পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত লভ্যাংশের অপরিশোধিত বা অদাবি করা অংশ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ব্যবহারের লক্ষ্যে তহবিল গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ বা ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল’ নামের এ তহবিল গত সোমবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, কমিশন সভায় ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড বিধি’র খসড়া জনমত যাচাই পরবর্তী অনুমোদন করা হয়েছে। শিঘ্রই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
এ তহবিলের ধরন সম্পর্কে রেজাউল করিম বলেন, ‘এই তহবিলের আকার কত হবে সেটা বলা সম্ভব না। তহবিলের অর্থ কোথা থেকে আসবে, সে বিষয়ে নির্দেশনায় বলা আছে। তহবিল কত টাকা দিয়ে যাত্রা শুরু করবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তহবিলে অর্থ আসার পর এটা জানা যাবে। তবে কোম্পানিগুলোর অনুমোদিত যে লভ্যাংশ অদাবিকৃত অবস্থায় আছে, তা এই তহবিলে আসার কথা।’
এদিকে সম্প্রতি বিএসইসির পক্ষ থেকে শেয়ারহোল্ডারদের অদাবিকৃত লভ্যাংশের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) দায়িত্ব দেয়া হয়। ডিএসই ২১৮টি কোম্পানির কাছে অপরিশোধিত লভ্যাংশের তথ্য চেয়েছিল, যার মধ্যে ২০৮টি কোম্পানি তথ্য দেয়। আর সিএসইর পক্ষ থেকে ১৫৩টি কোম্পানি কাছে তথ্য চাওয়া হলে ১২৭টি তথ্য দেয়।
ডিএসইর পরিসংখ্যান অনুসারে, কোম্পানিগুলোর অদাবিকৃত বোনাস লভ্যাংশের পরিমাণ ১১ হাজার ১০৪ কোটি ৪৮ লাখ ১৬ হাজার ৩৮৩ টাকা ও নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৬৩৪ কোটি ৬৬ লাখ ৪৭ হাজার ২৫৮ টাকা। আর সিএসইর হিসাব অনুসারে অদাবিকৃত বোনাস লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৮৮১ কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬৩ টাকা ও নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৩২১ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ হিসাবে কোম্পানিগুলাতে শেয়ারহোল্ডারদের মোট লভ্যাংশ পাওনার পরিমাণ জমা রয়েছে ২০ হাজার ৯৪২ কোটি ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ১০৪ টাকা।
এর আগে আদাবি করা লভ্যাংশের বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ চূড়ান্ত অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের বুঝিয়ে দিতে হবে। আর মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ট্রাস্টির অনুমোদনের ৪৫ দিনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের বুঝিয়ে দিতে হবে। তবে কেউ লভ্যাংশ দাবি না করলে বা অপরিশোধিত থাকলে তা তিন বছর পরে কমিশনের নির্দেশিত ফান্ডে হস্তান্তর করতে হবে।
এতে বলা হয়, ইস্যুয়ার কোম্পানি লভ্যাংশ বিতরণের জন্য পলিসি গঠন করবে, যা বার্ষিক প্রতিবেদন ও কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। কোম্পানিগুলোকে বার্ষিক বা চূড়ান্ত লভ্যাংশ অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যে এবং অন্তর্র্বতীকালীন লভ্যাংশ রেকর্ড ডেটের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের প্রদান করতে হবে। আর মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ট্রাস্টির অনুমোদনের ৪৫ দিনের মধ্যে প্রদান করতে হবে। পরিচালনা পর্ষদ বা ট্রাস্টির ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে নগদ লভ্যাংশ পৃথক ব্যাংক হিসাবে রাখতে হবে। এই নগদ লভ্যাংশ বিইএফটিএন’র মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারের ব্যাংক হিসাবে সরাসরি প্রদান করবে।
