বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ৪ মাসেও সংস্কার হয়নি

দীর্ঘ চার মাস অতিবাহিত হলেও কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দুর্বৃত্তদের ভেঙ্গে ফেলা বিপ্লবী বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। চিঠি চালাচালির মাঝেই আটকে রয়েছে ভাস্কর্য়ের সংস্কার কাজ। মুখে ক্ষত চিহ্ন নিয়েই এখনও দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি। গত ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নে কয়া মহাবিদ্যালয়ের সামনে নির্মিত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভেঙ্গে রেখে যায়। সে সময়ে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটির মুখ ও নাকের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনার পরের দিন কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের নামে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর গত ১৯ ডিসেম্বর পুলিশ কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানকে গ্রেফতার করে। এদিকে ভাস্কর্যটি ভাংচুরের ঘটনার প্রায় চার মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও বিপ্লবী বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি সংস্কার বা মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এতদিনেও কেন সংস্কার করা হয়নি বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি জানতে চাওয়া হলে কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ জানান, ভাস্কর্যটি সংস্কার করার জন্য চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি অধ্যক্ষকে জেলা প্রশাসকের পক্ষে সহকারী কমিশনার রিজু তামান্না স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রদান করা হয়। ২ ফেব্রুয়ারি ডাক মারফত প্রেরিত ওই চিঠিটি অধ্যক্ষ’র হস্তগত হয়। ওই চিঠিতে দ্রুত ভাস্কর্যটি সংস্কার করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সাথে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ওই চিঠির অনুলিপি প্রদান করা হয়। আলোচিত এ ঘটনাটি নিয়ে মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকার কারণে আইনী জটিলতা এড়াতে মামলার বাদি কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ গত ৩ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কুমারখালী আদালতের বিচারক সেলিনা খাতুনের আদালতে ভাস্কর্যটি সংস্কারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট আদালত গত ৭ মার্চ ভাস্কর্য সংস্কারের অনুমতি প্রদান করেন। অধ্যক্ষ জানান, আদালতের অনুমতি পেয়ে তিনি ওই দিনই ভাস্কর্যটি সংস্কারের জন্য কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। ভাস্কর্য সংস্কারের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, মামলাটি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন রয়েছে সে কারণে ভাস্কর্য সংস্কার করা নিয়ে আইনী কোন জটিলতা আছে কিনা এ বিষয়টি জানার জন্য কুমারখালী থানাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন কিছু জানায়নি। গত ৭ মার্চ আদালত ভাস্কর্যটি সংস্কারের অনুমতি প্রদান করেছেন বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান। বলেন, আইনী কোন জটিলতা না থাকলে খুব শীঘ্রই ভাস্কর্যটি সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়া হবে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের স্মৃতি ধরে রাখতে কুমারখালী উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে কয়া মহা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ২০১৮ সালে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়।

রবিবার, ০৯ মে ২০২১ , ২৬ বৈশাখ ১৪২৮ ২৬ রমজান ১৪৪২

বিপ্লবী বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ৪ মাসেও সংস্কার হয়নি

মিজানুর রহমান লাকী, কুষ্টিয়া

image

দীর্ঘ চার মাস অতিবাহিত হলেও কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে দুর্বৃত্তদের ভেঙ্গে ফেলা বিপ্লবী বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি সংস্কার করা সম্ভব হয়নি। চিঠি চালাচালির মাঝেই আটকে রয়েছে ভাস্কর্য়ের সংস্কার কাজ। মুখে ক্ষত চিহ্ন নিয়েই এখনও দাঁড়িয়ে আছে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি। গত ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে দুর্বৃত্তরা কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নে কয়া মহাবিদ্যালয়ের সামনে নির্মিত ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের ভাস্কর্য ভেঙ্গে রেখে যায়। সে সময়ে বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটির মুখ ও নাকের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঘটনার পরের দিন কলেজের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ বাদী হয়ে কুমারখালী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের নামে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর গত ১৯ ডিসেম্বর পুলিশ কয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আনিসুর রহমানকে গ্রেফতার করে। এদিকে ভাস্কর্যটি ভাংচুরের ঘটনার প্রায় চার মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হলেও বিপ্লবী বাঘা যতীনের সেই ভাস্কর্যটি সংস্কার বা মেরামত করা সম্ভব হয়নি। এতদিনেও কেন সংস্কার করা হয়নি বাঘা যতীনের ভাস্কর্যটি জানতে চাওয়া হলে কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ জানান, ভাস্কর্যটি সংস্কার করার জন্য চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি অধ্যক্ষকে জেলা প্রশাসকের পক্ষে সহকারী কমিশনার রিজু তামান্না স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রদান করা হয়। ২ ফেব্রুয়ারি ডাক মারফত প্রেরিত ওই চিঠিটি অধ্যক্ষ’র হস্তগত হয়। ওই চিঠিতে দ্রুত ভাস্কর্যটি সংস্কার করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। একই সাথে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ওই চিঠির অনুলিপি প্রদান করা হয়। আলোচিত এ ঘটনাটি নিয়ে মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকার কারণে আইনী জটিলতা এড়াতে মামলার বাদি কয়া মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন অর রশীদ গত ৩ মার্চ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট কুমারখালী আদালতের বিচারক সেলিনা খাতুনের আদালতে ভাস্কর্যটি সংস্কারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট আদালত গত ৭ মার্চ ভাস্কর্য সংস্কারের অনুমতি প্রদান করেন। অধ্যক্ষ জানান, আদালতের অনুমতি পেয়ে তিনি ওই দিনই ভাস্কর্যটি সংস্কারের জন্য কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। ভাস্কর্য সংস্কারের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাওয়া হলে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীবুল ইসলাম খান বলেন, মামলাটি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন রয়েছে সে কারণে ভাস্কর্য সংস্কার করা নিয়ে আইনী কোন জটিলতা আছে কিনা এ বিষয়টি জানার জন্য কুমারখালী থানাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারা এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন কিছু জানায়নি। গত ৭ মার্চ আদালত ভাস্কর্যটি সংস্কারের অনুমতি প্রদান করেছেন বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান। বলেন, আইনী কোন জটিলতা না থাকলে খুব শীঘ্রই ভাস্কর্যটি সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়া হবে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্রনায়ক বিপ্লবী বীর বাঘা যতীনের স্মৃতি ধরে রাখতে কুমারখালী উপজেলা প্রশাসনের অর্থায়নে কয়া মহা বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ২০১৮ সালে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়।