চার থেকে পাঁচ কোটি ডোজ টিকার জন্য চীনকে চাহিদাপত্র : স্বাস্থ্যমন্ত্রী 

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, চীন থেকে চার থেকে পাঁচ কোটি ডোজ কোভিড-১৯ এর টিকা কিনতে চায় সরকার। এটি নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বুধবার আসছে উপহারের ৫ লাখ ডোজ। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় নেপালকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা টিকার জন্য চীনের কাছে ‘লেটার অব ডিমান্ড’ পাঠিয়েছি। এরপর তারা নন-ডিসক্লোজার ডকুমেন্ট পাঠিয়েছে, যা দেখে আমরা স্বাক্ষর করব। এর পরই চূড়ান্ত চুক্তি হবে। বাংলাদেশ অনুমোদন না দেয়ার কারণে চীনের টিকা আসতে দেরি হয়েছে সোমবার এমন মন্তব্য করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, তাদের একটি প্রস্তাব ছিল। কিন্তু আমাদেরও একটা সিদ্ধান্ত ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন না থাকার কারণে আমাদের বিশেষজ্ঞরা এই টিকা নিতে আগ্রহী ছিলেন না। জনগণের কথা বিবেচনা করে আমরা তখন সই দেইনি। তিন-চার দিন আগে তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের জানিয়েছিল অনেকগুলো দেশ এই টিকা ব্যবহার করছে এবং অনেক লোকের ওপরে ব্যবহার করে তাদের কোন সমস্যা হয়নি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন,বাংলাদেশের জনগণের কথা বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেয় টিকা আনার। তিনি বলেন, চীন আমাদের দেশে ট্রায়াল করতে চেয়েছিল এবং তখন আমরা বলেছিলাম যে তোমরা এটি অন্য দেশে করো। এরপর তোমাদের কাছ থেকে আমরা টিকা নেবো। পরবর্তীতে আমরা কিছু সংখ্যক ট্রায়াল করতে রাজি হই। কিন্তু তখন তারা এটি করতে রাজি হয়নি। কারণ তারা এর জন্য অর্থ চেয়েছিল যেটি আমরা দিতে রাজি ছিলাম না। এখন আমরা তাদের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনতে চাচ্ছি। দুটি চুক্তির বিষয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। একটি সরাসরি ক্রয় করা এবং আরেকটি এখানে উৎপাদন করার। চীনের টিকা কবে নাগাদ আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি এমন নয় যে এটি শুধু ডিসেম্বরেই আসবে। আমরা প্রস্তাব করেছি জুন-জুলাই থেকে আমাদের টিকা দেয়ার জন্য। তাদের অনুমতি সাপেক্ষে আমরা ধীরে ধীরে টিকার চালান পাবো। তারা রাজি হয়েছে যে জুন-জুলাই মাস থেকে তারা কিছু টিকা দেবে। চীনের উপহারের পাঁচ লাখ টিকা কীভাবে ব্যবহার করা হবে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীনের টিকা দুই বার দেয়া যায় এভাবেই আমরা এই টিকা ব্যবহার করবো।

বুধবার পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে আসবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের জোর অনুরোধ জানিয়েছি যেন দ্রুততার সঙ্গে টিকা সরবরাহ করা হয় এবং তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা আশা করি জুন-জুলাই মাস থেকে টিকার সরবরাহ ধীরে ধীরে পাবো।

রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তিপত্র রয়েছে। সেটি যাচাই-বাছাই করে আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। তাদের মতামতের জন্য অপেক্ষা করছি। রাশিয়ার সঙ্গে ইতোমধ্যে আমরা নন-ডিসক্লোজার চুক্তি সই করেছি এবং এই চুক্তি সই হওয়ার পরে আমরা সংগ্রহ ও যৌথ উৎপাদন বিষয়ে আলোচনা শুরু করব। ভারতের সঙ্গেও পাওনা টিকার জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।

