ঝুঁকি নিয়ে ফিরছে মানুষ

সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা

ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি

ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে গ্রামে ফেরা লোকজন করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই ঢাকায় ফিরছেন। চলমান ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধের কারণে দূরপাল্লার গণপরিবহন ও ট্রেন বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়েই রাজধানী ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। ব্যক্তিগত বাহন, ভাড়া করা মাইক্রোবাস, পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মোটারসাইকেল, থ্রি হুইলার, ইজিবাইকের মতো হালকা বাহনেও কর্মস্থলে ফিরছেন মানুষ। তবে সব বাহনেই গাদাগাদি করে ফিরছেন মানুষ। ফেরি পারাপারেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।

গতকাল রাজধানীমুখী কোন সড়কেই ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দৃশ্য দেখা যায়নি। ঢাকার গাবতলী আমিন বাজার ও যাত্রাবাড়ী সড়কে দেখা গেছে হাজারো মানুষ ঢাকায় ফিরছেন। বাড়তি ভাড়া গুনে ভেঙে ভেঙে হালকা পরিবহনে ফিরছেন মানুষ। এতে দেশে আবারও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

একদিনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে লাখো মানুষের ঢাকায় ফেরা, অন্যদিকে দেশে করোনার ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’র সংক্রমণ বিস্তারের আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। তারা বলছেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামে ফেরা, এরপর রাজধানীমুখী হওয়ায় সংক্রমণের বিস্তার ঘটেছে কিনা এবং ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’র প্রাদুর্ভাব হচ্ছে কিনা এর প্রতিফলন দেখতে দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। জানতে চাইলে খ্যাতিমান ‘ভাইরোলজিস্ট’ ও বিএসএমএমইউ’র সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘মানুষ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে গ্রামে গিয়েছিল, তাতে সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁকি আছেই। তাদের ফিরতি যাত্রায়ও যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলের অনুমোদন দেয়া হতো তাতে ঝুঁকি কিছুটা হলেও কম হতো। কিন্তু প্রশাসন কিছুই করেনি, সবকিছুই দায়সারাভাবে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’

এই পরিস্থিতি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এর ইম্পফ্যাক্ট পড়বে। দুই সপ্তাহ পরই এটি বুঝা যাবে।’

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বাড়ি যাওয়া মানুষের ফিরতি যাত্রা বিলম্বিত করতে সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সুপারিশ কোন কাজে আসেনি। কারণ সরকার চলমান ‘বিধিনিষেধের’র মেয়াদ বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করলেও মানুষ যেভাবে গ্রামমুখী হয়েছিল ঠিক সেভাবেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঢাকায় ফিরছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গত ১৪ মে ঈদের দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ‘এই লকডাউনের মধ্যে আবার যদি লোকজন এভাবেই ফেরে তাহলে এটা অবশ্যই বিপজ্জনক হবে। এ কারণে এই ফেরাটা যদি একটু বিলম্বিত করা যায় ভালো হয়। এছাড়া যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করা যায় সেটাও বিবেচনা করা যেতে পারে।’

চলমান ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বৃদ্ধি করে গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। চলমান বিধিনিষেধেরই ধারাবাহিকতা এটি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে আন্তঃজেলা পরিবহন বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও মানুষজন বিকল্প উপায়েই রাজধানীমুখী হয়েছেন। কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।

এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্যবিদ প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কিসের লকডাউন, কিসের বিধিনিষেধ। দূরপাল্লার বাস ও ট্রেন ছাড়া সবই তো চলছে। মানুষ যেভাবে গ্রামে গিয়েছিল, সেভাবেই ফিরছেন। ঢাকার ফুটপাতেও মাস্ক ছাড়া মানুষ চলাফেরা করছেন, তা দেখার কেউ নেই।’

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

এদিকে গতকাল আরেক জনের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে বলে সরকারের ‘রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান’ (আইইডিসিআর)। এর আগে আরও চারজনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ঈদের দিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘ভারতসহ অন্য দেশের ভ্যারিয়েন্ট যেন আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ভারতের মতো পরিস্থিতি আমাদের দেশে তৈরি হলে নাজুক অবস্থা হবে।’

প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি সাংঘাতিক ভয়ঙ্কর। এটি অ্যান্টিবডি উপেক্ষা করেই মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। আমাদের এখানে কয়েকজনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। তবে এটি সংক্রমণ ঘটিয়েছে কিনা তা এখনও নিশিচত নয় তবে সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকলে বিপদ আছে।’

