ব্রহ্মপুত্র সেতু মোড়-শম্ভুগঞ্জ বাজার সড়ক বেহাল : দুর্ভোগ

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ থেকে শম্ভুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থা। অসংখ্য খানাখন্দ আর ভাঙাচুড়া এই সড়কটি ময়মনসিংহ অঞ্চলের যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ ময়মনসিংহ শম্ভুগঞ্জ মোড় হয়ে এই পথে শেরপুর, হালুয়াঘাট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, সিলেটসহ বিভিন্ন রুটের ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী হাজার হাজার যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে এই সড়ক হয়ে। সড়কের এই অংশটুকুই খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। সড়ক ভাঙার কারণে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। খানা-খন্দের কারণে প্রায়ই সড়কের ওপর যানবাহন বিকল হয়ে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সামনে বর্ষা মৌসুমে এ ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে তাদের আশঙ্কা। এছাড়া ঈদের আগে এই সড়কটি মেরামত না করা হলে ঈদে যাত্রীদের চলাচলে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে বলে ময়মনসিংহ ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের আশঙ্কা। ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগ অবশ্য ঈদের আগে সাময়িক মেরামত করে চলাচল সচল রাখার আশ্বাস দিয়েছে।

ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ থেকে চায়না মোড় হয়ে শম্ভুগঞ্জ বাজারের রঘুরামপুর মোড় পর্যন্ত সড়কের অংশ দিয়েই শেরপুর, নেত্রকোনা, হালুয়াঘাট, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, সিলেটসহ বিভিন্ন রুটের ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী হাজার হাজার যানবাহন প্রতিদিন এই সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয়। গতবছর থেকেই ভেঙ্গে খানখন্দ সৃষ্টি হয় সড়কের এই অংশে। গত বর্ষার পর স্থানীয় সড়ক বিভাগ খারাপ অংশের ওপর বালি ফেলে ও ইট বিছিয়ে কিছুটা সচল করেছিল। কিন্তু এরপর যানবাহনের চাপে ইট শুড়কি উঠে গিয়ে শুকনো মৌশুমে ধূলাবালি আর বর্ষায় কাঁদাজলে একাকার থাকায় ময়মনসিংহ অভিমুখে এ সড়কটি পাড়ি দিতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় এ অঞ্চলের যাত্রী ও চালকদের।

ভাঙা অংশের সড়ক জুড়ে ইট সুরকি উঠে গিয়ে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কে এক পাশে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ভাগার। এই ময়লাকান্দার পাশেই অসংখ্য জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় খানাাখন্দ। দ্রুতগতির যানবহন যাতায়াতের সময় ধুলোয় অন্ধকার হচ্ছে এখানকার স্থানীয় পরিবেশ। আশপাশের দোকানপাঠ ও বাড়িঘরের বাসিন্দারা এ ধুলোবালির যন্ত্রনায় অতিষ্ট। তারা জানালেন, এ ধুলোর কারনে সারা বছরেই আমরা ও আমাদের ছেলেমেরা সর্দি জ্বরসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব ভাঙা গর্তে পানি জমে কাঁদাজলে একাকার অবস্থা হচ্ছে। এসব খানাখন্দে আটকে পড়ে প্রায়ই যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন বিকল হলে কিংবা উল্টে পড়ে এই রুটে যানবাহন চলাচলে সৃষ্টি হয় যানজট। আর এই যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যাত্রী সাধারণের। এ সময় শেরপুর, হালুয়াঘাট, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জগামী দূরপাল্লার যাত্রীদের ভোগান্তির সীমা থাকেনা। এ সময় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয় দূর দূরান্ত থেকে আসা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি প্রসূতি ও মূমুর্ষূ রোগীদের। এ সড়কে চলাচলকারী চালকরা জানালেন, মাত্র পাঁচ মিনিটের রাস্তা কিন্তু ভাঙার কারণে পাড়ি দিতে লাগে ২০ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা সময় লাগে আর যানজটের সৃষ্টি হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হয় এখানে। ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ মোড় থেকে চায়না মোড়া হয়ে শম্ভুগঞ্জ বাজারের রঘুরামপুর মোড় পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের একটি প্রকল্পের আওতায় চারলেন সড়ক নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ‘ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি পেয়েছে। তিনি আরও জানান, যদিও এক বছর আগেই এই প্রকল্পের টেন্ডার হয়েছিল কিন্তু ঠিকাদার নির্বাচনের জটিলতার কারণে এটি এক বছর বিলম্ব হয়েছে। প্রায় ৮৪ কোটি টাকা ব্যায়ের এই কাজটি ঈদের পর শুরু হবে। তিনি জানান, বর্তমানে যেহেতু একটি প্রকল্পের আওতায় এই সড়কের কাজ প্রক্রিয়াধীন সে কারণে এই সড়কের অংশে কোন উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ না পাওয়ায় এখানে বড় ধরনের কোন সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। তবে রাস্তা সচল রাখাতে ইট, শুড়কি ও বালু ফেলে মেরামতের কাজ করে যাচ্ছি। প্রকল্পের আওতায় পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজটি সম্পন্ন হলে এই সড়ক নিয়ে আমাদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

