গণমাধ্যম কর্মীরা হয়রানি মৃত্যুসহ নানা ঝুঁকিতে আছে জাতিসংঘ মহাসচিব

আজ ৩ মে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে বা বিশ্ব মুক্তগণমাধ্যম দিবস। জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত দিবসটি ১৯৯৩ সাল থেকে প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এই দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।

দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও তাদের পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এই দিবসটি পালন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবে।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে গতকাল গণমাধ্যম পাঠানো এক বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস ‘সাংবাদিকতা হলো একটি গণসম্পদ : উইন্ডহোক ঘোষণার ৩০ বছর’ শীর্ষক এ বাণী দিয়েছেন। জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় থেকে গতকাল এক বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, অনেক দেশেই কেবল নিজেদের কাজের জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা নতুন বিধিনিষেধ, সেন্সরশিপ, অপব্যবহার, হয়রানি, আটক এবং এমনকি মৃত্যুসহ অনেক বড় ব্যক্তিগত ঝুঁকিতে রয়েছে। সেই পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকেই যাচ্ছে।

এন্তোনিও গুতেরেস বাণীতে বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারীর সময় আমরা বিশ্বব্যাপী যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি সেগুলো জীবন বাঁচাতে এবং শক্তিশালী, স্থিতিশীল সমাজ গঠনে নির্ভরযোগ্য, যাচাইকৃত এবং সর্বজনীন ভূমিকাকে চিহ্নিত করে।’

‘মহামারী এবং জলবায়ুর জরুরি অবস্থাসহ অন্যান্য সংকটময় সময়ে, সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম কর্মীরা ক্ষতিকর ভুল এবং মিথ্যাচারকে মোকাবিলাসহ আমাদের দ্রুত-পরিবর্তিত এবং প্রায়শই অপ্রতিরোধ্য তথ্যের দৃশ্যপট তুলে ধরতে সহায়তা করে।’

জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘মহামারীর অর্থনৈতিক প্রভাব অনেক প্রচার মাধ্যমকে কঠোরভাবে আঘাত করেছে, যা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়া বাজেট সংকটের সঙ্গে সঙ্গে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়াও কঠিন হচ্ছে। এ শূন্যস্থান পূরণ করতে গুজব, মিথ্যা এবং চূড়ান্ত বা বিভাজিত মতামত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি সব সরকারকে তাদের ক্ষমতানুযায়ী একটি মুক্ত, স্বাধীন এবং বহুমুখী প্রচার মাধ্যমকে সমর্থন করার জন্য সবকিছু করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

‘ভুল তথ্য এবং অপপ্রচার রোধে মুক্ত এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি’ বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস।

মহাসচিব বলেন, ‘জাতিসংঘ সাংবাদিক নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মপরিকল্পনার লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা, কারণ তথ্য হচ্ছে একটি গণসম্পদ। আজ আমরা একটি মুক্ত, স্বাধীন এবং বহুত্ববাদী আফ্রিকান সংবাদমাধ্যম উন্নয়নের জন্য উইন্ডহোক ঘোষণাপত্রের ৩০তম বার্ষিকী উদযাপন করছি।’ গুতেরেস আরও বলেন, ‘গত তিন দশকে গণমাধ্যমে নাটকীয় পরিবর্তন সত্ত্বেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অবাধ প্রবেশাধিকারের জন্য ঘোষণাপত্রের জরুরি আহ্বান যথারীতি প্রাসঙ্গিক। আমরা যেন আমাদের প্রচেষ্টা পুনরুজ্জীবিত করি, যেন তথ্য সবার জন্য একটি জীবন রক্ষাকারী গণসম্পদ হিসেবে কাজ করে।’

অন্যদিকে গণমাধ্যমের প্রকৃত স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিগত এক দশকে দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলেও একদিকে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক আঁতাত আর অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের শৃঙ্খল মুক্ত সাংবাদিকতা, গণমাধ্যমের পেশাদারিত্ব ও স্বাধীন তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে উঠেছে। মুক্ত গণমাধ্যম এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহের সাংবিধানিক বাধ্যবাধতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে অবিলম্বে স্বাধীন ও পেশাদার গণমাধ্যমের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানায় টিআইবি।

সোমবার, ০৩ মে ২০২১ , ২১ বৈশাখ ১৪২৮ ২১ রমজান ১৪৪২

মুক্তগণমাধ্যম দিবস আজ

গণমাধ্যম কর্মীরা হয়রানি মৃত্যুসহ নানা ঝুঁকিতে আছে জাতিসংঘ মহাসচিব

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

আজ ৩ মে ওয়ার্ল্ড প্রেস ফ্রিডম ডে বা বিশ্ব মুক্তগণমাধ্যম দিবস। জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত দিবসটি ১৯৯৩ সাল থেকে প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এই দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।