ভারতে তৈরি হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটির বৈজ্ঞানিত নাম দেয়া হয়েছে ‘বি.১.৬১৭’। সে দেশে এটি প্রথম শনাক্ত হয় গত অক্টোবরে। এই ধরনটিকে ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’ও বলা হয়। ওই ধরনটি উল্লেখযোগ্য দুই পরিবর্তনের পর তৈরি হওয়ায় এটিকে ‘ডাবল মিউট্যান্ট’, ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট’ বলছেন ভারতের গবেষকরা।

গত ৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, ‘গ্লোবাল ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে ছয়টি ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। চারটি কাছাকাছি মিল রয়েছে, আর দুটি নিশ্চিত পাওয়া গেছে।’ করোনায় আক্রান্ত এই ছয়জনই যশোরের বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন।

ফেরিতেও গাদাগাদি অবস্থা

নৌ-পথগুলোতেও ন্যূতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রতিফলন দেখা যায়নি। নাড়ির টানে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই গ্রামে ফিরেছিল কর্মজীবী মানুষ। আপনজনদের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে আবারও গাদাগাদি করেই ফেরিতে পদ্মা পার হয়ে ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় ফিরছেন দক্ষিণ জনপদের মানুষ।

গতকাল সকাল থেকেই মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট হয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসতে শুরু করে। কিন্তু দূরপাল্লার গণপবিহন বা বাস বন্ধ থাকায় গন্তব্যে ফিরতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। ফেরিতেও দেখা গেছে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। অনেকেই অতিরিক্ত ভাড়া গুনে বিভিন্ন হালকা যানবাহনে করে ভেঙে ভেঙে কর্মস্থলে ফিরছেন।

বিআইডব্লিউটিসির এজিএম শফিকুল ইসলাম গতকাল সাংবাদিকদের জানান, জরুরি পরিষেবার যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি সচল রাখা হয়েছে। কিন্তু জরুরি যানবাহনের সঙ্গে কর্মস্থলে ফেরা মানুষও ফেরিতে উঠে পড়ছে, গাদাগাদি করে নদী পার হচ্ছেন। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।

শফিকুল ইসলাম জানান, শিমুলিয়ায় ঢাকার দিক থেকে আসা যাত্রী ও যানবাহনের তেমন চাপ নেই। তবে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে ঢাকামুখী মানুষের প্রচ- চাপ রয়েছে।

শরিয়তপুর কাঁঠালবাড়ীতে বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ম্যানেজার ভজন কুমার সাহা জানিয়েছেন, এই নৌ-রুটে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। গতকাল ভোর থেকে যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। ফেরিতে করেই তারা পার হচ্ছেন।

বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ নদী পারাপারে ফেরিতে পণ্যবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সকে অগ্রাধিকার দেয়ার চেষ্টা করছেন জানিয়ে ভজন কুমার সাহা বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যরার ঘাটের পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করছেন।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল প্রশাসন। ঈদের ছুটিতে সবাইকে নিজ নিজ কর্মস্থলে রাখতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল ঈদযাত্রা। সে চেষ্টাও খুব একটা কাজে আসেনি।

করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। সর্বশেষ গতকাল এই বিধিনিষেধ আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণ ও দৈনিক মৃত্যু কমছে। যদিও ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের ঢল নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

ফেরিঘাটে উপচেপড়া ভিড়

গোয়ালন্দ প্রতিনিধি জানান, ঈদের ছুটি শেষে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষগুলো তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরা শুরু করেছেন। শনিবার ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ কম থাকলেও গতকাল সকাল থেকেই চাপ বাড়তে শুরু করেছে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। যেখানে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় যাত্রীদের পৌঁছতে হচ্ছে ভেঙে ভেঙে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি দিতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী যাত্রীরা রোববার সকালে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটের প্রতিটি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় দেখা গেছে। ফেরিঘাটে আসা কয়েকজন যাত্রী বলেন, ঈদের আগে অনেক কষ্ট করে বাড়ি যেতে হয়েছে। তাই কষ্ট এড়াতে তারা একদিন পর কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। তবে ঈদের আগের মতই দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ঘাট পার হওয়ার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় প্রবেশ করছেন কর্মজীবী মানুষরা। গন্তব্যে পৌঁছতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. ফিরোজ শেখ বলেন, ঈদের পরবর্তী যানবাহন ও যাত্রী পারাপার নির্বিঘœ করতে বর্তমানে এ নৌরুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ শেষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ রাজধানীর দিকে ছুটতে শুরু করেছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজনও বাড়ছে। পাশাপাশি ঈদের আগে অনেকেই ছুটিতে আসতে পারেনি বলে ঈদের পর ঢাকা থেকে অনেকেই পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিগুলোতে বাড়িতে যাচ্ছে বলেন।

