বাইক হাতে বেপরোয়া কিশোররা : নিত্য দুর্ঘটনা

দেলদুয়ারে অল্প বয়সের ছেলেদের হাতে দামী দামী দ্রুতযান মোটরবাইক, ফলে নিয়মিত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। আর এ সব দুর্ঘটনায় কেউ কেউ বেঁচে গেলেও হারাচ্ছে মূল্যবান অঙ্গ। দেলদুয়ারে বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মোটরবাইকের জন্য, আর এ সব মোটরবাইক চালকদের বেশিরভাগ বয়স ১৫-২০ এর ভেতরে। তাদের বয়সের তুলনায় মোটরবাইকের গতি অনেক। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাবার প্রধান বাহন হলো মোটরবাইক। আকারে ছোট ও কিন্তু অধিক দ্রুতগামী আর এ জন্য অল্প বয়সের ছেলেরা ব্যবহার করছে এই মোটরবাইক।

দেলদুয়ারের স্কুলপড়–য়াদের একাংশ কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দেদারছে মোটরবাইক চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরির সময়েও মোটরবাইক চালাচ্ছে তারা। অধিকাংশ সময়ে কারোও মাথায় হেলমেটও থাকে না। আঠারো বছর না হলে কেউ লাইসেন্সও পায় না। বেশির ভাগ এসব মোটরবাইক চালকরা মানছেনা ট্রাফিক আইন, মানেনা কোন নিয়মনীতি। থানা পুলিশ কঠোর ভূমিকা নিলেও বন্ধ হচ্ছেনা এই সব অল্প বয়সের ছেলেদের মোটরবাইক ব্যবহার। ফলে এ সব অল্প বয়সের ছেলের মোটরবাইক চালাতে ঝুঁকি বেড়েই চলছে দেলদুয়ারে।

সাধারণ মানুষেরর মতে, আমাদের দেশের রাস্তায় গাড়ির গতি থাকা উচিৎ সর্বচ ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। সেখানে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানো হয়। মাত্রারিক্ত গতিতে মোটরবাইক চালানোর যার ফলে ঘটে দুর্ঘটনা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। উপজেলাবাসীর দাবি, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।

গত ৫ মে বন্ধুদের সঙ্গে মোটরবাইকে ঘুরতে গেলে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক সড়ক সহবতপুর ইউনিয়নের দাস পাড়া মোড়ে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের নান্দুরিয়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলেহিমেল (২০) নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত একই গ্রামের কদর খানের ছেলে ইমরানকে (২৫) ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত ৮ এপ্রিলটাঙ্গাইল-নাগরপুর সড়কের দেলদুয়ার উপজেলার গোমজানি এলাকায় বেপরোয়া গতির দুই মোটরসাইকেল সংর্ঘষ ঘটে। এ ঘটনায় নিহত হন মোটরসাইকেল চালক টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বরুহা গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে নাজিম মিয়া (২৫)। আহত হয়েছেন, বরুহা এলাকার গোলাপের ছেলে সোহেল রানা (২২) ও আশেকপুর এলাকার তারেকের ছেলে তন্ময় (২৬)। গত ০১ এপ্রিল উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নের দেলদুয়ার-পাকুল্যা আঞ্চলিক মহাসড়কের বিশ্বাস বাথুলী চৌরাস্তার মোড়ে প্রাইভেটকারের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘষে হয়। এ সংঘষেমোটরসাইকেল আরোহী দেলদুয়ার সদর ইউনিয়নের সেহড়াতৈল গ্রামের মো. নয়ন মিয়ার ছেলে হৃদয় (১৭) নিহত হন। প্রতিনিয়তই উপজেলায় দেখা যায়, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরবাইক চালক আরোহীসহ সড়ক দুর্ঘটনা মারা যায়। আজকাল অভিভাবকরা সন্তানের বিপদ জেনেও কিনে দিচ্ছেন আকর্ষণীয় দ্রুতগতির মোটরবাইক। ফলে খরচের টাকা তুলতে জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধমূলক কাজের সাথে। যার ফলে উপজেলায় বাড়ছে নতুন নতুন অপরাধ।

সোমবার, ১০ মে ২০২১ , ২৭ বৈশাখ ১৪২৮ ২৭ রমজান ১৪৪২

বাইক হাতে বেপরোয়া কিশোররা : নিত্য দুর্ঘটনা

কামরুল ইসলাম, দেলদুয়ার (টাঙ্গাইল)