দিবসটি উপলক্ষে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও তাদের পেশাগত অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় এই দিবসটি পালন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবে।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে গতকাল গণমাধ্যম পাঠানো এক বিবৃতি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস ‘সাংবাদিকতা হলো একটি গণসম্পদ : উইন্ডহোক ঘোষণার ৩০ বছর’ শীর্ষক এ বাণী দিয়েছেন। জাতিসংঘের ঢাকা কার্যালয় থেকে গতকাল এক বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, অনেক দেশেই কেবল নিজেদের কাজের জন্য গণমাধ্যম কর্মীরা নতুন বিধিনিষেধ, সেন্সরশিপ, অপব্যবহার, হয়রানি, আটক এবং এমনকি মৃত্যুসহ অনেক বড় ব্যক্তিগত ঝুঁকিতে রয়েছে। সেই পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকেই যাচ্ছে।

এন্তোনিও গুতেরেস বাণীতে বলেন, ‘কোভিড-১৯ মহামারীর সময় আমরা বিশ্বব্যাপী যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি সেগুলো জীবন বাঁচাতে এবং শক্তিশালী, স্থিতিশীল সমাজ গঠনে নির্ভরযোগ্য, যাচাইকৃত এবং সর্বজনীন ভূমিকাকে চিহ্নিত করে।’

‘মহামারী এবং জলবায়ুর জরুরি অবস্থাসহ অন্যান্য সংকটময় সময়ে, সাংবাদিক এবং গণমাধ্যম কর্মীরা ক্ষতিকর ভুল এবং মিথ্যাচারকে মোকাবিলাসহ আমাদের দ্রুত-পরিবর্তিত এবং প্রায়শই অপ্রতিরোধ্য তথ্যের দৃশ্যপট তুলে ধরতে সহায়তা করে।’

জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘মহামারীর অর্থনৈতিক প্রভাব অনেক প্রচার মাধ্যমকে কঠোরভাবে আঘাত করেছে, যা তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। এছাড়া বাজেট সংকটের সঙ্গে সঙ্গে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়াও কঠিন হচ্ছে। এ শূন্যস্থান পূরণ করতে গুজব, মিথ্যা এবং চূড়ান্ত বা বিভাজিত মতামত বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি সব সরকারকে তাদের ক্ষমতানুযায়ী একটি মুক্ত, স্বাধীন এবং বহুমুখী প্রচার মাধ্যমকে সমর্থন করার জন্য সবকিছু করার আহ্বান জানাচ্ছি।’

‘ভুল তথ্য এবং অপপ্রচার রোধে মুক্ত এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি’ বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেস।

মহাসচিব বলেন, ‘জাতিসংঘ সাংবাদিক নিরাপত্তাবিষয়ক কর্মপরিকল্পনার লক্ষ্য হচ্ছে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যম কর্মীদের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা, কারণ তথ্য হচ্ছে একটি গণসম্পদ। আজ আমরা একটি মুক্ত, স্বাধীন এবং বহুত্ববাদী আফ্রিকান সংবাদমাধ্যম উন্নয়নের জন্য উইন্ডহোক ঘোষণাপত্রের ৩০তম বার্ষিকী উদযাপন করছি।’ গুতেরেস আরও বলেন, ‘গত তিন দশকে গণমাধ্যমে নাটকীয় পরিবর্তন সত্ত্বেও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা এবং তথ্যের অবাধ প্রবেশাধিকারের জন্য ঘোষণাপত্রের জরুরি আহ্বান যথারীতি প্রাসঙ্গিক। আমরা যেন আমাদের প্রচেষ্টা পুনরুজ্জীবিত করি, যেন তথ্য সবার জন্য একটি জীবন রক্ষাকারী গণসম্পদ হিসেবে কাজ করে।’

অন্যদিকে গণমাধ্যমের প্রকৃত স্বাধীনতা ও অবাধ তথ্যপ্রবাহের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিগত এক দশকে দেশে গণমাধ্যমের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলেও একদিকে রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক আঁতাত আর অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের শৃঙ্খল মুক্ত সাংবাদিকতা, গণমাধ্যমের পেশাদারিত্ব ও স্বাধীন তথ্যপ্রবাহের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে উঠেছে। মুক্ত গণমাধ্যম এবং তথ্যের অবাধ প্রবাহের সাংবিধানিক বাধ্যবাধতা ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়নে অবিলম্বে স্বাধীন ও পেশাদার গণমাধ্যমের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানায় টিআইবি।