দেশে ‘সক্রিয় করোনা রোগী’র সংখ্যা ৫০ হাজারে নেমেছে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছিল। দৈনিক করোনা শনাক্তের সংখ্যা কমে আসায় এবং সুস্থতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ‘সক্রিয় রোগী’ বা ‘অ্যাক্টিভ কেস’ কমে আসছে। এর ফলে সারাদেশের ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির চাপ এখন অনেকটাই কমে এসেছে। হাসপাতালগুলোতেও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসছে।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, আসছে ঈদ উৎসবকে ঘিরে দেশব্যাপী স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে ঈদের পর করোনা সংক্রমণ ফের বেড়ে যেতে পারে। সংক্রমণ রোধে সবাইকে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে সাত লাখ ৭৫ হাজার ২৭ জন। এর মধ্যে ‘পুরোপুরি সুস্থ’ বা ‘টোটাল রিকভার্ড’ হয়েছেন সাত লাখ ১২ হাজার ২৭৭ জন। শনাক্ত রোগীদের মধ্যে মোট ১১ হাজার ৯৭২ জন মারা গেছেন। এ হিসাবে এখনও ‘রোগী’ আছেন ৫০ হাজার ৭৭৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশের ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালের ‘কোভিড-১৯’ ইউনিটগুলোতে মোট ১২ হাজার ৫৯টি সাধারণ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি ছিল মাত্র দুই হাজার ৩০৩ জন। বাকি ৯ হাজার ৭৫৬টি শয্যাই খালি ছিল। আর হাসপাতালগুলোর মোট এক হাজার ৬৯টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি ছিল মাত্র ৩৮১টিতে। বাকি ৬৮৮টি আইসিইউ খালি ছিল।
গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৮ জনের মৃত্যু এবং এক হাজার ৫১৪ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই একদিনে আক্রান্তদের মধ্যে দুই হাজার ১১৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে করোনা শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে এবং মৃত্যুর তালিকায় ৩৭তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্তের ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যু হয় করোনায়। চলতি বছরের মার্চের প্রথমদিকে দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৬২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর গত ১৯ এপ্রিল একদিনে সর্র্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত একদিনে সারাদেশে ৪৫৪টি ল্যাবে ১৬ হাজার ৮৪৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৪২টি। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন এবং নারী ১৩ জন। এর মধ্যে ২৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ১০ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং দুইজন বাসায় মারা গেছেন। আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া ১১ হাজার ৯৭২ জনের মধ্যে পুরুষ আট হাজার ৬৭৮ জন এবং নারী তিন হাজার ২৯৪ জন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, সাতজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, পাঁচজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
বিভাগভিত্তিক তথ্যে দেখা গেছে, গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৩৮ জনের মধ্যে ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ১১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ছয়জন রাজশাহী বিভাগের, দুইজন বরিশাল বিভাগের, তিনজন সিলেট বিভাগের এবং একজন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।
মঙ্গলবার, ১১ মে ২০২১ , ২৮ বৈশাখ ১৪২৮ ২৮ রমজান ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক
দেশে ‘সক্রিয় করোনা রোগী’র সংখ্যা ৫০ হাজারে নেমেছে। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে গেছিল। দৈনিক করোনা শনাক্তের সংখ্যা কমে আসায় এবং সুস্থতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ‘সক্রিয় রোগী’ বা ‘অ্যাক্টিভ কেস’ কমে আসছে। এর ফলে সারাদেশের ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তির চাপ এখন অনেকটাই কমে এসেছে। হাসপাতালগুলোতেও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসছে।
জনস্বাস্থ্যবিদরা বলছেন, আসছে ঈদ উৎসবকে ঘিরে দেশব্যাপী স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে ঈদের পর করোনা সংক্রমণ ফের বেড়ে যেতে পারে। সংক্রমণ রোধে সবাইকে মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে সাত লাখ ৭৫ হাজার ২৭ জন। এর মধ্যে ‘পুরোপুরি সুস্থ’ বা ‘টোটাল রিকভার্ড’ হয়েছেন সাত লাখ ১২ হাজার ২৭৭ জন। শনাক্ত রোগীদের মধ্যে মোট ১১ হাজার ৯৭২ জন মারা গেছেন। এ হিসাবে এখনও ‘রোগী’ আছেন ৫০ হাজার ৭৭৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশের ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড’ হাসপাতাল এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালের ‘কোভিড-১৯’ ইউনিটগুলোতে মোট ১২ হাজার ৫৯টি সাধারণ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি ছিল মাত্র দুই হাজার ৩০৩ জন। বাকি ৯ হাজার ৭৫৬টি শয্যাই খালি ছিল। আর হাসপাতালগুলোর মোট এক হাজার ৬৯টি আইসিইউ শয্যার মধ্যে রোগী ভর্তি ছিল মাত্র ৩৮১টিতে। বাকি ৬৮৮টি আইসিইউ খালি ছিল।
গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৮ জনের মৃত্যু এবং এক হাজার ৫১৪ জনের করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই একদিনে আক্রান্তদের মধ্যে দুই হাজার ১১৫ জন সুস্থ হয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে করোনা শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে এবং মৃত্যুর তালিকায় ৩৭তম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্তের ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যু হয় করোনায়। চলতি বছরের মার্চের প্রথমদিকে দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৬২৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়। আর গত ১৯ এপ্রিল একদিনে সর্র্বোচ্চ ১১২ জনের মৃত্যুর তথ্য জানায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
গত একদিনে সারাদেশে ৪৫৪টি ল্যাবে ১৬ হাজার ৮৪৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫৬ লাখ ৪৭ হাজার ৭৪২টি। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৯৯ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৭২ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় মোট সুস্থতার হার ৯১ দশমিক ৯০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হওয়া লোকজনের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন এবং নারী ১৩ জন। এর মধ্যে ২৬ জন সরকারি হাসপাতালে, ১০ জন বেসরকারি হাসপাতালে এবং দুইজন বাসায় মারা গেছেন। আর এ পর্যন্ত মৃত্যু হওয়া ১১ হাজার ৯৭২ জনের মধ্যে পুরুষ আট হাজার ৬৭৮ জন এবং নারী তিন হাজার ২৯৪ জন। বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, সাতজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, পাঁচজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে।
বিভাগভিত্তিক তথ্যে দেখা গেছে, গত একদিনে মৃত্যু হওয়া ৩৮ জনের মধ্যে ১৫ জন ঢাকা বিভাগের, ১১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ছয়জন রাজশাহী বিভাগের, দুইজন বরিশাল বিভাগের, তিনজন সিলেট বিভাগের এবং একজন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।