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে উভয়মুখী যাত্রী চাপ বেড়েছে। ২ ফেরিতে প্রচ- গরমে হুড়োহুড়িতে ৫ জন নিহত হওয়ার পর ফেরি সার্ভিস গতিশীল হয়েছে। ঈদের ২ দিন পরও শিমুলিয়া থেকে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের চাপ সমান সমান। এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকামুখী যাত্রী চাপ বাড়ছে। উভয়মুখী যাত্রী চাপ বাড়ায় ফেরিগুলো কম যানবাহনে যাত্রী বেশি নিয়ে পার হচ্ছে। গাদাগাদি রোধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। এদিনও প্রচ- গরমে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ঘাট পর্যন্ত এসে নদী পার হয়েও যাত্রীরা কয়েকগুণ ভাড়া গুনে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক থ্রি হুইলার, ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে চরম ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছেন। গতকাল দুপুরে ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেছেন মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, কর্মস্থলমুখো যাত্রীদের পাশাপাশি ঘরেফেরা যাত্রীদের চাপও রয়েছে। যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘœ করতে ঘাট এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস, আনসারসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। মেডিকেল টিমের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। কোথাও কোন বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সোমবার, ১৭ মে ২০২১ , ৩০ বৈশাখ ১৪২৮ ৩০ রমজান ১৪৪২

ঝুঁকি নিয়ে ফিরছে মানুষ

সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা

ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি

রাকিব উদ্দিন

image

স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাদাগাদি করে ফেরিতে আসছে ঢাকামুখী মানুষ। ছবিটি শিমুলিয়া ঘাট থেকে তোলা -সংবাদ

ঈদের ছুটিতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে গ্রামে ফেরা লোকজন করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়েই ঢাকায় ফিরছেন। চলমান ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধের কারণে দূরপাল্লার গণপরিবহন ও ট্রেন বন্ধ থাকায় বিকল্প উপায়েই রাজধানী ঢাকায় ফিরছেন কর্মজীবী মানুষ। ব্যক্তিগত বাহন, ভাড়া করা মাইক্রোবাস, পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, মোটারসাইকেল, থ্রি হুইলার, ইজিবাইকের মতো হালকা বাহনেও কর্মস্থলে ফিরছেন মানুষ। তবে সব বাহনেই গাদাগাদি করে ফিরছেন মানুষ। ফেরি পারাপারেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।

গতকাল রাজধানীমুখী কোন সড়কেই ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার দৃশ্য দেখা যায়নি। ঢাকার গাবতলী আমিন বাজার ও যাত্রাবাড়ী সড়কে দেখা গেছে হাজারো মানুষ ঢাকায় ফিরছেন। বাড়তি ভাড়া গুনে ভেঙে ভেঙে হালকা পরিবহনে ফিরছেন মানুষ। এতে দেশে আবারও করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

একদিনে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে লাখো মানুষের ঢাকায় ফেরা, অন্যদিকে দেশে করোনার ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’র সংক্রমণ বিস্তারের আশঙ্কা করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা। তারা বলছেন, ঈদের ছুটিতে গ্রামে ফেরা, এরপর রাজধানীমুখী হওয়ায় সংক্রমণের বিস্তার ঘটেছে কিনা এবং ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’র প্রাদুর্ভাব হচ্ছে কিনা এর প্রতিফলন দেখতে দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। জানতে চাইলে খ্যাতিমান ‘ভাইরোলজিস্ট’ ও বিএসএমএমইউ’র সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম গতকাল সংবাদকে বলেন, ‘মানুষ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে গ্রামে গিয়েছিল, তাতে সংক্রমণ বৃদ্ধির ঝুঁকি আছেই। তাদের ফিরতি যাত্রায়ও যদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন চলাচলের অনুমোদন দেয়া হতো তাতে ঝুঁকি কিছুটা হলেও কম হতো। কিন্তু প্রশাসন কিছুই করেনি, সবকিছুই দায়সারাভাবে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।’

এই পরিস্থিতি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলবে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই এর ইম্পফ্যাক্ট পড়বে। দুই সপ্তাহ পরই এটি বুঝা যাবে।’

