একটা সময় ছিল যখন আমরা পরিবারের সাথে সময় কাটাতাম। আমাদের অবসর সময় কাটতো বিভিন্ন ধরনের গল্প, উপন্যাসের বই পড়ে। স্কুল, কলেজে ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে বই পড়তাম। কোন বন্ধু কোন গল্পের বইটা শেষ করেছে, কার পরে কে বইটি নিবে তা আগে থেকেই সিরিয়াল দিয়ে রাখতাম। পাঠ্যবই পড়ার ভান করে পাঠ্যবইয়ের নিচে লুঁকিয়ে লুঁকিয়ে গল্পের বই পড়তাম।ধরা পড়লে মা- বাবা কিংবা শিক্ষকের বকুনি খেতাম। মাঝেমাঝে শিক্ষকেরা বই জমা নিয়ে রাখতো,আর দিবে না। গল্পের বই পড়তে পড়তে কখন যে হারিয়ে যেতাম কল্পনার রাজ্যে। হাসতে হাসতে এমনটিই বলছিলেন ব্যাংকার সোহেল রানা। বইয়ের সাথে এমনই স্মৃতির বন্ধন ছিল তার।বই মানুষের পরম বন্ধু। একজন বন্ধু অপর বন্ধুর ক্ষতি করতে পারে।কিন্তু বই মানুষের এমন এক বন্ধু যে বন্ধু কখনো কারো ক্ষতি করে না। বরং বই আমাদেরকে হাসায়, কাঁদায়, আনন্দ দেয়, বাঁচার এক অণুপ্রেরণা দেয়। বই হচ্ছে জ্ঞানের ভান্ডার। নিজের সৃজনশীলতা, মুক্ত চিন্তা জগতের দ্বার উন্মোচিত করে বই। একটু ভেবে দেখেন তো,আমরা যখন বই পড়ি তখন আমরা বইয়ের চরিত্র বা ঘটনাগুলোকে কল্পনা করতে পারি। আমরা নিজেরা ভাবতে পারি এর পরের কাহিনী কী হতে পারে। অর্থাৎ এভাবেই আমাদের চিন্তার জগত প্রসারিত হয়।
দিন দিন প্রযুক্তির কল্যাণে বইবিমুখ হচ্ছে তরুণ সমাজ। আধুনিক যুগে যেমন চক পেন্সিলের প্রচলন কমে গিয়েছে তেমনি পৃষ্ঠা উল্টিয়ে বই পড়া পাঠকের সংখ্যাও কমে গিয়েছে। মোবাইল ফোন বা প্রযুক্তির নেশায় অনেকেই আসক্ত। এই আসক্তির কারণে শিশু, কিশোর, বয়োজ্যেষ্ঠ সবার মাঝে বইয়ের আকর্ষণ কমে আসছে। যে অবসর সময় তারা বই পড়ে কাটাতো সে অবসর সময় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করে। বই পড়ার অভ্যাস কমে আসার ফলে শিশু-কিশোর বা তরুণদের মধ্যে মূল্যবোধের ঘাটতি দেখা যায়। সহজেই তারা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধ কর্মকা-ে। তাদের অন্ধকার জগত থেকে মুক্তি লাভের একমাত্র উপায় বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।
বই পাঠে অনীহার অন্যতম কারণ হচ্ছে লেখকের মানহীন বই প্রকাশ। জনপ্রিয়তা বা সামান্য টাকার বিনিময়ে প্রকাশক সংস্থাগুলো বই প্রকাশ করে থাকে। প্রকাশকদের মনের মতো টাকা না দিতে পারায় লেখকের ভাল মানের বইগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। মানহীন বই পাঠককে তৃপ্ত করতে পারছে না। যার ফলে বইবিমুখতা বাড়ছে।
মানুষের মাঝে মনুষ্যত্ব বোধ জাগ্রত করতে হলে নিয়মিত বই পাঠের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই দেশ থেকে সব অশুভ শক্তির পরাজয় হবে।
খন্দকার নাঈমা আক্তার নুন।
