নাটকের গল্পে পরিবার ফেরত চাইলেন চঞ্চল

গত ৮ মে কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদের জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস লিখেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। যেখানে তিনি নাটকের গল্পের প্রতি জোর দেন। চঞ্চল চৌধুরী লিখেন, ‘পিতৃ-মাতৃ পরিবার’হীন আমরা। যখন আমার অভিনয়ের যাত্রা শুরু, তখন অধিকাংশ নাটক সিনেমা ছিল সামাজিক এবং পারিবারিক। কতো কতো চরিত্র, দাদা-দাদি, নানা-নানি, বাবা-মা, ভাই-বোন। বহু চরিত্রের সার্বক্ষনিক উপস্থিতি ছিল আমাদের নাটক সিনেমায়। প্রায় প্রতিটি নাটক বা সিনেমা ছিল, চলমান সমাজ এবং বাঙালী সংস্কৃতির বাস্তব প্রতিফলন। কালান্তরে সেই সব দিনগুলো কিভাবে যেন শেষ হয়ে গেল! অধিকাংশ চরিত্র এখন আমাদের নাটকে অনুপস্থিত। অধিকাংশ নাটক নির্মাণ হচ্ছে প্রধান দুটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে। পুরো নাটকে নায়ক আর নায়িকার প্রেমের প্যান প্যানানি, ঘ্যান ঘ্যানানী। সকল নাটক প্রেমে ভরপুর। মুক্তিযুদ্ধ বা একুশে ফেব্রুয়ারীর নাটকেও অসংলগ্ন প্রেমের উপস্থিতি মূল বিষয়টির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। হুমায়ুন আহমেদের সেই সময়ের নাটক গুলো দেখলেই পরিবারের একটা চমৎকার চিত্র পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে হাতে গোনা কয়েকজন নাট্যকার, যেমন মাসুম রেজা বা বৃন্দাবন দাসের গল্পে বাবা-মা, দাদা-দাদি, ভাইবোনসহ অনেক চরিত্রের উপস্থিতি মেলে। কিন্তু ইদানিং পারিবারিক বা সামাজিক নাটকের গল্পে ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই। দাদা-দাদি, নানা-নানি নিখোঁজ। নাটকে বাবার চরিত্র থাকলে মা মৃত, মায়ের চরিত্র থাকলে, বাবা পরলোকগত। যেখানে বাবা-মা কেই একসঙ্গে পাওয়া যায় না, সেখানে ভাইবোন আসবে কোত্থেকে? আর অন্যান্য চরিত্রের কথা তো বলাই বাহুল্য। অনেকগুলো কারণের মধ্যে, নির্মান বাজেটের স্বল্পতা এবং খরচ বাঁচিয়ে কোন মতে নাটকের নামে ফুটেজ কালেকশান, এর জন্য দায়ী। অনেক সিনিয়র শিল্পী অতৃপ্তি আর হতাশা নিয়ে বেঁচে আছেন, কেউ কেউ পৃথিবী ছেড়ে চলেও গেছেন। অনেক অভিজ্ঞ আর সিনিয়র শিল্পীদের অভিনয়ের জন্য ডাকা হয় না। এভাবেই আমাদের নাটক সিনেমাও আজ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। এতো কথা বলার কারণ, আমরা আমাদের নাটকে বাবা-মাকে ফেরত চাই....দাদা-দাদি ফেরত চাই, বড় ভাই বোন ফেরত চাই। জমজমাট পরিবার চাই।

সোমবার, ১০ মে ২০২১ , ২৭ বৈশাখ ১৪২৮ ২৭ রমজান ১৪৪২

নাটকের গল্পে পরিবার ফেরত চাইলেন চঞ্চল

বিনোদন প্রতিবেদক |

image

গত ৮ মে কিংবদন্তি অভিনেত্রী শর্মিলী আহমেদের জন্মদিনে শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি স্ট্যাটাস লিখেন অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। যেখানে তিনি নাটকের গল্পের প্রতি জোর দেন। চঞ্চল চৌধুরী লিখেন, ‘পিতৃ-মাতৃ পরিবার’হীন আমরা। যখন আমার অভিনয়ের যাত্রা শুরু, তখন অধিকাংশ নাটক সিনেমা ছিল সামাজিক এবং পারিবারিক। কতো কতো চরিত্র, দাদা-দাদি, নানা-নানি, বাবা-মা, ভাই-বোন। বহু চরিত্রের সার্বক্ষনিক উপস্থিতি ছিল আমাদের নাটক সিনেমায়। প্রায় প্রতিটি নাটক বা সিনেমা ছিল, চলমান সমাজ এবং বাঙালী সংস্কৃতির বাস্তব প্রতিফলন। কালান্তরে সেই সব দিনগুলো কিভাবে যেন শেষ হয়ে গেল! অধিকাংশ চরিত্র এখন আমাদের নাটকে অনুপস্থিত। অধিকাংশ নাটক নির্মাণ হচ্ছে প্রধান দুটি চরিত্রকে কেন্দ্র করে। পুরো নাটকে নায়ক আর নায়িকার প্রেমের প্যান প্যানানি, ঘ্যান ঘ্যানানী। সকল নাটক প্রেমে ভরপুর। মুক্তিযুদ্ধ বা একুশে ফেব্রুয়ারীর নাটকেও অসংলগ্ন প্রেমের উপস্থিতি মূল বিষয়টির ভাবমূর্তি নষ্ট করছে। হুমায়ুন আহমেদের সেই সময়ের নাটক গুলো দেখলেই পরিবারের একটা চমৎকার চিত্র পাওয়া যায়। পরবর্তীকালে হাতে গোনা কয়েকজন নাট্যকার, যেমন মাসুম রেজা বা বৃন্দাবন দাসের গল্পে বাবা-মা, দাদা-দাদি, ভাইবোনসহ অনেক চরিত্রের উপস্থিতি মেলে। কিন্তু ইদানিং পারিবারিক বা সামাজিক নাটকের গল্পে ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই। দাদা-দাদি, নানা-নানি নিখোঁজ। নাটকে বাবার চরিত্র থাকলে মা মৃত, মায়ের চরিত্র থাকলে, বাবা পরলোকগত। যেখানে বাবা-মা কেই একসঙ্গে পাওয়া যায় না, সেখানে ভাইবোন আসবে কোত্থেকে? আর অন্যান্য চরিত্রের কথা তো বলাই বাহুল্য। অনেকগুলো কারণের মধ্যে, নির্মান বাজেটের স্বল্পতা এবং খরচ বাঁচিয়ে কোন মতে নাটকের নামে ফুটেজ কালেকশান, এর জন্য দায়ী। অনেক সিনিয়র শিল্পী অতৃপ্তি আর হতাশা নিয়ে বেঁচে আছেন, কেউ কেউ পৃথিবী ছেড়ে চলেও গেছেন। অনেক অভিজ্ঞ আর সিনিয়র শিল্পীদের অভিনয়ের জন্য ডাকা হয় না। এভাবেই আমাদের নাটক সিনেমাও আজ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। এতো কথা বলার কারণ, আমরা আমাদের নাটকে বাবা-মাকে ফেরত চাই....দাদা-দাদি ফেরত চাই, বড় ভাই বোন ফেরত চাই। জমজমাট পরিবার চাই।