বিটকয়েনে কপাল খুললেও শেষ রক্ষা হলো না সুমনের

ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমন। মাস্টার্স পাস করে ২০১৩ সালে শুরু করেন বিটকয়েন ব্যবসা। শুরুতে একটি ছোট অফিস দিয়ে শুরু করলেও আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপ ব্যবসাসহ অঢেল সম্পদের পাশাপাশি রাজধানীর বাড্ডায় ৩টি বিশাল অফিস গড়ে তুলেছেন। সেখানে ৩২ জন কর্মচারী ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্ব পালন করতেন বিটকয়েন প্রতারণার। এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। শুধু বিটকয়েনেই লেনদেন করা হয়েছে ১২-১৫ লাখ ডলার। মূলহোতা সুমনসহ এ চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব।

গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য তুলে ধরেন। এর আগে গত রোববার রাত আড়াইটার দিকে উত্তর বাড্ডা এলাকায় বেসিক বিজ মার্কেটিং নামক প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে সুমনসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা টিম ও র‌্যাব-১ এর একটি দল। গ্রেপ্তারকৃতরা হলোÑ আবুল বাশার রুবেল, রাকিবুল ইসলাম, আরমান পিয়াস, মেহেদী হাসান, রায়হান আলম সিদ্দিকি, জোবায়ের, মেহেদী হাসান রাহাত, রাকিবুল হাসান, সোলাইমান ইসলাম, জাকারিয়া ও আরাফাত হোসেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৯টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, ৩টি ল্যাপটপ ও ১৬টি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বেসিক বিজ মাকের্টিং নামক অনলাইন আউট সোর্সিং ব্যবসার আড়ালে অবৈধ বিটকয়েন ও অনলাইন বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে চক্রটি। এই ব্যবসার মূলহোতা ইসমাইল হোসেন সুমন। ২০১৩ সালে একটি ছোট অফিস দিয়ে শুরু করলেও এখন বাড্ডায় ৩টি ফ্লোরে ৩২ জন কর্মচারী নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল সে। প্রতিষ্ঠানটি ৩টি শিফটে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকত। এই ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থের মালিক বনে গেছে সুমন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জানিয়েছে, ঢাকায় তার ২টি ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপের ব্যবসা রয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, তার একাধিক ভার্চুয়াল ওয়ালেট রয়েছে। যেখানে বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্জিত লক্ষাধিক ডলার মজুদ রয়েছে। সে আরও জানিয়েছে, বিগত বছরে সে বিটকয়েনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ১২-১৫ লাখ ডলার লেনদেন করেছে। পাশাপাশি সে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ই-মার্কেটিং সাইটে আর্কষণীয় মূলে বিজ্ঞাপন দিতো। পরবর্তীতে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করত। এছাড়াও দেশে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায়ী, জুয়াড়িদের কাছে বিটকয়েন বিক্রি করতে। সে অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির সঙ্গেও জড়িত রয়েছে বলে স্বীকার করেছে। র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার অপর ১১ জনও সুমনের প্রতারণা, জালিয়াতি ও অবৈধ বিটকয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ও সহযোগী। তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার, ০৪ মে ২০২১ , ২২ বৈশাখ ১৪২৮ ২২ রমজান ১৪৪২

বিটকয়েনে কপাল খুললেও শেষ রক্ষা হলো না সুমনের

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

ইসমাইল হোসেন সুমন ওরফে কয়েন সুমন। মাস্টার্স পাস করে ২০১৩ সালে শুরু করেন বিটকয়েন ব্যবসা। শুরুতে একটি ছোট অফিস দিয়ে শুরু করলেও আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপ ব্যবসাসহ অঢেল সম্পদের পাশাপাশি রাজধানীর বাড্ডায় ৩টি বিশাল অফিস গড়ে তুলেছেন। সেখানে ৩২ জন কর্মচারী ২৪ ঘণ্টাই দায়িত্ব পালন করতেন বিটকয়েন প্রতারণার। এখানেই শেষ নয়, বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মোটা অঙ্কের টাকা। শুধু বিটকয়েনেই লেনদেন করা হয়েছে ১২-১৫ লাখ ডলার। মূলহোতা সুমনসহ এ চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে র‌্যাব।

গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর কাওরানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য তুলে ধরেন। এর আগে গত রোববার রাত আড়াইটার দিকে উত্তর বাড্ডা এলাকায় বেসিক বিজ মার্কেটিং নামক প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে সুমনসহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা টিম ও র‌্যাব-১ এর একটি দল। গ্রেপ্তারকৃতরা হলোÑ আবুল বাশার রুবেল, রাকিবুল ইসলাম, আরমান পিয়াস, মেহেদী হাসান, রায়হান আলম সিদ্দিকি, জোবায়ের, মেহেদী হাসান রাহাত, রাকিবুল হাসান, সোলাইমান ইসলাম, জাকারিয়া ও আরাফাত হোসেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২৯টি ডেস্কটপ কম্পিউটার, ৩টি ল্যাপটপ ও ১৬টি মোবাইল জব্দ করা হয়েছে।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, বেসিক বিজ মাকের্টিং নামক অনলাইন আউট সোর্সিং ব্যবসার আড়ালে অবৈধ বিটকয়েন ও অনলাইন বিভিন্ন প্রতারণার ফাঁদ তৈরি করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছে চক্রটি। এই ব্যবসার মূলহোতা ইসমাইল হোসেন সুমন। ২০১৩ সালে একটি ছোট অফিস দিয়ে শুরু করলেও এখন বাড্ডায় ৩টি ফ্লোরে ৩২ জন কর্মচারী নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিল সে। প্রতিষ্ঠানটি ৩টি শিফটে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকত। এই ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থের মালিক বনে গেছে সুমন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জানিয়েছে, ঢাকায় তার ২টি ফ্ল্যাট, প্লট, সুপার শপের ব্যবসা রয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, তার একাধিক ভার্চুয়াল ওয়ালেট রয়েছে। যেখানে বিটকয়েনের মাধ্যমে অর্জিত লক্ষাধিক ডলার মজুদ রয়েছে। সে আরও জানিয়েছে, বিগত বছরে সে বিটকয়েনের মাধ্যমে অবৈধভাবে ১২-১৫ লাখ ডলার লেনদেন করেছে। পাশাপাশি সে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ই-মার্কেটিং সাইটে আর্কষণীয় মূলে বিজ্ঞাপন দিতো। পরবর্তীতে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করত। এছাড়াও দেশে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায়ী, জুয়াড়িদের কাছে বিটকয়েন বিক্রি করতে। সে অনলাইনে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির সঙ্গেও জড়িত রয়েছে বলে স্বীকার করেছে। র‌্যাবের এ কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার অপর ১১ জনও সুমনের প্রতারণা, জালিয়াতি ও অবৈধ বিটকয়েন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ও সহযোগী। তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।