স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে বাড়ি যাওয়া মানুষের ফিরতি যাত্রা বিলম্বিত করতে সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই সুপারিশ কোন কাজে আসেনি। কারণ সরকার চলমান ‘বিধিনিষেধের’র মেয়াদ বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন জারি করলেও মানুষ যেভাবে গ্রামমুখী হয়েছিল ঠিক সেভাবেই স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে ঢাকায় ফিরছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গত ১৪ মে ঈদের দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, ‘এই লকডাউনের মধ্যে আবার যদি লোকজন এভাবেই ফেরে তাহলে এটা অবশ্যই বিপজ্জনক হবে। এ কারণে এই ফেরাটা যদি একটু বিলম্বিত করা যায় ভালো হয়। এছাড়া যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়ে তাদের ঢাকায় আনার ব্যবস্থা করা যায় সেটাও বিবেচনা করা যেতে পারে।’

চলমান ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বৃদ্ধি করে গতকাল প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। চলমান বিধিনিষেধেরই ধারাবাহিকতা এটি করা হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে আন্তঃজেলা পরিবহন বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও মানুষজন বিকল্প উপায়েই রাজধানীমুখী হয়েছেন। কোথাও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই।

এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্যবিদ প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কিসের লকডাউন, কিসের বিধিনিষেধ। দূরপাল্লার বাস ও ট্রেন ছাড়া সবই তো চলছে। মানুষ যেভাবে গ্রামে গিয়েছিল, সেভাবেই ফিরছেন। ঢাকার ফুটপাতেও মাস্ক ছাড়া মানুষ চলাফেরা করছেন, তা দেখার কেউ নেই।’

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

এদিকে গতকাল আরেক জনের দেহে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে বলে সরকারের ‘রোগতত্ত্ব ও রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠান’ (আইইডিসিআর)। এর আগে আরও চারজনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

ঈদের দিন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, ‘ভারতসহ অন্য দেশের ভ্যারিয়েন্ট যেন আমাদের দেশে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে আমরা সতর্ক রয়েছি। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। ভারতের মতো পরিস্থিতি আমাদের দেশে তৈরি হলে নাজুক অবস্থা হবে।’

প্রফেসর ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টটি সাংঘাতিক ভয়ঙ্কর। এটি অ্যান্টিবডি উপেক্ষা করেই মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। আমাদের এখানে কয়েকজনের দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে। তবে এটি সংক্রমণ ঘটিয়েছে কিনা তা এখনও নিশিচত নয় তবে সংক্রমণ ছড়িয়ে থাকলে বিপদ আছে।’

ভারতে তৈরি হওয়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটির বৈজ্ঞানিত নাম দেয়া হয়েছে ‘বি.১.৬১৭’। সে দেশে এটি প্রথম শনাক্ত হয় গত অক্টোবরে। এই ধরনটিকে ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’ও বলা হয়। ওই ধরনটি উল্লেখযোগ্য দুই পরিবর্তনের পর তৈরি হওয়ায় এটিকে ‘ডাবল মিউট্যান্ট’, ‘ট্রিপল মিউট্যান্ট’ বলছেন ভারতের গবেষকরা।

গত ৮ মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, ‘গ্লোবাল ওয়েবসাইটে বাংলাদেশে ছয়টি ইন্ডিয়ান ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে। চারটি কাছাকাছি মিল রয়েছে, আর দুটি নিশ্চিত পাওয়া গেছে।’ করোনায় আক্রান্ত এই ছয়জনই যশোরের বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে দেশে ফিরেছেন।

ফেরিতেও গাদাগাদি অবস্থা

নৌ-পথগুলোতেও ন্যূতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রতিফলন দেখা যায়নি। নাড়ির টানে স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করেই গ্রামে ফিরেছিল কর্মজীবী মানুষ। আপনজনদের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে আবারও গাদাগাদি করেই ফেরিতে পদ্মা পার হয়ে ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় ফিরছেন দক্ষিণ জনপদের মানুষ।

গতকাল সকাল থেকেই মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট হয়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসতে শুরু করে। কিন্তু দূরপাল্লার গণপবিহন বা বাস বন্ধ থাকায় গন্তব্যে ফিরতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। ফেরিতেও দেখা গেছে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। অনেকেই অতিরিক্ত ভাড়া গুনে বিভিন্ন হালকা যানবাহনে করে ভেঙে ভেঙে কর্মস্থলে ফিরছেন।

বিআইডব্লিউটিসির এজিএম শফিকুল ইসলাম গতকাল সাংবাদিকদের জানান, জরুরি পরিষেবার যানবাহন পারাপারের জন্য ফেরি সচল রাখা হয়েছে। কিন্তু জরুরি যানবাহনের সঙ্গে কর্মস্থলে ফেরা মানুষও ফেরিতে উঠে পড়ছে, গাদাগাদি করে নদী পার হচ্ছেন। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।

