দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রীদের ভরসা অতিরিক্ত ভাড়ার বিমান

করোনা অতিমারির সময়ে ঘোষিত লকডাউনে সড়ক ও নৌপথ বন্ধ থাকায় আকাশ পথই দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই সরকারি বেসরকারি তিনটি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন ৬টি উড়ানে বরিশালে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমান বন্দরে বিপুলসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করছে। তবে ঈদের ভিড়কে পূঁজি করে বেসররকারি এয়ারলাইন্সগুলো এখনও তিনগুণ ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে।

করেনা সঙ্কটের কারণে গত ৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশের মতো বরিশাল বিমান বন্দরের সব ফ্লাইট স্থগিত করে সরকার। পরবর্তীতে গত ২১ এপ্রিল থেকে বেসরকারি এয়ারলাইন্স এবং ২২ এপ্রিল থেকে রাষ্ট্রীয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালন শুরু করে। বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো বরিশাল সেক্টরে ইতোপূর্বে প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করলেও করোনা সঙ্কটে সরকারি নির্দেশে ২১ এপ্রিল থেকে তা ১টিতে নামিয়ে আনা হয়।

কিন্তু যাত্রীচাপ বৃদ্ধির সুযোগে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো ঢাকাÑবরিশালের মাত্র ৬৮ অ্যরোনটিক্যল মাইল আকাশপথে ঈদের আগে-পড়ে ৩৪শ টাকার স্থলে ৯ হাজার টাকা ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে। অথচ ঢাকাÑব্যাংককÑঢাকা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার অ্যারোনটিক্যাল মাইল আকাশ পথে একটি থাই বেসরকারি কোম্পানি সাড়ে ১২ হাজার টাকায় যাত্রী পারিবহন করেছে করোনা মহামারীর আগে।

এমনকি যাত্রী চাপ সামাল দিতে গত ৭ মে থেকে ইউএস-বাংলা ও নভো এয়ার বরিশাল সেক্টরে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালন শুরু করে। বাংলাদেশ বিমানও ১০ মে থেকে ১টির স্থলে প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করে।

গত মঙ্গলবারেও ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখী যাত্রী ভিড়ে ঠাসা ছিল বরিশাল সেক্টরের সব ফ্লাইট। আগামী শনিবার পার্যন্ত একই অবস্থা থাকবে বলে আশা করছে বিমান সংস্থাগুলো। তবে বেসরকারি দুটি এয়ারলাইন্সই এখনও প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইট পরিচালন করলেও ১৭ মে থেকে বিমান বিকেলের ফ্লাইট বন্ধ করে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত ফ্লাইটের সঙ্গে শুধু রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল-বিকেল দুুটি ফ্লাইট পরিচালন করছে। কিন্তু বিমান’র এ সিডিউলও রাখা হয়েছে ৩১ মে পর্যন্ত।

এরপরে আবার নতুন সিডিউলে রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটির ফ্লাইট সূচী কখন নির্ধারিত থাকবে তা বলতে পারছেন না কেউ।

করোনা সঙ্কটে এক বছর পরে গত ২৬ মার্চ বরিশাল সেক্টরে বিমান’র ফ্লাইট চালু হলেও তা বন্ধ হয়ে যায় ৫ এপ্রিল। পুনরায় ২৩ এপ্রিল থেকে ফ্লাইট চালু হলেও ইতোমধ্যে রাাষ্ট্রীয় এ আকাশ পরিবহন সংস্থাটি অন্তত ৭ বার তার সময়সূচি পরিবর্তন করেছে। ফলে নিয়মিত যাত্রীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। অনেক যাত্রী রাষ্ট্রীয় বিমান বাদ দিয়ে বেসরকারি এয়ারলাইন্স’র দিকে ঝুঁকছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

তবে এসব কিছুর পরেও বরিশাল সেক্টরে সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি এয়ারলাইন্স’র উড়ান যাত্রী বোঝাই করেই সকালÑবিকেল বরিশালÑঢাকা আকাশ পথে উড়ে বেড়াচ্ছে। কারণ করোনার এ মহাসঙ্কটে আকাশ পরিবহনই দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর একমাত্র নিরাপদ ও দ্রুত যোগাযোগ মাধ্যম বলে মনে করছেন যাত্রীরা।

বৃহস্পতিবার, ২০ মে ২০২১ , ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৭ শাওয়াল ১৪৪২

দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রীদের ভরসা অতিরিক্ত ভাড়ার বিমান