তবে স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার বা পোর্টফলিও ম্যানেজার মার্জিন ঋণগ্রহীতা গ্রাহক বা ডেবিট ব্যালেন্সের জন্য নগদ লভ্যাংশ চাইলে, কোম্পানি সমন্বিত কাস্টমারস ব্যাংক হিসাবে বা মার্চেন্ট ব্যাংক বা পোর্টফলিও ম্যানেজারের পৃথক ব্যাংক হিসাবে বিইএফটিএনের মাধ্যমে পাঠাবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএসইসির এ নির্দেশনায় প্রবাসী উদ্যোক্তা, পরিচালক, শেয়ারহোল্ডার, ইউনিটহোল্ডার ও ফরেন পোর্টফলিও ইনভেস্টরদেরকে সব আইনকানুন মেনে সিকিউরিটি কাস্টডিয়ানের মাধ্যমে ইস্যুয়ারকে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। নগদ লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়টি শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারদেরকে মোবাইলে এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে জানাবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। যদি শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারের ব্যাংক হিসাবের তথ্যের ঘাটতির কারণে বা বিইএফটিএন-এর মাধ্যমে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা সম্ভব না হয়, তাহলে ইস্যুয়ার কোম্পানিকে ‘ক্যাশ ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট’ পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে নির্দেশনায়। এরপরও যদি কোম্পানিতে অপরিশোধিত বা অদাবিকৃত নগদ লভ্যাংশ থাকে তাহলে লভ্যাংশ ঘোষণার বা রেকর্ড ডেটের এক বছরের মধ্যে লভ্যাংশের হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গঠিত পৃথক ব্যাংক হিসাবে ওই নগদ লভ্যাংশ স্থানান্তর করতে হবে। তার আগে বার্ষিক প্রতিবেদনে ও প্রান্তিক প্রতিবেদনে ‘আনক্লেমড ডিভিডেন্ড একাউন্ট’ (দাবিবিহীন লভ্যাংশ হিসাব) শিরোনামে প্রকাশ করতে হবে।
এদিকে বোনাস শেয়ার ঘোষণার বা অনুমোদনের বা রেকর্ড ডেটের ৩০ দিনের মধ্যে ইস্যুয়ার কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারের বিও হিসাবে ক্রেডিট করবে বা বোনাস শেয়ার সার্টিফিকেট ইস্যু করবে। বোনাস শেয়ার প্রদানের লক্ষ্যে ইস্যুয়ার শেয়ারহোল্ডারকে কমপক্ষে তিনবার রিমাইন্ডার দেবে। তবে এরপরও অপরিশোধিত ও অদাবিকৃত বোনাস শেয়ারের জন্য সান্সপেন্স বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ করবে ইস্যুয়ার।
লভ্যাংশ বিতরণের সাত কার্যদিবসের মধ্যে ইস্যুয়ার কমিশন ও স্টক এক্সচেঞ্জে কমপ্লাইয়েন্স রিপোর্ট জমা দেবে, যা কোম্পানির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করতে হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, ইস্যুয়ার অপরিশোধিত বা অদাবিকৃত নগদ লভ্যাংশ বাজেয়াপ্ত করতে পারবে না। এছাড়া এ জাতীয় নগদ লভ্যাংশ তিন বছর পরে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দেশিত ফান্ডে হন্তান্তর করতে হবে। এই হস্তান্তরের সময় ইস্যুয়ার বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করবে। তবে হস্তান্তরের পরে যদি কেউ লভ্যাংশ দাবি করে, তাহলে ইস্যুয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তা যাচাই করে ফান্ড ম্যানেজারকে প্রদানের জন্য সুপারিশ করবে। এরপর ফান্ড ম্যানেজার সেটা দাবিকারীকে প্রদান করবে।
একইভাবে তিন বছরের বেশি সময় অপরিশোধিত বা অদাবিকৃত থাকা বোনাস শেয়ার কমিশনের নির্দেশিত ফান্ডের বিও হিসাবে হস্তাস্তর করতে হবে। এরসঙ্গেও বিস্তারিত তথ্য দিবে ইস্যুয়ার। তবে হস্তান্তরের পরে যদি কেউ লভ্যাংশ দাবি করে তাহলে ইস্যুয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তা যাচাই করে ফান্ড ম্যানেজারকে প্রদানের জন্য সুপারিশ করবে।
এরপর ফান্ড ম্যানেজার তা দাবিকারীকে প্রদান করবে। এদিকে শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারের মাঝে লভ্যাংশ বিতরণের জন্য ইস্যুয়ার বিও হিসাব, ব্যাংক হিসাব, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল ও ঠিকানার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে রাখবে। এসব তথ্যের গোপনীয়তা রাখতে হবে।
এছাড়া সিডিবিএল ও ডিপি শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারের বিও হিসাব, ব্যাংক হিসাব, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল ও ঠিকানার তথ্য বছরে কমপক্ষে একবার আপডেট করবে। একইসঙ্গে সঠিকভাবে লভ্যাংশ বিতরণের জন্য সিডিবিএল ওই আপডেট তথ্য ইস্যুয়ার কোম্পানিকে দেবে।
