স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঈদের বিকিকিনি

রাজশাহী

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই জমে উঠেছে রাজশাহীর মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলো। সকালের দিকে ফাঁকা থাকলেও বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতার ভিড়। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে স্বজনদের জন্য কেনাকাটা করছেন তারা।

সরেজমিন রাজশাহীর বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণি বিতানের সামনে তীব্র যানজট দেখা যায়। সপ্তাহের ছুটির দিন হওয়ায় অটোরিক্সা ও রিক্সার দাপটে পা ফেলা দায়। মার্কেটগুলোর আশপাশে থেমে থেমে মানবজটলাও তৈরি হয়। সকালে মার্কেটে তেমন লোকজন না থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়া মাত্রই নগরীর আরডিএ মার্কেটে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। সামাজিক দূরত্ব না থাকলেও বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়। একই অবস্থা নগরীর রাণীবাজার ও নিউমাকের্ট এলাকার দোকানগুলোতেও। ক্রেতাদের চাপ যেমন, বেচাবিক্রিও ভাল হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।

ঝুঁকি নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ক্রেতারা বলেন, ‘প্রতিটি দোকানে ভিড়, যে কারণে কারও পক্ষেই স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হচ্ছে না। ঈদে নিজেদের জন্য না হলেও বাচ্চাদের জন্য নতুন জামা-কাপড় কিনতে হবে। তাই ঝুঁকি নিয়েও বাজারে এসেছি।’

দোকান মালিকরা বলেন, ‘আমরা যতটুকু সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি। তবে ক্রেতাদের দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে অনুরোধ করলেও তারা শুনছেন না। বলতে গেলে বরং বিপরীত ফল হয়।’ ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাত ১২টা পর্যন্ত মার্কেট ও বিপণিবিতান খোলা রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তারা।

রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ মামুদ হাসান বলেন, ‘মার্কেট চালুর জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে সহায়তা চেয়েছিলাম। পুলিশ ও প্রশাসন আমাদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে। আশা করছি, চাঁদরাত পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মানার এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং মানুষ স্বস্তিতে ঈদের কেনাকাটা করতে পারবে।’

মির্জাগঞ্জ

প্রতিনিধি, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)

করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বিপণী বিতানগুলোতে প্রতিদিন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। মার্কেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতারা ভিড় জমান নতুন পোশাক কেনার জন্য। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েই কেনাকাটা করছেন লোকজন। করোনার ভয় উপেক্ষা করে সকাল ১০টার আগেই মার্কেটমুখী সড়কগুলোতে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, বাস, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল চলাচল করেছে। রাস্তায় প্রচুর মানুষের সমাগম। মানুষের স্রোতের কারণে কয়েকটি সড়কে যানজটও দেখা গেছে।

শারীরিক বা নিরাপদ কোনো দূরত্ব মানার অবকাশ যেন নেই ক্রেতাদের মধ্যে। বিক্রেতাদের অনেকের মুখেই নেই মাস্ক। হাত ধোয়ার জন্যও নেই কোন ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে কেনাবেচা।

সরেজমিনে উপজেলা সদর সুবিদখালীর মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, বাজারের তৈরি পোশাক, দর্জির দোকান, শাড়ি কাপড়, জুতা, স্যান্ডেল ও কসমেটিকসের দোকানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ধাক্কাধাক্কি করেও পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে নারী ক্রেতাদের ভিড় বেশি দেখা গেছে। উপজেলার মার্কেটগুলােতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের তেমন কোন তৎপরতা নেই, নীরবতা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন। লকডাউন চলাকালে সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সকাল ১০ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা থাকার কথা কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে বর্তমানে মির্জাগঞ্জে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকছে।

ফারজানা বেগম নামের এক ক্রেতা বলেন, ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি তাই মার্কেটে প্রতিদিন ভিড় বাড়বে। এজন্য তাড়াতাড়ি করে কেনাকাটা করতে এসেছি। বাচ্চাদের তো নতুন জামা কাপড় দিতে হবে ঈদে।

করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই তো আসতাছে। কেউ তো আর মার্কেট করা বাদ দেয় নাই। বাচ্চারা কান্নাকাটি করে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, করোনার কারণে ব্যবসা এতদিন প্রায় বন্ধই ছিল। ঈদকে সামনে রেখে খোলার সুযোগ পাচ্ছি। ক্রেতারাও আসছে অনেক। এত মানুষের জন্য তো স্বাস্থ্যবিধি মানা কষ্টকর। তবে আমরা মাস্ক ব্যবহার করি। ক্রেতাদের মাস্ক পরে আসতে বলি।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হান উজ্জামান বলেন, দোকানে নিরাপদ দূরত্ব মেনে কেনাবেচা করার জন্য দোকানদারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রবিবার, ০৯ মে ২০২১ , ২৬ বৈশাখ ১৪২৮ ২৬ রমজান ১৪৪২

স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ঈদের বিকিকিনি

image

রাজশাহী

জেলা বার্তা পরিবেশক, রাজশাহী

স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়েই জমে উঠেছে রাজশাহীর মার্কেট ও বিপণি বিতানগুলো। সকালের দিকে ফাঁকা থাকলেও বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ক্রেতার ভিড়। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে স্বজনদের জন্য কেনাকাটা করছেন তারা।

সরেজমিন রাজশাহীর বিভিন্ন মার্কেট ও বিপণি বিতানের সামনে তীব্র যানজট দেখা যায়। সপ্তাহের ছুটির দিন হওয়ায় অটোরিক্সা ও রিক্সার দাপটে পা ফেলা দায়। মার্কেটগুলোর আশপাশে থেমে থেমে মানবজটলাও তৈরি হয়। সকালে মার্কেটে তেমন লোকজন না থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়।

দুপুর গড়িয়ে বিকেল হওয়া মাত্রই নগরীর আরডিএ মার্কেটে তিল ধারণের জায়গা ছিল না। সামাজিক দূরত্ব না থাকলেও বেশিরভাগ মানুষের মুখে মাস্ক দেখা যায়। একই অবস্থা নগরীর রাণীবাজার ও নিউমাকের্ট এলাকার দোকানগুলোতেও। ক্রেতাদের চাপ যেমন, বেচাবিক্রিও ভাল হচ্ছে বলে জানান বিক্রেতারা।

ঝুঁকি নিয়ে কেনাকাটা করতে আসা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ক্রেতারা বলেন, ‘প্রতিটি দোকানে ভিড়, যে কারণে কারও পক্ষেই স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হচ্ছে না। ঈদে নিজেদের জন্য না হলেও বাচ্চাদের জন্য নতুন জামা-কাপড় কিনতে হবে। তাই ঝুঁকি নিয়েও বাজারে এসেছি।’

দোকান মালিকরা বলেন, ‘আমরা যতটুকু সম্ভব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি। তবে ক্রেতাদের দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে অনুরোধ করলেও তারা শুনছেন না। বলতে গেলে বরং বিপরীত ফল হয়।’ ব্যবসায়ীরা বলছেন, রাত ১২টা পর্যন্ত মার্কেট ও বিপণিবিতান খোলা রাখার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তারা।

রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ মামুদ হাসান বলেন, ‘মার্কেট চালুর জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে সহায়তা চেয়েছিলাম। পুলিশ ও প্রশাসন আমাদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে। আশা করছি, চাঁদরাত পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মানার এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং মানুষ স্বস্তিতে ঈদের কেনাকাটা করতে পারবে।’

মির্জাগঞ্জ

প্রতিনিধি, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী)

করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের বিপণী বিতানগুলোতে প্রতিদিন ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। মার্কেট খোলার সঙ্গে সঙ্গে ক্রেতারা ভিড় জমান নতুন পোশাক কেনার জন্য। কিন্তু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। ফলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়েই কেনাকাটা করছেন লোকজন। করোনার ভয় উপেক্ষা করে সকাল ১০টার আগেই মার্কেটমুখী সড়কগুলোতে মানুষের ঢল নামতে শুরু করে। উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক, বাস, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেল চলাচল করেছে। রাস্তায় প্রচুর মানুষের সমাগম। মানুষের স্রোতের কারণে কয়েকটি সড়কে যানজটও দেখা গেছে।

শারীরিক বা নিরাপদ কোনো দূরত্ব মানার অবকাশ যেন নেই ক্রেতাদের মধ্যে। বিক্রেতাদের অনেকের মুখেই নেই মাস্ক। হাত ধোয়ার জন্যও নেই কোন ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যবিধি অমান্য করে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে কেনাবেচা।

সরেজমিনে উপজেলা সদর সুবিদখালীর মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা যায়, বাজারের তৈরি পোশাক, দর্জির দোকান, শাড়ি কাপড়, জুতা, স্যান্ডেল ও কসমেটিকসের দোকানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। ধাক্কাধাক্কি করেও পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে নারী ক্রেতাদের ভিড় বেশি দেখা গেছে। উপজেলার মার্কেটগুলােতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে প্রশাসনের তেমন কোন তৎপরতা নেই, নীরবতা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন। লকডাউন চলাকালে সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সকাল ১০ থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দোকানপাট ও শপিংমল খোলা থাকার কথা কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে বর্তমানে মির্জাগঞ্জে সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকছে।

ফারজানা বেগম নামের এক ক্রেতা বলেন, ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি তাই মার্কেটে প্রতিদিন ভিড় বাড়বে। এজন্য তাড়াতাড়ি করে কেনাকাটা করতে এসেছি। বাচ্চাদের তো নতুন জামা কাপড় দিতে হবে ঈদে।

করোনাভাইরাসে সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই তো আসতাছে। কেউ তো আর মার্কেট করা বাদ দেয় নাই। বাচ্চারা কান্নাকাটি করে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে তারা জানায়, করোনার কারণে ব্যবসা এতদিন প্রায় বন্ধই ছিল। ঈদকে সামনে রেখে খোলার সুযোগ পাচ্ছি। ক্রেতারাও আসছে অনেক। এত মানুষের জন্য তো স্বাস্থ্যবিধি মানা কষ্টকর। তবে আমরা মাস্ক ব্যবহার করি। ক্রেতাদের মাস্ক পরে আসতে বলি।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রায়হান উজ্জামান বলেন, দোকানে নিরাপদ দূরত্ব মেনে কেনাবেচা করার জন্য দোকানদারদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।