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

করোনা অতিমারির সময়ে ঘোষিত লকডাউনে সড়ক ও নৌপথ বন্ধ থাকায় আকাশ পথই দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর একমাত্র যোগাযোগ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই সরকারি বেসরকারি তিনটি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন ৬টি উড়ানে বরিশালে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমান বন্দরে বিপুলসংখ্যক যাত্রী পরিবহন করছে। তবে ঈদের ভিড়কে পূঁজি করে বেসররকারি এয়ারলাইন্সগুলো এখনও তিনগুণ ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে।

করেনা সঙ্কটের কারণে গত ৪ এপ্রিল থেকে সারাদেশের মতো বরিশাল বিমান বন্দরের সব ফ্লাইট স্থগিত করে সরকার। পরবর্তীতে গত ২১ এপ্রিল থেকে বেসরকারি এয়ারলাইন্স এবং ২২ এপ্রিল থেকে রাষ্ট্রীয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালন শুরু করে। বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো বরিশাল সেক্টরে ইতোপূর্বে প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করলেও করোনা সঙ্কটে সরকারি নির্দেশে ২১ এপ্রিল থেকে তা ১টিতে নামিয়ে আনা হয়।

কিন্তু যাত্রীচাপ বৃদ্ধির সুযোগে বেসরকারি এয়ারলাইন্সগুলো ঢাকাÑবরিশালের মাত্র ৬৮ অ্যরোনটিক্যল মাইল আকাশপথে ঈদের আগে-পড়ে ৩৪শ টাকার স্থলে ৯ হাজার টাকা ভাড়ায় যাত্রী পরিবহন করছে। অথচ ঢাকাÑব্যাংককÑঢাকা প্রায় সাড়ে ৩ হাজার অ্যারোনটিক্যাল মাইল আকাশ পথে একটি থাই বেসরকারি কোম্পানি সাড়ে ১২ হাজার টাকায় যাত্রী পারিবহন করেছে করোনা মহামারীর আগে।

এমনকি যাত্রী চাপ সামাল দিতে গত ৭ মে থেকে ইউএস-বাংলা ও নভো এয়ার বরিশাল সেক্টরে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালন শুরু করে। বাংলাদেশ বিমানও ১০ মে থেকে ১টির স্থলে প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইটে যাত্রী পরিবহন করে।

গত মঙ্গলবারেও ঈদ পরবর্তী কর্মস্থলমুখী যাত্রী ভিড়ে ঠাসা ছিল বরিশাল সেক্টরের সব ফ্লাইট। আগামী শনিবার পার্যন্ত একই অবস্থা থাকবে বলে আশা করছে বিমান সংস্থাগুলো। তবে বেসরকারি দুটি এয়ারলাইন্সই এখনও প্রতিদিন দুটি করে ফ্লাইট পরিচালন করলেও ১৭ মে থেকে বিমান বিকেলের ফ্লাইট বন্ধ করে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত ফ্লাইটের সঙ্গে শুধু রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল-বিকেল দুুটি ফ্লাইট পরিচালন করছে। কিন্তু বিমান’র এ সিডিউলও রাখা হয়েছে ৩১ মে পর্যন্ত।

এরপরে আবার নতুন সিডিউলে রাষ্ট্রীয় এ সংস্থাটির ফ্লাইট সূচী কখন নির্ধারিত থাকবে তা বলতে পারছেন না কেউ।

করোনা সঙ্কটে এক বছর পরে গত ২৬ মার্চ বরিশাল সেক্টরে বিমান’র ফ্লাইট চালু হলেও তা বন্ধ হয়ে যায় ৫ এপ্রিল। পুনরায় ২৩ এপ্রিল থেকে ফ্লাইট চালু হলেও ইতোমধ্যে রাাষ্ট্রীয় এ আকাশ পরিবহন সংস্থাটি অন্তত ৭ বার তার সময়সূচি পরিবর্তন করেছে। ফলে নিয়মিত যাত্রীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। অনেক যাত্রী রাষ্ট্রীয় বিমান বাদ দিয়ে বেসরকারি এয়ারলাইন্স’র দিকে ঝুঁকছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

তবে এসব কিছুর পরেও বরিশাল সেক্টরে সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি এয়ারলাইন্স’র উড়ান যাত্রী বোঝাই করেই সকালÑবিকেল বরিশালÑঢাকা আকাশ পথে উড়ে বেড়াচ্ছে। কারণ করোনার এ মহাসঙ্কটে আকাশ পরিবহনই দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর একমাত্র নিরাপদ ও দ্রুত যোগাযোগ মাধ্যম বলে মনে করছেন যাত্রীরা।