স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতার অভাবে টিকা আনতে দেরি হচ্ছে

রোজিনার বিষয়টি দুঃখজনক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অভিযোগ করেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতার অভাবে চীন থেকে টিকা আনতে দেরি হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের তিনটা ডকুমেন্টের দুটো পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কারণে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এ জন্য আমাদের রাষ্ট্রদূত খুবই হতাশ, ডকুমেন্টগুলো না হলে প্রসেস চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। তিনি আমাকে ফোন করেছেন, মেসেজ দিয়েছেন; আমি সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি তাগাদা দেয়ার জন্য। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।

গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিয়ান সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘চীন তিনটি ডকুমেন্ট পাঠিয়েছিল এবং এরমধ্যে আমরা দুটি ডকুমেন্ট তাদের ফেরত পাঠিয়েছি। দুটির মধ্যে একটি গত বুধবার ফেরত পাঠিয়েছি। এর একটি অংশ ছিল ইংরেজিতে এবং আরেকটি অংশ ছিল চীনা ভাষায়। আমরা ফেরত পাঠানোর সময় চীনা ভাষার অংশে সই করেছি। পরে আমরা চীনা ভাষার একজন অধ্যাপককে নিয়োগ করে সেটি সংশোধন করেছি। দিস আর লাউজি ওয়ার্ক এবং এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করেনি।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুধু যোগাযোগ করিয়ে দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মস্কো যে বিষয়গুলো পছন্দ করে না, সেই কাজগুলো করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে কিছু ডকুমেন্ট সই হয়েছে এবং কিছু হয়নি। শুরুতে টিকার একটি সংখ্যা বলা হয়েছিল এবং পরে আবারও সংখ্যা বদল করা হলো। রাশিয়ানরা এটি পছন্দ করে না। প্রথমে বললেন, একটি সংখ্যায় নিয়ে আসব এবং পরে আবার পরিবর্তন করলেন। এগুলো নিয়ে আমরা ব্যস্ততায় আছি। আশা করছি এ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে পারব। রাশিয়ার সঙ্গে বিক্রয় চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। কাজ চলছে, শেষ হয়ে যাবে।’

এ সময় ভারত থেকে টিকা পেতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে ফোন করেছিলাম, বলেছিলাম আমাদের যে করেই হোক টিকার ব্যবস্থা করে দিতে। তাকে আমি আগে চিঠিও লিখেছি। ওনাকে বললাম যে, আপনাদের টিকা ব্যবহার করেছি ; আমাদের ১৫ লাখ লোক আটকে গেছে। আপনারা আমাদের উপহার হলেও টিকা দেন। উনি বললেন, আমি আপনাদের অবস্থা জানি, আমাদের অবস্থা আরও খারাপ; কোনভাবে চেষ্টা করেন। আমি বলেছি, আপনাদের কারণে আমরা আটকে গেছি কিন্তু উনি পাঠাতে পারবেন সেটা বলেননি। ভারত কখনও বলেনি টিকা দেবে না, তবে দিতে পারছে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টির মুখোমুখি হতে হবে। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গুটিকয়েক লোকের আচরণের জন্য আমাদের এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফেস করতে হবে।

রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষুণ্ন হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল মোমেন বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। কারণ, শেখ হাসিনার সরকার সংবাদবান্ধব সরকার। আমরা কখনোই আপনাদের নিষেধ করি না। আমাদের লুকানোর কিছু নেই। তিনি বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি খুব দুঃখজনক। সেটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ম্যানেজ করা উচিত ছিল। গুটিকয়েক লোকের জন্য এই বদনামটা হচ্ছে।

রোজিনা ইসলামের ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা যথার্থ মন্তব্য করেছেন। আমার সহকর্মীরা বলেছেন, রোজিনা ইসলাম ন্যায়বিচার পাবেন। তারা বলেছেন এটি দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা।

শুক্রবার, ২১ মে ২০২১ , ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪২৮ ৮ শাওয়াল ১৪৪২

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতার অভাবে টিকা আনতে দেরি হচ্ছে

