বুড়িমারী, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ফিরছে মানুষ

তিন শিক্ষার্থীর করোনা পজেটিভ

ভারত থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দল দিয়ে বাংলাদেশে আসা তিন শিক্ষার্থীর করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। ওই তিন শিক্ষার্থী বুড়িমারী স্থলবন্দরের সাম টাইম আবাসিক হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এদিকে ভারত ফেরত তিন শিক্ষার্থীর করোনা পজেটিভের খবর ছড়িয়ে পড়ায় লালমনিরহাটজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টায় লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, ওই তিন শিক্ষার্থীর করোনা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট কিনা তা পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হবে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে ভারতের সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় ভারতের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থী ও চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশিরা আটকে পড়েন ভারতে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকাসহ নানা শর্তে তারা দেশে প্রবেশের অনুমতি পান।

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের পর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৬ এপ্রিল থেকে ভারতের বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতি নিয়ে গতকাল বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশটিতে আটকেপড়া শিক্ষার্থীসহ ২০২ জন দেশে ফিরেছেন। বুড়িমারী স্থলবন্দরে বর্তমানে পাঁচটি আবাসিক হোটেলে ৮৩ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। ১০১ জনকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তাদের সবাইকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। একই সময়ে ভারতে ফিরে গেছেন ১০৬ জন। এদিকে দুই ধাপে ৩৫ জনের করোনা নেগেটিভ আসায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ছাড়পত্র দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুর রহমান বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি যাত্রীদের লালমনিরহাট জেলা সদরসহ পাটগ্রাম ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাঁচটি আবাসিক হোটেলে ৮৩ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। তাদের দেখভালের জন্য থানা পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ রাখা হয়েছে, যাতে তারা বাইরে বের হতে না পারেন।

আখাউড়া স্থলবন্দর

২০ দিনে ফিরেছে ৬০০ যাত্রী

আখাউড়া প্রতিনিধি জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত বন্ধ থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরছেন ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশিসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। গত ২০ দিনে ভারত থেকে ৫৮৫ বাংলাদেশি ও ১৫ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে ফিরেছেন। একই সময়ে ১৮২ জন ভারতে গেছেন। বাংলাদেশিদের মধ্যে ২৭৬ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

জানা গেছে, ভারত থেকে ফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাতটি আবাসিক হোটেল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল, বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন এবং জেলার বেসরকারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়। এসব হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকা ও খাওয়া বাবদ খরচ নিজেদেরই বহন করতে হয়। শুধু বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে বিনামূল্যে থাকছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা। তবে খাবার খরচ যাত্রীদের দিতে হয়।

জেলা ও আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২৬ এপ্রিল থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত শুরু হয়। ২৬ এপ্রিল থেকে ১৫ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে আসা ৬০০ জনের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত ১৫ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে এসেছেন। বাকি ৫৮৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের মধ্যে ৪৩ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন পূর্ণ করায় এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মোট ৫৮ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।

আখাউড়া ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ আবদুল হামিদ বলেন, আটকেপড়া যাত্রীদের হাইকমিশনারের অনাপত্তিপত্র, সর্বশেষ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা করোনার নেগেটিভ সনদ এবং নিজ দেশে ফিরে নিজ খরচে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার শর্তে যাতায়াত অব্যাহত রয়েছে। গত শনিবার ১২ জন বাংলাদেশে ফিরেছেন। আর চারজন ভারতীয় নাগরিক নিজ দেশে ফিরে গেছেন।

সোমবার, ১৭ মে ২০২১ , ৩০ বৈশাখ ১৪২৮ ৩০ রমজান ১৪৪২

বুড়িমারী, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ফিরছে মানুষ

তিন শিক্ষার্থীর করোনা পজেটিভ

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট

ভারত থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দল দিয়ে বাংলাদেশে আসা তিন শিক্ষার্থীর করোনা পজেটিভ রিপোর্ট এসেছে। ওই তিন শিক্ষার্থী বুড়িমারী স্থলবন্দরের সাম টাইম আবাসিক হোটেলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। এদিকে ভারত ফেরত তিন শিক্ষার্থীর করোনা পজেটিভের খবর ছড়িয়ে পড়ায় লালমনিরহাটজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

