খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে অধিকতর শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যাংক-কোম্পানি আইন অনুমোদন

মন্ত্রিসভা আর্থিক খাতকে টেকসই করে তোলার পাশাপাশি খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে অধিকতর শৃঙ্খলা আনয়ন এবং সু-শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে গতকাল ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং অন্যান্য মন্ত্রিপরিষদ সদস্যগণ বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠকের পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ‘ব্যাংকিং ব্যবসা কার্যক্রম তত্ত্ববধায়ন, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতে সু-শাসন ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত আইনটির প্রয়োজন রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এর পর ব্যাংকের সংখ্যা, তাদের সম্পদের পরিমাণ, ঋণ, ডিপোজিট, লিজ, বিনিয়োগ ও আরো অনেক কিছুই বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন অনেক ইস্যুই আগের আইনে অর্ন্তভূক্ত নেই।

আনোয়ারুল বলেন, খসড়া আইনটি বিভিন্ন দেশের ব্যাংকিং আইনের সাথে মিল রেখে করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর মতো বিদ্যামান আইনগুলো ওই সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রণয়ন করা হয়েছিল, বিধায় এতে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির সংজ্ঞা ও তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের বিষয়টি খুব একটা স্পষ্ট নয়। কিন্তু, প্রস্তাবিত আইনের ২৭ (ক ও গ) ধারায় ইস্যুটি যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি, রুগ্ন ব্যাংক কোম্পানিগুলোর উত্তরণ ও সু-ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলোর সংকটজনক অবস্থার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং ব্যাংকগুলোর সংস্কার ও একীভূত করার মতো বিষয়গুলোকে তুলে ধরে কয়েকটি নতুন অনুবিধি খসড়া বিলটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, যদি ব্যাংকের কোন পরিচালক বা অন্য কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে নতুন খসড়া আইনে তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থদ-ের পাশাপাশি ফৌজদারী আইনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার বিধান রাখা হয়েছে।

মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্য ও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স অ্যাক্ট, ২০২১ এর অনুমোদন দিয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন বিলটি বিদ্যমানটির স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬ এর সংশোধন। এতে শুধু মাত্র একটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, আর এটা হলো- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেয়া।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য অর্থ তাঁর দুই মেয়ে, নাতি-নাতনি ও কোন কোন ক্ষেত্রে নাতি-নাতনিদের স্বামী/স্ত্রী ও তাদের সন্তান।

এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল বলেন, ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’স ফ্যামিলি মেম্বার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ২০০৯-তে যাই থাকুক না কেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স অ্যাক্ট, ২০২১ অগ্রাধিকার পাবে।

সোনা ও সোনার বারের পাশাপাশি অপরিশোধিত সোনা বা আংশিক পরিশোধিত সোনা আমদানির পথ প্রশস্ত করার পাশাপাশি দেশে শোধনাগার স্থাপনের বিধান রেখে স্বর্ণ নীতি ২০১৮ (সংশোধনী ২০২১) এর খসড়াও মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।

মঙ্গলবার, ১৮ মে ২০২১ , ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৫ শাওয়াল ১৪৪২

খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে অধিকতর শৃঙ্খলা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ব্যাংক-কোম্পানি আইন অনুমোদন

বাসস

মন্ত্রিসভা আর্থিক খাতকে টেকসই করে তোলার পাশাপাশি খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে অধিকতর শৃঙ্খলা আনয়ন এবং সু-শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে গতকাল ব্যাংক-কোম্পানি (সংশোধন) আইন ২০২১ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং অন্যান্য মন্ত্রিপরিষদ সদস্যগণ বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠকের পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ‘ব্যাংকিং ব্যবসা কার্যক্রম তত্ত্ববধায়ন, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতে সু-শাসন ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে প্রস্তাবিত আইনটির প্রয়োজন রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১-এর পর ব্যাংকের সংখ্যা, তাদের সম্পদের পরিমাণ, ঋণ, ডিপোজিট, লিজ, বিনিয়োগ ও আরো অনেক কিছুই বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন অনেক ইস্যুই আগের আইনে অর্ন্তভূক্ত নেই।

আনোয়ারুল বলেন, খসড়া আইনটি বিভিন্ন দেশের ব্যাংকিং আইনের সাথে মিল রেখে করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ এর মতো বিদ্যামান আইনগুলো ওই সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রণয়ন করা হয়েছিল, বিধায় এতে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির সংজ্ঞা ও তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের বিষয়টি খুব একটা স্পষ্ট নয়। কিন্তু, প্রস্তাবিত আইনের ২৭ (ক ও গ) ধারায় ইস্যুটি যথাযথভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, পাশাপাশি, রুগ্ন ব্যাংক কোম্পানিগুলোর উত্তরণ ও সু-ব্যবস্থাপনা, ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলোর সংকটজনক অবস্থার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা এবং ব্যাংকগুলোর সংস্কার ও একীভূত করার মতো বিষয়গুলোকে তুলে ধরে কয়েকটি নতুন অনুবিধি খসড়া বিলটিতে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরো বলেন, যদি ব্যাংকের কোন পরিচালক বা অন্য কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে নতুন খসড়া আইনে তাকে বিপুল পরিমাণ অর্থদ-ের পাশাপাশি ফৌজদারী আইনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনার বিধান রাখা হয়েছে।

মন্ত্রিসভায় বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্য ও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেয়ার জন্য স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স অ্যাক্ট, ২০২১ এর অনুমোদন দিয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নতুন বিলটি বিদ্যমানটির স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স অর্ডিন্যান্স, ১৯৮৬ এর সংশোধন। এতে শুধু মাত্র একটি বিষয় অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে, আর এটা হলো- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যবৃন্দ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তা দেয়া।’

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্য অর্থ তাঁর দুই মেয়ে, নাতি-নাতনি ও কোন কোন ক্ষেত্রে নাতি-নাতনিদের স্বামী/স্ত্রী ও তাদের সন্তান।

এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল বলেন, ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’স ফ্যামিলি মেম্বার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, ২০০৯-তে যাই থাকুক না কেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেয়ার ক্ষেত্রে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স অ্যাক্ট, ২০২১ অগ্রাধিকার পাবে।

সোনা ও সোনার বারের পাশাপাশি অপরিশোধিত সোনা বা আংশিক পরিশোধিত সোনা আমদানির পথ প্রশস্ত করার পাশাপাশি দেশে শোধনাগার স্থাপনের বিধান রেখে স্বর্ণ নীতি ২০১৮ (সংশোধনী ২০২১) এর খসড়াও মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।