পদ্মাপাড় প্লাস্টিক-পলিথিনমুক্ত রাখতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্যমুক্ত রাখতে পরিচ্ছন্ন অভিযান অব্যাহত রেখেছেন স্থানীয় তরুণরা। হরিরামপুরের স্থানীয় সংগঠন ‘হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ ‘ নামের সংগঠনের অর্ধশতাধিক তরুণ পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।

জানা যায়, হরিরামপুর পদ্মাপাড়ে ২ কিলোমিটার চর জেগে ওঠেছে। উপজেলার পাটগ্রাম অনাথ বন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০১৩ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীরা এবং কলেজ ও বিশ্বঃবিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণরা মিনি কুয়াকাটা নামকরনও করেছে। অনেকে আবার পদ্মাপাড়কে পদ্মাবীচ নামকরনও করেছে। পদ্মাপাড় কিছুটা সমুদ্র সৈকতের মতো দেখা যায় বলে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলাসহ ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকেও অনেকে বেড়াতে আসেন। প্রতিদিনই বিকেলে অনেক দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। তবে ঈদের সময় হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়। ওই সময় পদ্মাপাড়ে প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ বেড়ে যায়।

প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ রোধে ‘হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ’ নামের ফেসবুক গ্রুপের তরুণরা প্রথমে কাজ শুরু করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হরিরামপুর উপজেলায় রাস্তার ধারে বৃক্ষরোপণের জন্য ‘হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ’ নামের সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়।

সংগঠনের সদস্যরা জানান, মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে (হরিরামপুরবাসীসহ) যারা ঈদে বা অন্যসময়ে হরিরামপুরের পদ্মাতীর, পদ্মাতীর সংলগ্ন ময়না পাড়ার মাঠ ও পদ্মার চরে বেড়াতে আসবেন তাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিকের পানির বোতল, কোমল পানীয়র বোতল বা ক্যান, চিপসের প্যাকেট, খাবার প্যাকেট, সিগারেটের প্যাকেটসহ আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য হরিরামপুরের পরিবেশ সচেতন তরুণ, যুবকেরা পদ্মাতীরের বিভিন্ন পয়েন্টে গার্বেজ পলিথিনসহ ডাস্টবিন স্থাপন করেছেন।

এছাড়া হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কের ধারে বৃক্ষরোপণের জন্য ইতোমধ্যে সংগঠনের কয়েকজন সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে আলোচনা ও করেছেন।

সংগঠনসূত্রে আরো জানা যায়, গত ১১ মে থেকে সকাল ও বিকেলে গ্রুপের সদস্যরা হরিরামপুর পদ্মাপাড় প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্যমুক্ত রাখতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেন। এর পরের দিন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য ফেলার জন্য ৪ টি ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়। এ পর্যন্ত পদ্মাপাড়ে ৭টি ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া পাটগ্রাম অনাথ বন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে ২টি ডাস্টবিন স্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও সংগঠক তানভীর আহমেদ জানান, হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ সংগঠন এর পক্ষ থেকে ঈদের দিন থেকে পদ্মা তীর দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। পানি, মাটি আমাদের পরিবেশের অন্যতম উপাদান। মানুষের যত্রতত্র প্লাস্টিক বর্জ্য যেন নদী তীরবর্তী পরিবেশ নস্ট না করে সেই লক্ষে ই ডাস্টবিন স্থাপন, এছাড়া মানুষজনকে প্লাস্টিক বর্জ্যরে অপকারিতা সম্পর্কে জানতে ও সংগঠনের সদস্যরা সাহায্য করছেন।

এছাড়া সংগঠন এর পক্ষ থেকে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, উপজেলার বলড়া থেকে ঝিটকা পর্যন্ত রাস্তার দু পাশে হিজল, তমাল, কৃষ্ণচূড়া, জারুল গাছ রোপণ করা হবে।

তরুণদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান প্রশংসনীয় জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে সংগঠনের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপনের সময় উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।

বুধবার, ১৯ মে ২০২১ , ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৬ শাওয়াল ১৪৪২

পদ্মাপাড় প্লাস্টিক-পলিথিনমুক্ত রাখতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান

