পাউবোর জলাশয় ভরাট করে দোকান নির্মাণের হিড়িক!

চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাজারপাড়া লাগোয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১১নং স্লুইচ গেটের পতিত জলাশয় ভরাট করে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মহোৎসব। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র পাউবোর জমি ভরাট করার পর এসব জমি মোটা অঙ্কের বিনিময়ে বিক্রিও করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এই অবস্থার ফলে ওই এলাকায় জোয়ারের পানি আসা-যাওয়ার পথ একেবারেই সঙ্কুচিত হয়ে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বৃষ্টি কিংবা বন্যার পানি নির্গমনের একমাত্র পথটি সরু হয়ে যাওয়ার কারণে আসন্ন বর্ষা মওসুমে পুরো এলাকা পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রকাশ্যে সরকারি জলাশয় ভরাট ও বিক্রি অব্যাহত থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নিশ্চুপ রয়েছে। বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্লিপ্ততার সুযোগে চক্রটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে চিরতরে বেহাত হচ্ছে সরকারি কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে অভিযোগ করেও কোন ফল হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, চোখের সামনে সরকারি জমি ভরাট করে এতে স্থাপনা করছে কতিপয় ব্যক্তি অথচ কেউ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সরেজমিনে দেখা যায়, উক্ত স্লুইচ গেইটের পশ্চিমে দক্ষিণে এবং পূর্ব পাশে ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে ইতিমধ্যে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধ শত স্থাপনা। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, স্থানীয় জামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবত বেশ কিছু পতিত জলাশয় ভরাট করে বিক্রি করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি সময়ে জামাল উদ্দিন সর্বশেষ ভরাট করে একখন্ড জমি আক্তার হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে বিক্রি করেছেন মোটা অংকের বিনিময়ে। আক্তার হোসেন উক্ত জমিতে পাকা স্থাপনা করে দোকান বসিয়েছেন এবং উক্ত স্থাপনার পিছনে সে নিজেই টিন ও পলিথিনের ঘেরায় আড়াল করে জলাশয় ভরাট করে যাচ্ছেন। জানতে চাইলে অভিযুক্ত আক্তার হোসেন উক্ত জমি ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জামালের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন বলে দাবি করেন। তবে তিনি উক্ত জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানিকানাধীন জমি বলে স্বীকার করেছেন। এভাবেই প্রতিদিন যে যার মত করে জমি দখল করে সেখানে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় মাঠ কর্মী মোহাম্মদ জাকের হোসাইন জানান,‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইচ গেইটের পতিত জমি ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়ে পাউবোর কক্সবাজারস্থ নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছি, জড়িতরা এসব লোক প্রভাবশালী তারা কোন বাধা মানছেন না।’ এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ইশতিয়াক নয়ন বলেন,‘বদরখালীতে আমাদের ১১নং স্লুইচ গেইট ও এর আশপাশ দখল করে বেআইনীভাবে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়ে আমরা তালিকা করেছি। উচ্ছেদের জন্য সব প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে। চলমান লকডাউনের পরে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে।’

শুক্রবার, ০৭ মে ২০২১ , ২৫ বৈশাখ ১৪২৮ ২৫ রমজান ১৪৪২

পাউবোর জলাশয় ভরাট করে দোকান নির্মাণের হিড়িক!

প্রতিনিধি, চকরিয়া (কক্সবাজার)

image

চকরিয়া (কক্সবাজার) : পানি উন্নয়নের বোর্ডের জলাশয় ভরাট করে এভাবেই গড়ে উঠেছে দোকানপাট -সংবাদ

চকরিয়া উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের বাজারপাড়া লাগোয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১১নং স্লুইচ গেটের পতিত জলাশয় ভরাট করে চলছে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের মহোৎসব। স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র পাউবোর জমি ভরাট করার পর এসব জমি মোটা অঙ্কের বিনিময়ে বিক্রিও করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এই অবস্থার ফলে ওই এলাকায় জোয়ারের পানি আসা-যাওয়ার পথ একেবারেই সঙ্কুচিত হয়ে পানি চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বৃষ্টি কিংবা বন্যার পানি নির্গমনের একমাত্র পথটি সরু হয়ে যাওয়ার কারণে আসন্ন বর্ষা মওসুমে পুরো এলাকা পানিতে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রকাশ্যে সরকারি জলাশয় ভরাট ও বিক্রি অব্যাহত থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে নিশ্চুপ রয়েছে। বিশেষ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্লিপ্ততার সুযোগে চক্রটি বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে চিরতরে বেহাত হচ্ছে সরকারি কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে অভিযোগ করেও কোন ফল হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, চোখের সামনে সরকারি জমি ভরাট করে এতে স্থাপনা করছে কতিপয় ব্যক্তি অথচ কেউ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সরেজমিনে দেখা যায়, উক্ত স্লুইচ গেইটের পশ্চিমে দক্ষিণে এবং পূর্ব পাশে ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে ইতিমধ্যে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধ শত স্থাপনা। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, স্থানীয় জামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন যাবত বেশ কিছু পতিত জলাশয় ভরাট করে বিক্রি করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি সময়ে জামাল উদ্দিন সর্বশেষ ভরাট করে একখন্ড জমি আক্তার হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে বিক্রি করেছেন মোটা অংকের বিনিময়ে। আক্তার হোসেন উক্ত জমিতে পাকা স্থাপনা করে দোকান বসিয়েছেন এবং উক্ত স্থাপনার পিছনে সে নিজেই টিন ও পলিথিনের ঘেরায় আড়াল করে জলাশয় ভরাট করে যাচ্ছেন। জানতে চাইলে অভিযুক্ত আক্তার হোসেন উক্ত জমি ৬ লক্ষ টাকার বিনিময়ে জামালের কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন বলে দাবি করেন। তবে তিনি উক্ত জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের মানিকানাধীন জমি বলে স্বীকার করেছেন। এভাবেই প্রতিদিন যে যার মত করে জমি দখল করে সেখানে দোকান ঘর নির্মাণ করছেন। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থানীয় মাঠ কর্মী মোহাম্মদ জাকের হোসাইন জানান,‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্লুইচ গেইটের পতিত জমি ভরাট করে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়ে পাউবোর কক্সবাজারস্থ নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছি, জড়িতরা এসব লোক প্রভাবশালী তারা কোন বাধা মানছেন না।’ এব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কক্সবাজার কার্যালয়ের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী ইশতিয়াক নয়ন বলেন,‘বদরখালীতে আমাদের ১১নং স্লুইচ গেইট ও এর আশপাশ দখল করে বেআইনীভাবে দোকান ঘর নির্মাণের বিষয়ে আমরা তালিকা করেছি। উচ্ছেদের জন্য সব প্রক্রিয়াও সম্পন্ন করা হয়েছে। চলমান লকডাউনের পরে উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হবে।’