সুন্দরবনে দ্বিতীয় দিন আগুন নিয়ন্ত্রণে

১৫ বছরে ২৮ বার আগুন লাগে

বাগেরহাটের পূর্ব-সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসে ভারানি এলাকার আগুন লাগা বনে গতকাল সকালেও ধোঁয়ার কু-লি দেখা গেছে। দ্বিতীয় দিনের মতো এদিন সকাল ৯টায় আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও স্থানীয়রা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি টহল ফাঁড়ি এলাকার ২৪নং কম্পার্টমেন্টে এ আগুন লাগে। গতকাল দ্বিতীয় দিনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

আগুন লাগার কারণ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলতে পারেনি বন বিভাগ। তবে এ ঘটনায় বন বিভাগের তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল মঙ্গলবার সকাল থেকেই তদন্ত কাজ শুরু করেছে। তদন্ত দলের প্রধান শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, আগুন নেভাতে দ্বিতীয় দিনের মত কাজ শুরু হয়েছে। বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট, বনবিভাগ ও স্থানীয় গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। সোমবার দিনগত গভীর রাতে বৃষ্টি হওয়ায় উপকার হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় বনের বিভিন্ন স্থানে ধোঁয়া ও আগুনের কু-লি দেখা গেলেও সকাল থেকে তা আর দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। তিনি বলেন, আজও বনের এই এলাকায় আকাশে মেঘ রয়েছে। বৃষ্টি হলে আরও উপকার হবে। মঙ্গলবার সকালে ফায়ার সার্ভিস মরা ভোলা নদী থেকে পানি তুলে আগুন নেভায় পানি ছিটায়। গ্রামবাসী ও বনবিভাগের কর্মীরা ফায়ার লাইন কাটার কাজ করছে। সবাই যেভাবে কাজ করছে তাতে মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগেই আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।

তিনি আরও বলেন, বনের আগুন লাগার কারণ ও আগুনে বনজ সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণে তদন্ত দল কাজ শুরু করেছে। এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর এলাকায় ৪ শতক বন পুড়ে যায়। এক বনকর্মকর্তা নাম না জানিয়ে বলেন, যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে লতাগুল্মজাতীয় গাছপালা বেশি। এই এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল নেই বললেই চলে। গাছের পাতা পড়ে স্তূপ হয়ে রয়েছে। এ বছর রৌদ্রের তাপ অনেক। বৃষ্টি নেই। ফলে পাতা পড়ে ওই এলাকায় এক ধরনের মিথেন গ্যাস সৃষ্টি হয়। রোদ্রের তাপে মিথেন গ্যাস থেকে আগুন জ্বলতে পারে। বাগেরহাট সুন্দরবন বিভাগের তথ্যমতে, পূর্ব-সুন্দরবনে বিগত ১৫ বছরে ২৮ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৮০ একর বনভূমি। ২০১৭ সালের ২৬ মে পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন আবদুল্লাহর ছিলায় অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। ওই আগুনে প্রায় পাঁচ একর বনভূমির ছোট গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছিল সুন্দরবনে মাছ শিকারিরা আগুন দিয়ে বনে অংশ বিশেষ ফাঁকা করে মাছ ধরার জন্য।

বুধবার, ০৫ মে ২০২১ , ২৩ বৈশাখ ১৪২৮ ২৩ রমজান ১৪৪২

সুন্দরবনে দ্বিতীয় দিন আগুন নিয়ন্ত্রণে

১৫ বছরে ২৮ বার আগুন লাগে

আজাদুল হক, বাগেরহাট

image

সুন্দরবনের আগুন গতকাল দ্বিতীয়দিনে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে -সংবাদ

বাগেরহাটের পূর্ব-সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসে ভারানি এলাকার আগুন লাগা বনে গতকাল সকালেও ধোঁয়ার কু-লি দেখা গেছে। দ্বিতীয় দিনের মতো এদিন সকাল ৯টায় আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, বনবিভাগ ও স্থানীয়রা। সোমবার বেলা ১১টার দিকে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভারানি টহল ফাঁড়ি এলাকার ২৪নং কম্পার্টমেন্টে এ আগুন লাগে। গতকাল দ্বিতীয় দিনে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

আগুন লাগার কারণ মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলতে পারেনি বন বিভাগ। তবে এ ঘটনায় বন বিভাগের তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল মঙ্গলবার সকাল থেকেই তদন্ত কাজ শুরু করেছে। তদন্ত দলের প্রধান শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন, আগুন নেভাতে দ্বিতীয় দিনের মত কাজ শুরু হয়েছে। বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট, বনবিভাগ ও স্থানীয় গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। সোমবার দিনগত গভীর রাতে বৃষ্টি হওয়ায় উপকার হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যায় বনের বিভিন্ন স্থানে ধোঁয়া ও আগুনের কু-লি দেখা গেলেও সকাল থেকে তা আর দেখা যাচ্ছে না বললেই চলে। তিনি বলেন, আজও বনের এই এলাকায় আকাশে মেঘ রয়েছে। বৃষ্টি হলে আরও উপকার হবে। মঙ্গলবার সকালে ফায়ার সার্ভিস মরা ভোলা নদী থেকে পানি তুলে আগুন নেভায় পানি ছিটায়। গ্রামবাসী ও বনবিভাগের কর্মীরা ফায়ার লাইন কাটার কাজ করছে। সবাই যেভাবে কাজ করছে তাতে মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগেই আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে ফেলা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।

তিনি আরও বলেন, বনের আগুন লাগার কারণ ও আগুনে বনজ সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণে তদন্ত দল কাজ শুরু করেছে। এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর এলাকায় ৪ শতক বন পুড়ে যায়। এক বনকর্মকর্তা নাম না জানিয়ে বলেন, যে এলাকায় আগুন লেগেছে সেখানে লতাগুল্মজাতীয় গাছপালা বেশি। এই এলাকায় সাধারণ মানুষের চলাচল নেই বললেই চলে। গাছের পাতা পড়ে স্তূপ হয়ে রয়েছে। এ বছর রৌদ্রের তাপ অনেক। বৃষ্টি নেই। ফলে পাতা পড়ে ওই এলাকায় এক ধরনের মিথেন গ্যাস সৃষ্টি হয়। রোদ্রের তাপে মিথেন গ্যাস থেকে আগুন জ্বলতে পারে। বাগেরহাট সুন্দরবন বিভাগের তথ্যমতে, পূর্ব-সুন্দরবনে বিগত ১৫ বছরে ২৮ বার আগুন লেগে পুড়ে যায় প্রায় ৮০ একর বনভূমি। ২০১৭ সালের ২৬ মে পূর্ব সুন্দরবনে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ফরেস্ট ক্যাম্পের আওতাধীন আবদুল্লাহর ছিলায় অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। ওই আগুনে প্রায় পাঁচ একর বনভূমির ছোট গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়ে যায়। অভিযোগ উঠেছিল সুন্দরবনে মাছ শিকারিরা আগুন দিয়ে বনে অংশ বিশেষ ফাঁকা করে মাছ ধরার জন্য।