মাহিদুল ইসলাম মাহি, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ

image

প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্যমুক্ত রাখতে পরিচ্ছন্ন অভিযান অব্যাহত রেখেছেন স্থানীয় তরুণরা। হরিরামপুরের স্থানীয় সংগঠন ‘হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ ‘ নামের সংগঠনের অর্ধশতাধিক তরুণ পরিচ্ছন্নতা অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।

জানা যায়, হরিরামপুর পদ্মাপাড়ে ২ কিলোমিটার চর জেগে ওঠেছে। উপজেলার পাটগ্রাম অনাথ বন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ২০১৩ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীরা এবং কলেজ ও বিশ্বঃবিদ্যালয়ে পড়ুয়া তরুণরা মিনি কুয়াকাটা নামকরনও করেছে। অনেকে আবার পদ্মাপাড়কে পদ্মাবীচ নামকরনও করেছে। পদ্মাপাড় কিছুটা সমুদ্র সৈকতের মতো দেখা যায় বলে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলাসহ ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা থেকেও অনেকে বেড়াতে আসেন। প্রতিদিনই বিকেলে অনেক দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে। তবে ঈদের সময় হাজার হাজার দর্শনার্থীর সমাগম হয়। ওই সময় পদ্মাপাড়ে প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ বেড়ে যায়।

প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ রোধে ‘হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ’ নামের ফেসবুক গ্রুপের তরুণরা প্রথমে কাজ শুরু করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি হরিরামপুর উপজেলায় রাস্তার ধারে বৃক্ষরোপণের জন্য ‘হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ’ নামের সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়।

সংগঠনের সদস্যরা জানান, মানিকগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে (হরিরামপুরবাসীসহ) যারা ঈদে বা অন্যসময়ে হরিরামপুরের পদ্মাতীর, পদ্মাতীর সংলগ্ন ময়না পাড়ার মাঠ ও পদ্মার চরে বেড়াতে আসবেন তাদের ব্যবহৃত প্লাস্টিকের পানির বোতল, কোমল পানীয়র বোতল বা ক্যান, চিপসের প্যাকেট, খাবার প্যাকেট, সিগারেটের প্যাকেটসহ আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার জন্য হরিরামপুরের পরিবেশ সচেতন তরুণ, যুবকেরা পদ্মাতীরের বিভিন্ন পয়েন্টে গার্বেজ পলিথিনসহ ডাস্টবিন স্থাপন করেছেন।

এছাড়া হরিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন সড়কের ধারে বৃক্ষরোপণের জন্য ইতোমধ্যে সংগঠনের কয়েকজন সদস্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে আলোচনা ও করেছেন।

সংগঠনসূত্রে আরো জানা যায়, গত ১১ মে থেকে সকাল ও বিকেলে গ্রুপের সদস্যরা হরিরামপুর পদ্মাপাড় প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্যমুক্ত রাখতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেন। এর পরের দিন সংগঠনের পক্ষ থেকে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য ফেলার জন্য ৪ টি ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়। এ পর্যন্ত পদ্মাপাড়ে ৭টি ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে।

এছাড়া পাটগ্রাম অনাথ বন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে ২টি ডাস্টবিন স্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও সংগঠক তানভীর আহমেদ জানান, হরিরামপুর শ্যামল নিসর্গ সংগঠন এর পক্ষ থেকে ঈদের দিন থেকে পদ্মা তীর দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে। পানি, মাটি আমাদের পরিবেশের অন্যতম উপাদান। মানুষের যত্রতত্র প্লাস্টিক বর্জ্য যেন নদী তীরবর্তী পরিবেশ নস্ট না করে সেই লক্ষে ই ডাস্টবিন স্থাপন, এছাড়া মানুষজনকে প্লাস্টিক বর্জ্যরে অপকারিতা সম্পর্কে জানতে ও সংগঠনের সদস্যরা সাহায্য করছেন।

এছাড়া সংগঠন এর পক্ষ থেকে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, উপজেলার বলড়া থেকে ঝিটকা পর্যন্ত রাস্তার দু পাশে হিজল, তমাল, কৃষ্ণচূড়া, জারুল গাছ রোপণ করা হবে।

তরুণদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান প্রশংসনীয় জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জানান, উপজেলায় বর্ষা মৌসুমে সংগঠনের পক্ষ থেকে বৃক্ষরোপনের সময় উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে।