ক্লাসে যেতে না পারায় ক্ষোভে সবুজবাগ স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা

রাজধানীর সবুজবাগ থানার মায়াকানন এলাকায় ‘স্কুলের ক্লাসে’ যেতে না পারার ক্ষোভে সাগর বড়ুয়া (১৪) নামে এক স্কুলছাত্র গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গত শুক্রবার রাত ১০টায় ফাঁস দেয়া সাগরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

নিহতের বাবা সবুজ বড়ুয়া বলেন, ‘সাগরকে বাসায় একা রেখে বিকেলের দিকে তিনি ও তার স্ত্রী তাদের ৫ মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে কেনাকাটা করতে মার্কেটে যান। রাত অনুমান দশটার দিকে ফিরে এসে ঘরের দরজা বন্ধ পান। পরে অনেক ডাকাডাকি করার পর চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে দেখতে পান চেলে সাগর তার মায়ের পাতলা হালকা ওড়না গলায় ফাঁস দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের অতিরিক্ত রাগ ছিল। যখন তখন অকারণে রাগ করত। স্কুলে যেতে না পারার ক্ষোভ থেকে সে আত্মহত্যা করেছে বলে আমার ধারণা। কারণ লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ক্লাসে যেতে না পারায় তার মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। জীবিত থাকা অবস্থায় ছেলে বিষয়টি আমার কাছে প্রায়ই বলত। সাগর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে নবম শ্রেণীর বিজ্ঞানের ছাত্র ছিল। ওই কথাগুলো নিহতের বাবা গতকাল ঢামেক মর্গের সামনে দুপুরে সংবাদকে জানান। কথা বলার সময় ছেলে হারানোর বেদনায় বাবা সবুজ বড়ুয়া কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। হতাশার সুরে তিনি বলেন, আমি কাকে নিয়ে বাঁচব। অসময়ে ছেলে আমাকে রেখে চলে গেল। আমি আর বেশিদিন বাচুম না। পৃথিবীতে আমাকে কে দেখবে। সবুজ বড়ুয়া জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে। তিনি বর্তমানে সবুজবাগের মায়াকানন ৩/৪ নম্বর বাসার পরিবার নিয়ে থাকেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল দুপুরের সময় ঢামেক মর্গে সবুজবাগ থানা পুলিশের উপস্থিতে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

এ বিষয়ে সবুজবাগ থানার এসআই মো. আনোয়ার জানান, নিহত সাগর বড়ুয়ার গলায় ফাঁসির দাগ ছিল। ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জেনেছি। আর নিহতের বাবা ও বাড়িওয়ালা ঘটনার পরপরই সাগরকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমি সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যসহ সবুজবাগ থানা পুলিশ ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে লাশের সুরতহাল করি। মর্গে পাঠানোর সময় কাগজ লিখে দিয়েছি, সাগরের মৃত্যুর অন্য কোন কারণ থাকলে তা ডাক্তারের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর আমরা আগাব। ওই স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় সবুজবাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে এসআই আনোয়ার জানান।

আরও খবর
আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ অভিবাসীর ৭৭ শতাংশই চাকরি খুঁজছেন
আজ শবে কদর
সোহরাওয়ার্দীতে গাছ কাটা নিয়ে উদ্বিগ্ন না হতে বলেছেন কাদের
আজ বিশ্ব মা দিবস
করোনাকালে শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে ফিরেছেন ১৩ লাখ যাত্রী
পরিযায়ী পাখি দেশের প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করে পরিবেশমন্ত্রী
ঈদের আগে দূরপাল্লার গণপরিবহন চালু দাবি
এক দারোয়ান খুনসহ একদিনে ৩ লাশ উদ্ধার
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন মমতার
ছাত্র অধিকার নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি ১৮ বিশিষ্ট নাগরিকের
কোম্পানীগঞ্জ ফের অশান্ত আ’লীগ দু’গ্রুপে সংঘর্ষ মামলা ও গ্রেপ্তার
নন-একাডেমিক ব্যক্তিকে ট্রেজারার নিয়োগে নিন্দা

রবিবার, ০৯ মে ২০২১ , ২৬ বৈশাখ ১৪২৮ ২৬ রমজান ১৪৪২

ক্লাসে যেতে না পারায় ক্ষোভে সবুজবাগ স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যা

মেডিকেল বার্তা পরিবেশক

রাজধানীর সবুজবাগ থানার মায়াকানন এলাকায় ‘স্কুলের ক্লাসে’ যেতে না পারার ক্ষোভে সাগর বড়ুয়া (১৪) নামে এক স্কুলছাত্র গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গত শুক্রবার রাত ১০টায় ফাঁস দেয়া সাগরকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

নিহতের বাবা সবুজ বড়ুয়া বলেন, ‘সাগরকে বাসায় একা রেখে বিকেলের দিকে তিনি ও তার স্ত্রী তাদের ৫ মাস বয়সী সন্তানকে নিয়ে কেনাকাটা করতে মার্কেটে যান। রাত অনুমান দশটার দিকে ফিরে এসে ঘরের দরজা বন্ধ পান। পরে অনেক ডাকাডাকি করার পর চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে দেখতে পান চেলে সাগর তার মায়ের পাতলা হালকা ওড়না গলায় ফাঁস দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের অতিরিক্ত রাগ ছিল। যখন তখন অকারণে রাগ করত। স্কুলে যেতে না পারার ক্ষোভ থেকে সে আত্মহত্যা করেছে বলে আমার ধারণা। কারণ লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় দীর্ঘদিন ক্লাসে যেতে না পারায় তার মনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। জীবিত থাকা অবস্থায় ছেলে বিষয়টি আমার কাছে প্রায়ই বলত। সাগর কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলে নবম শ্রেণীর বিজ্ঞানের ছাত্র ছিল। ওই কথাগুলো নিহতের বাবা গতকাল ঢামেক মর্গের সামনে দুপুরে সংবাদকে জানান। কথা বলার সময় ছেলে হারানোর বেদনায় বাবা সবুজ বড়ুয়া কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। হতাশার সুরে তিনি বলেন, আমি কাকে নিয়ে বাঁচব। অসময়ে ছেলে আমাকে রেখে চলে গেল। আমি আর বেশিদিন বাচুম না। পৃথিবীতে আমাকে কে দেখবে। সবুজ বড়ুয়া জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামে। তিনি বর্তমানে সবুজবাগের মায়াকানন ৩/৪ নম্বর বাসার পরিবার নিয়ে থাকেন। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল দুপুরের সময় ঢামেক মর্গে সবুজবাগ থানা পুলিশের উপস্থিতে মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।

এ বিষয়ে সবুজবাগ থানার এসআই মো. আনোয়ার জানান, নিহত সাগর বড়ুয়ার গলায় ফাঁসির দাগ ছিল। ওড়না দিয়ে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে সে আত্মহত্যা করেছে বলে জেনেছি। আর নিহতের বাবা ও বাড়িওয়ালা ঘটনার পরপরই সাগরকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। আমি সঙ্গীয় পুলিশ সদস্যসহ সবুজবাগ থানা পুলিশ ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে লাশের সুরতহাল করি। মর্গে পাঠানোর সময় কাগজ লিখে দিয়েছি, সাগরের মৃত্যুর অন্য কোন কারণ থাকলে তা ডাক্তারের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসার পর আমরা আগাব। ওই স্কুল ছাত্রের আত্মহত্যার ঘটনায় সবুজবাগ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে বলে এসআই আনোয়ার জানান।