বুধবার, ০৫ মে ২০২১ , ২৩ বৈশাখ ১৪২৮ ২৩ রমজান ১৪৪২
অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের অনুমোদিত লভ্যাংশের অপরিশোধিত বা অদাবি করা অংশ পুঁজিবাজারের উন্নয়নে ব্যবহারের লক্ষ্যে তহবিল গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ‘ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড’ বা ‘পুঁজিবাজার স্থিতিশীল তহবিল’ নামের এ তহবিল গত সোমবার অনুষ্ঠিত বিএসইসির কমিশন সভায় মোহাম্মদ রেজাউল করিম এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, কমিশন সভায় ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড বিধি’র খসড়া জনমত যাচাই পরবর্তী অনুমোদন করা হয়েছে। শিঘ্রই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে।
এ তহবিলের ধরন সম্পর্কে রেজাউল করিম বলেন, ‘এই তহবিলের আকার কত হবে সেটা বলা সম্ভব না। তহবিলের অর্থ কোথা থেকে আসবে, সে বিষয়ে নির্দেশনায় বলা আছে। তহবিল কত টাকা দিয়ে যাত্রা শুরু করবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তহবিলে অর্থ আসার পর এটা জানা যাবে। তবে কোম্পানিগুলোর অনুমোদিত যে লভ্যাংশ অদাবিকৃত অবস্থায় আছে, তা এই তহবিলে আসার কথা।’
এদিকে সম্প্রতি বিএসইসির পক্ষ থেকে শেয়ারহোল্ডারদের অদাবিকৃত লভ্যাংশের পরিমাণ নির্ধারণের জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) দায়িত্ব দেয়া হয়। ডিএসই ২১৮টি কোম্পানির কাছে অপরিশোধিত লভ্যাংশের তথ্য চেয়েছিল, যার মধ্যে ২০৮টি কোম্পানি তথ্য দেয়। আর সিএসইর পক্ষ থেকে ১৫৩টি কোম্পানি কাছে তথ্য চাওয়া হলে ১২৭টি তথ্য দেয়।
ডিএসইর পরিসংখ্যান অনুসারে, কোম্পানিগুলোর অদাবিকৃত বোনাস লভ্যাংশের পরিমাণ ১১ হাজার ১০৪ কোটি ৪৮ লাখ ১৬ হাজার ৩৮৩ টাকা ও নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৬৩৪ কোটি ৬৬ লাখ ৪৭ হাজার ২৫৮ টাকা। আর সিএসইর হিসাব অনুসারে অদাবিকৃত বোনাস লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৮৮১ কোটি ৮০ লাখ ৬৬ হাজার ৪৬৩ টাকা ও নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ ৩২১ কোটি ৪৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এ হিসাবে কোম্পানিগুলাতে শেয়ারহোল্ডারদের মোট লভ্যাংশ পাওনার পরিমাণ জমা রয়েছে ২০ হাজার ৯৪২ কোটি ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ১০৪ টাকা।
এর আগে আদাবি করা লভ্যাংশের বিষয়ে একটি নির্দেশনা জারি করে বিএসইসি। ওই নির্দেশনায় বলা হয়, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঘোষিত লভ্যাংশ চূড়ান্ত অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের বুঝিয়ে দিতে হবে। আর মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ট্রাস্টির অনুমোদনের ৪৫ দিনের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের বুঝিয়ে দিতে হবে। তবে কেউ লভ্যাংশ দাবি না করলে বা অপরিশোধিত থাকলে তা তিন বছর পরে কমিশনের নির্দেশিত ফান্ডে হস্তান্তর করতে হবে।
এতে বলা হয়, ইস্যুয়ার কোম্পানি লভ্যাংশ বিতরণের জন্য পলিসি গঠন করবে, যা বার্ষিক প্রতিবেদন ও কোম্পানির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করবে। কোম্পানিগুলোকে বার্ষিক বা চূড়ান্ত লভ্যাংশ অনুমোদনের ৩০ দিনের মধ্যে এবং অন্তর্র্বতীকালীন লভ্যাংশ রেকর্ড ডেটের পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের প্রদান করতে হবে। আর মিউচুয়াল ফান্ডের লভ্যাংশ ট্রাস্টির অনুমোদনের ৪৫ দিনের মধ্যে প্রদান করতে হবে। পরিচালনা পর্ষদ বা ট্রাস্টির ঘোষণার ১০ দিনের মধ্যে নগদ লভ্যাংশ পৃথক ব্যাংক হিসাবে রাখতে হবে। এই নগদ লভ্যাংশ বিইএফটিএন’র মাধ্যমে শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারের ব্যাংক হিসাবে সরাসরি প্রদান করবে।