রোজিনার বিষয়টি দুঃখজনক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন অভিযোগ করেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতার অভাবে চীন থেকে টিকা আনতে দেরি হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, চীনের তিনটা ডকুমেন্টের দুটো পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কারণে কিছুটা দেরি হচ্ছে। এ জন্য আমাদের রাষ্ট্রদূত খুবই হতাশ, ডকুমেন্টগুলো না হলে প্রসেস চূড়ান্ত করা যাচ্ছে না। তিনি আমাকে ফোন করেছেন, মেসেজ দিয়েছেন; আমি সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি তাগাদা দেয়ার জন্য। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এ কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।

গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাং-কিয়ান সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।

আব্দুল মোমেন বলেন, ‘চীন তিনটি ডকুমেন্ট পাঠিয়েছিল এবং এরমধ্যে আমরা দুটি ডকুমেন্ট তাদের ফেরত পাঠিয়েছি। দুটির মধ্যে একটি গত বুধবার ফেরত পাঠিয়েছি। এর একটি অংশ ছিল ইংরেজিতে এবং আরেকটি অংশ ছিল চীনা ভাষায়। আমরা ফেরত পাঠানোর সময় চীনা ভাষার অংশে সই করেছি। পরে আমরা চীনা ভাষার একজন অধ্যাপককে নিয়োগ করে সেটি সংশোধন করেছি। দিস আর লাউজি ওয়ার্ক এবং এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় করেনি।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুধু যোগাযোগ করিয়ে দেয় জানিয়ে তিনি বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মস্কো যে বিষয়গুলো পছন্দ করে না, সেই কাজগুলো করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে কিছু ডকুমেন্ট সই হয়েছে এবং কিছু হয়নি। শুরুতে টিকার একটি সংখ্যা বলা হয়েছিল এবং পরে আবারও সংখ্যা বদল করা হলো। রাশিয়ানরা এটি পছন্দ করে না। প্রথমে বললেন, একটি সংখ্যায় নিয়ে আসব এবং পরে আবার পরিবর্তন করলেন। এগুলো নিয়ে আমরা ব্যস্ততায় আছি। আশা করছি এ সপ্তাহের মধ্যে শেষ করতে পারব। রাশিয়ার সঙ্গে বিক্রয় চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। কাজ চলছে, শেষ হয়ে যাবে।’

এ সময় ভারত থেকে টিকা পেতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে ফোন করেছিলাম, বলেছিলাম আমাদের যে করেই হোক টিকার ব্যবস্থা করে দিতে। তাকে আমি আগে চিঠিও লিখেছি। ওনাকে বললাম যে, আপনাদের টিকা ব্যবহার করেছি ; আমাদের ১৫ লাখ লোক আটকে গেছে। আপনারা আমাদের উপহার হলেও টিকা দেন। উনি বললেন, আমি আপনাদের অবস্থা জানি, আমাদের অবস্থা আরও খারাপ; কোনভাবে চেষ্টা করেন। আমি বলেছি, আপনাদের কারণে আমরা আটকে গেছি কিন্তু উনি পাঠাতে পারবেন সেটা বলেননি। ভারত কখনও বলেনি টিকা দেবে না, তবে দিতে পারছে না।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আন্তর্জাতিকভাবে বিষয়টির মুখোমুখি হতে হবে। গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গুটিকয়েক লোকের আচরণের জন্য আমাদের এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফেস করতে হবে।

রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সরকারের ভাবমূর্তি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষুণ্ন হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল মোমেন বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। কারণ, শেখ হাসিনার সরকার সংবাদবান্ধব সরকার। আমরা কখনোই আপনাদের নিষেধ করি না। আমাদের লুকানোর কিছু নেই। তিনি বলেন, যে ঘটনা ঘটেছে, সেটি খুব দুঃখজনক। সেটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ম্যানেজ করা উচিত ছিল। গুটিকয়েক লোকের জন্য এই বদনামটা হচ্ছে।

রোজিনা ইসলামের ঘটনা নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা যথার্থ মন্তব্য করেছেন। আমার সহকর্মীরা বলেছেন, রোজিনা ইসলাম ন্যায়বিচার পাবেন। তারা বলেছেন এটি দুঃখজনক, অনভিপ্রেত ও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা।