চিকিৎসার জন্য

খালেদাকে বিদেশ পাঠানোর আবেদন পর্যালোচনার পর মতামত : আইনমন্ত্রী

দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের আবেদনটি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে পৌঁছেছে। ‘সময় শেষ হয়ে যাওয়ায়’ আজ পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। তবে পর্যালোচনার পর ‘দ্রুত সময়ে’ মতামত দিয়ে নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে গতকাল বিকেলে জানান আনিসুল হক।

আইন মন্ত্রণালয়ে খালেদার পরিবারের আবেদনের আনুষঙ্গিক দাপ্তরিক কাজ শেষে এদিন বিকেলে মন্ত্রীর গুলশানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নথি নিয়ে যান আইন সচিব গোলাম সারওয়ার।

আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা ও দন্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছিল। ‘দুটি নির্দিষ্ট শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি’ দেয়া হয়েছিল।

যে শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয়েছিল, তা শিথিলের সুযোগ আছে কিনা, তা এখন তারা দেখবেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলছেন ফৌজদারি কার্যবিধির ওই (৪০১) ধারায় একটি কাজ হয়ে যাওয়ার পর এটাকে আবার ‘ওপেন করার স্কোপ আছে কিনা,’ সেটা দেখে তাদের অভিমত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিবেন।

বিষয়গুলো দেখার পর এ বিষয়ে মতামত দেবেন জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার বিষয়টি সরকার মানবিকভাবেই দেখছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। ‘করোনা-পরবর্তী নানা জটিলতার’ কারণে এখন ‘উন্নত’ চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চায় তার পরিবার। এজন্য সরকারের অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে লিখিত আবেদন করেছে তার পরিবার।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার গত বুধবার রাতে ওই আবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাতেই তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় মতামতের জন্য। আইনমন্ত্রী জানিয়েছন, আবেদনটি বুধবার রাত ১১টায় মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে পৌঁছেছে।

দুর্নীতির মামলায় দন্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যেতে হয় ৭৬ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলে পরিবারের আবেদনে সরকার দন্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তবে শর্ত দেয়া হয়, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

খালেদা জিয়াকে অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি কী হবে জানতে চাইলে আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা (আইন মন্ত্রণালয়) মতামত দিলে সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সামারি হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে। মন্ত্রী (আইনমন্ত্রী) সিদ্ধান্ত দিলে, তখন বাকিটা হবে।’ ওই আবেদনে খালেদা জিয়াকে কোন দেশে নিতে চাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন আইন সচিব।

তবে বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র বলছে, অনুমতি পাওয়া গেলে তাকে লন্ডন নেয়া হতে পারে। গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এরপর ২৪ এপ্রিল তার দ্বিতীয় করোনা টেস্টের রিপোর্টও পজেটিভ আসে। খালেদার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গতকাল তার করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষণা বিএনপি বা খালেদার চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।

শুক্রবার, ০৭ মে ২০২১ , ২৫ বৈশাখ ১৪২৮ ২৫ রমজান ১৪৪২

চিকিৎসার জন্য

খালেদাকে বিদেশ পাঠানোর আবেদন পর্যালোচনার পর মতামত : আইনমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

দুর্নীতি মামলায় দন্ডিত খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে পরিবারের আবেদনটি আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে পৌঁছেছে। ‘সময় শেষ হয়ে যাওয়ায়’ আজ পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। তবে পর্যালোচনার পর ‘দ্রুত সময়ে’ মতামত দিয়ে নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে গতকাল বিকেলে জানান আনিসুল হক।

আইন মন্ত্রণালয়ে খালেদার পরিবারের আবেদনের আনুষঙ্গিক দাপ্তরিক কাজ শেষে এদিন বিকেলে মন্ত্রীর গুলশানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নথি নিয়ে যান আইন সচিব গোলাম সারওয়ার।

আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারায় খালেদা জিয়ার সাজা ও দন্ডাদেশ স্থগিত করা হয়েছিল। ‘দুটি নির্দিষ্ট শর্তে তাকে সাময়িক মুক্তি’ দেয়া হয়েছিল।

যে শর্তে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করা হয়েছিল, তা শিথিলের সুযোগ আছে কিনা, তা এখন তারা দেখবেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলছেন ফৌজদারি কার্যবিধির ওই (৪০১) ধারায় একটি কাজ হয়ে যাওয়ার পর এটাকে আবার ‘ওপেন করার স্কোপ আছে কিনা,’ সেটা দেখে তাদের অভিমত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিবেন।

বিষয়গুলো দেখার পর এ বিষয়ে মতামত দেবেন জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার বিষয়টি সরকার মানবিকভাবেই দেখছে।’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এখন ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন। ‘করোনা-পরবর্তী নানা জটিলতার’ কারণে এখন ‘উন্নত’ চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে চায় তার পরিবার। এজন্য সরকারের অনুমতি চেয়ে সরকারের কাছে লিখিত আবেদন করেছে তার পরিবার।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার গত বুধবার রাতে ওই আবেদন নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাতেই তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয় মতামতের জন্য। আইনমন্ত্রী জানিয়েছন, আবেদনটি বুধবার রাত ১১টায় মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের কাছে পৌঁছেছে।

দুর্নীতির মামলায় দন্ড নিয়ে তিন বছর আগে কারাগারে যেতে হয় ৭৬ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে। গত বছর করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটলে পরিবারের আবেদনে সরকার দন্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। তবে শর্ত দেয়া হয়, মুক্ত থাকার সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

খালেদা জিয়াকে অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি কী হবে জানতে চাইলে আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা (আইন মন্ত্রণালয়) মতামত দিলে সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সামারি হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবে। মন্ত্রী (আইনমন্ত্রী) সিদ্ধান্ত দিলে, তখন বাকিটা হবে।’ ওই আবেদনে খালেদা জিয়াকে কোন দেশে নিতে চাওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কিছু উল্লেখ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন আইন সচিব।

তবে বিএনপি এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসকদের সংশ্লিষ্ট কয়েকটি সূত্র বলছে, অনুমতি পাওয়া গেলে তাকে লন্ডন নেয়া হতে পারে। গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনার রিপোর্ট পজেটিভ আসে। এরপর ২৪ এপ্রিল তার দ্বিতীয় করোনা টেস্টের রিপোর্টও পজেটিভ আসে। খালেদার ঘনিষ্ঠ একাধিক সূত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছেন গতকাল তার করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। তবে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোন ঘোষণা বিএনপি বা খালেদার চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।