খুলনায় ভৈরব সেতুর জমি অধিগ্রহণে বিকল্প প্রস্তাব

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কাজ শুরু হতে যাচ্ছে ভৈরব নদের ওপর দিঘলিয়া-দৌলতপুর সংযোগ সেতুর। তবে এ সেতুর জমি অধিগ্রহণের আওতাভুক্ত দৌলতপুর মহসিন মোড় থেকে রেলগেট নগরঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী ও বসবাসকারীরা সেতু অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি করছেন।

গত বুধবার দুপুরে রেলগেট এলাকায় মানববন্ধন করেছেন তারা। পরে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের কাছে তারা স্মারকলিপি দেন। মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্তমানে যেখানে সেতুর সংযোগ সড়ক হওয়ার কথা চলছে, সেখানে রয়েছে আড়াইশ’র বেশি বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, পাট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, পাঁচটি স্কুল ও অনেক বসতি। এরসঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রায় ১২ হাজার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে সেতু করা হলে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্ছেদে পথে বসবেন তারা। কারণ, দৌলতপুরের অন্য কোথাও আর এমন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জায়গা নেই। কোন কোন স্থানে ভৈরব সেতু করা যেতে পারে, সে বিষয়েও ধারণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, শিরোমণি বাদামতলা ঘাট থেকে যশোর রোড পর্যন্ত চার লেনের সড়ক রয়েছে। যেখানে সেতুর সংযোগ সড়ক করলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এতে নগরের পরিধিও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া ফুলবাড়িগেট থেকে মীরেরডাঙ্গা পর্যন্ত এবং খালিশপুর ক্রিসেন্ট মিলের ভেতরেও অঢেল ফাঁকা জমি রয়েছে। সেখানে সেতু করলে ব্যাপক ক্ষতি এড়ানো যাবে।

ব্যবসায়ীদের দাবি সম্পর্কে খুলনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান বলেন, সেতুটির নকশা, প্ল্যানসহ সবকিছুর অনুমোদন হয়ে গেছে। ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেতুটি অন্য জায়গায় করা সম্ভব নয়। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কিছু করতে পারেন। প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান বলেন, ভৈরব সেতু হবে এই অঞ্চলের অন্যতম ব্যতিক্রমী সেতু। নদীর পানিপ্রবাহ ও নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নদী থেকে প্রায় ৬০ ফুট উঁচুতে পিসি গার্ডার নক্সায় সেতুটি নির্মাণ করা হবে। আর সেতুর সঙ্গে সড়কের সংযোগ স্থাপন করতে নগরের ভেতরেও উড়াল সড়ক নির্মাণ হবে। অর্থাৎ দৌলতপুরের মহসীন মোড় থেকে রেলক্রসিং পার হয়ে ভৈরব নদ পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, সালের ১৭ ডিসেম্বর একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর ‘ভৈরব সেতু’ প্রকল্পে ২০২০ সালের ২৭ জুলাই নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ১ দশমিক ৩১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ওই সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০২ কোটি টাকা। জমি অধিগ্রহণ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে আরও ২৮১ কোটি টাকা।

শুক্রবার, ০৭ মে ২০২১ , ২৫ বৈশাখ ১৪২৮ ২৫ রমজান ১৪৪২

খুলনায় ভৈরব সেতুর জমি অধিগ্রহণে বিকল্প প্রস্তাব

জেলা বার্তা পরিবেশক, খুলনা

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কাজ শুরু হতে যাচ্ছে ভৈরব নদের ওপর দিঘলিয়া-দৌলতপুর সংযোগ সেতুর। তবে এ সেতুর জমি অধিগ্রহণের আওতাভুক্ত দৌলতপুর মহসিন মোড় থেকে রেলগেট নগরঘাট পর্যন্ত বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যবসায়ী ও বসবাসকারীরা সেতু অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবি করছেন।

গত বুধবার দুপুরে রেলগেট এলাকায় মানববন্ধন করেছেন তারা। পরে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের কাছে তারা স্মারকলিপি দেন। মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা বলেন, বর্তমানে যেখানে সেতুর সংযোগ সড়ক হওয়ার কথা চলছে, সেখানে রয়েছে আড়াইশ’র বেশি বড় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, পাট রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান, পাঁচটি স্কুল ও অনেক বসতি। এরসঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রায় ১২ হাজার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে সেখানে সেতু করা হলে ওই প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্ছেদে পথে বসবেন তারা। কারণ, দৌলতপুরের অন্য কোথাও আর এমন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার জায়গা নেই। কোন কোন স্থানে ভৈরব সেতু করা যেতে পারে, সে বিষয়েও ধারণা দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, শিরোমণি বাদামতলা ঘাট থেকে যশোর রোড পর্যন্ত চার লেনের সড়ক রয়েছে। যেখানে সেতুর সংযোগ সড়ক করলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। এতে নগরের পরিধিও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া ফুলবাড়িগেট থেকে মীরেরডাঙ্গা পর্যন্ত এবং খালিশপুর ক্রিসেন্ট মিলের ভেতরেও অঢেল ফাঁকা জমি রয়েছে। সেখানে সেতু করলে ব্যাপক ক্ষতি এড়ানো যাবে।

ব্যবসায়ীদের দাবি সম্পর্কে খুলনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান বলেন, সেতুটির নকশা, প্ল্যানসহ সবকিছুর অনুমোদন হয়ে গেছে। ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সেতুটি অন্য জায়গায় করা সম্ভব নয়। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কিছু করতে পারেন। প্রকৌশলী আনিসুজ্জামান বলেন, ভৈরব সেতু হবে এই অঞ্চলের অন্যতম ব্যতিক্রমী সেতু। নদীর পানিপ্রবাহ ও নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে নদী থেকে প্রায় ৬০ ফুট উঁচুতে পিসি গার্ডার নক্সায় সেতুটি নির্মাণ করা হবে। আর সেতুর সঙ্গে সড়কের সংযোগ স্থাপন করতে নগরের ভেতরেও উড়াল সড়ক নির্মাণ হবে। অর্থাৎ দৌলতপুরের মহসীন মোড় থেকে রেলক্রসিং পার হয়ে ভৈরব নদ পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় উড়াল সড়ক নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, সালের ১৭ ডিসেম্বর একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর ‘ভৈরব সেতু’ প্রকল্পে ২০২০ সালের ২৭ জুলাই নির্মাণকাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রায় ১ দশমিক ৩১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ওই সেতু নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০২ কোটি টাকা। জমি অধিগ্রহণ বাবদ খরচ ধরা হয়েছে আরও ২৮১ কোটি টাকা।