গতকাল বিকেল সাড়ে ৫টায় লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, ওই তিন শিক্ষার্থীর করোনা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট কিনা তা পরীক্ষার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হবে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট (ধরন) ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে ভারতের সব সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়। এ সময় ভারতের বিভিন্ন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থী ও চিকিৎসা নিতে যাওয়া বাংলাদেশিরা আটকে পড়েন ভারতে। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে কোয়ারেন্টাইনে থাকাসহ নানা শর্তে তারা দেশে প্রবেশের অনুমতি পান।

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধের পর লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৬ এপ্রিল থেকে ভারতের বাংলাদেশ দূতাবাসের অনুমতি নিয়ে গতকাল বিকেল ৫টা পর্যন্ত দেশটিতে আটকেপড়া শিক্ষার্থীসহ ২০২ জন দেশে ফিরেছেন। বুড়িমারী স্থলবন্দরে বর্তমানে পাঁচটি আবাসিক হোটেলে ৮৩ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন। ১০১ জনকে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তাদের সবাইকে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। একই সময়ে ভারতে ফিরে গেছেন ১০৬ জন। এদিকে দুই ধাপে ৩৫ জনের করোনা নেগেটিভ আসায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের ছাড়পত্র দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুর রহমান বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশি যাত্রীদের লালমনিরহাট জেলা সদরসহ পাটগ্রাম ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাঁচটি আবাসিক হোটেলে ৮৩ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। তাদের দেখভালের জন্য থানা পুলিশ ও গ্রাম পুলিশ রাখা হয়েছে, যাতে তারা বাইরে বের হতে না পারেন।

আখাউড়া স্থলবন্দর

২০ দিনে ফিরেছে ৬০০ যাত্রী

আখাউড়া প্রতিনিধি জানান, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত বন্ধ থাকলেও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে দেশে ফিরছেন ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশিসহ দূতাবাসের কর্মকর্তারা। গত ২০ দিনে ভারত থেকে ৫৮৫ বাংলাদেশি ও ১৫ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে ফিরেছেন। একই সময়ে ১৮২ জন ভারতে গেছেন। বাংলাদেশিদের মধ্যে ২৭৬ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

জানা গেছে, ভারত থেকে ফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাতটি আবাসিক হোটেল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল, বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন এবং জেলার বেসরকারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়। এসব হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকা ও খাওয়া বাবদ খরচ নিজেদেরই বহন করতে হয়। শুধু বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে বিনামূল্যে থাকছেন বাংলাদেশি নাগরিকরা। তবে খাবার খরচ যাত্রীদের দিতে হয়।

জেলা ও আখাউড়া উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ২৬ এপ্রিল থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত শুরু হয়। ২৬ এপ্রিল থেকে ১৫ মে পর্যন্ত বাংলাদেশে আসা ৬০০ জনের মধ্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দূতাবাসে কর্মরত ১৫ জন ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশে এসেছেন। বাকি ৫৮৫ জন বাংলাদেশি নাগরিকের মধ্যে ৪৩ জন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ১৪ দিন পূর্ণ করায় এখন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে মোট ৫৮ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।

আখাউড়া ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ আবদুল হামিদ বলেন, আটকেপড়া যাত্রীদের হাইকমিশনারের অনাপত্তিপত্র, সর্বশেষ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা করোনার নেগেটিভ সনদ এবং নিজ দেশে ফিরে নিজ খরচে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে থাকার শর্তে যাতায়াত অব্যাহত রয়েছে। গত শনিবার ১২ জন বাংলাদেশে ফিরেছেন। আর চারজন ভারতীয় নাগরিক নিজ দেশে ফিরে গেছেন।