বুধবার, ১২ মে ২০২১ , ২৯ বৈশাখ ১৪২৮ ২৯ রমজান ১৪৪২

চার থেকে পাঁচ কোটি ডোজ টিকার জন্য চীনকে চাহিদাপত্র : স্বাস্থ্যমন্ত্রী 

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, চীন থেকে চার থেকে পাঁচ কোটি ডোজ কোভিড-১৯ এর টিকা কিনতে চায় সরকার। এটি নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বুধবার আসছে উপহারের ৫ লাখ ডোজ। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় নেপালকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা টিকার জন্য চীনের কাছে ‘লেটার অব ডিমান্ড’ পাঠিয়েছি। এরপর তারা নন-ডিসক্লোজার ডকুমেন্ট পাঠিয়েছে, যা দেখে আমরা স্বাক্ষর করব। এর পরই চূড়ান্ত চুক্তি হবে। বাংলাদেশ অনুমোদন না দেয়ার কারণে চীনের টিকা আসতে দেরি হয়েছে সোমবার এমন মন্তব্য করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত। এ বিষয়ে জানতে চাইলে একই অনুষ্ঠানে উপস্থিত পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, তাদের একটি প্রস্তাব ছিল। কিন্তু আমাদেরও একটা সিদ্ধান্ত ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন না থাকার কারণে আমাদের বিশেষজ্ঞরা এই টিকা নিতে আগ্রহী ছিলেন না। জনগণের কথা বিবেচনা করে আমরা তখন সই দেইনি। তিন-চার দিন আগে তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা আমাদের জানিয়েছিল অনেকগুলো দেশ এই টিকা ব্যবহার করছে এবং অনেক লোকের ওপরে ব্যবহার করে তাদের কোন সমস্যা হয়নি। এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন,বাংলাদেশের জনগণের কথা বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নেয় টিকা আনার। তিনি বলেন, চীন আমাদের দেশে ট্রায়াল করতে চেয়েছিল এবং তখন আমরা বলেছিলাম যে তোমরা এটি অন্য দেশে করো। এরপর তোমাদের কাছ থেকে আমরা টিকা নেবো। পরবর্তীতে আমরা কিছু সংখ্যক ট্রায়াল করতে রাজি হই। কিন্তু তখন তারা এটি করতে রাজি হয়নি। কারণ তারা এর জন্য অর্থ চেয়েছিল যেটি আমরা দিতে রাজি ছিলাম না। এখন আমরা তাদের কাছ থেকে ভ্যাকসিন কিনতে চাচ্ছি। দুটি চুক্তির বিষয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। একটি সরাসরি ক্রয় করা এবং আরেকটি এখানে উৎপাদন করার। চীনের টিকা কবে নাগাদ আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি এমন নয় যে এটি শুধু ডিসেম্বরেই আসবে। আমরা প্রস্তাব করেছি জুন-জুলাই থেকে আমাদের টিকা দেয়ার জন্য। তাদের অনুমতি সাপেক্ষে আমরা ধীরে ধীরে টিকার চালান পাবো। তারা রাজি হয়েছে যে জুন-জুলাই মাস থেকে তারা কিছু টিকা দেবে। চীনের উপহারের পাঁচ লাখ টিকা কীভাবে ব্যবহার করা হবে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চীনের টিকা দুই বার দেয়া যায় এভাবেই আমরা এই টিকা ব্যবহার করবো।

বুধবার পাঁচ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে আসবে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা তাদের জোর অনুরোধ জানিয়েছি যেন দ্রুততার সঙ্গে টিকা সরবরাহ করা হয় এবং তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা আশা করি জুন-জুলাই মাস থেকে টিকার সরবরাহ ধীরে ধীরে পাবো।

রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তিপত্র রয়েছে। সেটি যাচাই-বাছাই করে আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি। তাদের মতামতের জন্য অপেক্ষা করছি। রাশিয়ার সঙ্গে ইতোমধ্যে আমরা নন-ডিসক্লোজার চুক্তি সই করেছি এবং এই চুক্তি সই হওয়ার পরে আমরা সংগ্রহ ও যৌথ উৎপাদন বিষয়ে আলোচনা শুরু করব। ভারতের সঙ্গেও পাওনা টিকার জন্য যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।