বৃহস্পতিবার, ০৬ মে ২০২১ , ২৪ বৈশাখ ১৪২৮ ২৪ রমজান ১৪৪২
একটা সময় ছিল যখন আমরা পরিবারের সাথে সময় কাটাতাম। আমাদের অবসর সময় কাটতো বিভিন্ন ধরনের গল্প, উপন্যাসের বই পড়ে। স্কুল, কলেজে ক্লাসের ফাঁকে ফাঁকে লুকিয়ে বই পড়তাম। কোন বন্ধু কোন গল্পের বইটা শেষ করেছে, কার পরে কে বইটি নিবে তা আগে থেকেই সিরিয়াল দিয়ে রাখতাম। পাঠ্যবই পড়ার ভান করে পাঠ্যবইয়ের নিচে লুঁকিয়ে লুঁকিয়ে গল্পের বই পড়তাম।ধরা পড়লে মা- বাবা কিংবা শিক্ষকের বকুনি খেতাম। মাঝেমাঝে শিক্ষকেরা বই জমা নিয়ে রাখতো,আর দিবে না। গল্পের বই পড়তে পড়তে কখন যে হারিয়ে যেতাম কল্পনার রাজ্যে। হাসতে হাসতে এমনটিই বলছিলেন ব্যাংকার সোহেল রানা। বইয়ের সাথে এমনই স্মৃতির বন্ধন ছিল তার।বই মানুষের পরম বন্ধু। একজন বন্ধু অপর বন্ধুর ক্ষতি করতে পারে।কিন্তু বই মানুষের এমন এক বন্ধু যে বন্ধু কখনো কারো ক্ষতি করে না। বরং বই আমাদেরকে হাসায়, কাঁদায়, আনন্দ দেয়, বাঁচার এক অণুপ্রেরণা দেয়। বই হচ্ছে জ্ঞানের ভান্ডার। নিজের সৃজনশীলতা, মুক্ত চিন্তা জগতের দ্বার উন্মোচিত করে বই। একটু ভেবে দেখেন তো,আমরা যখন বই পড়ি তখন আমরা বইয়ের চরিত্র বা ঘটনাগুলোকে কল্পনা করতে পারি। আমরা নিজেরা ভাবতে পারি এর পরের কাহিনী কী হতে পারে। অর্থাৎ এভাবেই আমাদের চিন্তার জগত প্রসারিত হয়।
দিন দিন প্রযুক্তির কল্যাণে বইবিমুখ হচ্ছে তরুণ সমাজ। আধুনিক যুগে যেমন চক পেন্সিলের প্রচলন কমে গিয়েছে তেমনি পৃষ্ঠা উল্টিয়ে বই পড়া পাঠকের সংখ্যাও কমে গিয়েছে। মোবাইল ফোন বা প্রযুক্তির নেশায় অনেকেই আসক্ত। এই আসক্তির কারণে শিশু, কিশোর, বয়োজ্যেষ্ঠ সবার মাঝে বইয়ের আকর্ষণ কমে আসছে। যে অবসর সময় তারা বই পড়ে কাটাতো সে অবসর সময় তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যয় করে। বই পড়ার অভ্যাস কমে আসার ফলে শিশু-কিশোর বা তরুণদের মধ্যে মূল্যবোধের ঘাটতি দেখা যায়। সহজেই তারা জড়িয়ে পড়ছে অপরাধ কর্মকা-ে। তাদের অন্ধকার জগত থেকে মুক্তি লাভের একমাত্র উপায় বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা।
বই পাঠে অনীহার অন্যতম কারণ হচ্ছে লেখকের মানহীন বই প্রকাশ। জনপ্রিয়তা বা সামান্য টাকার বিনিময়ে প্রকাশক সংস্থাগুলো বই প্রকাশ করে থাকে। প্রকাশকদের মনের মতো টাকা না দিতে পারায় লেখকের ভাল মানের বইগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। মানহীন বই পাঠককে তৃপ্ত করতে পারছে না। যার ফলে বইবিমুখতা বাড়ছে।
মানুষের মাঝে মনুষ্যত্ব বোধ জাগ্রত করতে হলে নিয়মিত বই পাঠের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই দেশ থেকে সব অশুভ শক্তির পরাজয় হবে।
খন্দকার নাঈমা আক্তার নুন।