তবে স্টক ব্রোকার, মার্চেন্ট ব্যাংকার বা পোর্টফলিও ম্যানেজার মার্জিন ঋণগ্রহীতা গ্রাহক বা ডেবিট ব্যালেন্সের জন্য নগদ লভ্যাংশ চাইলে, কোম্পানি সমন্বিত কাস্টমারস ব্যাংক হিসাবে বা মার্চেন্ট ব্যাংক বা পোর্টফলিও ম্যানেজারের পৃথক ব্যাংক হিসাবে বিইএফটিএনের মাধ্যমে পাঠাবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএসইসির এ নির্দেশনায় প্রবাসী উদ্যোক্তা, পরিচালক, শেয়ারহোল্ডার, ইউনিটহোল্ডার ও ফরেন পোর্টফলিও ইনভেস্টরদেরকে সব আইনকানুন মেনে সিকিউরিটি কাস্টডিয়ানের মাধ্যমে ইস্যুয়ারকে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করতে হবে। নগদ লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়টি শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারদেরকে মোবাইলে এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে জানাবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। যদি শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারের ব্যাংক হিসাবের তথ্যের ঘাটতির কারণে বা বিইএফটিএন-এর মাধ্যমে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা সম্ভব না হয়, তাহলে ইস্যুয়ার কোম্পানিকে ‘ক্যাশ ডিভিডেন্ড ওয়ারেন্ট’ পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে নির্দেশনায়। এরপরও যদি কোম্পানিতে অপরিশোধিত বা অদাবিকৃত নগদ লভ্যাংশ থাকে তাহলে লভ্যাংশ ঘোষণার বা রেকর্ড ডেটের এক বছরের মধ্যে লভ্যাংশের হিসাব রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গঠিত পৃথক ব্যাংক হিসাবে ওই নগদ লভ্যাংশ স্থানান্তর করতে হবে। তার আগে বার্ষিক প্রতিবেদনে ও প্রান্তিক প্রতিবেদনে ‘আনক্লেমড ডিভিডেন্ড একাউন্ট’ (দাবিবিহীন লভ্যাংশ হিসাব) শিরোনামে প্রকাশ করতে হবে।
এদিকে বোনাস শেয়ার ঘোষণার বা অনুমোদনের বা রেকর্ড ডেটের ৩০ দিনের মধ্যে ইস্যুয়ার কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারের বিও হিসাবে ক্রেডিট করবে বা বোনাস শেয়ার সার্টিফিকেট ইস্যু করবে। বোনাস শেয়ার প্রদানের লক্ষ্যে ইস্যুয়ার শেয়ারহোল্ডারকে কমপক্ষে তিনবার রিমাইন্ডার দেবে। তবে এরপরও অপরিশোধিত ও অদাবিকৃত বোনাস শেয়ারের জন্য সান্সপেন্স বিও হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ করবে ইস্যুয়ার।
লভ্যাংশ বিতরণের সাত কার্যদিবসের মধ্যে ইস্যুয়ার কমিশন ও স্টক এক্সচেঞ্জে কমপ্লাইয়েন্স রিপোর্ট জমা দেবে, যা কোম্পানির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করতে হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, ইস্যুয়ার অপরিশোধিত বা অদাবিকৃত নগদ লভ্যাংশ বাজেয়াপ্ত করতে পারবে না। এছাড়া এ জাতীয় নগদ লভ্যাংশ তিন বছর পরে কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্দেশিত ফান্ডে হন্তান্তর করতে হবে। এই হস্তান্তরের সময় ইস্যুয়ার বিস্তারিত তথ্য সরবরাহ করবে। তবে হস্তান্তরের পরে যদি কেউ লভ্যাংশ দাবি করে, তাহলে ইস্যুয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তা যাচাই করে ফান্ড ম্যানেজারকে প্রদানের জন্য সুপারিশ করবে। এরপর ফান্ড ম্যানেজার সেটা দাবিকারীকে প্রদান করবে।
একইভাবে তিন বছরের বেশি সময় অপরিশোধিত বা অদাবিকৃত থাকা বোনাস শেয়ার কমিশনের নির্দেশিত ফান্ডের বিও হিসাবে হস্তাস্তর করতে হবে। এরসঙ্গেও বিস্তারিত তথ্য দিবে ইস্যুয়ার। তবে হস্তান্তরের পরে যদি কেউ লভ্যাংশ দাবি করে তাহলে ইস্যুয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তা যাচাই করে ফান্ড ম্যানেজারকে প্রদানের জন্য সুপারিশ করবে।
এরপর ফান্ড ম্যানেজার তা দাবিকারীকে প্রদান করবে। এদিকে শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারের মাঝে লভ্যাংশ বিতরণের জন্য ইস্যুয়ার বিও হিসাব, ব্যাংক হিসাব, মোবাইল নম্বর, ই-মেইল ও ঠিকানার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে রাখবে। এসব তথ্যের গোপনীয়তা রাখতে হবে।
এছাড়া সিডিবিএল ও ডিপি শেয়ারহোল্ডার বা ইউনিটহোল্ডারের বিও হিসাব, ব্যাংক হিসাব, মোবাইল নাম্বার, ইমেইল ও ঠিকানার তথ্য বছরে কমপক্ষে একবার আপডেট করবে। একইসঙ্গে সঠিকভাবে লভ্যাংশ বিতরণের জন্য সিডিবিএল ওই আপডেট তথ্য ইস্যুয়ার কোম্পানিকে দেবে।