জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পরিবারের জিডি
কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে কুমিল্লা ও যশোরে পৃথকভাবে মানববন্ধন পালন করা হয়েছে। এদিকে এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কুমিল্লা। দ্রুত মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে কুমিল্লা নগরীতে পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবিতে রাজপথে নেমেছে পরিবারসহ বিভিন্ন সংগঠন। গতকাল দিনভর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, মহানগর আইনজীবী কল্যাণ পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে কুমিল্লা মহানগরীতে পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এর আগে রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের পর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেছিলেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। মামলায় আসামি করা হয় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে। এবার নুসরাত নিজের ও স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মামলাটি প্রত্যাহারে অজ্ঞাত হুমকিদাতা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় শনিবার সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
নুসরাত জাহান জিডিতে উল্লেখ করেন, মামলা প্রত্যাহার করা না হলে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও নাজেহাল করাসহ টাকার বিনিময়ে খুন করে কিংবা যে কোন অঘটন ঘটিয়ে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে। যে কোন সময় তাকে অথবা তার স্বামীসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের যে কোনভাবে বিপদে ফেলা হবে।
মামলা তুলে নেয়া বা সমঝোতা করার জন্য কয়েকটি মোবাইল নম্বর থেকে তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন এবং তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ওই জিডিতে উল্লেখ করা দুটি নম্বর ছাড়াও আরও বিভিন্ন নম্বর থেকে গত ২৮ এপ্রিল রাত থেকে ৩০ এপ্রিল রাত পর্যন্ত তাদের মামলা প্রত্যাহার বা সমঝোতায় আসার জন্য ফোন করা হয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
মামলার বাদী ও মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বলেন, আমার বোন মুনিয়ার বিচার চাইতে গিয়ে এখন আমি ও আমার স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছি। আমরা জীবনের নিরাপত্তা চাই এবং মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বোনের ঘাতকের গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।
এদিকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে গতকাল দিনব্যাপী কুমিল্লা মহানগরীতে পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
কুমিল্লা মহানগর আইনজীবী কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কুমিল্লা জেলা কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কুমিল্লার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পৃথক এসব মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল, সাবেক পিপি মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, অ্যাডভোকেট শহিদুল হক স্বপন, অ্যাডভোকেট মাসুদ সালাহউদ্দিন, মাহবুবুর রহমান, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠুসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।
এদিকে বিকেলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান, তার স্বামী মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল রাতে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাকে কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজ কবরস্থানে বাবা-মার কবরের পাশে দাফন করা হয়। মুনিয়া নগরীর মনোহরপুর উজির দীঘির দক্ষিণপাড় এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মৃত সফিকুর রহমানের মেয়ে।
এদিকে যশোর অফিস জানায়, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে গতকাল যশোর প্রেসক্লাবের সামনে মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যা প্ররোচনাকারী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিচারের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।
অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার কনার সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব বীথিকা সরকার, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের মাহবুবুর রহমান মজনু, সিপিবির অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর হাসান বুলু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারু, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, আমিনুর রহমান হিরু, সমাজের কথার বার্তা সম্পাদক ও জনউদ্যোগ সদস্য হাবিবুর রহমান মিলন, জনউদ্যোগ সদস্য মোস্তফা হুমায়ন কবির, যুব ও সাংস্কৃতিক ফোরামের সদস্য কাজী আরিফ, রুক্ইায়া খাতুন, কৃষ্ণা অধিকারী প্রমুখ।
সোমবার, ০৩ মে ২০২১ , ২১ বৈশাখ ১৪২৮ ২১ রমজান ১৪৪২
জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পরিবারের জিডি
জেলা বার্তা পরিবেশক, কুমিল্লা/যশোর অফিস
কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার হত্যাকারীদের বিচার দাবিতে কুমিল্লা ও যশোরে পৃথকভাবে মানববন্ধন পালন করা হয়েছে। এদিকে এ মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্রমান্বয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কুমিল্লা। দ্রুত মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে কুমিল্লা নগরীতে পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার দাবিতে রাজপথে নেমেছে পরিবারসহ বিভিন্ন সংগঠন। গতকাল দিনভর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, মহানগর আইনজীবী কল্যাণ পরিষদসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের ব্যানারে কুমিল্লা মহানগরীতে পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এর আগে রাজধানীর গুলশানের একটি অভিজাত ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধারের পর আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গুলশান থানায় মামলা করেছিলেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান। মামলায় আসামি করা হয় বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে। এবার নুসরাত নিজের ও স্বামীসহ পরিবারের সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মামলাটি প্রত্যাহারে অজ্ঞাত হুমকিদাতা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় শনিবার সাধারণ ডায়েরি করেছেন।
নুসরাত জাহান জিডিতে উল্লেখ করেন, মামলা প্রত্যাহার করা না হলে তাকে ও তার পরিবারের সদস্যদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও নাজেহাল করাসহ টাকার বিনিময়ে খুন করে কিংবা যে কোন অঘটন ঘটিয়ে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি দেয়া হচ্ছে। যে কোন সময় তাকে অথবা তার স্বামীসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের যে কোনভাবে বিপদে ফেলা হবে।
মামলা তুলে নেয়া বা সমঝোতা করার জন্য কয়েকটি মোবাইল নম্বর থেকে তাকে হুমকি দেয়া হচ্ছে। এতে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের আশঙ্কা করছেন এবং তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ওই জিডিতে উল্লেখ করা দুটি নম্বর ছাড়াও আরও বিভিন্ন নম্বর থেকে গত ২৮ এপ্রিল রাত থেকে ৩০ এপ্রিল রাত পর্যন্ত তাদের মামলা প্রত্যাহার বা সমঝোতায় আসার জন্য ফোন করা হয় বলে তিনি জানিয়েছেন।
মামলার বাদী ও মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান বলেন, আমার বোন মুনিয়ার বিচার চাইতে গিয়ে এখন আমি ও আমার স্বামীসহ পরিবারের সদস্যরা জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছি। আমরা জীবনের নিরাপত্তা চাই এবং মামলাটির সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বোনের ঘাতকের গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।
এদিকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটন করে দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার এবং মামলা প্রত্যাহারের জন্য বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রাণনাশের হুমকি প্রদানকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে গতকাল দিনব্যাপী কুমিল্লা মহানগরীতে পৃথক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
কুমিল্লা মহানগর আইনজীবী কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কুমিল্লা জেলা কমান্ড ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কুমিল্লার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পৃথক এসব মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার সফিউল আহমেদ বাবুল, সাবেক পিপি মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, অ্যাডভোকেট শহিদুল হক স্বপন, অ্যাডভোকেট মাসুদ সালাহউদ্দিন, মাহবুবুর রহমান, অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান মিঠুসহ সংশ্লিষ্ট সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা।
এদিকে বিকেলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত জাহান, তার স্বামী মিজানুর রহমানসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল রাতে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে তাকে কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রিজ কবরস্থানে বাবা-মার কবরের পাশে দাফন করা হয়। মুনিয়া নগরীর মনোহরপুর উজির দীঘির দক্ষিণপাড় এলাকার বাসিন্দা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মৃত সফিকুর রহমানের মেয়ে।
এদিকে যশোর অফিস জানায়, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে গতকাল যশোর প্রেসক্লাবের সামনে মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যা প্ররোচনাকারী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের বিচারের দাবিতে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করা হয়।
অ্যাডভোকেট কামরুন নাহার কনার সভাপতিত্বে মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব বীথিকা সরকার, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের মাহবুবুর রহমান মজনু, সিপিবির অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর হাসান বুলু, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারু, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টি (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, আমিনুর রহমান হিরু, সমাজের কথার বার্তা সম্পাদক ও জনউদ্যোগ সদস্য হাবিবুর রহমান মিলন, জনউদ্যোগ সদস্য মোস্তফা হুমায়ন কবির, যুব ও সাংস্কৃতিক ফোরামের সদস্য কাজী আরিফ, রুক্ইায়া খাতুন, কৃষ্ণা অধিকারী প্রমুখ।