চার দেয়ালে আবদ্ধ শিশু

কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সব স্কুল। বাহিরে করোনা ছড়ানোর ভয় ও স্কুল বন্ধ থাকায় অনেকটাই ঘরবন্ধি হয়ে পড়েছে শিশুরা। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে শহর কিংবা উপশহরে চার দেয়ালে আবদ্ধ শিশুরা।

যে শিশুরা স্কুল থেকে ফিরে সবুজ দিগন্তজোড়া মাঠে গিয়ে খেলা করতো। সেই শিশুদের জীবনযাপনের ধরন এখন অনেকটাই বদলে গেছে। শিশু পার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেন, চিড়িয়াখানাসহ যেসব জায়গায় শিশুদের যাওয়ার সুযোগ ঘটতো, বন্ধ সেসবও। যাওয়া যাচ্ছে না দাদাবাড়ি-মামাবাড়ি কিংবা পাড়া-প্রতিবেশীর বাসাবাড়িতে। ঘরে বন্দি থেকে মনমরা হয়ে যাওয়া শিশু-কিশোরদের অনেকের পড়ালেখাও ঠিকমতো করছে না। বেশিরভাগ সময়ই শিশুরা টেলিভিশনে কার্টুন দেখে সময় পার করছে। অনেকে মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। ঘরে শুয়ে বসে থাকায় শারীরিক নড়াচড়াও কম হচ্ছে। ফলে অনেকের খাবার হজমে সমস্যা হচ্ছে। অনেকের আবার ওজনও বেড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে টিভির প্রোগ্রাম দেখতেও অনেকে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা অল্পতেই রেগে যাচ্ছে। অনেকের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে।

আমাদের দেশে অনেক পরিবারে বড়রা শিশুদের সমস্যাকে পাত্তা দিতে চান না। তারা তাদের মতে করে ছোটদের চালাতে চান। এটা মোটেই ঠিক নয়। করোনা পরিস্থিতিতে বড় মানুষের চেয়ে বেশি সমস্যায় আছে শিশু-কিশোররা। তাদের সঙ্গে কখনোই খারাপ আচরণ করা যাবে না। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে ও তাদের পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। তাদের সঙ্গে দাবা, লুডু বা ক্যারাম খেলা যেতে পারে। অনেক স্কুলে এখন অনলাইনে পাঠদান চালু আছে। শিশুদের ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহ দিতে হবে। এতে শিশুদের পড়াশোনাও চলবে আবার স্কুলের প্রিয় শিক্ষক, শিক্ষিকা ও সহপাঠীদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগও হবে।

শিশুদের গাছের চারা কিনে দিয়ে তার পরিচর্যা করার কথা বলা যেতে পারে। গাছে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি দিলে, যতœ নিলে তাদের সময় খুব ভালো কাটবে। মাঝে মাঝে অনলাইনে তার বন্ধদের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেয়া যেতে পারে। এতে মনও ভালো থাকবে পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে দূরত্বও তৈরি হবে না।

আশরাফুল ইসলাম

বুধবার, ১৯ মে ২০২১ , ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৬ শাওয়াল ১৪৪২

চার দেয়ালে আবদ্ধ শিশু

image

কোমলমতি শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সব স্কুল। বাহিরে করোনা ছড়ানোর ভয় ও স্কুল বন্ধ থাকায় অনেকটাই ঘরবন্ধি হয়ে পড়েছে শিশুরা। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে শহর কিংবা উপশহরে চার দেয়ালে আবদ্ধ শিশুরা।

যে শিশুরা স্কুল থেকে ফিরে সবুজ দিগন্তজোড়া মাঠে গিয়ে খেলা করতো। সেই শিশুদের জীবনযাপনের ধরন এখন অনেকটাই বদলে গেছে। শিশু পার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেন, চিড়িয়াখানাসহ যেসব জায়গায় শিশুদের যাওয়ার সুযোগ ঘটতো, বন্ধ সেসবও। যাওয়া যাচ্ছে না দাদাবাড়ি-মামাবাড়ি কিংবা পাড়া-প্রতিবেশীর বাসাবাড়িতে। ঘরে বন্দি থেকে মনমরা হয়ে যাওয়া শিশু-কিশোরদের অনেকের পড়ালেখাও ঠিকমতো করছে না। বেশিরভাগ সময়ই শিশুরা টেলিভিশনে কার্টুন দেখে সময় পার করছে। অনেকে মোবাইল, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। ঘরে শুয়ে বসে থাকায় শারীরিক নড়াচড়াও কম হচ্ছে। ফলে অনেকের খাবার হজমে সমস্যা হচ্ছে। অনেকের আবার ওজনও বেড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে টিভির প্রোগ্রাম দেখতেও অনেকে বিরক্ত হয়ে যাচ্ছে। ফলে তারা অল্পতেই রেগে যাচ্ছে। অনেকের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাচ্ছে।

আমাদের দেশে অনেক পরিবারে বড়রা শিশুদের সমস্যাকে পাত্তা দিতে চান না। তারা তাদের মতে করে ছোটদের চালাতে চান। এটা মোটেই ঠিক নয়। করোনা পরিস্থিতিতে বড় মানুষের চেয়ে বেশি সমস্যায় আছে শিশু-কিশোররা। তাদের সঙ্গে কখনোই খারাপ আচরণ করা যাবে না। তাদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে ও তাদের পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। তাদের সঙ্গে দাবা, লুডু বা ক্যারাম খেলা যেতে পারে। অনেক স্কুলে এখন অনলাইনে পাঠদান চালু আছে। শিশুদের ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহ দিতে হবে। এতে শিশুদের পড়াশোনাও চলবে আবার স্কুলের প্রিয় শিক্ষক, শিক্ষিকা ও সহপাঠীদের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগও হবে।

শিশুদের গাছের চারা কিনে দিয়ে তার পরিচর্যা করার কথা বলা যেতে পারে। গাছে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি দিলে, যতœ নিলে তাদের সময় খুব ভালো কাটবে। মাঝে মাঝে অনলাইনে তার বন্ধদের সঙ্গে সংযুক্ত করে দেয়া যেতে পারে। এতে মনও ভালো থাকবে পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে দূরত্বও তৈরি হবে না।

আশরাফুল ইসলাম