শিবচরে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এখন করোনার আইসোলেশন কেন্দ্র

করোনা সংক্রমিত দেশের প্রথম লকডাউনকৃত শিবচরে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ২০ শয্যার করোনা আইসোলেশন কেন্দ্রে রুপান্তর করা হয়েছে। রপান্তরিত আইসোলেশন কেন্দ্রটিতে করোনা রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আইসোলেশনটিতে রয়েছে পর্যাপ্ত হাইফ্লো নেজাল কেনোলো থেরাপি সিস্টেম, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিনসহ অক্সিজেনের পর্যাপ্ত সুবিধা। পদায়ন করা হয়েছে চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় স্টাফ। এখানে একসাথে ২০ জন করোনা রোগীর চিকিৎসার সামর্থ্য রয়েছে। ইতোমধ্যেই এই আইসোলেশন কেন্দ্রটি থেকে ৫০ জন রোগী উন্নতমানের চিকিৎসা পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এদিকে এই আইসোলেশন কেন্দ্রে আশেপাশের জেলা উপজেলার করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।

সরেজমিনে জানা যায়, গতবছরের ১৯ মার্চ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ায় দেশে সর্বপ্রথম প্রবাসী অধ্যুষিত শিবচরকে লকডাউন করা হয়। এ পর্যন্ত শিবচরে ৩শ ২৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে (এর মধ্যে ৬ জন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী)। আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩শ ৯ জন সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮ জন। এ উপজেলায় করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই ঘরে ঘরে খাবার সহায়তা, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে করোনা রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য শিবচরের দক্ষিণ বহেরাতলা ইউনিয়নের হাজী আবুল কাশেম উকিল মা শিশু কল্যাণ কেন্দ্রকে ২০ শয্যার বিশেষায়িত আইসোলেশন কেন্দ্র ঘোষণা করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। ব্যক্তিগত অর্থায়নে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন ও উন্নতমানের খাবারের ব্যবস্থা করেন তিনি। আইসোলেশন কেন্দ্রটিতে ৩টি হাইফ্লো নেজাল কেনোলো থেরাপি সিস্টেম, ৭টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন (অক্সিজেন জেনারেটর), ১২টি পালস্ অক্সি মিটার, ইনফ্রাডার থা¤্রােমিটার, ৪০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, থার্মাল স্কানার ৫টিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ফ্রিজ, এসিসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে চিকিৎসক ও নার্সসহ স্টাফদের জন্য ডরমেটরি রয়েছে এখানে। পদায়ন দেয়া হয়েছে ২ জন চিকিৎসক, ২ জন নার্সসহ ৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী। ১০ দিন পরপর স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিবর্তন হয়ে ১৪ দিন হোটেলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। এ পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি রোগী এখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোস বলেন, করোনা রোগীদের জন্য হাইফ্লো অক্সিজেন খুব জরুরী। আমাদের এখানে একসাথে ১৫-২০ জন রোগীর চিকিৎসা দেয়ার সক্ষমতা আছে। চীফ হুইপ স্যারের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে করোনা আইসোলেশন কেন্দ্রে রুপান্তরের উদ্যোগটি একটি দৃষ্টান্ত। তিনি সার্বক্ষণিক এটির খোঁজখবর রাখেন। প্রতিনিয়ত মেশিনারিজ সংযোজন করার ব্যবস্থা করেন। তিনি আমাদের আশে পাশের এলাকার রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখানে হাইফ্লো নেজাল কেনোলো থেরাপি সিস্টেম, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন (অক্সিজেন জেনারেটর), পালস্ অক্সি মিটার,ইনফ্রাডার থা¤্রােমিটার, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার সংযোজন করা হয়েছে। এখানে রোগী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের আবাসন, খাবার, নিরাপত্তা সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সোমবার, ০৩ মে ২০২১ , ২১ বৈশাখ ১৪২৮ ২১ রমজান ১৪৪২

শিবচরে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এখন করোনার আইসোলেশন কেন্দ্র

প্রতিনিধি,শিবচর (মাদারীপুর)

