষে কৃষকদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতাÑ তাদের সাফল্যের কারণে খাদ্য ঘাটতি থেকে আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশ। এমনকি চলমান করোনা দুর্যোগেও কৃষক তার দায়িত্ব পালন করেছে বলেই আজ খাদ্য সংকট থেকে দেশ বেঁচে গেছে। শুধু কি সংকট উত্তোলন? এরই মধ্যে গত মৌসুমেই ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ হয়েছে বাংলাদেশ, যা বাংলাদেশের জন্য বিশাল এক অর্জন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় জন্য মাইলফলক। তাছাড়া পাট উৎপাদনে বাংলাদেশের স্থান দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, চাষকৃত মৎস্য উৎপাদনে দ্বিতীয়, আম উৎপাদনে সপ্তম আর আলু উৎপাদনে অষ্টম।

করোনাকালীন এই দুর্যোগ কঠিন মুহূর্তে আবারও প্রমাণিত হলো এদেশের ভরসা জায়গা নাম কৃষি। করোনা ভয়ে সবাই যখন গৃহবন্দী ঠিক সেই সময়ও মাঠে আছেন বাংলার কৃষকরা। শুধু কি করোনা সংকট? বাংলাদেশে দুর্যোগপূর্ণ দেশ। প্রতি বছরই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হয় বন্যা নয় সাইক্লোন কিংবা অতিবৃষ্টি, খরা, লবণাক্ততার কারণে কোনো না কোনো অঞ্চলে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এবার তো অনাবৃষ্টি আর হিট শকের কারণে ধানের ফুল পুড়ে গেল। জলবায়ু পরিবর্তনের এমন বিপর্যস্ত পরিবেশ সামলে কৃষি বার বার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আর কৃষক পেছনে না তাকিয়ে নতুন উদ্যমে ফসল ফলিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে ১৭ কোটি মানুষের জীবন। বাঁচিয়ে রেখেছে দেশের অর্থনীতি।

চলতি বছর দেশের হাওর এলাকায় এরই মধ্যে ৮৫ শতাংশ জমির বোরো ধান কাটা শেষ হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত সারাদেশে বোরো ধান কাটায় অগ্রগতি প্রায় ৪০ শতাংশ। পাকা ধানের গন্ধে মাঠে এখন কৃষকের দম ফেলার ফুসরত নেই। ধান কাটা চলছে উৎসব আর আবহে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশে কঠোর বিধিনিষেধ চললেও ফসলের মাঠে তেমন কোনো শ্রমিক সংকটও নেই। হিট শকে ধানের কিছুটা ক্ষতি হলেও ফলনে তেমন বড় কোনো প্রভাব পড়েনি। অন্যদিকে ভালো ফলন পাওয়ায় কৃষক খুশি। এবার ধানের দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে।

বেশ কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ১৯৭০-৭১ সালে দেশে মোট খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল এক কোটি ১০ লাখ টন। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে চার কোটি ৫৩ লাখ টন। যদিও এ সময়ের ব্যবধানে প্রতি বছর দেশে মানুষ বাড়ছে ২০ লাখ, কৃষিজমি কমেছে আট লাখ হেক্টর করে। তারপরও খাদ্যের উৎপাদন বাড়ায় জনপ্রতি খাদ্যের সরবরাহ কমেনি, বরং বেড়েছে। ১৯৭২ সালে যেখানে একজন মানুষ প্রতিদিন খাদ্য পেতেন (খাদ্যশস্যের প্রাপ্যতা) ৪৫৬ গ্রাম, তা ২০২০ সালে বেড়ে হয়েছে ৬৮৭ গ্রাম।

তথ্য বলছে, স্বাধীনতাপূর্বকালের তুলনায় চালের উৎপাদন বেড়েছে চারগুণ, গম দ্বিগুণ, সবজি পাঁচগুণ এবং ভুট্টার উৎপাদন বেড়েছে ১০ গুণ। ধানে বিশ্বে গড় উৎপাদনশীলতা প্রায় তিন টন, আর বাংলাদেশে তা ৪ দশমিক ১৫ টন। তা ছাড়া, ২০২০ সালে গম উৎপাদন হয়েছে ১২ লাখ ৫০ হাজার টন, ভুট্টা ৫৪ লাখ টন। তা ছাড়া এক কোটি নয় লাখ টন আলু উৎপাদনের মাধ্যমে বাংলাদেশ শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায়। সাড়ে ১০ লাখ টন আম উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্বে নবম স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এদিকে প্রধান খাদ্যশস্যের বাইরে দেশে সবজি উৎপাদনে নীরব বিপ্লব ঘটেছে। দেশে সবজির উৎপাদন যেমন বেড়েছে, ভোগও তেমনি বেড়েছে। দেশে মাথাপিছু সবজির ভোগ বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। পাশাপাশি সবজি রপ্তানি করেও মিলছে বৈদেশিক মুদ্রা।

বাংলার কৃষকরা এখানেই থেমে যায়নি। একই জমিতে বছরে একাধিক ফসল চাষের দিক থেকেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বের জন্য উদাহরণ। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বের জন্য উদাহরণ হিসেবে প্রচার করছে। এ সাফল্য সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

এক সময় বলা হতো ‘দুধে ভাতে বাঙালি’ কিংবা ‘মাছে ভাতে বাঙালি’। সেই সেøাগানও এখন বদলে গেছে। কৃষি এখন শুধু দুধে ভাতে বা মাছে ভাতে সীমিত নয়, পুষ্টিতেও এদেশ বিশ্বদরবারে প্রশংসিত হচ্ছে। আসলে, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের যত অর্জন আছে, তার মধ্যে ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি সবচেয়ে উল্লেখ করার মতো। এটা বিশ্বের যে কোন উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণও বটে। তবে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জিত হলেও, খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণনের বিভিন্ন পর্যায়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা নানাবিধ ভেজাল ও ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশিয়ে থাকে, যার ফলে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য প্রাপ্তি অনেক ক্ষেত্রেই দুর্লভ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আমাদের এ সাফল্যের ধারাবহিকতা ধরে রাখতে হলে এখন থেকে আরও সতর্ক হতে হবে। আত্মতুষ্টিতে না ভুগে ভবিষ্যতের সামগ্রিক খাদ্য নিরাপত্তার কথা মাথায় নিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশবান্ধব দীর্ঘমেয়াদি টেকসই পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করাসহ কৃষিপণ্যের পরিবহন ও বাজারজাতকরণ প্রতিটি স্তরে নজরদারি বাড়াতে হবে। এছাড়া মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সময় কৃষি এবং কৃষকই প্রধান ভরসা। করোনা সংকটের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব খাদ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকটের আশঙ্কা করছে। বাংলাদেশ যদি সেই সংকট থেকে দূরে থাকতে পারে, তবে সেটা হবে আমাদের বিরাট সাফল্য।

আমাদের সবার উচিত এইসব মেহনতি মানুষকে ভালোবাসা এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। মহান মে দিবসে এসব শ্রমজীবী মানুষের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা।

[লেখক : উপপরিচালক, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়]

mbashirpro1986@gmail.com