বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার

দেশে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের সঙ্গে রপ্তানি আয় বেড়েছে। এ কারণে রির্জাভের পরিমাণ ৪৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম হয়েছে। গত সোমবার দিন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের পরিমাণ ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে বৈদেশিক মুদ্রার যে রির্জাভ রয়েছে, তা দিয়ে আগামী ১২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। এর আগে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের পরিমাণ ছিল ৪৪ দশমিক ০২৮ বিলিয়ন ডলার।’

প্রথমবারের মতো দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে গেল বছরের ২৩ জুন। তার আগে ৩ জুন রির্জাভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। আর গত ১ সেপ্টেম্বর রির্জাভ ৩৯ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। করোনাভাইরাসের কারণে বৈদেশিক বাণিজ্যের নিম্নগতি থাকলেও প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ বাড়তে সহায়তা করেছে। দেশে উন্নয়নশীল অংশীদারদের বিনিয়োগও আসা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এর আগে ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের ১০ মাসে রেমিট্যান্স দুই হাজার কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এর আগে কোন অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার।

২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। অর্থাৎ কোন প্রবাসী এক লাখ টাকা দেশে পাঠালে এর সঙ্গে আরও দুই হাজার টাকা যোগ করে মোট এক লাখ দুই হাজার টাকা পাচ্ছেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেয়ার অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন বিদেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে। রপ্তানিও বেড়েছে। এছাড়া আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে। তবে সামনে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধ করলে রিজার্ভ আবার কিছুটা কমে যাবে।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ইরান ও মালদ্বীপ- এ নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এ দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে এর বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করে থাকে।

বুধবার, ০৫ মে ২০২১ , ২৩ বৈশাখ ১৪২৮ ২৩ রমজান ১৪৪২

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক | অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

দেশে প্রথমবারের মতো বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের সঙ্গে রপ্তানি আয় বেড়েছে। এ কারণে রির্জাভের পরিমাণ ৪৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম হয়েছে। গত সোমবার দিন শেষে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের পরিমাণ ৪৫ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশে বৈদেশিক মুদ্রার যে রির্জাভ রয়েছে, তা দিয়ে আগামী ১২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। এর আগে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের পরিমাণ ছিল ৪৪ দশমিক ০২৮ বিলিয়ন ডলার।’

প্রথমবারের মতো দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ৩৫ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে গেল বছরের ২৩ জুন। তার আগে ৩ জুন রির্জাভ ৩৪ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। আর গত ১ সেপ্টেম্বর রির্জাভ ৩৯ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করে। করোনাভাইরাসের কারণে বৈদেশিক বাণিজ্যের নিম্নগতি থাকলেও প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ বাড়তে সহায়তা করেছে। দেশে উন্নয়নশীল অংশীদারদের বিনিয়োগও আসা শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এর আগে ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভ ছিল ৩৩ দশমিক ৬৮ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের ১০ মাসে রেমিট্যান্স দুই হাজার কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এর আগে কোন অর্থবছরে এত পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে এক হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসে দেশে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার।

২০১৯ সালের জুলাই মাস থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে দুই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। অর্থাৎ কোন প্রবাসী এক লাখ টাকা দেশে পাঠালে এর সঙ্গে আরও দুই হাজার টাকা যোগ করে মোট এক লাখ দুই হাজার টাকা পাচ্ছেন তারা। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংক এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান প্রণোদনার সঙ্গে বাড়তি এক শতাংশ দেয়ার অফার দিচ্ছে। এতে করে বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহী হচ্ছেন বিদেশে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসছে। রপ্তানিও বেড়েছে। এছাড়া আমদানি ব্যয়ের চাপ কম, দাতা সংস্থা বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও জাইকার বৈদেশিক ঋণ সহায়তা ও বিশ্ব সংস্থার অনুদানের কারণে রিজার্ভ বেড়েছে। তবে সামনে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) বিল পরিশোধ করলে রিজার্ভ আবার কিছুটা কমে যাবে।

বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, ইরান ও মালদ্বীপ- এ নয়টি দেশ বর্তমানে আকুর সদস্য। এ দেশগুলো থেকে বাংলাদেশ যেসব পণ্য আমদানি করে এর বিল দুই মাস পর পর আকুর মাধ্যমে পরিশোধ করে থাকে।