শনিবার, ০৮ মে ২০২১ , ২৬ বৈশাখ ১৪২৮ ২৬ রমজান ১৪৪২

ব্রহ্মপুত্র সেতু মোড়-শম্ভুগঞ্জ বাজার সড়ক বেহাল : দুর্ভোগ

শরীফুজ্জামান টিটু, ময়মনসিংহ

image

ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ থেকে শম্ভুগঞ্জ বাজার পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের বেহাল অবস্থা। অসংখ্য খানাখন্দ আর ভাঙাচুড়া এই সড়কটি ময়মনসিংহ অঞ্চলের যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ ময়মনসিংহ শম্ভুগঞ্জ মোড় হয়ে এই পথে শেরপুর, হালুয়াঘাট, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, সিলেটসহ বিভিন্ন রুটের ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী হাজার হাজার যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে এই সড়ক হয়ে। সড়কের এই অংশটুকুই খানাখন্দ আর বড় বড় গর্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পরেছে। সড়ক ভাঙার কারণে প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। খানা-খন্দের কারণে প্রায়ই সড়কের ওপর যানবাহন বিকল হয়ে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। সামনে বর্ষা মৌসুমে এ ভোগান্তি আরও বাড়বে বলে তাদের আশঙ্কা। এছাড়া ঈদের আগে এই সড়কটি মেরামত না করা হলে ঈদে যাত্রীদের চলাচলে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে বলে ময়মনসিংহ ট্রাফিক বিভাগের সদস্যদের আশঙ্কা। ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগ অবশ্য ঈদের আগে সাময়িক মেরামত করে চলাচল সচল রাখার আশ্বাস দিয়েছে।

ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ থেকে চায়না মোড় হয়ে শম্ভুগঞ্জ বাজারের রঘুরামপুর মোড় পর্যন্ত সড়কের অংশ দিয়েই শেরপুর, নেত্রকোনা, হালুয়াঘাট, কিশোরগঞ্জ, ভৈরব, সিলেটসহ বিভিন্ন রুটের ঢাকা ও উত্তরবঙ্গগামী হাজার হাজার যানবাহন প্রতিদিন এই সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয়। গতবছর থেকেই ভেঙ্গে খানখন্দ সৃষ্টি হয় সড়কের এই অংশে। গত বর্ষার পর স্থানীয় সড়ক বিভাগ খারাপ অংশের ওপর বালি ফেলে ও ইট বিছিয়ে কিছুটা সচল করেছিল। কিন্তু এরপর যানবাহনের চাপে ইট শুড়কি উঠে গিয়ে শুকনো মৌশুমে ধূলাবালি আর বর্ষায় কাঁদাজলে একাকার থাকায় ময়মনসিংহ অভিমুখে এ সড়কটি পাড়ি দিতে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় এ অঞ্চলের যাত্রী ও চালকদের।

ভাঙা অংশের সড়ক জুড়ে ইট সুরকি উঠে গিয়ে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কে এক পাশে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ভাগার। এই ময়লাকান্দার পাশেই অসংখ্য জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় খানাাখন্দ। দ্রুতগতির যানবহন যাতায়াতের সময় ধুলোয় অন্ধকার হচ্ছে এখানকার স্থানীয় পরিবেশ। আশপাশের দোকানপাঠ ও বাড়িঘরের বাসিন্দারা এ ধুলোবালির যন্ত্রনায় অতিষ্ট। তারা জানালেন, এ ধুলোর কারনে সারা বছরেই আমরা ও আমাদের ছেলেমেরা সর্দি জ্বরসহ নানান রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব ভাঙা গর্তে পানি জমে কাঁদাজলে একাকার অবস্থা হচ্ছে। এসব খানাখন্দে আটকে পড়ে প্রায়ই যাত্রীবাহী ও পণ্যবাহী যানবাহন বিকল হলে কিংবা উল্টে পড়ে এই রুটে যানবাহন চলাচলে সৃষ্টি হয় যানজট। আর এই যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যাত্রী সাধারণের। এ সময় শেরপুর, হালুয়াঘাট, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জগামী দূরপাল্লার যাত্রীদের ভোগান্তির সীমা থাকেনা। এ সময় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হতে হয় দূর দূরান্ত থেকে আসা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি প্রসূতি ও মূমুর্ষূ রোগীদের। এ সড়কে চলাচলকারী চালকরা জানালেন, মাত্র পাঁচ মিনিটের রাস্তা কিন্তু ভাঙার কারণে পাড়ি দিতে লাগে ২০ মিনিট থেকে আধা ঘণ্টা সময় লাগে আর যানজটের সৃষ্টি হলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় নষ্ট হয় এখানে। ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়াহিদুজ্জামান জানান, ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র ব্রিজ মোড় থেকে চায়না মোড়া হয়ে শম্ভুগঞ্জ বাজারের রঘুরামপুর মোড় পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কের একটি প্রকল্পের আওতায় চারলেন সড়ক নির্মাণ কাজের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ‘ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজটি পেয়েছে। তিনি আরও জানান, যদিও এক বছর আগেই এই প্রকল্পের টেন্ডার হয়েছিল কিন্তু ঠিকাদার নির্বাচনের জটিলতার কারণে এটি এক বছর বিলম্ব হয়েছে। প্রায় ৮৪ কোটি টাকা ব্যায়ের এই কাজটি ঈদের পর শুরু হবে। তিনি জানান, বর্তমানে যেহেতু একটি প্রকল্পের আওতায় এই সড়কের কাজ প্রক্রিয়াধীন সে কারণে এই সড়কের অংশে কোন উন্নয়ন কাজের বরাদ্দ না পাওয়ায় এখানে বড় ধরনের কোন সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। তবে রাস্তা সচল রাখাতে ইট, শুড়কি ও বালু ফেলে মেরামতের কাজ করে যাচ্ছি। প্রকল্পের আওতায় পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজটি সম্পন্ন হলে এই সড়ক নিয়ে আমাদের আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।