করোনা সংক্রমিত দেশের প্রথম লকডাউনকৃত শিবচরে একটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে ২০ শয্যার করোনা আইসোলেশন কেন্দ্রে রুপান্তর করা হয়েছে। রপান্তরিত আইসোলেশন কেন্দ্রটিতে করোনা রোগীদের বিশেষায়িত চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আইসোলেশনটিতে রয়েছে পর্যাপ্ত হাইফ্লো নেজাল কেনোলো থেরাপি সিস্টেম, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিনসহ অক্সিজেনের পর্যাপ্ত সুবিধা। পদায়ন করা হয়েছে চিকিৎসক, নার্সসহ প্রয়োজনীয় স্টাফ। এখানে একসাথে ২০ জন করোনা রোগীর চিকিৎসার সামর্থ্য রয়েছে। ইতোমধ্যেই এই আইসোলেশন কেন্দ্রটি থেকে ৫০ জন রোগী উন্নতমানের চিকিৎসা পেয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এদিকে এই আইসোলেশন কেন্দ্রে আশেপাশের জেলা উপজেলার করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী।

সরেজমিনে জানা যায়, গতবছরের ১৯ মার্চ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ায় দেশে সর্বপ্রথম প্রবাসী অধ্যুষিত শিবচরকে লকডাউন করা হয়। এ পর্যন্ত শিবচরে ৩শ ২৫ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে (এর মধ্যে ৬ জন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবাসকারী)। আক্রান্তদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩শ ৯ জন সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮ জন। এ উপজেলায় করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই ঘরে ঘরে খাবার সহায়তা, কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের সঙ্গে সঙ্গে করোনা রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য শিবচরের দক্ষিণ বহেরাতলা ইউনিয়নের হাজী আবুল কাশেম উকিল মা শিশু কল্যাণ কেন্দ্রকে ২০ শয্যার বিশেষায়িত আইসোলেশন কেন্দ্র ঘোষণা করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী। ব্যক্তিগত অর্থায়নে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন ও উন্নতমানের খাবারের ব্যবস্থা করেন তিনি। আইসোলেশন কেন্দ্রটিতে ৩টি হাইফ্লো নেজাল কেনোলো থেরাপি সিস্টেম, ৭টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন (অক্সিজেন জেনারেটর), ১২টি পালস্ অক্সি মিটার, ইনফ্রাডার থা¤্রােমিটার, ৪০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, থার্মাল স্কানার ৫টিসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়াও ফ্রিজ, এসিসহ নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা দিয়ে চিকিৎসক ও নার্সসহ স্টাফদের জন্য ডরমেটরি রয়েছে এখানে। পদায়ন দেয়া হয়েছে ২ জন চিকিৎসক, ২ জন নার্সসহ ৭ জন স্বাস্থ্যকর্মী। ১০ দিন পরপর স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিবর্তন হয়ে ১৪ দিন হোটেলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকেন। এ পর্যন্ত ৫০ জনেরও বেশি রোগী এখান থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডা. শশাঙ্ক চন্দ্র ঘোস বলেন, করোনা রোগীদের জন্য হাইফ্লো অক্সিজেন খুব জরুরী। আমাদের এখানে একসাথে ১৫-২০ জন রোগীর চিকিৎসা দেয়ার সক্ষমতা আছে। চীফ হুইপ স্যারের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে করোনা আইসোলেশন কেন্দ্রে রুপান্তরের উদ্যোগটি একটি দৃষ্টান্ত। তিনি সার্বক্ষণিক এটির খোঁজখবর রাখেন। প্রতিনিয়ত মেশিনারিজ সংযোজন করার ব্যবস্থা করেন। তিনি আমাদের আশে পাশের এলাকার রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী মুঠোফোনে বলেন, করোনা রোগীদের জন্য অক্সিজেন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই এখানে হাইফ্লো নেজাল কেনোলো থেরাপি সিস্টেম, অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন (অক্সিজেন জেনারেটর), পালস্ অক্সি মিটার,ইনফ্রাডার থা¤্রােমিটার, পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার সংযোজন করা হয়েছে। এখানে রোগী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের আবাসন, খাবার, নিরাপত্তা সব ব্যবস্থা করা হয়েছে।