শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

আজ ১৭ মে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭৫ থেকে দীর্ঘ ছয় বছর নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে শেখ হাসিনা ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে কোলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় তারা প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু তারা দেশে ফিরতে পারেননি। মা, বাবা, ভাইসহ আপনজনদের হারানো বেদনাকে বুকে ধারণ করে পরবর্তীতে ৬ বছর লন্ডন ও দিল্লিতে তাদের চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়। ১৯৮১ সালে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতাদের এক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত হয়েছিল প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। মানুষের হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসার জবাবে শেখ হাসিনা সেদিন বলেন, ‘বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য আমি দেশে এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’

প্রতিবছর দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারনে গত বছর এবং এবছরও কোন কর্মকসূচি পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।

তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দেশ ও জাতির কল্যাণে, গণতন্ত্রের উন্নয়নে এবং আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ায় অসামান্য অবদান রাখার জন্য শেখ হাসিনার সুন্দর জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। তিনি বলেন, সেদিন বাংলার জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসায় তিনি সিক্ত হন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে সুগম হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশব্যাপী প্রতিবছর বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করলেও এবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দিবস পালন করবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চার দশক পূর্তি উপলক্ষে ‘শেখ হাসিনার চার দশক : বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনী ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ১৭ মে সকাল ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ১৭ মে বিকেল ৩টায় মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠান। এছাড়া সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।

সোমবার, ১৭ মে ২০২১ , ৩০ বৈশাখ ১৪২৮ ৩০ রমজান ১৪৪২

শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

image

আজ ১৭ মে, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ১৯৭৫ থেকে দীর্ঘ ছয় বছর নির্বাসন শেষে ১৯৮১ সালের ১৭ মে গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে শেখ হাসিনা ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে কোলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় তারা প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু তারা দেশে ফিরতে পারেননি। মা, বাবা, ভাইসহ আপনজনদের হারানো বেদনাকে বুকে ধারণ করে পরবর্তীতে ৬ বছর লন্ডন ও দিল্লিতে তাদের চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়। ১৯৮১ সালে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে তাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতাদের এক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত হয়েছিল প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। মানুষের হৃদয় ছোঁয়া ভালোবাসার জবাবে শেখ হাসিনা সেদিন বলেন, ‘বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেয়ার জন্য আমি দেশে এসেছি। আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই।’

প্রতিবছর দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশব্যাপী বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারনে গত বছর এবং এবছরও কোন কর্মকসূচি পালন করা সম্ভব হচ্ছে না।

তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দেশ ও জাতির কল্যাণে, গণতন্ত্রের উন্নয়নে এবং আধুনিক ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ায় অসামান্য অবদান রাখার জন্য শেখ হাসিনার সুন্দর জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন। বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি মাইলফলক। তিনি বলেন, সেদিন বাংলার জনগণের অকৃত্রিম ভালোবাসায় তিনি সিক্ত হন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, তার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে সুগম হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ। শেখ হাসিনা দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন।

স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন দেশব্যাপী প্রতিবছর বিস্তারিত কর্মসূচি পালন করলেও এবার করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে দিবস পালন করবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের চার দশক পূর্তি উপলক্ষে ‘শেখ হাসিনার চার দশক : বদলে যাওয়া বাংলাদেশের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শনী। এই প্রদর্শনী ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বত্রিশ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে দিবসটি উপলক্ষে ১৭ মে সকাল ১১টায় ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং ১৭ মে বিকেল ৩টায় মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠান। এছাড়া সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।