দেলদুয়ারে অল্প বয়সের ছেলেদের হাতে দামী দামী দ্রুতযান মোটরবাইক, ফলে নিয়মিত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। আর এ সব দুর্ঘটনায় কেউ কেউ বেঁচে গেলেও হারাচ্ছে মূল্যবান অঙ্গ। দেলদুয়ারে বেশিরভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মোটরবাইকের জন্য, আর এ সব মোটরবাইক চালকদের বেশিরভাগ বয়স ১৫-২০ এর ভেতরে। তাদের বয়সের তুলনায় মোটরবাইকের গতি অনেক। খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে মানুষ এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাবার প্রধান বাহন হলো মোটরবাইক। আকারে ছোট ও কিন্তু অধিক দ্রুতগামী আর এ জন্য অল্প বয়সের ছেলেরা ব্যবহার করছে এই মোটরবাইক।

দেলদুয়ারের স্কুলপড়–য়াদের একাংশ কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দেদারছে মোটরবাইক চালাচ্ছে বলে অভিযোগ। করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে স্কুল বন্ধ থাকায় বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরির সময়েও মোটরবাইক চালাচ্ছে তারা। অধিকাংশ সময়ে কারোও মাথায় হেলমেটও থাকে না। আঠারো বছর না হলে কেউ লাইসেন্সও পায় না। বেশির ভাগ এসব মোটরবাইক চালকরা মানছেনা ট্রাফিক আইন, মানেনা কোন নিয়মনীতি। থানা পুলিশ কঠোর ভূমিকা নিলেও বন্ধ হচ্ছেনা এই সব অল্প বয়সের ছেলেদের মোটরবাইক ব্যবহার। ফলে এ সব অল্প বয়সের ছেলের মোটরবাইক চালাতে ঝুঁকি বেড়েই চলছে দেলদুয়ারে।

সাধারণ মানুষেরর মতে, আমাদের দেশের রাস্তায় গাড়ির গতি থাকা উচিৎ সর্বচ ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার। সেখানে ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানো হয়। মাত্রারিক্ত গতিতে মোটরবাইক চালানোর যার ফলে ঘটে দুর্ঘটনা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। উপজেলাবাসীর দাবি, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণে সরকারকে কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি অভিভাবকদেরও সচেতন হতে হবে।

গত ৫ মে বন্ধুদের সঙ্গে মোটরবাইকে ঘুরতে গেলে টাঙ্গাইল-আরিচা আঞ্চলিক সড়ক সহবতপুর ইউনিয়নের দাস পাড়া মোড়ে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দেলদুয়ার উপজেলার আটিয়া ইউনিয়নের নান্দুরিয়া গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলেহিমেল (২০) নিহত হয়। এ ঘটনায় আহত একই গ্রামের কদর খানের ছেলে ইমরানকে (২৫) ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গত ৮ এপ্রিলটাঙ্গাইল-নাগরপুর সড়কের দেলদুয়ার উপজেলার গোমজানি এলাকায় বেপরোয়া গতির দুই মোটরসাইকেল সংর্ঘষ ঘটে। এ ঘটনায় নিহত হন মোটরসাইকেল চালক টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বরুহা গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে নাজিম মিয়া (২৫)। আহত হয়েছেন, বরুহা এলাকার গোলাপের ছেলে সোহেল রানা (২২) ও আশেকপুর এলাকার তারেকের ছেলে তন্ময় (২৬)। গত ০১ এপ্রিল উপজেলার ডুবাইল ইউনিয়নের দেলদুয়ার-পাকুল্যা আঞ্চলিক মহাসড়কের বিশ্বাস বাথুলী চৌরাস্তার মোড়ে প্রাইভেটকারের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘষে হয়। এ সংঘষেমোটরসাইকেল আরোহী দেলদুয়ার সদর ইউনিয়নের সেহড়াতৈল গ্রামের মো. নয়ন মিয়ার ছেলে হৃদয় (১৭) নিহত হন। প্রতিনিয়তই উপজেলায় দেখা যায়, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মোটরবাইক চালক আরোহীসহ সড়ক দুর্ঘটনা মারা যায়। আজকাল অভিভাবকরা সন্তানের বিপদ জেনেও কিনে দিচ্ছেন আকর্ষণীয় দ্রুতগতির মোটরবাইক। ফলে খরচের টাকা তুলতে জড়িয়ে পড়ছে নানা অপরাধমূলক কাজের সাথে। যার ফলে উপজেলায় বাড়ছে নতুন নতুন অপরাধ।