শফিকুল ইসলাম জানান, শিমুলিয়ায় ঢাকার দিক থেকে আসা যাত্রী ও যানবাহনের তেমন চাপ নেই। তবে মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে ঢাকামুখী মানুষের প্রচ- চাপ রয়েছে।

শরিয়তপুর কাঁঠালবাড়ীতে বিআইডব্লিউটিসির সহকারী ম্যানেজার ভজন কুমার সাহা জানিয়েছেন, এই নৌ-রুটে ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। গতকাল ভোর থেকে যাত্রীর চাপ বাড়তে শুরু করেছে। ফেরিতে করেই তারা পার হচ্ছেন।

বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ নদী পারাপারে ফেরিতে পণ্যবাহী ট্রাক ও অ্যাম্বুলেন্সকে অগ্রাধিকার দেয়ার চেষ্টা করছেন জানিয়ে ভজন কুমার সাহা বলেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সদস্যরার ঘাটের পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করছেন।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল প্রশাসন। ঈদের ছুটিতে সবাইকে নিজ নিজ কর্মস্থলে রাখতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল ঈদযাত্রা। সে চেষ্টাও খুব একটা কাজে আসেনি।

করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় গত ৫ এপ্রিল থেকে দেশে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। সর্বশেষ গতকাল এই বিধিনিষেধ আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। ‘লকডাউন’ বা বিধিনিষেধে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণ ও দৈনিক মৃত্যু কমছে। যদিও ঈদের ছুটি শেষে রাজধানীমুখী মানুষের ঢল নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন জনস্বাস্থ্যবিদরা।

ফেরিঘাটে উপচেপড়া ভিড়

গোয়ালন্দ প্রতিনিধি জানান, ঈদের ছুটি শেষে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা মানুষগুলো তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে ফেরা শুরু করেছেন। শনিবার ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ কম থাকলেও গতকাল সকাল থেকেই চাপ বাড়তে শুরু করেছে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। যেখানে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এদিকে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় ঘাট এলাকায় যাত্রীদের পৌঁছতে হচ্ছে ভেঙে ভেঙে। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি দিতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ঢাকামুখী যাত্রীরা রোববার সকালে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটের প্রতিটি ফেরিতে যাত্রী ও যানবাহনের ভিড় দেখা গেছে। ফেরিঘাটে আসা কয়েকজন যাত্রী বলেন, ঈদের আগে অনেক কষ্ট করে বাড়ি যেতে হয়েছে। তাই কষ্ট এড়াতে তারা একদিন পর কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। তবে ঈদের আগের মতই দূরপাল্লার বাস বন্ধ থাকায় ঘাট পার হওয়ার পর ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় প্রবেশ করছেন কর্মজীবী মানুষরা। গন্তব্যে পৌঁছতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া ঘাট কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. ফিরোজ শেখ বলেন, ঈদের পরবর্তী যানবাহন ও যাত্রী পারাপার নির্বিঘœ করতে বর্তমানে এ নৌরুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদ শেষে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ রাজধানীর দিকে ছুটতে শুরু করেছেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকজনও বাড়ছে। পাশাপাশি ঈদের আগে অনেকেই ছুটিতে আসতে পারেনি বলে ঈদের পর ঢাকা থেকে অনেকেই পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরিগুলোতে বাড়িতে যাচ্ছে বলেন।

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি জানান, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে উভয়মুখী যাত্রী চাপ বেড়েছে। ২ ফেরিতে প্রচ- গরমে হুড়োহুড়িতে ৫ জন নিহত হওয়ার পর ফেরি সার্ভিস গতিশীল হয়েছে। ঈদের ২ দিন পরও শিমুলিয়া থেকে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের চাপ সমান সমান। এদিকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকামুখী যাত্রী চাপ বাড়ছে। উভয়মুখী যাত্রী চাপ বাড়ায় ফেরিগুলো কম যানবাহনে যাত্রী বেশি নিয়ে পার হচ্ছে। গাদাগাদি রোধে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। এদিনও প্রচ- গরমে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ঘাট পর্যন্ত এসে নদী পার হয়েও যাত্রীরা কয়েকগুণ ভাড়া গুনে মোটরসাইকেল, ইজিবাইক থ্রি হুইলার, ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহনে চরম ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছেন। গতকাল দুপুরে ঘাট এলাকা পরিদর্শন করেছেন মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, কর্মস্থলমুখো যাত্রীদের পাশাপাশি ঘরেফেরা যাত্রীদের চাপও রয়েছে। যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘœ করতে ঘাট এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিস, আনসারসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। মেডিকেল টিমের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। কোথাও কোন বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।